শীতে দূরে যেতে ১-রঙিন রাঙামাটি by সত্রং চাকমা,

ভোরের ঘন কুয়াশা জানান দিচ্ছে, শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এ সময় অনেকেরই দূরে কোথাও বেড়ানোর ভাবনা থাকে। হুট করে তো আর দূরে বেড়াতে যাওয়া যায় না। এ জন্য আগেভাগে পরিকল্পনা নেওয়া চাই। আপনার পরিকল্পনা সাজানোয় সাহায্য করতেই প্রিয় চট্টগ্রামের এ বিশেষ আয়োজন। ধারাবাহিক এ আয়োজনের প্রথম পর্ব সাজানো হলো দেশের শীর্ষস্থানীয় পর্যটনকেন্দ্র রাঙামাটি নিয়ে_


সত্তর দশকের শেষদিকে রাঙামাটি জেলাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এরপর পর্যটকদের সুবিধার্থে এখানে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলে পর্যটন করপোরেশন। বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে রাঙামাটির আয়তন ছয় হাজার ৪৮১ বর্গকিলোমিটার। এর পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য, উত্তরে পার্বত্য খাগড়াছড়ি এবং দক্ষিণে পার্বত্য বান্দরবান জেলা।
যেভাবে যাবেন
চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন থেকে এক ঘণ্টা পরপর পাহাড়িকা বাস এবং প্রতি আধা ঘণ্টা পর বিরতিহীন বাস ছেড়ে যায় রাঙামাটির উদ্দেশে। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ১শ' টাকা। আরও একটু আয়েশে যেতে চাইলে উঠতে পারেন এস আলম কিংবা ইউনিক চেয়ার কোচে। তবে এগুলো সব সময় পাওয়া না গেলেও স্টেশন রোড থেকে এক ঘণ্টা পর পর পাওয়া যায় আরামদায়ক বিআরটিসি বাস। নগর থেকে রাঙামাটি যেতে সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা।
শহর ও আশপাশের স্পট
রাঙামাটিতে ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি, জেলা প্রশাসকের বাংলো, সুভলং ঝরনা, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুুর রউফের স্মৃতিসৌধ, পেদা টিং টিং, ইকো টুক টুক ভিলেজসহ দেখার মতো অনেক কিছু রয়েছে। এগুলো দেখার জন্য সারাদিনের জন্য বোট ভাড়া নিলে ভালো।
রাঙামাটির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ পর্যটন কমপ্লেক্স। পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত ব্রিজটি পর্যটকমাত্রই আকৃষ্ট করে। দুটি পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে কাপ্তাই হ্রদের উপর ঝুলে আছে সেতুটি। এটি দেখতে হলে পর্যটন করপোরেশনকে দিতে হবে পাঁচ টাকা।
বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আবদুুর রউফ মুক্তিযুদ্ধের সময় নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে শহীদ হন। স্থানীয় এক আদিবাসী তাকে ওই স্থানে কবর দেন। পরে রাঙামাটির বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) ওই স্থানে স্মৃৃতিসৌধ নির্মাণ করে।
বোটে করে সুভলং যাওয়ার আনন্দটাই অন্যরকম। কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলরাশির বুক চিরে যখন সুভলংয়ের দিকে এগুবেন তখন চোখে পড়বে একটি সবুজ দ্বীপ। আর যাওয়ার সময় পড়বে বেসরকারি পর্যটন স্পট পেদা টিং টিং রেস্টুরেন্ট। চাকমা ভাষায় নামকরণ করা পেদা টিং টিং অর্থ 'পেট ভরে খাওয়া'। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর রাঙামাটি শহরের অদূরে বালুখালীতে গড়ে ওঠে এটি। পুরো একটি সেগুনবাগানকে কেন্দ্র করেই এ পর্যটন স্পট। সারি সারি সেগুন গাছের সঙ্গে রয়েছে বন্য পশু-পাখি। এখানে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী খাবার পাওয়া যায়। এ ছাড়া রাতযাপনের জন্য রয়েছে আদিবাসীদের ঐতিহ্যের ধারক টং ঘর। পেদা টিং টিং পর্যটন স্পটের অদূরে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে ইকো টুক টুক ভিলেজ। এখানকার রেস্টুরেন্টেও পাওয়া যাবে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী খাবার।
