সরজমিন ঢামেক হাসপাতাল: পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পরের দিন আগের চিত্র by পিয়াস সরকার
ছবিঃ জীবন আহমেদ |
ডেঙ্গুতে
নাকাল পুরো দেশ। প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন আক্রান্তরা। আর এই প্রাণঘাতী
রোগের বাহক এডিস মশা তাড়ানোর তোড়জোড় সর্বত্র। আর রাজধানীবাসী আক্রান্ত হয়ে
সর্বাধিক পরিমানে চিকিৎসা নিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু এই
হাসপাতালের আঙ্গিনাই যেন মশা উৎপাদনের আতুর ঘর। যত্রতত্র জমাট পানি, ময়লা
আর্বজনার স্তুপ।
মঙ্গলবার ছিলো বিশ্ব মশা দিবস। এই দিবসটিকে ঘিরে সেদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চালানো হয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ছিলেন সেই অভিযানে।
তিনি হাসপাতালের সামনের অংশে করেন পরিচ্ছন্নতা অভিযান। প্রতীকী এই অভিযানে তিনি মশা মারার ওষুধও ছিটান। আর এরপর পরিচালনা করেন হাসপাতালের সামনে থাকা অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান।
তবে অভিযানের দিনের মতো গতকালও হাসপাতাল ঘিরে একই দৃশ্য দেখা যায়। ঢাকা মেডিকেলের পানির পাম্পের সামনে মেলে জমাট পানি। সেখানে উড়ছে মশা। পরিচ্ছন্ন কর্মীর ছোঁয়া লাগেনি বেশ কদিন দেখে বুঝাই যায়। পাম্পের এক কর্মী বলেন, পরিষ্কার করা হয়না এই স্থানে। তবে মশার ওষুধ দেয়। তারপরও মশা মরে না।
জরুরি বিভাগ পার হয়ে ডানের ড্রেনেও দেখা মেলে একই চিত্র। ড্রেনের জমানো পানিতে উড়ছে মশা। আবার উপর থেকে পড়ছে অহরহ ময়লা। আর বার্ন ইউনিটের পার্কিং এলাকা। থরে থরে সাজানো অ্যাম্বুলেন্স। আর পিছনের দিকে ময়লা। পলিথিন, ডাবের খোসা ইত্যাদিতে জমে আছে পানি। কথা হয় অ্যাম্বুলেন্স চালক আরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, গাড়ি রেখে দরজা খুলে বসে থাকতে পারি না। ভয় লাগে। মশা উড়ছে। ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আসতে আসতে না নিজে আক্রান্ত হই।
হাসপাতালের ভিতরের প্রায় প্রতিটি ভবনের মাঝের স্থানে জমে আছে পানি। পানির পাইপ, এসি থেকে চুইয়ে পড়ছে পানি। পানির প্রবাহ না থাকায় তা জমছে। ফলে এখানে জন্ম নেবার সম্ভাবনা আছে এডিস মশার। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী আকিমুল ইসলাম বলেন, মশার ওষুধতো দু’একদিন পর পর দিচ্ছে। কিন্তু তাও তো মশা মরে না।
হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী জানান, তাদের লোকবল কম। এই লোক দিয়ে প্রতিদিনের সৃষ্ট ময়লা পরিষ্কার করতেই তারা হিমশিম খাচ্ছেন। আনাচে কানাচে পরিষ্কার করার সময় তাদের নেই। আর এসব পরিষ্কারের জন্য আছে আলাদা লোক। তারা ড্রেন, ময়লার ভাগাড় ইত্যাদি পরিষ্কার করেন। তিনি জানান, তারা নিয়মিত কাজ করলেও এসব পরিষ্কারের লোকদের দেখা মেলে না সচারচর।
অবহেলা আছে রোগীর স্বজনদেরও। হাসাপাতালের এককোণায় দাঁড়িয়ে কিছু সময় পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় বিভিন্ন তলা থেকে পড়ছে ময়লা। ৬ তলায় ডেঙ্গু বিশেষায়িত ইউনিট। সেখানে বারান্দার পাশে অবস্থান আলী আকবরের। তিনি এসেছেন তার বাবাকে নিয়ে। বাবার জন্য আনা খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেললেন বারান্দার গ্রিল দিয়ে। সেইসঙ্গে খাবার নিয়ে আসার পলিথিনটাও ফেললেন। তার পাশেই থাকা আরেক রোগীর স্বজনও ৫ লিটারের পানির খালি বোতল নিচে ফেলে দিলেন। এমন ময়লা ফেলার দৃশ্য অহরহ। কিন্তু সেখানে দেখা মেলে ময়লা ফেলার বেশ কয়েকটি কন্টেইনার। কিন্তু এসব স্থানে ময়লা না ফেলে তারা ফেলছেন নিচে।
