জানা তথ্যের চেয়ে অনেক বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন করছে ভারত, কেন by আনন্দ ব্যানার্জি
সাউথ এশিয়ান মনিটর, এপ্রিল ৯, ২০১৯: ভারতের
৩৫টি আঞ্চলিক দূষণ বোর্ডের মাত্র ১৪টি ২০১৭-১৮ সময়কালের প্লাস্টিক বর্জ্য
সম্পর্কে তথ্য জমা দিয়েছে বলে সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (সিপিসিবি)
তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে। ফলে সিপিসিবির ২০১৭-১৮ সময়কালের
প্রতিবেদনে থাকা ৬৬০,৭৮৭.৮৫ টন বর্জ্য পরিষ্কারে ১০ টনি করে ৬৬,০৭৯টি ট্রাক
যথেষ্ট বলে যে তথ্য দেয়া হয়েছে, তা সত্যিকারের পরিস্থিতি প্রতিফলিত করে
না।
২০১৬-১৭ সময়কালেও সিপিসিবি মাত্র ২৫টি আঞ্চলিক দূষণ বোর্ডের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছিল। ওই সময় মোট সৃষ্ট প্লাস্টিক বর্জ্য দেখানো হয়েছিল ১.৬ মিলিয়ন টন।
সিপিসিপি প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধি বাস্তবায়ন করার জন্য ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের (এনজিটি) কাছে আবেদন জানিয়েছে। গত ১২ মার্চ এনজিটি সব রাজ্যকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কোনো রাজ্য প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হলে তাদেরকে প্রতি মাসে এক কোটি রুপি করে জরিমানা দিতে হবে বলেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
ভারত বছরে প্রায় ১৬.৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক ব্যবহার করে বলে ২০১৮ সালের প্লাস্টইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের (প্লাস্টিক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি সমিতি) দেয়া দেয়া তথ্যে জানা যায়। এর মধ্যে ৪৩ ভাগ প্লাস্টিক প্যাকেজিং পণ্য হিসেবে একবার মাত্র ব্যবহার হয়। এসব প্লাস্টিক ব্যবহারের পর ডাস্টবিনে জমা পড়ে। ভারতে ব্যবহৃত ৮০ ভাগ প্লাস্টিক পরিত্যক্ত হয়।
প্লাস্টিকের বেশির ভাগ জমি, নর্দমা, জলাশয়, নদী ও সাগরে জমা হয়। এতে করে সামুদ্রিক প্রাণির মারাত্মক ক্ষতি হয়, প্রকৃতির দূষণ ঘটায়।
ভারতে প্রতি দিন যত প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়, তার অন্তত ৪০ ভাগ তথা ২৫,৯৪০ টন সংগ্রহহীনভাবেই থাকে। পাতলা প্লাস্টিক ব্যাগ ও ফিল্মের তেমন রিসাইক্লিং মার্কেট ভ্যালু থাকে না। এগুলো প্রতি কেজি ৪ রুপি দরে টোকাইরা সংগ্রহ করে বিক্রি করে থাকে।
প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন, সংগ্রহ, পরিত্যক্তবিষয়ক নির্ভুল তথ্যের ওপর নির্ভর করছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য অংশ। ভারতের জন্য বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেশটি ২০১৯ সালের ইউনাইটেড নেশন্স এনভাইরনমেন্ট এসেম্বলি (ইউএনইএ)-এ সই করেছে। এতে প্লাস্টিকের একক ব্যবহারের ওপর জোর দেয়া হয়েছে এবং অন্য কোনো দেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দুই বছর ধরে ১০ রাজ্যের তথ্য নেই
প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ওয়েস্ট রুলস, ২০১৬ (২০১৮ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী প্রতিটি রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি থাকা অপরিহার্য। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আওতায় এই বোর্ড ও কমিটিকে প্লাস্টিক বর্জ্যের ধরন, পরিমাণ, সংগ্রহ, শহর ও গ্রামে এসবের পরিমাণ ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য দিতে হয়।
কিন্তু নিম্নোক্ত রাজ্যগুলো ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-২০১৮ সময়কালে তাদের তথ্য প্রদান করেনি।
১. দমন ও দিউ, ২. গোয়া, ৩. ঝাড়খণ্ড, ৪. কেরালা, ৫. লাক্ষাদ্বীপ, ৬. মিজোরাম, ৭. রাজস্থান, ৮. তেলেঙ্গানা, ৯. উত্তরখণ্ড, ১০. পশ্চিমবঙ্গ।