পেদা টিং টিং-এর সবুজ পাহাড় ছেড়ে এগুলেই আদিবাসী গ্রাম। ইচ্ছে করলে সেখানে গিয়ে দেখে আসতে পারেন পাহাড়ি মানুষের সরল জীবনযাপন। এ গ্রামের পাহাড়ের মাঝে গড়ে তোলা হয়েছে জুম ক্ষেত (পাহাড়ের চূড়ায় চাষাবাদ)। মন ভোলানো এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে সুভলং পেঁৗছে যাবেন টেরই পাবেন না। যখন দু'দিকে সুউচ্চ পাহাড় চোখে পড়বে তখন বুঝতে হবে সুভলং ঝরনার কাছাকাছি পেঁৗছে গেছেন। এক সময় এখানে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঁধ নির্মিত হলে ভারতের কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাবে, তাই বাতিল করা হয় সেই পরিকল্পনা।
এরপর দেখতে পাবেন পাহাড়ের কোল থেকে নেমে আসা সুভলং ঝরনা। বর্তমানে ঝরনায় পানি খুব বেশি নেই। এরপরও ঝরনার সৌন্দর্য পর্যটকদের মন ভরিয়ে দিতে যথেষ্ট। পাহাড়ের উপর থেকে নেমে আসা ঝরনার পানি পাথুরে মাটিতে আছড়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য না দেখলে বলে বোঝানোর নয়। ইচ্ছে করলে স্নান করতে পারেন ঝরনার শীতল পানিতে। ক্যামেরা থাকলে ঝটপট তুলে নিতে পারেন দুর্লভ কিছু ছবিও।
ঝরনা দেখা শেষ হলে কিছুক্ষণের জন্য সুভলং বাজার ঘুরে আসতে পারেন। এখানে সেনাবাহিনীর একটি ক্যান্টিন রয়েছে। সেখানে সেরে নিতে পারেন চা-নাস্তা পর্ব। কারণ এখান থেকে সোজা আপনাকে রওনা দিতে হবে শহরের দিকে।
রাঙামাটি শহরের অদূরে বালুখালীতে হর্টিকালচার নার্সারির বিশাল এলাকাজুড়ে যে উদ্যান রয়েছে, এর সৌন্দর্যও পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এখানে সারি সারি ফল ও ফুল গাছের সঙ্গে রয়েছে বন্য পশু-পাখি। সব মিলিয়ে স্থানটি পর্যটকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
শহরের অল্প দূরে অবস্থিত ফুরামোন পাহাড়। এ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে রাঙামাটি শহরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এর উচ্চতা এক হাজার ৫১৮ ফুট। ফুরামোন পাহাড় যেতে হলে শহরের মানিকছড়ির সাপছড়ি হয়ে যেতে হবে। এখানে রাজবন বিহারের ফুরামোনা শাখা নামে বৌদ্ধদের একটি মন্দির রয়েছে। ফুরামোন যেতে হলে প্রথমে অটোরিকশা ভাড়া করে সাপছড়ি পর্যন্ত গিয়ে এরপর হেঁটে যেতে হবে। এ জন্য অবশ্যই পাহাড়ে ওঠার অভ্যাস থাকতে হবে। আরেকটু আরামে যেতে চাইলে ফুরামোনের পাদদেশে নির্মিত রাস্তা দিয়েও যেতে পারেন। তবে ফুরামোন পাহাড়ে যাওয়ার আগে নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাগ্রে নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, এলাকাটি খুবই নির্জন।
রাঙামাটি শহরের কাছেই বালুখালী কৃষি খামার। খামারের বিশাল এলাকাজুড়ে যে উদ্যান রয়েছে, তা এককথায় চমৎকার। এখানে প্রায় সময় দল বেঁধে লোকজন পিকনিক করতে আসে। খামারটিতে ফল-ফুলসহ অসংখ্য প্রজাতির গাছগাছালি রয়েছে। রাঙামাটি শহর থেকে স্পিডবোট ভাড়া করে এখানে আসা যায়। ভাড়া পাঁচশ' থেকে আটশ' টাকা।
রাঙামাটি শহর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে রাঙাপানি এলাকায় চার একর পাহাড়ের উপর অবস্থি্থত মোনঘর শিশু সদন। প্রতিষ্ঠানটি স্থ্থানীয় লোকজনের কাছে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিনিকেতন হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের অনাথ ও দুস্থ শিশুদের আশ্রয় দিয়ে পড়ালেখার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। মোনঘর শব্দের অর্থ পাহাড়ে জুম চাষের জন্য চাষিদের থাকার অস্থ্থায়ী আশ্রয়স্থল। যতদিন পর্যন্ত না চাষিরা জুমের ধানের বীজ থেকে অন্যান্য ফলন মোনঘরে তুলতে পারবেন ততদিন পর্যন্ত সেখানে থেকে কাজ চালিয়ে যাবেন। দুস্থ ও অনাথ শিশুদের আশ্রয় দিয়ে তাদের মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই মোনঘর শিশু সদনের কাজ। গাছপালা ঘেরা ভবন, বৌদ্ধ মন্দিরসহ দেখার অনেক কিছু রয়েছে এখানে। তবে মোনঘর শিশু সদনের ভেতরে যেতে চাইলে আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। শহর থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে এখানে আসা যাবে। হাতে সময় থাকলে এখান থেকে স্বল্প দূরত্বের হ্যাচারি ঘাট এলাকায় সবুজ বৃক্ষরাশি ঘেরা পুলিশ লাইনের সুখী নীলগঞ্জ, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে নির্মিত বোটানিক্যাল গার্ডেন ও মিনি চিড়িয়াখানাও ঘুরে আসতে পারেন।
শহর থেকে দূরে

