কক্সবাজারে রেল যাবে তিন বছরের মধ্যে
কক্সবাজারে রেল যাচ্ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যেই চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া ট্রান্স এশীয় রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত হতে মিয়ানমার সীমান্ত গুনদুম পর্যন্ত রেলপথও তৈরি হবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ-সংক্রান্ত ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার ‘দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মিয়ানমারের নিকটে গুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প’ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২২ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্পটি শেষ হবে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে চীন থেকে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশও এ রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। তাই এ প্রকল্পটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, ২০১০ সালে ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি প্রথম অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পে সিঙ্গেল লাইন মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু ট্রান্স এশীয় রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত হতে ব্রডগেজ রেলপথ লাগবে। তাই প্রকল্প সংশোধন করে গতকাল পাস করা হয়। জমি অধিগ্রহণসহ প্রকল্পের বিভিন্ন অনুষঙ্গে ব্যয় বেড়েছে ১৬ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এবং রামু হতে মিয়ানমারের নিকট গুনদুম সীমান্ত পর্যন্ত আরও ২৮ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এ রেলপথে মিটারগেজ ও ব্রডগেজ—দুই ধরনের ট্রেন চলতে পারবে। গতকালের একনেক সভায় এ প্রকল্পটিসহ ১৮ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকার মোট আট প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো হলো ৫৯ কোটি টাকার বাংলাদেশের রেলওয়ের জন্য ১০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন; ১৫৫ কোটি টাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন যাত্রাবাড়ী মোড় হতে ত্রিমুখী রাস্তা প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন; ১২৩ কোটি টাকার বড়তাকিয়া (আবুতোরাব) থেকে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সংযোগ সড়ক নির্মাণ; ৯০ কোটি টাকার সাদুল্যাপুর-পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জ জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ; ৬৮ কোটি টাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৯৩তম কিলোমিটারে ২১৯ দশমিক ৪৫৬ মিটার দীর্ঘ শাহবাজপুর সেতু নির্মাণ এবং বিদ্যমান সেতু পুনর্বাসন; ৮৪ কোটি টাকার মনু নদের সেচ প্রকল্পের আওতাধীন কাশিমপুর পাম্প হাউস পুনর্বাসন এবং ৪২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার মাল্টি চ্যানেল স্লিপওয়ে নির্মাণ প্রকল্প। প্রসঙ্গ সিপিডি: গত রোববার সংবাদ সম্মেলন করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বাজেট প্রস্তাব দিয়েছে। চলতি অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি, বাজেট প্রাক্কলন-বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিপিডির মূল্যায়ন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সিপিডিকে ধন্যবাদ, এ বছরের ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেনি তারা। তাদের আশঙ্কা, আগামী অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধি টিকবে কি না। তবে এ বছরে আমাদের প্রবৃদ্ধির হিসাব সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর আগামী বছরে কত হবে, তা আগামী বছর দেখা যাবে।’ আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘অনেকে সিপিডি সম্পর্কে বিভিন্ন রকম মন্তব্য করেন, আমি মন্তব্য করি না। আমি সিপিডি উপভোগ করি। তারা মাঝে মাঝে ভালো কথা বলে, আবার খারাপ কথাও বলে। তবে কোনটি বেশি বলে তা আমি বলব না।’
No comments