টানা বর্ষণ ও পাহাড় ধস: কক্সবাজার ও বান্দরবানে নিহত ১০
প্রবল
বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল, ভূমিধস ও গাছচাপা পড়ে কক্সবাজার ও বান্দারবানে ১০ জন
নিহত হয়েছেন। এছাড়া পাহাড়ি ঢলে দুইজন নিখোঁজ ও পাহাড় ধসে ৮ জন আহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে কক্সবাজারের রামুতে পাহাড়ি ঢলে ৫ জন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে
ঝড়ো হাওয়া গাছচাপা পড়ে দু’জন, বান্দরবানে দু’জন ও কক্সবাজার শহরে পাহাড় ধসে
একজন মারা যান। গতকাল পৃথক সময়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সকাল ১০টায় রামু উপজেলার
জোয়ারিয়ানালা ও কাউয়ারখোপ গ্রামে পাহাড়ি ঢলে আমির হোসেন (৪২) এবং
নৌকাডুবিতে আমতলীয়া পাড়ার গর্ভবতী নারী হালিমা বেগম (২৮) ও পথেখারটোলের
শিশু রিদওয়ান (১০) মারা যায়। বিকাল ৩টায় কক্সবাজার শহরের ঘোনার পাড়ায়
পাহাড় ধসে মো. আবছার নামে তিন বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। নিহত অপর দুইজনের
পরিচয় পাওয়া যায়নি। এছাড়া এসব ঘটনায় আহত হয়েছে আরও চারজন। তাদেরকে
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতরা হলেন- জয়নাব বেগম (১৭),
মো. সাকের (২৬), আবদুল মান্নান (২২) ও উম্মে জামিলা (৪৫)। তারা সবাই
কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়ার বাসিন্দা। ওদিকে বিকাল ৪টায় কক্সবাজার শহরের
লাইটহাউজ পাড়ায় ধসে দুইজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলো- ইসমত আরা বেগম (৯) ও শায়রা বেগম (৫৫)। বেলা
৩টায় সেন্টমার্টিনের কোনারপাড়ায় ঝড়ো হাওয়ায় গাছচাপা পড়ে মা ও ছেলে নিহত
হয়েছে। নিহতরা হলেন- কোনারপাড়ায় আনোয়ারা বেগম (২৫) ও তার ছেলে জিসান (৩)।
এদিকে টানা ৪ দিনের ভারী বর্ষণে কক্সবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩ শতাধিক গ্রামের ৫ লক্ষাধিক মানুষ। পানির নিচে তলিয়ে গেছে জেলার অন্তত ২০ হাজার একর ফসলি জমি ও চিংড়ি ঘের। বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ও কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কিছু এলাকায় পানিবন্দি লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে পর্যটন শহর কক্সবাজারের বেশ কিছু এলাকা।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে, গত ৪ বছরের মধ্যে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরও কয়েকদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস সতর্ক বার্তা দিয়েছে। বৃষ্টিতে ভোগান্তির নগরীতে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার শহর। কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা এলাকাসহ জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে যান চলাচলে বিঘ্নতার পাশাপাশি জনদুর্ভোগের দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় কক্সবাজার পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। যেসব পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে সেসব এলাকায় লোকজনকে সরে যেতে বলা হচ্ছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হচ্ছে। এদিকে কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা, গোলদিঘীরপাড়, পেশকার পাড়া, উপজেলা পরিষদ গেইটে জলাবদ্ধতার কারণে যান চালাচল, সাধারণ মানুষের যাতায়ত, বিঘ্নতা দেখা দেয়। এতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন মালামালও নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বানের পানিতে ভাসছে চকরিয়া-পেকুয়া: টানা চারদিনের প্রবল বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার দুই শতাধিক গ্রামের অন্তত ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুই উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা বলতে গেলে তলিয়ে গেছে ঢলের পানির নিচে। মাতামুহুরী নদী বিধৌত সবকটি
