আগুনের নগরী হবে সিলেট by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
চারদিকে
দাউ দাউ আগুন। ঠাঁই নেয়ার জায়গা নেই কোথাও। মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পের একটা
ধাক্কায় এমন চিত্রই হতে পারে সিলেটের। ধসে পড়বে অন্তত ১০ হাজার ভবন। ভবন
ধসে যত না ক্ষতি হবে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে অপরিকল্পিতভাবে বিস্তৃত
বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে, গ্যাসের পাইপ ফেটে আগুন সৃষ্টিতে। অসহায়ভাবে তখন দেখা
ছাড়া কিছুই করার থাকবে না বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ও দমকলের। মানচিত্রে
বিরান এক ভূমি হিসেবেই চিত্রিত হবে সিলেট।
দেশের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত সিলেটে অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন কেবলই ভয়ের জন্ম দিচ্ছে। সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনই সতর্ক না হলে ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে সামনে। ভূমিকম্প বিশ্লেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় প্রতি একশ বছরে একটি বড় ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সিলেট অঞ্চলে এ ধরনের ভূমিকম্পের পর পেরিয়ে গেছে ১শ বছরের বেশি সময়। ১৮৯৭ সালের সে ভয়াবহ ভূমিকম্পটি ‘বড় ভইছাল’ নামে সিলেট অঞ্চলে এখনও আতঙ্ক জাগানিয়া গল্প হয়ে আছে। রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ‘বড় ভইছালের’ গল্পও হার মানবে।
ভূমিকম্প তো নয়ই, বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড সামাল দেয়ার সামর্থ্যও নেই সিলেটে বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর। সিলেটে এখন আকাশছোঁয়া ভবন তৈরি হচ্ছে একের পর এক। এর মধ্যে ১০ তলার ওপরে হাজারখানেক ভবন আছে নগরজুড়ে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের সামর্থ্য নেই তাদের সরঞ্জাম দিয়ে ৫ তলার বেশি উঁচু আগুন নিয়ন্ত্রণের। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে একটি ফায়ার স্টেশনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। আর শনিবার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে উদ্বোধন হয় নতুন আরও একটি ফায়ার স্টেশনের। সিলেট বিভাগে নতুন দুটো দমকল ইউনিট যোগ হলেও আদতে শক্তি বাড়েনি ফায়ার সার্ভিসের। জানা গেছে, বিভাগের অন্যান্য ফায়ার স্টেশনের সঙ্গে শক্তি ভাগাভাগি করে আপাতত কাজ চালাতে হবে নতুন এ দুটো ফায়ার স্টেশনকে।
সিলেট বিভাগে ১৯টি ফায়ার স্টেশনের মধ্যে একমাত্র সিলেট সদর ফায়ার স্টেশনই ‘এ’ ক্যাটাগরির। বাকিগুলোর মধ্যে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ (ওসমানীনগর), জকিগঞ্জ; সুনামগঞ্জের সদর উপজেলা ও ছাতক; মৌলভীবাজারের সদর উপজেলা, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া ও বড়লেখা; হবিগঞ্জের সদর উপজেলা ও মাধবপুর ফায়ার স্টেশনগুলো ‘বি’ ক্যাটাগরির। আর ‘সি’ ক্যাটাগরির ফায়ার স্টেশনের মধ্যে রয়েছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ, বানিয়াচং ও শায়েস্তাগঞ্জ। পুরো সিলেট বিভাগে ফায়ার সার্ভিসের কোন রিভার স্টেশন নেই। সিলেটে কোন রিভার স্টেশন না থাকায় নৌ দুর্ঘটনায় একেবারে অসহায় পড়ে ফায়ার সার্ভিস। উদ্ধার অভিযানের জন্য বিভাগে কোন ডুবুরি নেই। নারায়ণগঞ্জ ও চাঁদপুর থেকে চেয়ে আনা দুই ডুবুরিই পুরো বিভাগের ভরসা। রিভার স্টেশন তো নেই-ই, এমনকি উদ্ধার অভিযানের জন্য কোন স্পিডবোটও নেই। দুর্ঘটনা হলে সংশ্লিষ্ট থানাকে অনুরোধ করে নৌকা জোগাড় করে তবেই অভিযানে নামতে হয়। নদী ও হাওর-বাঁওড়ে ঘেরা সিলেটে রিভার স্টেশনের প্রয়োজনীয়তা প্রতি মুহূর্তেই অনুভব করছেন বিভাগজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোটি মানুষ।
সিলেট ফায়ার স্টেশনটি নামেই শুধু ‘এ’ ক্যাটাগরি। সুবিধার দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে অনেকখানি। ‘বি’ ক্যাটাগরির অবকাঠামোতেই চলছে সিলেট ফায়ার স্টেশনের কাজ। স্টেশনটিতে শরণার্থীদের মতো গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে ফায়ারম্যানদের। কর্তাদের বসার জায়গাও হয় না সেখানে। অফিস করতে হচ্ছে ভাড়া বাসায়। নগরীর খুলিয়াটুলায় একটি ভবনের দুটো ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চলছে বিভাগীয় অফিসের কার্যক্রম।
সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে তারও পূর্ণ সদ্ব্যবহার হচ্ছে না লোকবলের অভাবে। বিভাগ পর্যায়ের শীর্ষ পদটিই শূন্য পড়ে আছে এখানে। সহকারী পরিচালক সাহিদুর রহমান বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে সামলাচ্ছেন উপ-পরিচালকের পদটিও। বিভাগের ১৯টি ফায়ার স্টেশনের ১৩টিতেই স্টেশন অফিসার নেই। অন্যান্য পদের ক্ষেত্রেও শূন্যতা রয়েছে। ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টরের ৬টি পদের দুটি পদে নিয়োগ নেই। জেলাওয়ারি ৪টি স্টাফ অফিসারের সব ক’টি পদই শূন্য রয়েছে। সাব অফিসারের ১০টি পদের মধ্যে ২টি খালি পড়ে আছে। এছাড়া লিডারের ৬টি, ড্রাইভারের ১১টি ও ফায়ারম্যানের ৫৩টি পদ শূন্য রয়েছে। এমনকি শূন্যতা রয়েছে নন-অপারেশনাল ও চতুর্থ শ্রেণীর পদগুলোতেও।
বিভাগীয় সদর দপ্তর না থাকায়ও ভুগতে হচ্ছে সিলেটে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে। জায়গার অভাবে অনেক উপকরণই অযত্নে পড়ে আছে। আবার জায়গা না থাকায় প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণ আনাও যাচ্ছে না। অবশ্য সিলেট ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, সদর দপ্তরের জন্য জায়গার সন্ধান চলছে। অন্তত ৩ একর জায়গা প্রয়োজন জানিয়ে সহকারী পরিচালক সাহিদুর রহমান জানান, নগরীর মধ্যে এ পরিমাণ জায়গা পাওয়া যাবে না, তাই আমরা নগরীর কাছাকাছি জায়গা খুঁজছি। নিজেদের সামর্থ্য যে কম, তা মানছেন সাহিদুর রহমানও। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের যত ক্ষমতাই থাকুক না কেন, একা আমাদের কিছু করার নেই। জনগণেরও সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, সারাদেশে আমাদের ৫ হাজারের মতো অপারেশেনাল কর্মী আছেন। কোন বড় বিপর্যয় দেখা দিলে তাদের সবাইকে জড়ো করলেও সামলানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এজন্য আমরা ভলান্টিয়ার হিসেবে সাধারণ মানুষের মাঝেই আমাদের কর্মী তৈরি করছি। সাহিদুর রহমান তথ্য দেন, ইতিমধ্যে শুধু সিলেট নগরীতেই ৫ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরি করা হয়েছে।
দেশের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত সিলেটে অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন কেবলই ভয়ের জন্ম দিচ্ছে। সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনই সতর্ক না হলে ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে সামনে। ভূমিকম্প বিশ্লেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় প্রতি একশ বছরে একটি বড় ধরনের ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সিলেট অঞ্চলে এ ধরনের ভূমিকম্পের পর পেরিয়ে গেছে ১শ বছরের বেশি সময়। ১৮৯৭ সালের সে ভয়াবহ ভূমিকম্পটি ‘বড় ভইছাল’ নামে সিলেট অঞ্চলে এখনও আতঙ্ক জাগানিয়া গল্প হয়ে আছে। রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ‘বড় ভইছালের’ গল্পও হার মানবে।
ভূমিকম্প তো নয়ই, বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড সামাল দেয়ার সামর্থ্যও নেই সিলেটে বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর। সিলেটে এখন আকাশছোঁয়া ভবন তৈরি হচ্ছে একের পর এক। এর মধ্যে ১০ তলার ওপরে হাজারখানেক ভবন আছে নগরজুড়ে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের সামর্থ্য নেই তাদের সরঞ্জাম দিয়ে ৫ তলার বেশি উঁচু আগুন নিয়ন্ত্রণের। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে একটি ফায়ার স্টেশনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। আর শনিবার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে উদ্বোধন হয় নতুন আরও একটি ফায়ার স্টেশনের। সিলেট বিভাগে নতুন দুটো দমকল ইউনিট যোগ হলেও আদতে শক্তি বাড়েনি ফায়ার সার্ভিসের। জানা গেছে, বিভাগের অন্যান্য ফায়ার স্টেশনের সঙ্গে শক্তি ভাগাভাগি করে আপাতত কাজ চালাতে হবে নতুন এ দুটো ফায়ার স্টেশনকে।
