'এই ট্রাইব্যুনাল অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানের'
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের জাতীয় কনভেনশনে অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, 'একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দায়িত্বে নিয়োজিত অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানের। যাঁরা এর সমালোচনা করছেন তাঁরা আইনের মান নিয়ে নয় বরং রাজনৈতিক কারণেই এই বিরোধিতা করছেন।'যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শুরু হওয়া চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম। এ অঙ্গীকার ঘোষণা করে সংগঠনের সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান সেনাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বীর-উত্তম বলেছেন, 'এক-দুজন নয়, সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার হতে হবে। যে পর্যন্ত একজন অপরাধীও থাকবে তত দিন আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা ক্ষান্ত হব না।' গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের জাতীয় কনভেনশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
কনভেনশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জামায়াত নেতা গোলাম আযমসহ চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
২০০৬ সালে আত্মপ্রকাশ করা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের এটি তৃতীয় জাতীয় কনভেনশন। দিনব্যাপী কনভেশনে আন্দোলনরত বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধি ও সারা দেশের শাখা সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
কনভেনশনে স্বাগত বক্তব্য দেন সেক্টর কমান্ডার এ কে এম শফিউল্লাহ বীর-উত্তম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার শপথ পাঠ করান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লে. জে. (অব.) হারুন-অর-রশীদ বীরপ্রতীক। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক হারুন হাবীব।
কনভেনশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অনন্য অবদান রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দুজন নাগরিককে সম্মাননা জানানো হয়। তাঁরা হলেন তৎকালীন এপির পাকিস্তান ব্যুরো প্রধান আরল্ড স্যানলি জেটলিন এবং বাংলাদেশের পক্ষে রাজপথে সমর্থন জানিয়ে জেল খাটা নারী সারা জোন উইলোবি।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি ও পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'একাত্তর সালে আমরা একটা ভুল করেছিলাম, আমরা ভেবেছিলাম যুদ্ধাপরাধীরা একটা শান্ত জীবন যাপন করবে। কিন্তু পরে আমাদের ভুল ভেঙেছে। তারা তাদের সেই আগের অবস্থানেই রয়ে গেছে। তাই এখন অবশ্যই তাদের বিচার করতে হবে।'
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, 'স্বাধীনতার পর ২৭ হাজার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের মধ্য থেকে এগার হাজার জনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতার এসে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন, দালাল আইনটিও বাতিল করে দিয়েছেন; এমনকি একাত্তরের ডিসেম্বরে জাতিসংঘে গিয়ে বাংলাদেশের বিরোধিতা করা শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে।' তিনি বলেন, 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে জাতি এগিয়ে যেতে পারবে না, কলঙ্কমুক্ত হবে না।' 'এই বিচার এক-দুই মাসে শেষ হওয়ার নয়' উল্লেখ করে তিনি এ ব্যাপারে সংযমী হওয়ার এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
ড. মিজানুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, জামায়াতে ইসলামী নামের একটি রাজনৈতিক দল এই বিচারকে দীর্ঘায়িত করতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। তাদের প্রচারণায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই ট্রাইব্যুনাল নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। বলা হচ্ছে, এটা নাকি আন্তর্জাতিক মানের নয়।' তিনি বলেন, 'পৃথিবীর অন্যান্য ট্রাইব্যুনালের চেয়ে অভিযুক্তদের বেশি সুবিধা দিয়েছে এই ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালে একজন (সাকা চৌ.) অভিযুক্ত সাত দফা দাবি উত্থাপন করে বলেছেন, তাঁর দাবি মানা না হলে তিনি ট্রাইব্যুনালের কাজে সহায়তা করবেন না। ন্যুরেমবার্গ, টোকিও, কম্বোডিয়া, যুগোস্লাভিয়াসহ অন্য কোনো ট্রাইব্যুনালে কেউ কি এভাবে দাবি উত্থাপন করতে পেরেছে?'