ইউনিয়নের কয়েক হাজার বসতবাড়িতে সর্বনিম্ন ৫ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ১০ ফুট পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেকস্থানে ঘরের চালা পর্যন্ত ডুবে গেছে পানিতে। এসব পরিবারের রান্নার চুলো এবং টিউবওয়েলগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় খাবার ও পানি সংকটে পড়েছে মানুষগুলো। ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নদীতীরের পরিবারগুলো ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। ঢলের পানির তীব্রতা বাড়তে থাকায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে দুই উপজেলার সবকটি বেড়িবাঁধে। ঢলের পানিতে কয়েকটি ইউনিয়নে বিধ্বস্ত হয়েছে দেড় শতাধিক কাঁচা বসতবাড়ি। স্রোতের টানে ভেসে গেছে গরু-ছাগলসহ লালিত শতাধিক পশু। ঢলের পানির সাথে একাকার হয়ে গেছে দুই উপজেলার ক্ষত-বিক্ষত বেড়িবাঁধগুলো। ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে সবজিসহ দুই উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার একর জমিতে রোপিত আমন ক্ষেত। ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কন্যারকুম বেড়িবাঁধের প্রায় তিনশ মিটার এলাকা। এতে ব্যাপকভাবে ঢলের পানি প্রবেশ করছে চকরিয়ার উপকূলীয় সাতটি ইউনিয়নের লোকালয়ে। সড়কের ওপর দিয়ে ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে অভ্যন্তরীণ বেশ কয়েকটি সড়কে। গতকালও ভারি বর্ষণ হয়েছে। একইভাবে পেকুয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের লোকালয়ে ব্যাপকভাবে ঢুকে পড়েছে ঢলের পানি। এতে এসব ইউনিয়নের লোকালয় পানির নিচে তলিয়ে গেছে, ডুবে গেছে গ্রামীণ অবকাঠামো। হারবাং, বরইতলী ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের সিংহভাগ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় নৌকায় করে যাতায়াত করছে এসব ইউনিয়নের মানুষ।
উখিয়ায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ: গত ৪ দিনের টানা বর্ষণে কক্সবাজারের উখিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অসংখ্য মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখা, কুমারপাড়া, চৌধুরীপাড়া, মহাজনপাড়া, জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া, পাইন্যাশিয়া, ঘাটঘর, সোনারপাড়া, পশ্চিম সোনাইছড়ি, রত্নাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম রত্না, মধ্যম রত্না, ভালুকিয়াপালং, রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা, তুতুরবিল, মালভিটা, ডিগলিয়া, হাজিরপাড়া, মধুরছড়া, পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী, থাইংখালী, রহমতের বিল, ধামনখালী, আঞ্জুমানপাড়া প্রভৃতি নিম্নাঞ্চলসমূহ প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল, মিয়ানমার থেকে আসা নাফ ও বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানি একাকার হয়ে এসব এলাকাসমূহ প্লাবিত হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিদ্যুৎহীন মহেশখালীবাসী: গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মহেশখালীবাসী। গতকাল রাত থেকে মহেশখালীতে বিদ্যুৎ নেই। বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে মূল লাইন ছিড়ে যাওয়ার ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে বান্দরবানে পাহাড় ধসে আলিফ (০৮) ও মীম (০৬) নামে ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় মাটি চাপা পড়ে আহত হয়েছেন তাদের বাবা মো. রাজ্জাক ও মা খালেদা বেগমসহ পাঁচজন। গতকাল ভোররাতে শহরের বনরূপাপাড়ার সিদ্দিকনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, ভোররাতে হঠাৎ বিকট শব্দে পাহাড়ের টিলায় থাকা কয়েকটি বসতঘরসহ আশপাশের প্রায় ৫-৬টি বাড়ি ধসে পড়ে। এ সময় ঘরের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা দুই শিশু মাটি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এতে তাদের বাবা-মাসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। খবর পেয়ে দমকলবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় হতাহতদের উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠায়। বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে টানা ৪ দিনের ভারী বর্ষণে কক্সবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩ শতাধিক গ্রামের ৫ লক্ষাধিক মানুষ। পানির নিচে তলিয়ে গেছে জেলার অন্তত ২০ হাজার একর ফসলি জমি ও চিংড়ি ঘের। বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ও কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কিছু এলাকায় পানিবন্দি লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে পর্যটন শহর কক্সবাজারের বেশ কিছু এলাকা।