হাসপাতালের চারপাশ ঘিরে চিত্র আরো ভয়াবহ। মর্গের ঢোকার গেটের পাশে ময়লা ও পানি জমে আছে। সেখানে উড়তে দেখা যায় মশা। আর অন্যান্য কীটপতঙ্গের অবস্থানও স্পষ্ট। মূল ফটকের বাইরে পরিত্যক্ত ওভারব্রিজ ঘিরে প্রায় সব কোণাতেই ময়লা ও জমাট পানি। আর এর সিঁড়ি বেয়ে দেখা মেলে ডাবের খোসা, প্যাকেট, বোতল ইত্যাদিতে জমে আছে পানি। বিশেষ করে ফেনসিডিলের পরিত্যক্ত বোতল আর ভাঙ্গা স্থানে জমে আছে অনেক পানি। গত মঙ্গলবার উচ্ছেদ করা হয় হাসপাতালের বাইরে থাকা প্রায় দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা। এর মাঝে মূলত ছিলো ভাতের হোটেল, ফলের দোকান, চায়ের দোকান, রোগীর প্রয়োজনীয় জিনিস ইত্যাদি। কিন্তু একদিন পরেই ফের পুরনো চিত্র। সকল দোকানই বসেছে আগের মতো করে।
খাবার হোটেলের এক মালিক বলেন, আমরা জানতাম সেদিন উচ্ছেদ হবে। আমাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছিলো। দোকানের প্রায় অধিকাংশ জিনিস সরিয়ে ফেলা হয়। আর কিছু জিনিস রাখতে বলা হয়। যাতে ভাঙ্গতে পারে। তিনি দেখিয়ে বলেন, আমার হোটেলে ৮টি বেঞ্চ ও ৪টি টেবিল। আমি ২টি বেঞ্চ ও একটি টেবিল রেখে দিয়েছিলাম। আর খাবার রাখার ৩টি র্যাকের ২টি সরিয়ে ফেলি আর একটিতে রাখি অল্প কিছু খাবার। সঙ্গে মাথার ওপরে ছাউনি। এরপর অপেক্ষা কখন আসবে। উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়ে যাবার সময়ই শুরু করি এসব সরানো। এর মাঝে সব সরিয়ে ফেলি আর তারা ভেঙ্গে দেয় ছাউনি।
এইসব ভাতের হোটেলে প্রতিদিন ভাড়া দিতে হয় ৩শ’ টাকা করে। কিন্তু গত মঙ্গলবার দোকান ভাঙ্গা হবে জন্য এই একদিনের ভাড়া নেয়া হয়নি। ভাতের হোটেলের পাশাপাশি বিভিন্ন দোকানের রয়েছে বিভিন্ন ভাড়া।
মঙ্গলবার ছিলো বিশ্ব মশা দিবস। এই দিবসটিকে ঘিরে সেদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চালানো হয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ছিলেন সেই অভিযানে।
তিনি হাসপাতালের সামনের অংশে করেন পরিচ্ছন্নতা অভিযান। প্রতীকী এই অভিযানে তিনি মশা মারার ওষুধও ছিটান। আর এরপর পরিচালনা করেন হাসপাতালের সামনে থাকা অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান।
তবে অভিযানের দিনের মতো গতকালও হাসপাতাল ঘিরে একই দৃশ্য দেখা যায়। ঢাকা মেডিকেলের পানির পাম্পের সামনে মেলে জমাট পানি। সেখানে উড়ছে মশা। পরিচ্ছন্ন কর্মীর ছোঁয়া লাগেনি বেশ কদিন দেখে বুঝাই যায়। পাম্পের এক কর্মী বলেন, পরিষ্কার করা হয়না এই স্থানে। তবে মশার ওষুধ দেয়। তারপরও মশা মরে না।
জরুরি বিভাগ পার হয়ে ডানের ড্রেনেও দেখা মেলে একই চিত্র। ড্রেনের জমানো পানিতে উড়ছে মশা। আবার উপর থেকে পড়ছে অহরহ ময়লা। আর বার্ন ইউনিটের পার্কিং এলাকা। থরে থরে সাজানো অ্যাম্বুলেন্স। আর পিছনের দিকে ময়লা। পলিথিন, ডাবের খোসা ইত্যাদিতে জমে আছে পানি। কথা হয় অ্যাম্বুলেন্স চালক আরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, গাড়ি রেখে দরজা খুলে বসে থাকতে পারি না। ভয় লাগে। মশা উড়ছে। ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আসতে আসতে না নিজে আক্রান্ত হই।
