স্মরণ-মো. আজিজুর রহমান এমএনএ
হুব পথ অতিক্রম করে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে যান। সেখানে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অন্যতম ভাবশিষ্য হিসেবে ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন এবং কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের বেকার হোস্টেলে অবস্থানকালীন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহচর হিসেবে কাজ করেন।
১৯৭১ সালের আগস্টে তিনি মুজিবনগর সরকার কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধের সমগ্র ৭ এবং ৬ নম্বর সেক্টরের অর্ধেক অঞ্চলের জন্য লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদায় সিভিল অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারের পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন (তথ্যসূত্র : ৩০ আগস্ট, ১৯৭১ সালে জেনারেল ওসমানী স্বাক্ষরিত মুজিবনগর সরকারের জারি করা গোপন পরিপত্র নং : ০০০৯জি/২)। লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদায় সিভিল অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজার হিসেবে তাঁর সদর দপ্তর ছিল ভারতের পশ্চিম দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত তরঙ্গপুরে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের ৭ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার। সে সময় তাঁর সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দিনাজপুরের তৎকালীন তরুণ সাংবাদিক বারী। বারীর বক্তব্য মতে, মুক্তিযুদ্ধের ৭ নম্বর সেক্টরের প্রথম কমান্ডার মেজর নাজমুল হক ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে জলপাইগুড়িতে গাড়ি দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করলে তৎকালীন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল নুরুজ্জামান ৭ নম্বর সেক্টরের লেফটেন্যাট পদমর্যাদার সিভিল অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজার হিসেবে মো. আজিজুর রহমান এমএনের কাছে তাঁর পরিচয়পত্র তুলে ধরে তাঁর কাছে রিপোর্ট করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের এই অকুতোভয় নেতা মিত্র বাহিনীর অগ্রগামী বাহিনীর সঙ্গে ৪ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও মুক্ত করেন।
স্বাধীনতা-উত্তর ১৯৭২ সালে এমসিএ (কনস্টিটিউশনাল অ্যাসেম্বলি অব বাংলাদেশ) হিসেবে সংবিধান প্রণয়নে নিয়োজিত হন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ১৬৭ জন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) এবং ৩০০ জন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) মিলিয়ে সংবিধান তৈরি করার প্রত্যয়ে এমসিএ (কনস্টিটিউশনাল অ্যাসেম্বলি অব বাংলাদেশ) হিসেবে মর্যাদা লাভ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে অবিভক্ত বাংলা মুসলিম ছাত্রসংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক। এরপর ১৯৪৪ সালে ডিস্টিংশনসসহ (সব বিষয়ে ৮৫ শতাংশ নম্বর) তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। ১৯৪৮ সালে দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন। ১৯৫০ সালে আইনজীবী হিসেবে দিনাজপুর বার কাউন্সিলে যোগদান করে বৃহত্তর দিনাজপুর জেলায় ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্ব দান করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রট সরকার প্রতিষ্ঠার নির্বাচনে ঘোড়াঘাট থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত অক্লান্তভাবে সাংগঠনিক পরিশ্রম করেন। মানুষের মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগাতে তিনি বৃহত্তর দিনাজপুর জেলায় ১৯৫৫ সালে সাপ্তাহিক আওয়াজ নামে সর্বপ্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনি সম্পাদক ও মালিক হিসেবে এ পত্রিকার মাধ্যমে শক্তিশালী ভূমিকা রাখেন (তথ্য : দিনাজপুরের ইতিহাস সমগ্র। খণ্ড নং ৫। মেহরাব আলী। পৃষ্ঠা নং : ২৫৫ ও ৫৮২)। ১৯৫৭ সাল। ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি কাগমারি সাংস্কৃতিক সম্মেলনে যোগদান করেন এবং সেই সম্মেলনে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় মিলিত হন। তিনি ১৯৬০ সালের জুন থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। কিন্তু ছয় দফা ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে জেনারেল আইয়ুবের জেল-জুলুমের ভয়ে রাজপথ থেকে যখন বেশির ভাগ নেতাই সরে দাঁড়িয়েছেন, তখন মো. আজিজুর রহমান মাথায় গ্রেপ্তারের হুলিয়া নিয়েও জনতার অকুতোভয় সৈনিকের মতো গুটিকয় নেতা-কর্মী নিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি (দৃশ্যত কার্যকর সভাপতি) হিসেবে রুখে দাঁড়ান। বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা বার কাউন্সিলের সভাপতি এবং রাজনীতিবিদ ১৯৬৮ ও ১৯৭০ সালে পরপর দুবার বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের ৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতীয়তাবাদের সংগ্রামের অন্যতম কাণ্ডারি মো. আজিজুর রহমান তাঁর ঘাসিপাড়ার ভাড়াবাড়িতে নিভৃতে বিনা চিকিৎসায় ইন্তেকাল করেন।
ম. হাবিব
স্বাধীনতা-উত্তর ১৯৭২ সালে এমসিএ (কনস্টিটিউশনাল অ্যাসেম্বলি অব বাংলাদেশ) হিসেবে সংবিধান প্রণয়নে নিয়োজিত হন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ স্বাধীন হলে ১৬৭ জন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) এবং ৩০০ জন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) মিলিয়ে সংবিধান তৈরি করার প্রত্যয়ে এমসিএ (কনস্টিটিউশনাল অ্যাসেম্বলি অব বাংলাদেশ) হিসেবে মর্যাদা লাভ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে অবিভক্ত বাংলা মুসলিম ছাত্রসংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক। এরপর ১৯৪৪ সালে ডিস্টিংশনসসহ (সব বিষয়ে ৮৫ শতাংশ নম্বর) তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। ১৯৪৮ সালে দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন। ১৯৫০ সালে আইনজীবী হিসেবে দিনাজপুর বার কাউন্সিলে যোগদান করে বৃহত্তর দিনাজপুর জেলায় ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্ব দান করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রট সরকার প্রতিষ্ঠার নির্বাচনে ঘোড়াঘাট থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত অক্লান্তভাবে সাংগঠনিক পরিশ্রম করেন। মানুষের মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগাতে তিনি বৃহত্তর দিনাজপুর জেলায় ১৯৫৫ সালে সাপ্তাহিক আওয়াজ নামে সর্বপ্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনি সম্পাদক ও মালিক হিসেবে এ পত্রিকার মাধ্যমে শক্তিশালী ভূমিকা রাখেন (তথ্য : দিনাজপুরের ইতিহাস সমগ্র। খণ্ড নং ৫। মেহরাব আলী। পৃষ্ঠা নং : ২৫৫ ও ৫৮২)। ১৯৫৭ সাল। ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি কাগমারি সাংস্কৃতিক সম্মেলনে যোগদান করেন এবং সেই সম্মেলনে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় মিলিত হন। তিনি ১৯৬০ সালের জুন থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। কিন্তু ছয় দফা ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে জেনারেল আইয়ুবের জেল-জুলুমের ভয়ে রাজপথ থেকে যখন বেশির ভাগ নেতাই সরে দাঁড়িয়েছেন, তখন মো. আজিজুর রহমান মাথায় গ্রেপ্তারের হুলিয়া নিয়েও জনতার অকুতোভয় সৈনিকের মতো গুটিকয় নেতা-কর্মী নিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি (দৃশ্যত কার্যকর সভাপতি) হিসেবে রুখে দাঁড়ান। বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা বার কাউন্সিলের সভাপতি এবং রাজনীতিবিদ ১৯৬৮ ও ১৯৭০ সালে পরপর দুবার বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের ৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতীয়তাবাদের সংগ্রামের অন্যতম কাণ্ডারি মো. আজিজুর রহমান তাঁর ঘাসিপাড়ার ভাড়াবাড়িতে নিভৃতে বিনা চিকিৎসায় ইন্তেকাল করেন।
ম. হাবিব
No comments