স্বভাবসুলভ বাংলাদেশ by অন্তরীপ রায়
সিরিজ শুরু হতে না হতেই পালের হাওয়া কেড়ে নিয়েছে পাকিস্তান। একমাত্র টি২০তে বাজে হার। ওয়ানডেতে নতজানু হয়ে আত্মসমর্পণ_ সব মিলিয়ে বিজয়ের মাসে কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের সময় থেকেই বলা যায়। কিন্তু এত দূরেও যাওয়ার দরকার নেই। বরং অতিসম্প্রতি শেষ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের অভিজ্ঞতা থেকেই উদাহরণ টানতে পারি আমরা। যদিও ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স এমন জঘন্য ছিল না।
একমাত্র টি২০ ম্যাচ জিতে সিরিজ শুরু করেছিল মুশফিকরা। এরপর চট্টগ্রামে ওয়ানডে জয়। এবং প্রথম টেস্টে সমীহ জাগানো পারফরম্যান্স মিলিয়ে ড্যারেন স্যামির দলের বিরুদ্ধে লাল-সবুজের সম্মান অক্ষুণ্ন ছিল। মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের ভাবোন্মত্ত ব্যাটিংয়ে সেই সম্মান কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়। ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সম্মান পুনরুদ্ধার হবে_ এমনটাই আশা করেছিল সমর্থকরা। কিন্তু সিরিজ শুরু হতে না হতেই আশায় গুড়েবালি। উল্টো শঙ্কা হচ্ছে বাংলাদেশ টি২০, ওয়ানডে এবং টেস্টে হোয়াইটওয়াশ বাঁচাতে পারবে তো!
শুরুতেই যে বলা হলো বাংলাদেশের কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না সেই বিশ্বকাপ থেকেই। তো বেঠিক ব্যাপারগুলোর কিছু নমুনা দেওয়া যাক। নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের, ইংল্যান্ডকে অসাধারণভাবে হারানোর ঘটনাটা। কী দারুণ ম্যাচটাই না বের করে নিয়েছিল আমাদের টেলএন্ডাররা। কিন্তু তার আগেই ঘটেছিল ৫৮ রানের লজ্জাকর মুহূর্ত। দুটো ঘটনা পাশাপাশি বলার কারণ বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের গতি-প্রকৃতি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছিল ওই পারফরম্যান্সে। অনেকটা জোয়ার-ভাটার মতো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রানের লজ্জা যদি ভাটার টান হয় জোয়ারের উচ্ছ্বাস তাহলে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়। সর্বশেষ সিরিজেও স্বভাবসুলভ পারফরম্যান্স করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও সেটা অক্ষুণ্ন থাকবে বলেই আমরা আশাবাদী।
অর্থাৎ বাজে শুরুর পরও বাংলাদেশ হয়তো নিজেদের চেনাতে পারবে। সর্বশেষ ম্যাচে একটু হলেও তার আভাস দিতে পেরেছে মুশফিকুর রহিমের দল। ৯১ রানে অল আউট হওয়ার পর সামান্য এই রান তুলতে পাকিস্তানকে ৫ উইকেট হারাতে হয়। এ লেখা যখন পড়ছেন তখন আরও একটা ওয়ানডে শেষ। পাকিস্তান হয়তো ওয়ানডে সিরিজও জিতে নিয়েছে। কিন্তু তখনও একটি ওয়ানডে এবং টেস্ট সিরিজ বাকি। বাংলাদেশের স্বভাবসুলভ ক্রিকেট প্রদর্শনীর জন্য তা-ই যথেষ্ট।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ভালো করার জন্য পেছন ফিরে তাকাতে পারে বাংলাদেশ। সর্বশেষ মুলতান টেস্টের সেই অতীতের পাতা উল্টালে তাদের উপকারই হবে। টেস্ট যে এত রোমান্স, তর্ক-বিতর্ক, ক্ষোভ, আক্ষেপের জন্ম দিতে পারে, আট বছর আগে মুলতানে পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ না দেখে থাকলে বোঝা কঠিন।
