২০১৩ সালের মধ্যেই গ্রিনফান্ডের অর্থ চেয়েছে বাংলাদেশ-বিক্ষোভের নগরী ডারবান
ডারবানের সুবিশাল আইসিসি সেন্টারে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ আর দরকষাকষি। বৈঠক বা সভাস্থলে কোলাহলমুখর কক্ষগুলোতে চলছে ১৯৪ দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিদের নানামাত্রিক বক্তৃতা-বিবৃতি। আর সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে চলছে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীদের তীব্র বিক্ষোভ। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর নেতৃত্বে থাকা বাংলাদেশ ২০১৩ সাল থেকেই ২০২০ সাল পর্যন্ত গ্রিনফান্ড থেকে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার দাবি
করেছে গতকাল। একই সঙ্গে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য অ্যাডাপটেশন ও মিটিগ্রেশন ফান্ডে ৫০ ভাগ করে অর্থ চেয়েছে বাংলাদেশ।\বন্দরনগরী ডারবান এখন বিক্ষোভের শহরে পরিণত হয়েছে। জলবায়ু মিছিলে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমেছে। ভোর থেকে বিক্ষোভকারীরা সম্মেলন কেন্দ্রের আশপাশে অবস্থান নিচ্ছে। দিনভর শত শত মিছিল, কানফাটা ভুঁভুঁজেলার শব্দ আর পুলিশের উপস্থিতিতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বিমান টহল ও রাস্তায় পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। গতকাল শনিবার শান্তিপূর্ণ মিছিল থেকে ২৩ বিক্ষোভকারীকে পুলিশ আটক করেছে বলে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছে। সম্মেলন কেন্দ্রের আশপাশে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার কর্মী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। কিয়োটো প্রটোকলের ধারাবাহিকতা রক্ষা, গ্রিন ফান্ড গঠন, কার্বন নিঃসরণ কমাতে একটি আইনগত চুক্তিতে পেঁৗছার দাবিতে বিক্ষোভকারীরা সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদের কাছে প্রচারপত্র বিলি করছে। বিক্ষোভকারীরা ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে 'চুক্তি করো, কিয়োটো প্রটোকল বাঁচাও, জলবায়ু তহবিলে বিশ্বব্যাংককে চাই না, পৃথিবী ধ্বংস করছে বিশ্বব্যাংক, কার্বন নিঃসরণ কমাও' ইত্যাদি স্লোগান দেয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা জলবায়ু তহবিলের ব্যবস্থাপনায় বিশ্বব্যাংককে রাখতে উন্নত দেশগুলোর চেষ্টার নিন্দা জানান। জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনার নামে যে কোনো ঋণের বিরোধিতা করেন বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের ইকুইটি বিডির প্রধান সঞ্চালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জলবায়ু তহবিলের অর্থায়নে বহুজাতিক ঋণ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করা মেনে নেওয়া যায় না। আফ্রিকার নিলুইমা জানান, তারা আফ্রিকায় কিয়োটো প্রটোকলের কবর হতে দিতে চান না, তাই বিশ্বনেতাদের একটি সমঝোতায় আসার আহ্বান জানাচ্ছেন। জার্মানির উবল্টু জানান, বিশ্বকে বাঁচাতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর দাবিতে তারা বিক্ষোভ করছেন। সম্মেলন কেন্দ্রের ভেতর ও বাইরে আলোচনা আর মিছিলের ঝড় উঠলেও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রত্যাশিত তহবিলের বিষয়টি এখনও অস্পষ্ট। এদিকে সম্মেলনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে বিশ্বনেতারা ডারবানে জড়ো হতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ১৩০ দেশের মন্ত্রী ও ১২টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা ডারবানে পেঁৗছেছেন। আজ রোববার বাংলাদেশের পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও সম্মেলনে অংশ নেবেন।
গতকাল শনিবার সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষে বাংলাদেশ ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে। দীর্ঘদিন ধরে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর নেতৃত্বে রয়েছে বাংলাদেশ। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাউল আলম সমকালকে বলেন, ২০২০ সাল পর্যন্ত বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার ফান্ডের অর্থ ২০১৩ সাল থেকে শুরু করা ও পুরো তহবিলের অর্থ অ্যাডাপটেশন ও মিটিগ্রেশনে সমান অর্ধেক হারে খরচের দাবি জানানো হয়েছে। ফান্ডের অর্থ ঋণ হিসেবে নয়, ইউএনএফসিসির মাধ্যমে বিতরণের দাবিও জানানো হয়েছে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আনসারুল করিম সমকালকে বলেন, আশা করা যাচ্ছে গ্রিন ফান্ডের বিষয়ে দু'একদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। ইউএনএফসিসির সেক্রেটারি ক্রিস্টিনা ফিগুরেরাও এক সংবাদ সম্মেলনে ডারবানে গ্রিন ফান্ড নিয়ে দ্রুত সুখবর আসছে বলে জানান। তিনি আরও বলেন, দু'একটি দেশের মৃদু আপত্তিতে সিদ্ধান্তে পেঁৗছা যাচ্ছে না। তবে আমরা এখনও আশা ছেড়ে দিইনি। অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। গ্রিন ফান্ডের বিষয়ে আফ্রিকান ও জি-৭৭ চায়না গ্রুপের সদস্যরা বলেছেন, আলোচনায় এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়েই গেছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মঞ্জুরুল হান্নান খান সমকালকে বলেন, জলবায়ু তহবিলের প্রাপ্তি ও কিয়োটো প্রটোকল নিয়ে ডারবানে বাংলাদেশ বেশ সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লস ও ডেমেজ বিষয়ে সম্মেলনে বাংলাদেশ কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কয়েকটি প্রস্তাব গৃহীতও হয়েছে। তাৎক্ষণিক ফান্ড হিসেবে গঠিত এ তহবিল থেকে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দ্রুত অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
