বেদখল হওয়া হাবিবুর রহমান হল উদ্ধার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল হয়ে যাওয়া ১২টি হলের অন্যতম ড. হাবিবুর রহমান হল। গতকাল সোমবার সেটি দখলে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সকাল ১১টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল-আমিন ও কোতোয়ালি জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার রাজীব আল মাসুদ উপস্থিত থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হলটি বুঝিয়ে দেন।
হল উদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শওকত জাহাঙ্গীর, হল উদ্ধার কমিটির সভাপতি ড. নুরুল মোমেন, ভারপ্রাপ্ত প্ররক্ষক অশোক কুমার সাহা, ছাত্রলীগের নেতা-কমী, বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে হলটি তাঁরা দখলে নেবেন। তাঁর ঘোষণার এক দিন পরই গতকাল ড. হাবিবুর রহমান হল দখলে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হল উদ্ধারের ফলে ছাত্রী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। মিষ্টিও বিতরণ করেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে এক আইনের মাধ্যমে জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। ওই আইনের ২৭(৪) ধারা বাতিল ও কলেজ আমলের বেদখল হওয়া ১২টি হল উদ্ধারের জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে টানা চার দিন আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত বুধবার দুর্গাপূজার আগাম ছুটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। এর পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। আগামী ৮ অক্টোবর শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংহতি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ রবিবার তাঁর সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, আগামী অর্থবছরে ছাত্রীদের জন্য বাণী ভবনে এক হাজার আসনবিশিষ্ট হল নির্মাণ, দুটি নতুন বাস চালু ও চারটি হল অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। আর এক সপ্তাহের মধ্যে ড. হাবিবুর রহমান হল বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলে নেওয়া হবে। এক দিন পর গতকাল ২৬ বছর আগে বেদখল হওয়া ড. হাবিবুর রহমান হল বুঝে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বংশালের মালিটোলার গোলক পাল লেনে হলটি অবস্থিত। এর জায়গার পরিমাণ ২৫.৭৭ কাঠা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা জেলা প্রশাসক এক সপ্তাহের মধ্যে হলটি ছাড়ার জন্য অবৈধ দখলদারদের নির্দেশ দেয়। গতকাল এক সপ্তাহের সময়সীমা শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় হলটি দখলে নেয়।
বেদখল হলগুলোর অবস্থা : ১৯৮৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এরশাদ সরকারের সময় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের এ হলগুলো একের পর এক হাতছাড়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণী (ইনভেন্টরি) তৈরির জন্য ২০০৭ সালের ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মসিমুহিত হক অ্যান্ড কম্পানির সঙ্গে ১৮ লাখ টাকার চুক্তি করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালের ২৯ জুন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বেদখল হওয়া হলগুলোর মধ্যে পাঁচটি সরকারের সহযোগিতায় খুব সহজেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের বিবরণী তৈরির কাজ শুরু হলে অবৈধ দখলে থাকা হলগুলোর জমি এবং ধূপখোলা মাঠের বৈধ কাগজপত্র ও বিভিন্ন তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, খুব সহজেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হলগুলোর একটি পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের ৮২ ঝুলন বাড়ি লেনে অবস্থিত শহীদ শাহাবুদ্দিন হল। এই হলটি কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আমিনুল হক বিপ্লব দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া স্টার সিনেমা হলের পাশে ওয়াইজঘাটের ৮ ও ৯ নম্বর জিএল পার্থ লেনে অবস্থিত তিব্বত হল, আরমানিটোলার ৬ নম্বর এ সি রায় রোডের আবদুর রহমান হল, মাহুতটুলীর ১ নম্বর শরৎচন্দ্র রোডের শহীদ আনোয়ার শফিক হল এবং পাটুয়াটুলীর ১৬ ও ১৭ নম্বর রমাকান্ত নন্দী লেনে অবস্থিত শহীদ আজমল হোসেন হল খুব সহজেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
বেদখল হওয়া অন্য হলগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাবাজারের ১নং ঈশ্বর দাস লেনের বাণী ভবন হলের একাংশ (অন্য অংশটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দখলে রয়েছে), ১৭ ও ২০ যদুনাথ বসাক লেনের আবদুর রউফ মজুমদার হল, ১৫ ও ১৬ যদুনাথ বসাক লেনের অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান হল, টিপু সুলতান রোডের গোপীমোহন বসাক লেনের শহীদ নজরুল হল, মালিটোলায় ২৬ মোগলটুলির বজলুর রহমান হল এবং ২৬ পাটুয়াটুলীর কর্মচারী আবাস (ছাত্র-কর্মচারী উভয়ই থাকত)।
ড. হাবিবুর রহমান হল উদ্ধার প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আরিফ ও ওমর ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হল উদ্ধারে সহযোগিতা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অশেষ ধন্যবাদ। তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনের জন্য আরো কিছু হল নির্মাণ করে দেবেন বলে আমরা আশাবাদী।'
