চট্টগ্রামে তরুণদের হাতে মারণাস্ত্র by মহিউদ্দীন জুয়েল
চট্টগ্রামে
২০ থেকে ২৫ বছরের ছেলেদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে দামি অস্ত্র। পাওয়া
যাচ্ছে মারণাস্ত্র একে-২২, বিদেশী পিস্তল কিংবা ধারালো রামদা। হাতে হাতে
এসব অস্ত্র চলে যাওয়ায় বাড়ছে অপরাধ। খুন হচ্ছে মানুষ।
হঠাৎ করে টগবগে তরুণদের হাতে অস্ত্র দেখে খোদ বিস্মিত নগর পুলিশের কর্মকর্তারা। গ্রেপ্তার হওয়া খুনি, ছিনতাইকারী ও দাগি আসামিদের তালিকায় রয়েছে ২০ বছরের যুবকদের ছবি। চট্টগ্রাম শহরে এই বয়সের অন্তত আরও ৩০ জন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী তৈরি হয়েছে বলে মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন নগর পুলিশের এক কর্মকর্তা। পুলিশের তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, ঈদের আগে সন্দ্বীপে গরুর বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গুলিবিনিময়ে নিহত হয় ২ জন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৯ই অক্টোবর সেখানে অভিযান চালানোর পর বেরিয়ে আসে কয়েকজন মিলে গড়ে তোলা অস্ত্র ভাণ্ডার।
গ্রেপ্তার করা হয় খুনের মামলার প্রধান আসামি মিশু গ্রুপের প্রধান ফজলে এলাহী মিশুকে। গ্রেপ্তার হয় আরও ৩ সহযোগী। যাদের সবার বয়স ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায় দুইটি পিস্তল, দুইটি একনলা বন্দুক, দুইটি শটগান, ৫ রাউন্ড থ্রি নট থ্রি রাইফেলের গুলি ও ১০টি কিরিচ।
গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জন হলো- সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া গ্রামের মো. রেজাউল মাওলার ছেলে ফজলে এলাহী মিশু ওরফে মিশন, পৌরসভা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত জামশেদের ছেলে মো. রুবেল, একই উপজেলার বাউরিয়া গ্রামের হাজী আতাউর রহমানের ছেলে লুৎফর রহমান ও খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সামন্ত সেনা গ্রামের বাহারের ছেলে মাহাবুব আলম রিয়াজ। এদের মধ্যে মিশুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার রুবেল ও রিয়াজ জানান, অস্ত্র হাতে থাকলে এলাকায় প্রভাব খাটানো সহজ হয়। প্রতিপক্ষের লোকজন ভয় পায়। এলাকায় রাজনীতি করলেও এসব অস্ত্র আছে বলে খবর ছড়িয়ে দিতে হয়। তা না হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের দুর্বল মনে করতে পারে।
অপর সহযোগী লুৎফর বলেন, যে ঘটনার জন্য তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই ঘটনায় তারা সমর্থন দিতে গিয়ে ধরা পড়েছে। তবে পুরো ঘটনাটি তারা খুব কাছ থেকে দেখেছে। এসব ঘটনায় অনেক রাজনৈতিক নেতা জড়িত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার পরপরই মানবজমিনের সঙ্গে কথা বলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশেষ শাখার মুহাম্মদ নাঈমুল হাসান। তিনি জানান, ঘটনার সময় দুই ব্যক্তি নিহত হয়। এরপর মিশু খুলনা চলে যায়। সেখান থেকে সে ধরা পড়ে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া প্রচুর অস্ত্র দেখে বিস্মিত পুলিশ বিভাগ।
তবে কেবল এই ঘটনাই নয়, গত ২৩শে সেপ্টেম্বর রাতে নগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় এক ব্যবসায়ী খুন হয়। এই ঘটনায় পাওয়া যায় দুটি অত্যাধুনিক একে-২২ রাইফেল। একইভাবে গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর শহরে বায়েজিদ বোস্তামী থানার বাংলাবাজার এলাকার একটি মাজারে খুন করা হয় এক খাদেম ও ফকিরকে। দুটি ঘটনায় আটক আসামিদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ২০ থেকে ২৫ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
যাদের মধ্যে রয়েছে বুলবুল আহমেদ সরকার ওরফে ফুয়াদ। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে। আরও আছে বোমা বিস্ফোরণে নিহত
তৌফিকুল ইসলাম জাবেদ ওরফে রানা। যার বয়স ২২। গ্রেপ্তার হয়েছে সুজন বাবু (২৫)। যার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানার হরিণদিয়া মাদরাসাপাড়ায়। পুলিশ জানায়, অত্যন্ত নৃশংসভাবে মাজারে ঢুকে এদের কয়েকজন দুই ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। অন্যরা বিপথে গিয়ে ছিনতাই করে টাকা কামানোর পথ অবলম্বন করে। এদের সবার মধ্যে নাশকতার অভিযোগ রয়েছে। থানায় হয়েছে ৫টির বেশি মামলা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মানবজমিনের সঙ্গে কথা হয় চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডলের। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযানে অনেক অপরাধী ধরতে হয় আমাদের। কিন্তু অল্প বয়সী বিশেষ করে ২০ বছরের টগবগে তরুণদের হাতে অস্ত্র দেখে সত্যিই আমরা হতবাক হই। যেখানে দেশকে দেয়ার সময় তাদের, সেখানে ওরা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপকর্মে।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় ২০ থেকে ২৫ বছরের তরুণদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। অপরাধ কমিয়ে আনতে আমরা ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছি। এই লক্ষ্যে নানামুখী সচেতনতামূলক কার্যক্রমের কথা তিনি উল্লেখ করেন।