রাঙামাটির বরকল উপজেলায় অবস্থিত ফালিতাঙ্গ্যা চুগ। রাঙামাটি শহর থেকে নৌপথে বরকলের দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। সেখানে যেতে হলে শুভলং বাজার থেকে পূর্বদিকে কর্ণফুলী নদীর উজানের দিকে এগুতে হবে। শুভলং বাজারে পাশেই কয়েকটি নদী মিলিত হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে এসেছে জুরাছড়ি এবং উত্তর-পূর্ব দিক থেকে এসেছে মাইনী ও কাচলং নদীর মিলিত স্রোতধারা। কর্ণফুলী নদীর বুক চিরে বরকল যাওয়ার পথে নদীর দু'ধারে দেখা যাবে উঁচু-নিচু অসংখ্য পাহাড় ও আদিবাসী গ্রাম।
বরকল উপজেলা সদর ফালিত্যাঙ্গা চুগের পাদদেশে অবস্থিত। সেখানে রয়েছে বরকল উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়, বাজার ও বিজিবি জোন। আগে স্থানীয় লোকজন ফালিত্যাঙ্গা চুগকে অভিহিত করত পাকিস্তান টিলা নামে। ১৯৭১ সালে পাক সেনারা এ পাহাড়ে বড় বড় বাঙ্কার খুঁড়ে আশ্রয় নিয়েছিল বলেই এর নাম হয় পাকিস্তান টিলা। ফালিতাঙ্গ্যা চুগ রাঙামাটির সবচেয়ে সুউচ্চ পর্বত। এর উচ্চতা এক হাজার ৬৬৮ ফুট। এ পাহাড়ের উপর থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। একই সঙ্গে দেখা যায় ভারতের মিজোরাম রাজ্যের আইজল শহর।
১৯২৩ সালে গড়ে ওঠে বরকল উপজেলা। জনশ্রুতি আছে, কর্ণফুলী নদীর এ স্থানে একটি বিশাল ঝরনা ছিল। এ ঝরনার পানি পড়ার শব্দ অনেক দূর থেকে শোনা যেত। দূর থেকে পানি পড়ার এ শব্দ শুনে মনে হতো, কোনো বড় যন্ত্র বা কলের শব্দ হচ্ছে। এ কারণে স্থানীয় আদিবাসীরা এর নাম দেয় বড়কল। তবে ১৯৬০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের কারণে বরকলের সর্ববৃহৎ এ ঝরনাটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। বরকল যেতে হলে অবশ্যই রাতে থাকার প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হবে। রাঙামাটি শহর থেকে ইঞ্জিনচালিত বোট ভাড়া করে এখানে আসতে হবে।
অপরদিকে বরকল সদরের পূর্বদিকে রয়েছে সীমান্তবর্তী থেগামুখ। বর্তমান সরকার এখানে স্থলবন্দর গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। থেগামুখ যেতে হলে কর্ণফুলী নদীর উজান দিয়ে যেতে হয়। যাওয়ার সময় নদীর দু'তীরে প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং পাহাড় থেকে জলীয় বাষ্প উড়ে যাওয়ার দৃশ্য যে কাউকেই বিমোহিত করবে।
কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তি ভারতের লুসাই পাহাড়ের পাদদেশ থেকে। এ নদীর দু'পাশে রয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের মনকাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। নদীর দু'ধারে রয়েছে সহজ-সরল জীবন যাপন করা আদিবাসী। কর্ণফুলী নদীর একপাশে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জেলে, অন্যপাশে ভারতীয় পতাকাবাহী জেলেদের দেখা যাবে মাছ ধরতে। যেন একই সুতোয় বাঁধা জীবন ঘুরপাক খাচ্ছে নদীর নীল জলে।
এছাড়া আসাম বস্তি-কাপ্তাই হ্রদ সড়কটি চালু হওয়ার পর এটিও বাড়িয়েছে রাঙামাটির সৌন্দর্য। এ সড়ক দিয়ে যেতে চোখে পড়বে আদিবাসী গ্রামসহ উঁচু-নিচু পাহাড় ও কাপ্তাই হ্রদের অপরূপ দৃশ্য। আবার সড়কের আসাম বস্তি এলাকায় রয়েছে অপরূপ সেতু। বিকেলে ওই সেতুতে বসে কাপ্তাই হ্রদ ও সূর্যাস্তের দৃশ্য অবলোকনের অনুভূতিটাই অন্যরকম। এ সড়ক দিয়ে কাপ্তাই উপজেলায়ও যাওয়া যায়। সিএনজি অটোরিকশাযোগে যেতে সময় লাগবে আধা ঘণ্টা থেকে পৌনে এক ঘণ্টা। ভাড়া পড়বে সাত থেকে আটশ' টাকা। কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীর দু'পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মন পাগল করে দেবে। এখানে রয়েছে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কর্ণফুলী কাগজ কলসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট।
রাঙামাটিতে সম্ভাবনাময় অসংখ্য পর্যটন স্পট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগের অবস্থান দুর্গম এলাকায়। এর মধ্যে বাঘাইছড়ির পাবখালী অভয়ারণ্য, সাজেক ভ্যালি, বিলাইছড়ির রাইনক্ষ্যং হ্রদ বা বগা লেক, চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের ঘাগড়ার হাজাছড়ি এলাকার প্রাকৃতিক ঝরনা, মগবানের বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এলাকায় মনোরম পিকনিট স্পট অন্যতম।