প্রথম ইনিংসে ২৮১ রান তুলে পাকিস্তানকে ১৭৫ রানে বেঁধে ফেলে হাবিবুল বাশাররা। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৪ রান তুলেও খালেদ মাহমুদ-মোহাম্মদ রফিকের মিডিয়াম পেস-স্পিনের যুগলবন্দিতে জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করে সফরকারীরা। পরে বাংলাদেশের সে স্বপ্ন ইনজামাম-উল হকের দৃষ্টিনন্দন সেঞ্চুরিতে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। তবে ১ উইকেটের হারের চেয়ে বাংলাদেশের ক্ষোভের কারণ ছিল শ্রীলংকান আম্পায়ার অশোকা ডি সিলভার প্রশ্নবিদ্ধ একাধিক সিদ্ধান্ত। অলক কাপালির মাটিতে পড়া বল গ্গ্নাভসবন্দি করে পাকিস্তানের তৎকালীন উইকেটকিপার রশিদ লতিফের অক্রিকেটীয় আচরণের নিন্দা করেছিল সবাই। কাকতালীয়ভাবে ওই টেস্টেই কিন্তু অভিষেক সালমান বাটের! যিনি সেবার কোনো কীর্তি (পড়ূন কুকীর্তি) না গড়লেও লর্ডস টেস্টে 'স্পট ফিক্সিং' করে বর্তমানে জেলবন্দি! অন্যদিকে বাংলাদেশ আজও বয়ে চলছে মুলতান টেস্টের সেই পুরনো ক্ষত। মুশফিক-সাকিব-তামিমরা পুরনো সে ক্ষততে কি প্রলেপ বোলাতে পারবেন?
অতীত পরিসংখ্যানে অবশ্য আশাবাদী হওয়ার কারণ নেই। টেস্ট, ওয়ানডে, টি২০_ সব পরিসংখ্যানই যাচ্ছেতাই। এ পর্যন্ত মুখোমুখি ৬ টেস্টে পাকিস্তান সবগুলোতেই জয়ী। দু'বার বাংলাদেশ যথাক্রমে ০-২ ও ০-৩-এ হোয়াইটওয়াশ। বাকি ১টি হার এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। ২৭ ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের অর্জন যৎসামান্য। ২৬ হারের বিপরীতে মাত্র ১টি জয়। '৯৯ বিশ্বকাপে সাউদাম্পটনে পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়েছিল টাইগাররা। তখনও ওয়ানডে স্ট্যাটাস পায়নি বাংলাদেশ। আর টি২০তে পাঁচবারের মোকাবেলায় বাংলাদেশ একবারও পাকিস্তানকে হারাতে পারেনি। সব ক'টিতেই হেরেছে। এমন রেকর্ড নিয়েই জঘন্যভাবে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। তা ছাড়া সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে মিসবাহ-উল হকের দল দারুণ ধারাবাহিক। তাদের বোলিং বৈচিত্র্য ঈর্ষণীয় পর্যায়ে। বিজয়ের মাসে বাংলাদেশ স্বভাবসুলভ ক্রিকেট খেলতে পারবে তো। গত ম্যাচগুলোর মতো মাথানত ক্রিকেট নয়, লড়াকু ক্রিকেট দেখার প্রত্যাশায় সমর্থকরা।
শুরুতেই যে বলা হলো বাংলাদেশের কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না সেই বিশ্বকাপ থেকেই। তো বেঠিক ব্যাপারগুলোর কিছু নমুনা দেওয়া যাক। নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের, ইংল্যান্ডকে অসাধারণভাবে হারানোর ঘটনাটা। কী দারুণ ম্যাচটাই না বের করে নিয়েছিল আমাদের টেলএন্ডাররা। কিন্তু তার আগেই ঘটেছিল ৫৮ রানের লজ্জাকর মুহূর্ত। দুটো ঘটনা পাশাপাশি বলার কারণ বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের গতি-প্রকৃতি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছিল ওই পারফরম্যান্সে। অনেকটা জোয়ার-ভাটার মতো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রানের লজ্জা যদি ভাটার টান হয় জোয়ারের উচ্ছ্বাস তাহলে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়। সর্বশেষ সিরিজেও স্বভাবসুলভ পারফরম্যান্স করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও সেটা অক্ষুণ্ন থাকবে বলেই আমরা আশাবাদী।