সিপিইসির ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী, ভারত ২০১০-১২ সময়কালে দিনে ২৫,৯৪০ টন বর্জ্য উৎপাদন করে। এই হিসাব অনুযায়ী, বছরে প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয় ৯.৫ মিলিয়ন টন। এই তালিকায় থাকা শীর্ষ ৫ নগরী হচ্ছে দিল্লি (৬৮৯ টন), চেন্নাই (৩২৯ টন), কলকাতা (৪২৫ টন), মুম্বাই (৪০৮ টন), বেঙ্গালুরু (৩১৩ টন)। ভারত ২০১৮ সালের জুনে ওয়ার্ল্ড এনভায়রনমেন্ট ডেতে এই তথ্য উপস্থাপন করেছে।
কিন্তু দিল্লি, তামিল নাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের মতো রাজ্যগুলোতে অবস্থিত নগরীর তথ্য ২০১৮ সালে পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি
ভারতের বিপুল প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হওয়ার দুটি প্রধান কারণ হলো এখানে নিম্নমানের প্লাস্টিক উৎপাদিত হয় এবং স্টাইরোফোমের মতো সামগ্রীর উপস্থিতি।
বর্তমানে ভারতের সামর্থ্য রয়েছে মাত্র ৪ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক রিসাইকেল করার।
আমদানিকৃত প্লাস্টিক বর্জ্যের দাম অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় ২০১৯ সালের মার্চের কঠোর নিষেধাজ্ঞার আগে চীন, ইতালি, জাপান ও মালাবি থেকে বর্জ্য প্লাস্টিক আমদানি করত ভারত।
ভারতে প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ হয়েছিল ২০১৫ সালে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০১৬-১৭ সালে ১২ হাজার টন থেকে চার গুণ বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে হয়েছিল ৪৮ হাজার টন। স্পেশাল ইকোনমিক জোনের ফাঁক গলে এই আমদানি সম্ভব হয়েছিল। ২০১৯ সালের ৬ মার্চ সরকার এর ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
২০১৮ সালের ইউএন ওয়ার্ল্ড এনভাইরনমেন্ট ডেতে ভারত প্রতিশ্রুতি দেয় যে ২০২২ সাল নাগাদ প্লাস্টিকের একক ব্যবহার বন্ধ করে দেবে। বিশ্বে বর্তমানে উৎপাদনের তুলনায় সামান্য প্লাস্টিক বর্জ্যের রিসাইকেল হয়। বাকিটা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।
নগর পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ কমিটির প্রধান এস কে নিগাম সিপিসিপিকে বলেন, উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ থেকে পরিবেশের ক্ষতি পুরোপুরি ঠেকানো যাবে না।
২০১৬-১৭ সময়কালেও সিপিসিবি মাত্র ২৫টি আঞ্চলিক দূষণ বোর্ডের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছিল। ওই সময় মোট সৃষ্ট প্লাস্টিক বর্জ্য দেখানো হয়েছিল ১.৬ মিলিয়ন টন।
সিপিসিপি প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধি বাস্তবায়ন করার জন্য ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের (এনজিটি) কাছে আবেদন জানিয়েছে। গত ১২ মার্চ এনজিটি সব রাজ্যকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কোনো রাজ্য প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হলে তাদেরকে প্রতি মাসে এক কোটি রুপি করে জরিমানা দিতে হবে বলেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
ভারত বছরে প্রায় ১৬.৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক ব্যবহার করে বলে ২০১৮ সালের প্লাস্টইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের (প্লাস্টিক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি সমিতি) দেয়া দেয়া তথ্যে জানা যায়। এর মধ্যে ৪৩ ভাগ প্লাস্টিক প্যাকেজিং পণ্য হিসেবে একবার মাত্র ব্যবহার হয়। এসব প্লাস্টিক ব্যবহারের পর ডাস্টবিনে জমা পড়ে। ভারতে ব্যবহৃত ৮০ ভাগ প্লাস্টিক পরিত্যক্ত হয়।
প্লাস্টিকের বেশির ভাগ জমি, নর্দমা, জলাশয়, নদী ও সাগরে জমা হয়। এতে করে সামুদ্রিক প্রাণির মারাত্মক ক্ষতি হয়, প্রকৃতির দূষণ ঘটায়।
ভারতে প্রতি দিন যত প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়, তার অন্তত ৪০ ভাগ তথা ২৫,৯৪০ টন সংগ্রহহীনভাবেই থাকে। পাতলা প্লাস্টিক ব্যাগ ও ফিল্মের তেমন রিসাইক্লিং মার্কেট ভ্যালু থাকে না। এগুলো প্রতি কেজি ৪ রুপি দরে টোকাইরা সংগ্রহ করে বিক্রি করে থাকে।