বোট পাবেন যেখানে

ইঞ্জিনচালিত বোট কিংবা স্পিডবোট ভাড়া পাওয়া যায় রাঙামাটি শহরের তবলছড়ি বাজারের বোট ঘাট, রিজার্ভ বাজার, বনরূপার সমতা ঘাট ও রাজবাড়ি ঘাট এলাকায়। নতুন লোক দেখলে বোট চালকরা ভাড়া একটু বেশি দাবি করে। তাই দরদাম করে বোট ভাড়া নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সারাদিনের জন্য বোট ভাড়া নিলে এক হাজার থেকে ১ হাজার ২শ' টাকায় পাওয়া যাবে। দু'তিন ঘণ্টার জন্য এ ভাড়া হতে পারে পাঁচ-ছয়শ' টাকা।

যেখানে থাকতে পারেন

একটু নিরিবিলি পরিবেশে থাকতে চাইলে উঠতে পারেন রাঙামাটি পর্যটন মোটেলে। এখানে কেবল ডবল রুম রয়েছে। প্রতিটি রুমের জন্য ভাড়া গুনতে হবে ৮শ' টাকা। এসি ডবল রুমের ভাড়া এক হাজার ২শ' টাকা। এ ছাড়া বেসরকারি হোটেলে রাতযাপন করা যায়। এজন্য ভাড়া নিতে পারেন পৌরসভা কার্যালয়ের পাশে অবস্থিত হোটেল সুফিয়া, রিজার্ভ বাজারের গ্রিন ক্যাসেল, কলেজ গেটের মোটেল জজ কিংবা চম্পকনগরের গেস্ট হাউস বনরূপা ট্যুরিস্ট ইন। এসব হোটেলে সিঙ্গেল রুমের ভাড়া ৫শ' টাকা, ডবল রুম ৭শ' থেকে ৮শ' টাকা এবং এসি রুম এক হাজার ২শ' থেকে দেড় হাজার টাকা। এর বাইরে মাঝারি মানের হোটেলের মধ্যে রয়েছে হোটেল দিগনিটি, সমতা বোর্ডিং, হোটেল অনিকা, হোটেল আলবোমা ও হোটেল সৈকত। তবে নতুন দম্পতিদের জন্য স্মরণীয় একটি দিন হবে যদি তারা থাকতে পারেন পর্যটন কমপ্লেক্সের হানিমুন কটেজে। অনন্য শৈলীতে নির্মিত কটেজের একটি রুমের ভাড়া পড়বে এক হাজার থেকে দুই হাজার ২শ' টাকা। শীতে পর্যটক বেশি থাকার কারণে আগেভাগেই রুম বুকিং দিলে ভালো। তা না হলে রুম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাবে। অগ্রিম বুকিং দিতে যোগাযোগ করতে পারেন পর্যটন মোটেল ০৩৫১-৬৩১২৬, সুফিয়া হোটেল ০৩৫১-৬২১৪৫, গ্রিন ক্যাসেল ০৩৫১-৬১২০০, মোটেল জজ ০৩৫১-৬৩৩৪৮, বনরূপা ট্যুরিস্ট ০১৭৩২৭৩৭৫২২ নম্বরে।

No comments

Powered by Blogger.