জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ
নির্যাতনের পর মুন্সিগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা আসিফ হাসানের মৃত্যুর প্রতিবাদে গতকাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনের সড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ করেন |
মুন্সিগঞ্জের
সিরাজদিখান উপজেলায় প্রতিপক্ষের নির্যাতনের পরে কারাগারে ছাত্রলীগের নেতা
আসিফ হাসান মারা যাওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ
মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনের সড়কে তাঁরা এই
কর্মসূচি পালন করেন। ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত ওই কর্মসূচিতে জেলা ও সদর উপজেলা
ছাত্রলীগের নেতারা অংশ নেন। সড়ক অবরোধের কারণে জেলা শহরে যান চলাচল বন্ধ
হয়ে যায়। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে
নিয়ে বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এতে জেলা
ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল মৃধা সভাপতিত্ব করেন। এতে বক্তৃতা করেন শহর
ছাত্রলীগের সভাপতি নছিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত হোসেন, সদর থানা
ছাত্রলীগের সভাপতি সুরুজ মিয়া প্রমুখ। একই দাবিতে বাকি পাঁচ উপজেলায়ও
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তারা
বলেন, আসিফ হত্যার সুষ্ঠু বিচার এবং দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে
আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে বড়
ধরনের আন্দোলন করা হবে। সিরাজদিখান থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান বলেন,
ছাত্রলীগের ওই নেতার মৃত্যুর ঘটনায় থানায় গত সোমবার রাতে তাঁর বাবা হাবিবুর
রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক
ইয়ামিনসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ছাত্রলীগের নেতা আসিফ হাসানের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সিরাজদিখান
উপজেলার কোলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী লিয়াকত মীর
নির্বাচিত হন। লিয়াকতের পক্ষে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আসিফ
হাসান নির্বাচন করেন। পরাজিত চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী
নাসির উদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচন করেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ
সম্পাদক ইয়ামিন হোসেন। এ কারণে উপজেলা ছাত্রলীগ ইয়ামিনকে বহিষ্কার করে।
এরপর থেকে আসিফের সঙ্গে নাসির উদ্দিনের পক্ষের শত্রুতা বেড়ে পায়। ১২ এপ্রিল
আসিফ হাসানকে ইয়ামিনসহ কয়েকজন ধরে নিয়ে একটি বাড়িতে নির্যাতন করেন। পরে
তাঁকে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়। ইয়ামিনকে মারধর করার অভিযোগে করা একটি
মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। গত রোববার ভোরে
আসিফ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে তিনি
মারা যান।
No comments