স্ত্রীকে খুন করে থানায় হাজির স্বামী!
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর সাড়ে বারোটা৷ সোমবার নিজের রুটিন কাজ সারছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাগুইআটি থানার ডিউটি অফিসার৷ আচমকা হন্তদন্ত হয়ে ভিতরে ঢুকলেন বছর তিরিশেকের যুবক৷ দরদরিয়ে ঘামছেন৷ অফিসার কিছু বলার আগেই বলে বসলেন, ‘গলাটিপে খুন করে ফেলেছি স্ত্রীকে!’ শুনে হতবাক অফিসারের পাল্টা প্রশ্ন, ‘কী বলছেন! আপনি ঠিক আছেন তো?’ উত্তরে রনি পোদ্দার নামে ওই যুবক বলেন, ‘বিশ্বাস না হলে আমার বাড়িতে গিয়ে দেখুন৷’কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির বাড়ি থেকে স্ত্রী বেবির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ গ্রেফতার করা হয়েছে রনিকে৷তা সত্ত্বেও এই মামলায় নানা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ জেরায় পুলিশের কাছে ধৃতের দাবি, দিন পনেরো আগে বিয়ে হয়েছিল তাদের৷ বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি জানতে পারেন, একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে স্ত্রীর৷ ঘটনাটি জানার পরে রনি স্ত্রীকে অনুরোধ করেন পুরুষবন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করতে৷ যদিও স্ত্রী জানিয়ে দেন, তার পক্ষে তা সম্ভব নয়৷ ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই দু’জনের মধ্যে গত শনিবার রাতে তুমুল ঝগড়া হয়৷ স্ত্রীকে বাপের বাড়ি রেখে আসার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন বলে দাবি রনির৷ তাতে কোনো কাজ হয়নি বলে জেরায় জানিয়েছেন তিনি৷ এ দিন সকালে কর্মসূত্রে বাইরে গিয়েছিলেন রনি৷
কথা ছিল, রাতে ফিরবেন৷ তবে কাজ মিটে যাওয়ায় ফিরে আসেন দুপুরে৷ রনির দাবি, ঘরে ঢুকতেই তিনি দেখেন মোবাইলে এক বন্ধুর সঙ্গে গল্প করছেন স্ত্রী৷ রনির বক্তব্য, ‘স্ত্রীর এই আচরণ দেখেই আমার মাথায় আগুন জ্বলতে শুরু করেছিল৷ ওই রাগ থেকেই ওকে গলা টিপে মেরে ফেলেছি৷’ যদিও তার স্ত্রীর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন মেলেনি৷ গোয়েন্দাদের প্রশ্ন, বেবির গলায় আঘাতের চিহ্ন নেই কেন? ফলে ঘোরালো হয়েছে রহস্য৷ প্রশ্ন হল, তা হলে কি অন্য কোনো কারণ রয়েছে এর আড়ালে? বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান সন্তোষ পাণ্ডে বলেছেন, ‘আদৌ রনি তার স্ত্রীকে খুন করেছেন, না অন্য কেউ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, সবটাই আমরা খতিয়ে দেখছি৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে অনেক কিছু পরিষ্কার হবে৷’ প্রতিবেশী অবিনাশ কুণ্ডু বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই ওদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল৷ তবে রনি খুন করার মতো ছেলে নয়৷’ সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
No comments