ভারপ্রাপ্ত প্ররক্ষক অশোক কুমার সাহা বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ড. হাবিবুর রহমান হল উদ্ধার করতে পেরেছি। আশা করছি আরো কিছু হল শিগগির উদ্ধার করতে পারব।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের আন্তরিকতার ফসল আজকের ড. হাবিবুর রহমান হল উদ্ধার। আমরা সরকারের কাছে আরো চারটি হল অধিগ্রহণের জন্য আবেদন করেছি। অচিরেই এর ফল পাব বলে আশা করছি।'
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে হলটি তাঁরা দখলে নেবেন। তাঁর ঘোষণার এক দিন পরই গতকাল ড. হাবিবুর রহমান হল দখলে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হল উদ্ধারের ফলে ছাত্রী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। মিষ্টিও বিতরণ করেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে এক আইনের মাধ্যমে জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। ওই আইনের ২৭(৪) ধারা বাতিল ও কলেজ আমলের বেদখল হওয়া ১২টি হল উদ্ধারের জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে টানা চার দিন আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত বুধবার দুর্গাপূজার আগাম ছুটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। এর পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। আগামী ৮ অক্টোবর শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংহতি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ রবিবার তাঁর সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, আগামী অর্থবছরে ছাত্রীদের জন্য বাণী ভবনে এক হাজার আসনবিশিষ্ট হল নির্মাণ, দুটি নতুন বাস চালু ও চারটি হল অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। আর এক সপ্তাহের মধ্যে ড. হাবিবুর রহমান হল বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলে নেওয়া হবে। এক দিন পর গতকাল ২৬ বছর আগে বেদখল হওয়া ড. হাবিবুর রহমান হল বুঝে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বংশালের মালিটোলার গোলক পাল লেনে হলটি অবস্থিত। এর জায়গার পরিমাণ ২৫.৭৭ কাঠা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা জেলা প্রশাসক এক সপ্তাহের মধ্যে হলটি ছাড়ার জন্য অবৈধ দখলদারদের নির্দেশ দেয়। গতকাল এক সপ্তাহের সময়সীমা শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় হলটি দখলে নেয়।
বেদখল হলগুলোর অবস্থা : ১৯৮৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এরশাদ সরকারের সময় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের এ হলগুলো একের পর এক হাতছাড়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণী (ইনভেন্টরি) তৈরির জন্য ২০০৭ সালের ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মসিমুহিত হক অ্যান্ড কম্পানির সঙ্গে ১৮ লাখ টাকার চুক্তি করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালের ২৯ জুন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বেদখল হওয়া হলগুলোর মধ্যে পাঁচটি সরকারের সহযোগিতায় খুব সহজেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের বিবরণী তৈরির কাজ শুরু হলে অবৈধ দখলে থাকা হলগুলোর জমি এবং ধূপখোলা মাঠের বৈধ কাগজপত্র ও বিভিন্ন তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, খুব সহজেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হলগুলোর একটি পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের ৮২ ঝুলন বাড়ি লেনে অবস্থিত শহীদ শাহাবুদ্দিন হল। এই হলটি কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আমিনুল হক বিপ্লব দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া স্টার সিনেমা হলের পাশে ওয়াইজঘাটের ৮ ও ৯ নম্বর জিএল পার্থ লেনে অবস্থিত তিব্বত হল, আরমানিটোলার ৬ নম্বর এ সি রায় রোডের আবদুর রহমান হল, মাহুতটুলীর ১ নম্বর শরৎচন্দ্র রোডের শহীদ আনোয়ার শফিক হল এবং পাটুয়াটুলীর ১৬ ও ১৭ নম্বর রমাকান্ত নন্দী লেনে অবস্থিত শহীদ আজমল হোসেন হল খুব সহজেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
বেদখল হওয়া অন্য হলগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাবাজারের ১নং ঈশ্বর দাস লেনের বাণী ভবন হলের একাংশ (অন্য অংশটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দখলে রয়েছে), ১৭ ও ২০ যদুনাথ বসাক লেনের আবদুর রউফ মজুমদার হল, ১৫ ও ১৬ যদুনাথ বসাক লেনের অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান হল, টিপু সুলতান রোডের গোপীমোহন বসাক লেনের শহীদ নজরুল হল, মালিটোলায় ২৬ মোগলটুলির বজলুর রহমান হল এবং ২৬ পাটুয়াটুলীর কর্মচারী আবাস (ছাত্র-কর্মচারী উভয়ই থাকত)।
ড. হাবিবুর রহমান হল উদ্ধার প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আরিফ ও ওমর ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হল উদ্ধারে সহযোগিতা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অশেষ ধন্যবাদ। তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনের জন্য আরো কিছু হল নির্মাণ করে দেবেন বলে আমরা আশাবাদী।'
ভারপ্রাপ্ত প্ররক্ষক অশোক কুমার সাহা বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ড. হাবিবুর রহমান হল উদ্ধার করতে পেরেছি। আশা করছি আরো কিছু হল শিগগির উদ্ধার করতে পারব।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের আন্তরিকতার ফসল আজকের ড. হাবিবুর রহমান হল উদ্ধার। আমরা সরকারের কাছে আরো চারটি হল অধিগ্রহণের জন্য আবেদন করেছি। অচিরেই এর ফল পাব বলে আশা করছি।'
No comments