প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন, সংগ্রহ, পরিত্যক্তবিষয়ক নির্ভুল তথ্যের ওপর নির্ভর করছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য অংশ। ভারতের জন্য বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেশটি ২০১৯ সালের ইউনাইটেড নেশন্স এনভাইরনমেন্ট এসেম্বলি (ইউএনইএ)-এ সই করেছে। এতে প্লাস্টিকের একক ব্যবহারের ওপর জোর দেয়া হয়েছে এবং অন্য কোনো দেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দুই বছর ধরে ১০ রাজ্যের তথ্য নেই
প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ওয়েস্ট রুলস, ২০১৬ (২০১৮ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী প্রতিটি রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি থাকা অপরিহার্য। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আওতায় এই বোর্ড ও কমিটিকে প্লাস্টিক বর্জ্যের ধরন, পরিমাণ, সংগ্রহ, শহর ও গ্রামে এসবের পরিমাণ ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য দিতে হয়।
কিন্তু নিম্নোক্ত রাজ্যগুলো ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-২০১৮ সময়কালে তাদের তথ্য প্রদান করেনি।
১. দমন ও দিউ, ২. গোয়া, ৩. ঝাড়খণ্ড, ৪. কেরালা, ৫. লাক্ষাদ্বীপ, ৬. মিজোরাম, ৭. রাজস্থান, ৮. তেলেঙ্গানা, ৯. উত্তরখণ্ড, ১০. পশ্চিমবঙ্গ।
সিপিইসির ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী, ভারত ২০১০-১২ সময়কালে দিনে ২৫,৯৪০ টন বর্জ্য উৎপাদন করে। এই হিসাব অনুযায়ী, বছরে প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয় ৯.৫ মিলিয়ন টন। এই তালিকায় থাকা শীর্ষ ৫ নগরী হচ্ছে দিল্লি (৬৮৯ টন), চেন্নাই (৩২৯ টন), কলকাতা (৪২৫ টন), মুম্বাই (৪০৮ টন), বেঙ্গালুরু (৩১৩ টন)। ভারত ২০১৮ সালের জুনে ওয়ার্ল্ড এনভায়রনমেন্ট ডেতে এই তথ্য উপস্থাপন করেছে।
কিন্তু দিল্লি, তামিল নাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের মতো রাজ্যগুলোতে অবস্থিত নগরীর তথ্য ২০১৮ সালে পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি
ভারতের বিপুল প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হওয়ার দুটি প্রধান কারণ হলো এখানে নিম্নমানের প্লাস্টিক উৎপাদিত হয় এবং স্টাইরোফোমের মতো সামগ্রীর উপস্থিতি।
বর্তমানে ভারতের সামর্থ্য রয়েছে মাত্র ৪ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক রিসাইকেল করার।
আমদানিকৃত প্লাস্টিক বর্জ্যের দাম অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় ২০১৯ সালের মার্চের কঠোর নিষেধাজ্ঞার আগে চীন, ইতালি, জাপান ও মালাবি থেকে বর্জ্য প্লাস্টিক আমদানি করত ভারত।
ভারতে প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ হয়েছিল ২০১৫ সালে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০১৬-১৭ সালে ১২ হাজার টন থেকে চার গুণ বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে হয়েছিল ৪৮ হাজার টন। স্পেশাল ইকোনমিক জোনের ফাঁক গলে এই আমদানি সম্ভব হয়েছিল। ২০১৯ সালের ৬ মার্চ সরকার এর ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
২০১৮ সালের ইউএন ওয়ার্ল্ড এনভাইরনমেন্ট ডেতে ভারত প্রতিশ্রুতি দেয় যে ২০২২ সাল নাগাদ প্লাস্টিকের একক ব্যবহার বন্ধ করে দেবে। বিশ্বে বর্তমানে উৎপাদনের তুলনায় সামান্য প্লাস্টিক বর্জ্যের রিসাইকেল হয়। বাকিটা পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।
নগর পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ কমিটির প্রধান এস কে নিগাম সিপিসিপিকে বলেন, উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ থেকে পরিবেশের ক্ষতি পুরোপুরি ঠেকানো যাবে না।
No comments