যোগীর রাজ্যে গ্রামের নাম পাল্টে ‘পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির’!
ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুর জেলার সিমরনপুর পরিণত হলো ‘পিওকে’ বা পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে। নাহ, তথাকথিত পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীরা এই এলাকা দখল করেনি। নিজেদের গ্রামের নাম নিজেরাই পাল্টে ফেললেন সিমরনপুরের বাসিন্দারা। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে এ কী কাণ্ড ঘটতে চলেছে! কেন এমনটা করলেন তারা? আসলে সরকার আসে, যায়। কিন্তু এই এলাকা দীর্ঘদিন ধরে থেকে যায় অন্ধকারেই। এই গ্রামের কোনো উন্নতি হয়নি। আর তাই নিজেদের গ্রামকে পাক অধিকৃত কাশ্মির নাম দিয়ে অভিনব প্রতিবাদে নেমেছেন বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকায় লেখাপড়ার, চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই। নেই বিদ্যুৎ, পাকা রাস্তা, বিদ্যালয় অথবা কোনো ফার্মেসি। একটি হ্যান্ড পাম্প ছিল। যা গত আট বছর ধরে অচল। এখন তা ব্যবহার করা হয় গবাদি পশু বেঁধে রাখতে। পানির অভাবে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ছে গ্রামের শিশুরা। দৌলতপুর পঞ্চায়েত এলাকার অন্তর্ভুক্ত এই গ্রামের মানুষ সব নিয়ে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছেন। গত বৃহস্পতিবার গ্রামের এক দোকানি জানান, “পাক অধিকৃত কাশ্মিরের মানুষজন কী শোচনীয় অবস্থায় দিনযাপন করেন, সে কথা আমরা শুনেছি। আমাদের অবস্থা অনেকটা তেমনই। আর সেই কারণেই এভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। যতদিন না গ্রামের উন্নতির জন্য সরকার এগিয়ে আসছে ততদিন এই গ্রাম পিওকে নামেই পরিচিতি পাবে।” আর এ বিষয়ে একজোট হয়েছেন গ্রামের ৮০০ বাসিন্দা। আরেক প্রতিবাদী সোনু যাদব বলেন, “গ্রামে বৈদ্যুতিক পোস্ট রয়েছে, কিন্তু তাতে কোনো তার নেই। গত ৭০ বছরে ছবিটা পাল্টায়নি। বিজেপি এমপি অভিজিত সিং সঙ্গার কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আগে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।” সমস্যা আরো রয়েছে। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, এলাকায় মাত্র ৩০ জনের রেশন কার্ড রয়েছে। তা সত্ত্বেও সেই কার্ড দেখিয়ে কেরোসিন তেল পান না তারা। বিদ্যুৎহীন গ্রামে কেরোসিনের অভাবেও ভুগতে হয় তাদের। আর এসব কারণে অন্যান্য গ্রামের পরিবার নিজেদের মেয়ের বিয়ে সিমরনপুরের যুবকদের সঙ্গে দিতে চায় না। গ্রামবাসীর আশা, নাম পাল্টে প্রতিবাদ করলে নিশ্চয়ই নড়েচড়ে বসবে প্রশাসন।
No comments