হঠাৎ করে টগবগে তরুণদের হাতে অস্ত্র দেখে খোদ বিস্মিত নগর পুলিশের কর্মকর্তারা। গ্রেপ্তার হওয়া খুনি, ছিনতাইকারী ও দাগি আসামিদের তালিকায় রয়েছে ২০ বছরের যুবকদের ছবি। চট্টগ্রাম শহরে এই বয়সের অন্তত আরও ৩০ জন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী তৈরি হয়েছে বলে মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন নগর পুলিশের এক কর্মকর্তা। পুলিশের তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, ঈদের আগে সন্দ্বীপে গরুর বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গুলিবিনিময়ে নিহত হয় ২ জন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৯ই অক্টোবর সেখানে অভিযান চালানোর পর বেরিয়ে আসে কয়েকজন মিলে গড়ে তোলা অস্ত্র ভাণ্ডার।
গ্রেপ্তার করা হয় খুনের মামলার প্রধান আসামি মিশু গ্রুপের প্রধান ফজলে এলাহী মিশুকে। গ্রেপ্তার হয় আরও ৩ সহযোগী। যাদের সবার বয়স ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায় দুইটি পিস্তল, দুইটি একনলা বন্দুক, দুইটি শটগান, ৫ রাউন্ড থ্রি নট থ্রি রাইফেলের গুলি ও ১০টি কিরিচ।
গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জন হলো- সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়া গ্রামের মো. রেজাউল মাওলার ছেলে ফজলে এলাহী মিশু ওরফে মিশন, পৌরসভা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত জামশেদের ছেলে মো. রুবেল, একই উপজেলার বাউরিয়া গ্রামের হাজী আতাউর রহমানের ছেলে লুৎফর রহমান ও খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সামন্ত সেনা গ্রামের বাহারের ছেলে মাহাবুব আলম রিয়াজ। এদের মধ্যে মিশুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার রুবেল ও রিয়াজ জানান, অস্ত্র হাতে থাকলে এলাকায় প্রভাব খাটানো সহজ হয়। প্রতিপক্ষের লোকজন ভয় পায়। এলাকায় রাজনীতি করলেও এসব অস্ত্র আছে বলে খবর ছড়িয়ে দিতে হয়। তা না হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের দুর্বল মনে করতে পারে।
অপর সহযোগী লুৎফর বলেন, যে ঘটনার জন্য তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই ঘটনায় তারা সমর্থন দিতে গিয়ে ধরা পড়েছে। তবে পুরো ঘটনাটি তারা খুব কাছ থেকে দেখেছে। এসব ঘটনায় অনেক রাজনৈতিক নেতা জড়িত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার পরপরই মানবজমিনের সঙ্গে কথা বলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশেষ শাখার মুহাম্মদ নাঈমুল হাসান। তিনি জানান, ঘটনার সময় দুই ব্যক্তি নিহত হয়। এরপর মিশু খুলনা চলে যায়। সেখান থেকে সে ধরা পড়ে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া প্রচুর অস্ত্র দেখে বিস্মিত পুলিশ বিভাগ।
তবে কেবল এই ঘটনাই নয়, গত ২৩শে সেপ্টেম্বর রাতে নগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় এক ব্যবসায়ী খুন হয়। এই ঘটনায় পাওয়া যায় দুটি অত্যাধুনিক একে-২২ রাইফেল। একইভাবে গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর শহরে বায়েজিদ বোস্তামী থানার বাংলাবাজার এলাকার একটি মাজারে খুন করা হয় এক খাদেম ও ফকিরকে। দুটি ঘটনায় আটক আসামিদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ২০ থেকে ২৫ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
যাদের মধ্যে রয়েছে বুলবুল আহমেদ সরকার ওরফে ফুয়াদ। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে। আরও আছে বোমা বিস্ফোরণে নিহত
তৌফিকুল ইসলাম জাবেদ ওরফে রানা। যার বয়স ২২। গ্রেপ্তার হয়েছে সুজন বাবু (২৫)। যার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানার হরিণদিয়া মাদরাসাপাড়ায়। পুলিশ জানায়, অত্যন্ত নৃশংসভাবে মাজারে ঢুকে এদের কয়েকজন দুই ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। অন্যরা বিপথে গিয়ে ছিনতাই করে টাকা কামানোর পথ অবলম্বন করে। এদের সবার মধ্যে নাশকতার অভিযোগ রয়েছে। থানায় হয়েছে ৫টির বেশি মামলা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মানবজমিনের সঙ্গে কথা হয় চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডলের। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযানে অনেক অপরাধী ধরতে হয় আমাদের। কিন্তু অল্প বয়সী বিশেষ করে ২০ বছরের টগবগে তরুণদের হাতে অস্ত্র দেখে সত্যিই আমরা হতবাক হই। যেখানে দেশকে দেয়ার সময় তাদের, সেখানে ওরা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপকর্মে।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় ২০ থেকে ২৫ বছরের তরুণদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। অপরাধ কমিয়ে আনতে আমরা ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছি। এই লক্ষ্যে নানামুখী সচেতনতামূলক কার্যক্রমের কথা তিনি উল্লেখ করেন।
No comments