প্রশাসনে বদল চান দুই প্রার্থী, আপত্তি নেই শামীমের by শরিফুল হাসান ও আসিফ হোসেন
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সব মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। বেড়েছে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা। সেনা মোতায়েন চান তৈমুর। আইভী চান ভোটারদের স্বাভাবিক ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা নবগঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর উৎসাহের সঙ্গে আস্তে আস্তে যুক্ত হচ্ছে উদ্বেগও। নাগরিক সমাজের পাশাপাশি খোদ সম্ভাব্য দুই মেয়র প্রার্থী নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা প্রশাসনে রদবদল ও সেনা মোতায়েনের দাবি করেছেন।
দুই সম্ভাব্য প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার ও সেলিনা হায়াত আইভীর আশঙ্কা, প্রশাসন ও সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে একজন প্রার্থী যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। তবে যাঁকে নিয়ে এ উদ্বেগ সেই সম্ভাব্য প্রার্থী শামীম ওসমান বলছেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে তিনি শতভাগ আশাবাদী। প্রশাসনে রদবদলেও তাঁর কোনো আপত্তি নেই।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সহসভাপতি রফিউর রাব্বী প্রথম আলোকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসের জনপদ বলে সারা দেশে একটা নেতিবাচক ভাবমূর্তি আছে। প্রথমবারের মতো সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে উৎসাহের পাশাপাশি তাই আতঙ্কও আছে লোকজনের মধ্যে। বিশেষ করে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন—এমন অনেককে নিয়ে সাধারণ মানুষ বেশ আতঙ্কিত। তাই প্রশাসনকে কঠোর ও নিরপেক্ষ থাকা উচিত। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন দিয়ে সেটি সম্ভব নয়। প্রশাসনে রদবদল দাবি করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের শিশু-কিশোরদের সংগঠক ও খেলাঘরের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নগরবাসীর আতঙ্কটা বাড়ছে। কারণ এখানে একজন সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা মাঠে নেমেছে। নারায়ণগঞ্জের যে বাস্তবতা, তাতে সেনাবাহিনী থাকলে মানুষ অনেক নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারতেন। আর যদি সেনা মোতায়েন নাও করা হয়, তাহলে সরকার যেন যেকোনো মূল্যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করে। এ জন্য সাহসী ও নিরপেক্ষ প্রশাসন দরকার।’
শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাধব সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ শহরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার সংখ্যালঘু ভোটার আছে। অতীতে দেখা গেছে, এই ভোটারদের নানাভাবে ভয় দেখানো হয়েছে। আমরা চাই, এবার যেন সেটি না হয়। সংখ্যালঘু ভোটাররা যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারেন।’
ব্যবসায়ী আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে চায়। সরকারের কাছে অনুরোধ, একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। নির্বাচনে কাকে ভোট দিতে হবে সাধারণ মানুষ তা জানে।’
নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘কারা নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন করেছে, আর কারা সন্ত্রাস ছড়িয়েছে, সাধারণ মানুষ জানে। আমরা জানি, কাকে ভোট দিতে হবে। এ জন্য আমরা কেবল একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।’
উদ্বিগ্ন দুই প্রার্থী, আশাবাদী শামীম: বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারও কারও কীর্তির কারণে নারায়ণগঞ্জকে দেশের মানুষ সন্ত্রাসের জনপদ মনে করে। আমরা আশঙ্কা করছি, নির্বাচনের দিন এখানে ভোটকেন্দ্র দখল হতে পারে। যেকোনো মূল্যে একজন প্রার্থী এখানে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। তাই আমরা সেনা মোতায়েন চাই।’
বর্তমান জেলা প্রশাসনের সমালোচনা করে তৈমুর আলম বলেন, ‘জেলা প্রশাসক হলেন নগরের অভিভাবক। কিন্তু তিনি বিশেষ একজনের হয়ে কাজ করছেন। তাই আমরা বর্তমান জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলি করে নিরপেক্ষ কাউকে এখানে পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, যদি এখানে ভোট কারচুপি হয় তাহলে এ নিয়ে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সেলিনা হায়াত আইভীও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট তিন থানার ওসি বিশেষ একটি পরিবারের আজ্ঞাবহ হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন। কাজেই এই প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আর নির্বাচন সামনে রেখে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তাই সাধারণ মানুষ ভয় পাচ্ছেন।’
সেলিনা হায়াত বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নারায়ণগঞ্জের জনগণ রায় দিতে ভুল করবে না। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। এ জন্য আমরা এই প্রশাসনের রদবদল দাবি করছি।’
তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শতভাগ আশাবাদী শামীম ওসমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী সরকারের বিরুদ্ধে যা-তা বলবেন এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার খারাপ লাগছে, আমার দলের একজনও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় আছেন। আমি তাঁর এই উদ্বেগের কারণ বুঝতে পারছি না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাঁর যা যা দরকার সেটি তিনি সরকারের কাছে বলতে পারেন। এ নিয়ে রাজনীতি করার কোনো মানে নেই। আর প্রশাসনে রদবদল হলে আমারও কোনো আপত্তি নেই।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, সব নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে বলে আমার আশা।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা বিশ্বাস লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসন ও পুলিশের কারও বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ থাকলে প্রার্থীরা আমাদের সেটি জানাতে পারেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, ‘নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বিক অবস্থা দেখতে কাজ শুরু করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
জেলা পুলিশ সুপার শেখ নাজমুল আলম বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।’
সুজনের সংবাদ সম্মেলন: কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সাহিত্যিক শরীফ উদ্দিন সবুজ বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে চিহ্নিত অপরাধীরা এলাকায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। এতে ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসনসহ পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁদের বদলির দাবিও তুলেছেন কোনো কোনো প্রার্থী। তাই কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠলে তাঁকে বদলি করা উচিত।’