ড. মিজানুর রহমান আরো বলেন, 'ওই অভিযুক্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর এ ধরনের সাহস হয় কী করে?' তিনি প্রশ্ন তোলেন, 'ট্রাইব্যুনাল নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের আবেদন হাইকোর্টেও শুনানি হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীকে এর চেয়ে বেশি সুযোগ পৃথিবীর কোন দেশ দিয়েছে?' ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে আপিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। বিশ্বে এমন নজির আর নেই। তিনি ট্রাইব্যুনালের প্রতি আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।
ট্রাইব্যুনালকে মানসম্পন্ন নয় বলায় ইউরোপ-আমেরিকার সমালোচনা করে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, 'এবার আমরা মুক্তিযুদ্ধের ৪০তম বর্ষ উদ্যাপন করতে যাচ্ছি। জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত যে এখনো ওই যুদ্ধে আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠনকারীদের বিচার আমরা করতে পারিনি।' যুদ্ধাপরাধের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আরো গতিশীল করার আহ্বান জানান তিনি।
কনভেনশনের দ্বিতীয় অধিবেশন বসে দুপুরের পর। এতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, শহীদের সন্তান ও পেশাজীবী নেতারা বক্তব্য দেন। এর মধ্যে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিচারপতি গোলাম রব্বানী, মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম, ইসলামী গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসুদ বক্তব্য দেন। বিকেলে সংগঠনের বিভাগীয় প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। এ অধিবেশনে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের সংশোধনী ও কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করা হয়। কমিটিতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসেনি।
২০০৬ সালে আত্মপ্রকাশ করা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের এটি তৃতীয় জাতীয় কনভেনশন। দিনব্যাপী কনভেশনে আন্দোলনরত বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধি ও সারা দেশের শাখা সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
কনভেনশনে স্বাগত বক্তব্য দেন সেক্টর কমান্ডার এ কে এম শফিউল্লাহ বীর-উত্তম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার শপথ পাঠ করান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লে. জে. (অব.) হারুন-অর-রশীদ বীরপ্রতীক। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক হারুন হাবীব।
কনভেনশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অনন্য অবদান রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দুজন নাগরিককে সম্মাননা জানানো হয়। তাঁরা হলেন তৎকালীন এপির পাকিস্তান ব্যুরো প্রধান আরল্ড স্যানলি জেটলিন এবং বাংলাদেশের পক্ষে রাজপথে সমর্থন জানিয়ে জেল খাটা নারী সারা জোন উইলোবি।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি ও পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'একাত্তর সালে আমরা একটা ভুল করেছিলাম, আমরা ভেবেছিলাম যুদ্ধাপরাধীরা একটা শান্ত জীবন যাপন করবে। কিন্তু পরে আমাদের ভুল ভেঙেছে। তারা তাদের সেই আগের অবস্থানেই রয়ে গেছে। তাই এখন অবশ্যই তাদের বিচার করতে হবে।'
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, 'স্বাধীনতার পর ২৭ হাজার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের মধ্য থেকে এগার হাজার জনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতার এসে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন, দালাল আইনটিও বাতিল করে দিয়েছেন; এমনকি একাত্তরের ডিসেম্বরে জাতিসংঘে গিয়ে বাংলাদেশের বিরোধিতা করা শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে।' তিনি বলেন, 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে জাতি এগিয়ে যেতে পারবে না, কলঙ্কমুক্ত হবে না।' 'এই বিচার এক-দুই মাসে শেষ হওয়ার নয়' উল্লেখ করে তিনি এ ব্যাপারে সংযমী হওয়ার এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
ড. মিজানুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, জামায়াতে ইসলামী নামের একটি রাজনৈতিক দল এই বিচারকে দীর্ঘায়িত করতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। তাদের প্রচারণায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই ট্রাইব্যুনাল নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। বলা হচ্ছে, এটা নাকি আন্তর্জাতিক মানের নয়।' তিনি বলেন, 'পৃথিবীর অন্যান্য ট্রাইব্যুনালের চেয়ে অভিযুক্তদের বেশি সুবিধা দিয়েছে এই ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইব্যুনালে একজন (সাকা চৌ.) অভিযুক্ত সাত দফা দাবি উত্থাপন করে বলেছেন, তাঁর দাবি মানা না হলে তিনি ট্রাইব্যুনালের কাজে সহায়তা করবেন না। ন্যুরেমবার্গ, টোকিও, কম্বোডিয়া, যুগোস্লাভিয়াসহ অন্য কোনো ট্রাইব্যুনালে কেউ কি এভাবে দাবি উত্থাপন করতে পেরেছে?'
ড. মিজানুর রহমান আরো বলেন, 'ওই অভিযুক্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর এ ধরনের সাহস হয় কী করে?' তিনি প্রশ্ন তোলেন, 'ট্রাইব্যুনাল নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের আবেদন হাইকোর্টেও শুনানি হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীকে এর চেয়ে বেশি সুযোগ পৃথিবীর কোন দেশ দিয়েছে?' ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে আপিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। বিশ্বে এমন নজির আর নেই। তিনি ট্রাইব্যুনালের প্রতি আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।
ট্রাইব্যুনালকে মানসম্পন্ন নয় বলায় ইউরোপ-আমেরিকার সমালোচনা করে অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, 'এবার আমরা মুক্তিযুদ্ধের ৪০তম বর্ষ উদ্যাপন করতে যাচ্ছি। জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত যে এখনো ওই যুদ্ধে আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠনকারীদের বিচার আমরা করতে পারিনি।' যুদ্ধাপরাধের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আরো গতিশীল করার আহ্বান জানান তিনি।
কনভেনশনের দ্বিতীয় অধিবেশন বসে দুপুরের পর। এতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, শহীদের সন্তান ও পেশাজীবী নেতারা বক্তব্য দেন। এর মধ্যে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিচারপতি গোলাম রব্বানী, মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম, ইসলামী গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসুদ বক্তব্য দেন। বিকেলে সংগঠনের বিভাগীয় প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। এ অধিবেশনে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের সংশোধনী ও কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করা হয়। কমিটিতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসেনি।
No comments