চট্টগ্রাম সমিতির শতবর্ষ উপলক্ষে মেজবান-'বদ্দা ক্যান আছন? বাড়ির বেয়াগগুন ভালা আছে নি?' by শরীফা বুলবুল

দ্দিন পর দেহা! বদ্দা, ক্যান আছন? বাড়ির বেয়াগগুন ভালা আছে নি? শরীরগান এককানা ভালা আছে নি? অর্থাৎ বহু দিন পর দেখা! বড় ভাই কেমন আছেন? বাড়ির সবাই ভালো আছে তো? শরীরটা একটু ভালো আছে তো?' এভাবেই একে অন্যের কুশল বিনিময় করছিলেন চট্টগ্রাম সমিতির শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত মেজবানে।এমনকি অনুষ্ঠানের আলোচকদের কথায়ও উঠে আসে চট্টগ্রামের ভাষা। 'অভাগিনীর দুঃখর হতা হবি বন্ধুরে, ওরে কর্ণফুলী রে


সাক্ষী রাখিলাম তোরে' এসব গানের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পীরাও গাইলেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক গান। এক বক্তা বললেন, 'আজকের মেজবানের মসলাপাতিও চট্টগ্রাম থেকে আনা হয়েছে।'
গতকাল শনিবার সকাল থেকেই ধানমণ্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেঙ্ প্রাঙ্গণে দল-মত-নির্বিশেষে সবার প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে মেজবান যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। জাতীয় পার্টির সভাপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, 'মেজবান ঐক্যের প্রতীক। চট্টগ্রামের মানুষ হৃদয়বান। চট্টগ্রামের এই আদলের মেজবান দেশের আর কোথাও হয় না। ক্ষমতায় গেলে আমি চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করব।'
সাবেক মন্ত্রী মোর্শেদ খান মঞ্চে উঠেই বলতে শুরু করলেন, 'অনরা বেয়াগগুন ভালা আছন নি? চাটগাইয়া যারা আজিয়া এডে মেলাত আইসসন তারা বেয়াগগুনুরে সালাম জানাই। সামনের লাইনত যারা যারা বইসসন তারা বেয়াগগুন হানা হাইয়ন নি?' তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, 'আঁরা চট্টগ্রামরে বিশ্বমানর শর গড়ি তুলিবার স্বপ্ন দেহি।'
প্রাথমিক ও গণশিক্ষাবিষয়ক মন্ত্রী আফছারুল আমীন বলেন, 'আঁরা চিটাইংগ্যা, চাটগাইয়া হইতে শরম লাগে। সংকীর্ণমনা এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।'
পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বললেন, 'আমি আওয়ামী লীগ নেতা-মন্ত্রী হয়ে আজকের এই মেজবানে আসিনি। লায়লা সিদ্দিকীর জামাই হিসেবে এসেছি।'
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন বাবলু, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, মোসলেম উদ্দিন, সিডিএ চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সমিতির সহসভাপতি লায়লা সিদ্দিকী। শতবর্ষ পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান, গুণীজনদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও সম্মানী চেক প্রদান করা হয়। ১৯১২ সালে কলকাতায় চট্টগ্রাম সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। বছরজুড়েই নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ বছর উদ্যাপন করা হচ্ছে সমিতির শতবর্ষ পূর্তি। শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে 'চট্টল শিখা' নামে বিশেষ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.