জলবায়ু শরণার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি : বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের পরোক্ষ ফল হিসেবে উদ্বাস্তুর সংখ্যা বাড়ছে। তাই এ অবস্থা প্রতিরোধে দ্রুত টেকসই পরিকল্পনা নির্ধারণে জাতিসংঘের মাধ্যমে একটি নতুন চুক্তি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। গতকাল ডারবানে জলবায়ু শরণার্থী নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে সিএসআরএল, জুবলি সাউথ, কোস্ট ট্রাস্ট ও ইকুইটিবিডি। ড. আহসান উদ্দিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গোলাম রব্বানী। সেমিনারে বক্তারা জলবায়ু রাজনীতিতে বড় দেশগুলোর বিরুদ্ধে ছোট দেশের অধিকার খর্বের অভিযোগ এনে বলেন, উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। অন্যদিকে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জোট এ ক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না। সে কারণেই বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে। এমনকি কিয়োটো প্রটোকল মেনে চলার অঙ্গীকার অথবা অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার অঙ্গীকারও রক্ষা না করার দিকে যাচ্ছে শিল্পোন্নত দেশগুলো।
গতকাল শনিবার সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষে বাংলাদেশ ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে। দীর্ঘদিন ধরে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর নেতৃত্বে রয়েছে বাংলাদেশ। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাউল আলম সমকালকে বলেন, ২০২০ সাল পর্যন্ত বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার ফান্ডের অর্থ ২০১৩ সাল থেকে শুরু করা ও পুরো তহবিলের অর্থ অ্যাডাপটেশন ও মিটিগ্রেশনে সমান অর্ধেক হারে খরচের দাবি জানানো হয়েছে। ফান্ডের অর্থ ঋণ হিসেবে নয়, ইউএনএফসিসির মাধ্যমে বিতরণের দাবিও জানানো হয়েছে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আনসারুল করিম সমকালকে বলেন, আশা করা যাচ্ছে গ্রিন ফান্ডের বিষয়ে দু'একদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। ইউএনএফসিসির সেক্রেটারি ক্রিস্টিনা ফিগুরেরাও এক সংবাদ সম্মেলনে ডারবানে গ্রিন ফান্ড নিয়ে দ্রুত সুখবর আসছে বলে জানান। তিনি আরও বলেন, দু'একটি দেশের মৃদু আপত্তিতে সিদ্ধান্তে পেঁৗছা যাচ্ছে না। তবে আমরা এখনও আশা ছেড়ে দিইনি। অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। গ্রিন ফান্ডের বিষয়ে আফ্রিকান ও জি-৭৭ চায়না গ্রুপের সদস্যরা বলেছেন, আলোচনায় এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়েই গেছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মঞ্জুরুল হান্নান খান সমকালকে বলেন, জলবায়ু তহবিলের প্রাপ্তি ও কিয়োটো প্রটোকল নিয়ে ডারবানে বাংলাদেশ বেশ সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লস ও ডেমেজ বিষয়ে সম্মেলনে বাংলাদেশ কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কয়েকটি প্রস্তাব গৃহীতও হয়েছে। তাৎক্ষণিক ফান্ড হিসেবে গঠিত এ তহবিল থেকে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দ্রুত অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
জলবায়ু শরণার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি : বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের পরোক্ষ ফল হিসেবে উদ্বাস্তুর সংখ্যা বাড়ছে। তাই এ অবস্থা প্রতিরোধে দ্রুত টেকসই পরিকল্পনা নির্ধারণে জাতিসংঘের মাধ্যমে একটি নতুন চুক্তি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। গতকাল ডারবানে জলবায়ু শরণার্থী নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে সিএসআরএল, জুবলি সাউথ, কোস্ট ট্রাস্ট ও ইকুইটিবিডি। ড. আহসান উদ্দিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গোলাম রব্বানী। সেমিনারে বক্তারা জলবায়ু রাজনীতিতে বড় দেশগুলোর বিরুদ্ধে ছোট দেশের অধিকার খর্বের অভিযোগ এনে বলেন, উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। অন্যদিকে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জোট এ ক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না। সে কারণেই বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে। এমনকি কিয়োটো প্রটোকল মেনে চলার অঙ্গীকার অথবা অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার অঙ্গীকারও রক্ষা না করার দিকে যাচ্ছে শিল্পোন্নত দেশগুলো।
No comments