উত্তর কোরিয়ার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি
উত্তর
কোরিয়া একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর আড়ালে পারমাণবিক
শক্তির অধিকারী দেশটি অস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে বলে হুঁশিয়ার করেছেন
বাইরের পর্যবেক্ষকেরা। আজ মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের একটি
পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে এ তথ্য জানা যায়। এএফপির খবরে জানানো হয়,
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পারমাণবিক কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে
যাওয়ায় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে গত শুক্রবার নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এ নিয়ে ১০টি নিষেধাজ্ঞা ঝুলছে দেশটির ওপর। এ
বছরই এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। নতুন
নিষেধাজ্ঞায় উত্তর কোরিয়ার পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি ৯০ শতাংশ কমানোর
সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর সঙ্গে বিদেশে কর্মরত সব উত্তর কোরীয় নাগরিককে দুই
বছরের মধ্যে দেশে ফেরত পাঠাতে বলা হয়েছে। দেশটির তৈরি পোশাক, বৈদ্যুতিক ও
অন্যান্য যন্ত্র এবং সরঞ্জামসহ পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জুনগ্যাং
ইলবু পত্রিকাটি দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের সূত্রের বরাত দিয়ে লিখেছে, ‘বিভিন্ন
মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, উত্তর কোরিয়া নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের
প্রস্তুতি শেষ করছে। এর নাম দিয়েছে কোয়াংমিয়ংসং-৫।
তাদের পরিকল্পনা হলো
ক্যামেরা ও টেলিকমিউনিকেশন-সংবলিত ডিভাইসগুলো কক্ষপথে স্থাপন করা।’ গত
বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিয়ংইয়ং কোয়াংমিয়ংসং-৪ নামের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর আড়ালে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর অভিযোগ তোলে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর যুগ্ম প্রধানের একজন মুখপাত্র বলেন, এই
মুহূর্তে এর বাইরে আর কোনো তথ্য নেই। তবে স্যাটেলাইটের আড়ালে উত্তর কোরিয়া
দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে কোনো উত্তেজনা তৈরি করে কি না, এ
বিষয়ে সিউল কড়া নজর রাখছে। উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাধর দলের পত্রিকা রোদং
সিনমুন পুনরায় জানায় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ
করার অধিকার দেশটির আছে। গতকাল পত্রিকায় ‘মহাকাশ কর্মসূচি সার্বভৌম
দেশগুলোর বৈধ অধিকার’ শিরোনামে একটি মন্তব্য প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেখানে বলা
হয়, পিয়ংইয়ংয়ের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ মহাকাশ উন্নয়নে আন্তর্জাতিক আইনের
সঙ্গে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ। গত অক্টোবরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে
জাতিসংঘের উত্তর কোরিয়াবিষয়ক উপরাষ্ট্রদূত কিম-ইন-রাইয়ং বলেন, ২০১৬-২০২০
সাল পর্যন্ত তাঁর দেশের পরিকল্পনা হলো ব্যবহারিক স্যাটেলাইটের উন্নয়ন
ঘটানো; যা তাঁদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নের ভূমিকা
রাখবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, স্যাটেলাইট তৈরি ও উৎক্ষেপণের অধিকার
তাঁদের রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় না বলেই তাঁদের সরে আসতে হবে, এমনটা নয়।
No comments