সংবাদ সম্মেলনে লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হচ্ছে। এটি যেন একটি দৃষ্টান্ত হয়। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের এখানে নিরপেক্ষ থাকা উচিত।
সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। সরকারের উচিত, সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটি নির্দলীয় নির্বাচন, তাই রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত এই নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন না দেওয়া।’
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সহসভাপতি রফিউর রাব্বী প্রথম আলোকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসের জনপদ বলে সারা দেশে একটা নেতিবাচক ভাবমূর্তি আছে। প্রথমবারের মতো সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে উৎসাহের পাশাপাশি তাই আতঙ্কও আছে লোকজনের মধ্যে। বিশেষ করে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন—এমন অনেককে নিয়ে সাধারণ মানুষ বেশ আতঙ্কিত। তাই প্রশাসনকে কঠোর ও নিরপেক্ষ থাকা উচিত। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন দিয়ে সেটি সম্ভব নয়। প্রশাসনে রদবদল দাবি করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের শিশু-কিশোরদের সংগঠক ও খেলাঘরের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নগরবাসীর আতঙ্কটা বাড়ছে। কারণ এখানে একজন সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা মাঠে নেমেছে। নারায়ণগঞ্জের যে বাস্তবতা, তাতে সেনাবাহিনী থাকলে মানুষ অনেক নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারতেন। আর যদি সেনা মোতায়েন নাও করা হয়, তাহলে সরকার যেন যেকোনো মূল্যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করে। এ জন্য সাহসী ও নিরপেক্ষ প্রশাসন দরকার।’
শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাধব সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ শহরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার সংখ্যালঘু ভোটার আছে। অতীতে দেখা গেছে, এই ভোটারদের নানাভাবে ভয় দেখানো হয়েছে। আমরা চাই, এবার যেন সেটি না হয়। সংখ্যালঘু ভোটাররা যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারেন।’
ব্যবসায়ী আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে চায়। সরকারের কাছে অনুরোধ, একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। নির্বাচনে কাকে ভোট দিতে হবে সাধারণ মানুষ তা জানে।’
নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘কারা নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন করেছে, আর কারা সন্ত্রাস ছড়িয়েছে, সাধারণ মানুষ জানে। আমরা জানি, কাকে ভোট দিতে হবে। এ জন্য আমরা কেবল একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।’
উদ্বিগ্ন দুই প্রার্থী, আশাবাদী শামীম: বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারও কারও কীর্তির কারণে নারায়ণগঞ্জকে দেশের মানুষ সন্ত্রাসের জনপদ মনে করে। আমরা আশঙ্কা করছি, নির্বাচনের দিন এখানে ভোটকেন্দ্র দখল হতে পারে। যেকোনো মূল্যে একজন প্রার্থী এখানে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। তাই আমরা সেনা মোতায়েন চাই।’
বর্তমান জেলা প্রশাসনের সমালোচনা করে তৈমুর আলম বলেন, ‘জেলা প্রশাসক হলেন নগরের অভিভাবক। কিন্তু তিনি বিশেষ একজনের হয়ে কাজ করছেন। তাই আমরা বর্তমান জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলি করে নিরপেক্ষ কাউকে এখানে পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, যদি এখানে ভোট কারচুপি হয় তাহলে এ নিয়ে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সেলিনা হায়াত আইভীও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট তিন থানার ওসি বিশেষ একটি পরিবারের আজ্ঞাবহ হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন। কাজেই এই প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আর নির্বাচন সামনে রেখে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তাই সাধারণ মানুষ ভয় পাচ্ছেন।’
সেলিনা হায়াত বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নারায়ণগঞ্জের জনগণ রায় দিতে ভুল করবে না। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। এ জন্য আমরা এই প্রশাসনের রদবদল দাবি করছি।’
তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শতভাগ আশাবাদী শামীম ওসমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী সরকারের বিরুদ্ধে যা-তা বলবেন এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার খারাপ লাগছে, আমার দলের একজনও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় আছেন। আমি তাঁর এই উদ্বেগের কারণ বুঝতে পারছি না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাঁর যা যা দরকার সেটি তিনি সরকারের কাছে বলতে পারেন। এ নিয়ে রাজনীতি করার কোনো মানে নেই। আর প্রশাসনে রদবদল হলে আমারও কোনো আপত্তি নেই।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, সব নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে বলে আমার আশা।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা বিশ্বাস লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসন ও পুলিশের কারও বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ থাকলে প্রার্থীরা আমাদের সেটি জানাতে পারেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, ‘নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বিক অবস্থা দেখতে কাজ শুরু করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
জেলা পুলিশ সুপার শেখ নাজমুল আলম বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।’
সুজনের সংবাদ সম্মেলন: কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সাহিত্যিক শরীফ উদ্দিন সবুজ বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে চিহ্নিত অপরাধীরা এলাকায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। এতে ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসনসহ পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁদের বদলির দাবিও তুলেছেন কোনো কোনো প্রার্থী। তাই কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠলে তাঁকে বদলি করা উচিত।’
সংবাদ সম্মেলনে লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হচ্ছে। এটি যেন একটি দৃষ্টান্ত হয়। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের এখানে নিরপেক্ষ থাকা উচিত।
সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। সরকারের উচিত, সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটি নির্দলীয় নির্বাচন, তাই রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত এই নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন না দেওয়া।’
No comments