সীমান্ত বরাবর ৪৫০টি মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করবে ভারত
বাংলাদেশ
ও ভুটানের সীমান্ত বরাবর ৪৫০ থেকে ৫০০ মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের সিদ্ধান্ত
নিয়েছে ভারত সঞ্চার নিগাম লিমিটেড (বিএসএনএল)। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়
সীমান্ত-সংলগ্ন অঞ্চলসমূহে মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে এ
উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে
মোবাইল টাওয়ার স্থাপনে যে বিধি-নিষেধ ছিল, তা তুলে নিয়েছে ভারতের
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে, অচিরেই নতুন টাওয়ার স্থাপনের কাজ শুরু হবে।
বিএসএনএল’র আসাম টেলিকম সার্কেলের প্রধান মহাব্যবস্থাপক রাজীব যাদব বলেন,
সীমান্ত ফাঁড়িগুলো বরাবর এ টাওয়ারগুলো স্থাপন করা হবে। ৪০ কিলোমিটার পরপর
সীমান্ত ফাঁড়ি বা সীমান্ত চৌকি রয়েছে এবং প্রতি ৪০ কিলোমিটার পরপরই এ
টাওয়ারগুলো স্থাপন করা হবে। সব মিলিয়ে, আমরা প্রায় ৪৫০টি টাওয়ার স্থাপন
করবো। এ প্রকল্পটি সমাপ্ত হলে সীমান্ত এলাকাগুলোতে যোগাযোগে ব্যাপক
পরিবর্তন আসবে। এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২০১৭ সাল
নাগাদ প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অনলাইন ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ খবর দেয়া হয়েছে। পার্বত্য ও
সীমান্ত এলাকাসমূহে আসাম সরকার প্রায় ২০০০ মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করতে
চেয়েছিল। সেটা করা হলে, পার্বত্য জেলাসমূহের যোগাযোগ ব্যবস্থা জোরদার হবে
এবং তা সীমান্ত এলাকাগুলোতে জঙ্গি তৎপরতা প্রতিরোধে সহায়ক হবে। কারণ, এ
এলাকাগুলো প্রায়ই বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। জঙ্গিদের
অধিকাংশ গোপন আস্তানার পাশাপাশি ট্রানজিট সড়ক হিসেবেই এ অঞ্চলের সড়কগুলো
ব্যবহার করে থাকে জঙ্গিরা। যাদব জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকার কাছে
বসবাসরত মানুষ দ্রুত মোবাইল যোগাযোগের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এ প্রকল্প
সীমান্ত এলাকাসমূহের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করবে। পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন
অব দ্য ইন্ডিয়া লিমিটেড-এর কাছ থেকে ১০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ কিনছে
বিএসএনএল। উত্তর-পূর্ব ভারতে পাওয়ার গ্রিডের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে এবং
বিএসএনএল সেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে প্রাদেশিক রাজধানীসমূহ এবং উত্তর-পূর্ব
ভারতের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরতলিকে সংযুক্ত করবে। রাজীব যাদব বলেন,
ব্যান্ডউইথের জন্য আমরা পাওয়ার গ্রিডকে বছরে ৫০ কোটি রুপি অর্থ প্রদান
করবো। বর্তমানে ক্যাবল কাটা পড়লেই, উত্তর-পূর্ব ভারতে মোবাইল যোগাযোগ
ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। এ পদক্ষেপসমূহ গৃহীত হলে, ওই অঞ্চলের মোবাইল যোগাযোগ
ব্যবস্থা উন্নত হবে। রাজীব যাদব আরও বলেন, সীমান্তের এতো কাছে টাওয়ার বসানো
হলেও, প্রতিবেশী বাংলাদেশের মোবাইল পরিষেবার সঙ্গে এর কোন সংঘাত হবে না।
তিনি বলেন, বিএসএনএল’র টাওয়ারের রেঞ্জ ৩ কিলোমিটারের বেশি নয়। তাছাড়া,
সীমান্তের উভয়দিকে নিউট্রাল জোন আছে ১০ কিলোমিটার করে। ভারতের বিএসএফ ও
নিরাপত্তা সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে কোন সমস্যা হবে না বলেই জানাচ্ছেন ভারতের এক গবেষক।
No comments