কলকাতার একমাত্র ‘বাঙালি’ সাকিব!

কলকাতা নাইট রাইডার্সের একমাত্র ‘বাঙালি’ সাকিব!
মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দিয়েই শুরু। ঘরের ছেলেকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলতে দেখে বাংলাদেশের মানুষ প্রেমে পড়ে গেল আইপিএলের এই দলের। ‘কলকাতা’ নামটি আর এই দলের সঙ্গে সৌরভ গাঙ্গুলীর সম্পৃক্ততার কারণে আইপিএলের শুরুর দিন থেকেই অবশ্য এই দলের প্রতি একটা প্রচ্ছন্ন দুর্বলতা ছিল বাংলাদেশের মানুষের। পাঁচ মৌসুম ধরে ঘরের আরেক ছেলে সাকিব আল হাসান কলকাতার হয়ে খেলার ফলে দুর্বলতা আর ভালো লাগা এখন পরিণত জোর সমর্থনে। এবারের মৌসুমে মুস্তাফিজুর রহমান সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলার কারণে এই সমর্থন হয়তো কিছুটা হলেও ভাগ হয়ে গেছে, কিন্তু বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্রিকেটপ্রেমীর আইপিএল উপভোগের কারণ এখনো কলকাতাই। কিন্তু যে শহরের নামে আইপিএলের এই দলটি, সেখানে সেই শহরেরই কোনো ক্রিকেটারই নেই। সেই শহর তো দূরের কথা, ‘করব, লড়ব, জিতব রে’র স্লোগান আর বাঙালি​য়ানা ব্র্যান্ডিং পুঁজি হিসেবে নিয়েছে যে কেকেআর, সেই দলে সাকিবই এখন একমাত্র বাঙালি। এ নিয়ে কলকাতার স্থানীয় কিছু পত্রিকায় হাহুতাশও চলছে। আছে সমালোচনাও। তাদের সমালোচনার মূল লক্ষ্য দলের মালিক বলিউড তারকা শাহরুখ খান। কলকাতার ক্রিকেটার না থাকায় কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরাও এই দলের ব্যাপারে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে স্থানীয় পত্রিকাগুলোর প্রতিবেদনে জা​নানো হচ্ছে। এবারের আইপিএলে কলকাতার ইডেন গার্ডেনের বেশির ভাগ গ্যালারি যে ফাঁকা থাকছে, এটাও নাকি এর জন্য দায়ী। কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমী বাঙালি আপাতত সাকিবকেই অন্ধের যষ্টি মানছেন। অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর দিল্লির, উমেশ যাদব বিদর্ভের। ইউসুফ পাঠান ভদোদরার। দলে নেই বাংলার কোনো ক্রিকেটারই। অথচ এই দলেই এককালে খেলেছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা, মনোজ তিওয়ারী ও ঋদ্ধিমান সাহাদের মতো বাংলার ক্রিকেটাররা। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এ যেন এক দুধারি তলোয়ারের মতো বাস্তবতা। একদিকে শহরকেন্দ্রিক দল গড়ে তোলা, অন্যদিকে সাফল্যটাই শেষ কথা জন্য সেই শহরের কোনো প্রতিনিধি না রাখা। কোহলি দিল্লির ছেলে হলেও আইপিএলে যেমন তিনি হয়ে যান পুরোদস্তুর বেঙ্গালুরুর। কিন্তু বাকি দলগুলো এর একটা ভারসাম্য এনেছে। স্থানীয় রাজ্যের, ভারতের পাশাপা​শি বিশ্বের তারকা ক্রিকেটারদের মিলিয়ে দল গড়ার চেষ্টা তো আছেই। সেই সঙ্গে দলের নীতিনির্ধারণে বেশ কিছু পরিচিত মুখও রাখা হয়েছে। মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে যেমন আছেন শচীন টেন্ডুলকার। সানরাইজার্স হায়দরাবাদে ভি ভি এস লক্ষ্মণ। প্রশ্ন উঠেছে, সৌরভ গাঙ্গুলী কি কলকাতা নাইট রাইডার্সের শীর্ষ দায়িত্ব পেতে পারতেন না? কলকাতার একটি পত্রিকার দাবি, সৌরভকে কলকাতা দলে থেকে দূরে রাখাটা নাকি মালিক শাহরুখেরই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। শাহরুখের সঙ্গে ব্যক্তিত্বের সংঘাত হওয়ায় দুই মৌসুম পর কেকেআর ছেড়ে সৌরভ চলে গিয়েছিলেন পুনেতে। আপাতত কলকাতার ক্রিকেটারবিহীন কেকেআরে একমাত্র বাঙালি নাইট সাকিবের কাঁধেই প্রত্যাশার ভার।

No comments

Powered by Blogger.