সিলেট বিভাগে ১৯টি ফায়ার স্টেশনের মধ্যে একমাত্র সিলেট সদর ফায়ার স্টেশনই ‘এ’ ক্যাটাগরির। বাকিগুলোর মধ্যে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ (ওসমানীনগর), জকিগঞ্জ; সুনামগঞ্জের সদর উপজেলা ও ছাতক; মৌলভীবাজারের সদর উপজেলা, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া ও বড়লেখা; হবিগঞ্জের সদর উপজেলা ও মাধবপুর ফায়ার স্টেশনগুলো ‘বি’ ক্যাটাগরির। আর ‘সি’ ক্যাটাগরির ফায়ার স্টেশনের মধ্যে রয়েছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ, বানিয়াচং ও শায়েস্তাগঞ্জ। পুরো সিলেট বিভাগে ফায়ার সার্ভিসের কোন রিভার স্টেশন নেই। সিলেটে কোন রিভার স্টেশন না থাকায় নৌ দুর্ঘটনায় একেবারে অসহায় পড়ে ফায়ার সার্ভিস। উদ্ধার অভিযানের জন্য বিভাগে কোন ডুবুরি নেই। নারায়ণগঞ্জ ও চাঁদপুর থেকে চেয়ে আনা দুই ডুবুরিই পুরো বিভাগের ভরসা। রিভার স্টেশন তো নেই-ই, এমনকি উদ্ধার অভিযানের জন্য কোন স্পিডবোটও নেই। দুর্ঘটনা হলে সংশ্লিষ্ট থানাকে অনুরোধ করে নৌকা জোগাড় করে তবেই অভিযানে নামতে হয়। নদী ও হাওর-বাঁওড়ে ঘেরা সিলেটে রিভার স্টেশনের প্রয়োজনীয়তা প্রতি মুহূর্তেই অনুভব করছেন বিভাগজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোটি মানুষ।
সিলেট ফায়ার স্টেশনটি নামেই শুধু ‘এ’ ক্যাটাগরি। সুবিধার দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে অনেকখানি। ‘বি’ ক্যাটাগরির অবকাঠামোতেই চলছে সিলেট ফায়ার স্টেশনের কাজ। স্টেশনটিতে শরণার্থীদের মতো গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে ফায়ারম্যানদের। কর্তাদের বসার জায়গাও হয় না সেখানে। অফিস করতে হচ্ছে ভাড়া বাসায়। নগরীর খুলিয়াটুলায় একটি ভবনের দুটো ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চলছে বিভাগীয় অফিসের কার্যক্রম।
সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে তারও পূর্ণ সদ্ব্যবহার হচ্ছে না লোকবলের অভাবে। বিভাগ পর্যায়ের শীর্ষ পদটিই শূন্য পড়ে আছে এখানে। সহকারী পরিচালক সাহিদুর রহমান বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে সামলাচ্ছেন উপ-পরিচালকের পদটিও। বিভাগের ১৯টি ফায়ার স্টেশনের ১৩টিতেই স্টেশন অফিসার নেই। অন্যান্য পদের ক্ষেত্রেও শূন্যতা রয়েছে। ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টরের ৬টি পদের দুটি পদে নিয়োগ নেই। জেলাওয়ারি ৪টি স্টাফ অফিসারের সব ক’টি পদই শূন্য রয়েছে। সাব অফিসারের ১০টি পদের মধ্যে ২টি খালি পড়ে আছে। এছাড়া লিডারের ৬টি, ড্রাইভারের ১১টি ও ফায়ারম্যানের ৫৩টি পদ শূন্য রয়েছে। এমনকি শূন্যতা রয়েছে নন-অপারেশনাল ও চতুর্থ শ্রেণীর পদগুলোতেও।
বিভাগীয় সদর দপ্তর না থাকায়ও ভুগতে হচ্ছে সিলেটে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে। জায়গার অভাবে অনেক উপকরণই অযত্নে পড়ে আছে। আবার জায়গা না থাকায় প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণ আনাও যাচ্ছে না। অবশ্য সিলেট ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, সদর দপ্তরের জন্য জায়গার সন্ধান চলছে। অন্তত ৩ একর জায়গা প্রয়োজন জানিয়ে সহকারী পরিচালক সাহিদুর রহমান জানান, নগরীর মধ্যে এ পরিমাণ জায়গা পাওয়া যাবে না, তাই আমরা নগরীর কাছাকাছি জায়গা খুঁজছি। নিজেদের সামর্থ্য যে কম, তা মানছেন সাহিদুর রহমানও। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের যত ক্ষমতাই থাকুক না কেন, একা আমাদের কিছু করার নেই। জনগণেরও সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, সারাদেশে আমাদের ৫ হাজারের মতো অপারেশেনাল কর্মী আছেন। কোন বড় বিপর্যয় দেখা দিলে তাদের সবাইকে জড়ো করলেও সামলানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এজন্য আমরা ভলান্টিয়ার হিসেবে সাধারণ মানুষের মাঝেই আমাদের কর্মী তৈরি করছি। সাহিদুর রহমান তথ্য দেন, ইতিমধ্যে শুধু সিলেট নগরীতেই ৫ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরি করা হয়েছে।
No comments