অর্থাৎ বাজে শুরুর পরও বাংলাদেশ হয়তো নিজেদের চেনাতে পারবে। সর্বশেষ ম্যাচে একটু হলেও তার আভাস দিতে পেরেছে মুশফিকুর রহিমের দল। ৯১ রানে অল আউট হওয়ার পর সামান্য এই রান তুলতে পাকিস্তানকে ৫ উইকেট হারাতে হয়। এ লেখা যখন পড়ছেন তখন আরও একটা ওয়ানডে শেষ। পাকিস্তান হয়তো ওয়ানডে সিরিজও জিতে নিয়েছে। কিন্তু তখনও একটি ওয়ানডে এবং টেস্ট সিরিজ বাকি। বাংলাদেশের স্বভাবসুলভ ক্রিকেট প্রদর্শনীর জন্য তা-ই যথেষ্ট।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ভালো করার জন্য পেছন ফিরে তাকাতে পারে বাংলাদেশ। সর্বশেষ মুলতান টেস্টের সেই অতীতের পাতা উল্টালে তাদের উপকারই হবে। টেস্ট যে এত রোমান্স, তর্ক-বিতর্ক, ক্ষোভ, আক্ষেপের জন্ম দিতে পারে, আট বছর আগে মুলতানে পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ না দেখে থাকলে বোঝা কঠিন।
প্রথম ইনিংসে ২৮১ রান তুলে পাকিস্তানকে ১৭৫ রানে বেঁধে ফেলে হাবিবুল বাশাররা। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৪ রান তুলেও খালেদ মাহমুদ-মোহাম্মদ রফিকের মিডিয়াম পেস-স্পিনের যুগলবন্দিতে জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করে সফরকারীরা। পরে বাংলাদেশের সে স্বপ্ন ইনজামাম-উল হকের দৃষ্টিনন্দন সেঞ্চুরিতে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। তবে ১ উইকেটের হারের চেয়ে বাংলাদেশের ক্ষোভের কারণ ছিল শ্রীলংকান আম্পায়ার অশোকা ডি সিলভার প্রশ্নবিদ্ধ একাধিক সিদ্ধান্ত। অলক কাপালির মাটিতে পড়া বল গ্গ্নাভসবন্দি করে পাকিস্তানের তৎকালীন উইকেটকিপার রশিদ লতিফের অক্রিকেটীয় আচরণের নিন্দা করেছিল সবাই। কাকতালীয়ভাবে ওই টেস্টেই কিন্তু অভিষেক সালমান বাটের! যিনি সেবার কোনো কীর্তি (পড়ূন কুকীর্তি) না গড়লেও লর্ডস টেস্টে 'স্পট ফিক্সিং' করে বর্তমানে জেলবন্দি! অন্যদিকে বাংলাদেশ আজও বয়ে চলছে মুলতান টেস্টের সেই পুরনো ক্ষত। মুশফিক-সাকিব-তামিমরা পুরনো সে ক্ষততে কি প্রলেপ বোলাতে পারবেন?
অতীত পরিসংখ্যানে অবশ্য আশাবাদী হওয়ার কারণ নেই। টেস্ট, ওয়ানডে, টি২০_ সব পরিসংখ্যানই যাচ্ছেতাই। এ পর্যন্ত মুখোমুখি ৬ টেস্টে পাকিস্তান সবগুলোতেই জয়ী। দু'বার বাংলাদেশ যথাক্রমে ০-২ ও ০-৩-এ হোয়াইটওয়াশ। বাকি ১টি হার এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। ২৭ ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের অর্জন যৎসামান্য। ২৬ হারের বিপরীতে মাত্র ১টি জয়। '৯৯ বিশ্বকাপে সাউদাম্পটনে পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়েছিল টাইগাররা। তখনও ওয়ানডে স্ট্যাটাস পায়নি বাংলাদেশ। আর টি২০তে পাঁচবারের মোকাবেলায় বাংলাদেশ একবারও পাকিস্তানকে হারাতে পারেনি। সব ক'টিতেই হেরেছে। এমন রেকর্ড নিয়েই জঘন্যভাবে সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। তা ছাড়া সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে মিসবাহ-উল হকের দল দারুণ ধারাবাহিক। তাদের বোলিং বৈচিত্র্য ঈর্ষণীয় পর্যায়ে। বিজয়ের মাসে বাংলাদেশ স্বভাবসুলভ ক্রিকেট খেলতে পারবে তো। গত ম্যাচগুলোর মতো মাথানত ক্রিকেট নয়, লড়াকু ক্রিকেট দেখার প্রত্যাশায় সমর্থকরা।
No comments