ফলদ বৃক্ষের চারা তৈরি আব্দুর রশিদের নেশা ও পেশা
নিজ উদ্যোগে নতুন নতুন ফলদ বৃক্ষের চারা তৈরী করা তার নেশা ও পেশা। তিনি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার আমতলা গ্রামের আব্দুর রশিদ। এলাকায় সবুজ বিপ্লব ঘটিয়ে পুষ্টি ও অর্থ দুই চাহিদা পূরণ সম্ভব- এমন চেতনা নিয়েই ৪২ বছর এ পেশা নিয়ে আছেন তিনি। বর্তমানে প্রায় ৪ একর জমির উপর ‘ফরিদ নার্সারী’ নামে একটি নার্সারী রয়েছে তার। মালিক আব্দুর রশিদ জানান, দিনমজুর পিতা সামসুল সেখের ৬ সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। অভাবের তাড়নায় ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনের সময় ১২ বছর বয়সে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা তাকে ভারতের মালদা এলাকায় আমবাগান দেখাশোনার দায়িত্ব দেন। সেখানে ৩ বছর থাকার পর আমসহ বিভিন্ন জাতের চারা তৈরী করতে সক্ষম হন। পরে বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়ির পাশ্ববর্তী আব্দুস ছত্তার বিশ্বাসের ৪০ শতাংশ পতিত জমি বার্ষিক কিছু খাজনা ও বাগান করিয়ে দেওয়ার শর্তে গ্রহণ করেন। বর্তমানে ৪ একর জমিতে নার্সারী রয়েছে তার।
তিনি আরো জানান, ১৪০ শতাংশে রুপালী, ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপালভোগ, হাড়িভাঙ্গা, বারী-৪, বারী-৮, মল্লিকা, সুবর্ন, আশ্বিনে, ফজলি, কালোলতা, বারমাসি, কাচামিঠা, কালোবাহার, চুষা প্রভৃতি উন্নত জাতের আমের চারা রয়েছে। ১১০ শতাংশ জমিতে মেহগিনির চারা। অবশিষ্ট জমিতে লিচু, সবেদা, জামরুল, পেয়ারা, কদবেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চারা রয়েছে। এ মৌসুমে কত টাকার চারা বিক্রি হবে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ভাসমান অসাধু ব্যবসায়ীদের চারা আমদানীর প্রবণতা কম থাকলে স্বাভাবিক বাজার ব্যবস্থায় ৫-৬ লাখ টাকা লাভ হবে। নার্সারী করে ৮ সদস্যের সংসারের খরচ চালিয়ে তিনি ২টি চৌচালা টিনের ঘর দিয়েছেন। লেখাপড়া না জানা পরিবারের ছোট ছেলে ফরিদ সেখকে ফরিদপুর সরকারী রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অনার্সের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। আব্দুর রশিদ বলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি বৃক্ষপ্রেমে কাটাতে চান। কৃষি ও বন বিভাগের নিকট তার প্রাণের দাবি গাছ লাগানোর মৌসুম এলে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নি¤œমানের চারা কম দামে বিক্রি করে প্রকৃত নার্সারী মালিক ও উদ্যোক্তাদের ঠকানোর প্রবণতা বন্ধের হস্তক্ষেপ কামনা।
No comments