২২ গজ থেকে জীবনের জুটি
এই তো দুই বছর আগে বাংলাদেশে হয়ে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা। স্মিথ-ফিঞ্চরা সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নিয়েছেন, তবে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের দলটা তখনো টিকে ছিল। তাদের খেলা দেখতে প্রতি ম্যাচেই একজন নিবিষ্ট দর্শক বসে থাকতেন গ্যালারিতে। কিন্তু মেয়েদের ম্যাচে মিচেল স্টার্কের এমন নিয়মিত উপস্থিতি কেন? অনেকেই জানতেন কারণটা, অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের দলের অ্যালিসিয়া হিলির সঙ্গে অনেক দিন ধরেই মন দেওয়া-নেওয়া চলছে! সেই প্রেমটা পূর্ণতা পেয়েছে এই সপ্তাহে। স্টার্ক বোলার আর হিলি উইকেটকিপার, দুজন খেলেন দুই দলে। ২২ গজে দুজনের জুটি বাঁধা সম্ভব নয়। কিন্তু জীবনের ইনিংসে জুটি বাঁধতে তো সমস্যা নেই। দুজনের পরিচয় সেই শৈশব থেকে, তবে বন্ধুতা প্রেমে রূপ নিয়েছে বছর তিনেক আগ থেকে। এখন তো সারা জীবনের জন্যই একে অন্যের পাশে থাকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন! স্টার্ক-হিলিই অবশ্য ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার দম্পতি নন। তবে দুজনেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, এটা বিবেচনায় নিলে সেই দম্পতিদের সংখ্যা মাত্র চার। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত জুটি রিচার্ড হ্যাডলি ও ক্যারেন হ্যাডলি। হ্যাডলিকে নতুন করে পরিচয় করে দেওয়ার কিছু নেই। নিউজিল্যান্ডের তো বটেই, সর্বকালেরই অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ক্যারেন অবশ্য এতটা বিখ্যাত নন, নিউজিল্যান্ডের হয়ে ১৯৭৮ সালে একটা মাত্র ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। তবে দুজনের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে আরও দুই দশক আগেই। এই দুজনকে অবশ্য টেস্ট খেলুড়ে জুটি বলার উপায় নেই। তবে প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার দম্পতি যাঁদের বলা হয়, তাঁরা এমন বিখ্যাত কেউ নন। রজার প্রিডো ১৯৬০ সালের শেষ দিকে তিনটি টেস্ট খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের হয়ে। তাঁর স্ত্রী রুথ ওয়েস্টব্রুক অবশ্য ১১টি টেস্ট খেলেছেন। প্রিডো এখনো বেঁচে আছেন, ওয়েস্টব্রুক পৃথিবী ছেড়ে গেছেন কিছুদিন আগে। এই তালিকার শেষ যে দম্পতি, তাঁদের একজনও ক্যানসারের কাছে হার মেনে পৃথিবী ছেড়ে গেছেন বছর তিনেক আগে। তিনি শ্রীলঙ্কার সাবেক উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান গাই ডে অলভিস। শ্রীলঙ্কার হয়ে ১১টি টেস্ট খেলেছিলেন অলভিস, ১৯৮৩ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ রানও ছিল এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের। খেলা ছাড়ার পর শ্রীলঙ্কার মেয়েদের দলের কোচ হয়েছিলেন। পরে ওই দলেরই রাসাঞ্জলি চান্ডিমা সিলভাকে বিয়ে করেন। রাসাঞ্জলিও ১৯৯৮ সালে একটি টেস্ট খেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার হয়ে।
No comments