হাসপাতালের ভিতরের প্রায় প্রতিটি ভবনের মাঝের স্থানে জমে আছে পানি। পানির পাইপ, এসি থেকে চুইয়ে পড়ছে পানি। পানির প্রবাহ না থাকায় তা জমছে। ফলে এখানে জন্ম নেবার সম্ভাবনা আছে এডিস মশার। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী আকিমুল ইসলাম বলেন, মশার ওষুধতো দু’একদিন পর পর দিচ্ছে। কিন্তু তাও তো মশা মরে না।
হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী জানান, তাদের লোকবল কম। এই লোক দিয়ে প্রতিদিনের সৃষ্ট ময়লা পরিষ্কার করতেই তারা হিমশিম খাচ্ছেন। আনাচে কানাচে পরিষ্কার করার সময় তাদের নেই। আর এসব পরিষ্কারের জন্য আছে আলাদা লোক। তারা ড্রেন, ময়লার ভাগাড় ইত্যাদি পরিষ্কার করেন। তিনি জানান, তারা নিয়মিত কাজ করলেও এসব পরিষ্কারের লোকদের দেখা মেলে না সচারচর।
অবহেলা আছে রোগীর স্বজনদেরও। হাসাপাতালের এককোণায় দাঁড়িয়ে কিছু সময় পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় বিভিন্ন তলা থেকে পড়ছে ময়লা। ৬ তলায় ডেঙ্গু বিশেষায়িত ইউনিট। সেখানে বারান্দার পাশে অবস্থান আলী আকবরের। তিনি এসেছেন তার বাবাকে নিয়ে। বাবার জন্য আনা খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেললেন বারান্দার গ্রিল দিয়ে। সেইসঙ্গে খাবার নিয়ে আসার পলিথিনটাও ফেললেন। তার পাশেই থাকা আরেক রোগীর স্বজনও ৫ লিটারের পানির খালি বোতল নিচে ফেলে দিলেন। এমন ময়লা ফেলার দৃশ্য অহরহ। কিন্তু সেখানে দেখা মেলে ময়লা ফেলার বেশ কয়েকটি কন্টেইনার। কিন্তু এসব স্থানে ময়লা না ফেলে তারা ফেলছেন নিচে।
হাসপাতালের চারপাশ ঘিরে চিত্র আরো ভয়াবহ। মর্গের ঢোকার গেটের পাশে ময়লা ও পানি জমে আছে। সেখানে উড়তে দেখা যায় মশা। আর অন্যান্য কীটপতঙ্গের অবস্থানও স্পষ্ট। মূল ফটকের বাইরে পরিত্যক্ত ওভারব্রিজ ঘিরে প্রায় সব কোণাতেই ময়লা ও জমাট পানি। আর এর সিঁড়ি বেয়ে দেখা মেলে ডাবের খোসা, প্যাকেট, বোতল ইত্যাদিতে জমে আছে পানি। বিশেষ করে ফেনসিডিলের পরিত্যক্ত বোতল আর ভাঙ্গা স্থানে জমে আছে অনেক পানি। গত মঙ্গলবার উচ্ছেদ করা হয় হাসপাতালের বাইরে থাকা প্রায় দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা। এর মাঝে মূলত ছিলো ভাতের হোটেল, ফলের দোকান, চায়ের দোকান, রোগীর প্রয়োজনীয় জিনিস ইত্যাদি। কিন্তু একদিন পরেই ফের পুরনো চিত্র। সকল দোকানই বসেছে আগের মতো করে।
খাবার হোটেলের এক মালিক বলেন, আমরা জানতাম সেদিন উচ্ছেদ হবে। আমাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছিলো। দোকানের প্রায় অধিকাংশ জিনিস সরিয়ে ফেলা হয়। আর কিছু জিনিস রাখতে বলা হয়। যাতে ভাঙ্গতে পারে। তিনি দেখিয়ে বলেন, আমার হোটেলে ৮টি বেঞ্চ ও ৪টি টেবিল। আমি ২টি বেঞ্চ ও একটি টেবিল রেখে দিয়েছিলাম। আর খাবার রাখার ৩টি র্যাকের ২টি সরিয়ে ফেলি আর একটিতে রাখি অল্প কিছু খাবার। সঙ্গে মাথার ওপরে ছাউনি। এরপর অপেক্ষা কখন আসবে। উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়ে যাবার সময়ই শুরু করি এসব সরানো। এর মাঝে সব সরিয়ে ফেলি আর তারা ভেঙ্গে দেয় ছাউনি।
এইসব ভাতের হোটেলে প্রতিদিন ভাড়া দিতে হয় ৩শ’ টাকা করে। কিন্তু গত মঙ্গলবার দোকান ভাঙ্গা হবে জন্য এই একদিনের ভাড়া নেয়া হয়নি। ভাতের হোটেলের পাশাপাশি বিভিন্ন দোকানের রয়েছে বিভিন্ন ভাড়া।
No comments