বরিশালে মৃৎশিল্পীদের সম্মাননা প্রদান
যাঁদের হাতের ছোঁয়ায় মাটি প্রতিমায় রূপ নিয়ে অপরূপ সৌন্দর্য লাভ করে সেই মৃৎশিল্পীদের সম্মাননা জানিয়েছে বরিশাল মৃৎশিল্পী সম্মাননা উদ্যাপন পরিষদ। গতকাল সোমবার বিকেলে নগরীর কালীবাড়ি রোডের ধর্মরক্ষিণী সভাগৃহে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৪০ জন মৃৎশিল্পীকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও উপহার দেওয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক নিসার হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মৃৎশিল্পীদের পক্ষ থেকে বিনোদ পাল বলেন, 'পূর্বপুরুষের পেশা হিসেবে ৩০ বছর ধরে কাজ করছি।
এত দিন পর সম্মান পেয়ে খুব ভালো লাগছে। তবে সাহায্য তো দূরের কথা, প্রতিমা তৈরির ন্যায্য দামও কেউ কেউ দিতে চায় না। দ্রব্যমূল্য বাড়লেও প্রতিমা তৈরির মজুরির দাম বাড়েনি। তাই এ পেশায় থেকে পেট চালাতে কষ্ট হয়। মৃৎশিল্পের করুণ অবস্থা দেখে সন্তানরাও এ পেশায় আসতে চায় না। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই পেশাটি হারিয়ে যাবে।'
অন্য বক্তারা বলেন, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী একটি শিল্প হলো মৃৎশিল্প। কিন্তু সারা বছরই তাঁরা অবহেলিত থাকেন। শুধু পূজা এলেই তাঁদের ডাক পড়ে। সব মিলিয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত এ শিল্পটি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে সারা দেশে এ রকম ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে মৃৎশিল্পীরাও উৎসাহিত হবেন।
রাখাল চন্দ্র দের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বরিশালের পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য, জনতা ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক বলরাম পোদ্দার, প্রেসক্লাবের সভাপতি মানবেন্দ্র বটব্যাল, মৃৎশিল্পী সম্মাননা উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক বিজয় কৃষ্ণ দে প্রমুখ। সভা শেষে ৪০ জন মৃৎশিল্পীকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও কাপড় দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্যাক্তা সুশান্ত ঘোষ বলেন, পূজা উদ্যাপন পরিষদের ব্যানারে ২০০৯ সালে প্রথম মৃৎশিল্পীদের সম্মাননা দেওয়া শুরু হয়। এর পর থেকে অমৃত লালের পরিবারের সহযোগিতায় এবার নিয়ে তিনবার এই সম্মাননার আয়োজন করা হলো। বরিশাল সদর, বাবুগঞ্জ, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া উপজেলার মৃৎশিল্পীদের এ সম্মাননা জানানো হয়।
No comments