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে, গত ৪ বছরের মধ্যে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরও কয়েকদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস সতর্ক বার্তা দিয়েছে। বৃষ্টিতে ভোগান্তির নগরীতে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার শহর। কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা এলাকাসহ জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে যান চলাচলে বিঘ্নতার পাশাপাশি জনদুর্ভোগের দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি হয়েছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় কক্সবাজার পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। যেসব পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে সেসব এলাকায় লোকজনকে সরে যেতে বলা হচ্ছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হচ্ছে। এদিকে কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা, গোলদিঘীরপাড়, পেশকার পাড়া, উপজেলা পরিষদ গেইটে জলাবদ্ধতার কারণে যান চালাচল, সাধারণ মানুষের যাতায়ত, বিঘ্নতা দেখা দেয়। এতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন মালামালও নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বানের পানিতে ভাসছে চকরিয়া-পেকুয়া: টানা চারদিনের প্রবল বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার দুই শতাধিক গ্রামের অন্তত ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুই উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা বলতে গেলে তলিয়ে গেছে ঢলের পানির নিচে। মাতামুহুরী নদী বিধৌত সবকটি
ইউনিয়নের কয়েক হাজার বসতবাড়িতে সর্বনিম্ন ৫ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ১০ ফুট পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেকস্থানে ঘরের চালা পর্যন্ত ডুবে গেছে পানিতে। এসব পরিবারের রান্নার চুলো এবং টিউবওয়েলগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় খাবার ও পানি সংকটে পড়েছে মানুষগুলো। ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নদীতীরের পরিবারগুলো ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। ঢলের পানির তীব্রতা বাড়তে থাকায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে দুই উপজেলার সবকটি বেড়িবাঁধে। ঢলের পানিতে কয়েকটি ইউনিয়নে বিধ্বস্ত হয়েছে দেড় শতাধিক কাঁচা বসতবাড়ি। স্রোতের টানে ভেসে গেছে গরু-ছাগলসহ লালিত শতাধিক পশু। ঢলের পানির সাথে একাকার হয়ে গেছে দুই উপজেলার ক্ষত-বিক্ষত বেড়িবাঁধগুলো। ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে সবজিসহ দুই উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার একর জমিতে রোপিত আমন ক্ষেত। ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কন্যারকুম বেড়িবাঁধের প্রায় তিনশ মিটার এলাকা। এতে ব্যাপকভাবে ঢলের পানি প্রবেশ করছে চকরিয়ার উপকূলীয় সাতটি ইউনিয়নের লোকালয়ে। সড়কের ওপর দিয়ে ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে অভ্যন্তরীণ বেশ কয়েকটি সড়কে। গতকালও ভারি বর্ষণ হয়েছে। একইভাবে পেকুয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের লোকালয়ে ব্যাপকভাবে ঢুকে পড়েছে ঢলের পানি। এতে এসব ইউনিয়নের লোকালয় পানির নিচে তলিয়ে গেছে, ডুবে গেছে গ্রামীণ অবকাঠামো। হারবাং, বরইতলী ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের সিংহভাগ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় নৌকায় করে যাতায়াত করছে এসব ইউনিয়নের মানুষ।
উখিয়ায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ: গত ৪ দিনের টানা বর্ষণে কক্সবাজারের উখিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অসংখ্য মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখা, কুমারপাড়া, চৌধুরীপাড়া, মহাজনপাড়া, জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া, পাইন্যাশিয়া, ঘাটঘর, সোনারপাড়া, পশ্চিম সোনাইছড়ি, রত্নাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম রত্না, মধ্যম রত্না, ভালুকিয়াপালং, রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা, তুতুরবিল, মালভিটা, ডিগলিয়া, হাজিরপাড়া, মধুরছড়া, পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী, থাইংখালী, রহমতের বিল, ধামনখালী, আঞ্জুমানপাড়া প্রভৃতি নিম্নাঞ্চলসমূহ প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল, মিয়ানমার থেকে আসা নাফ ও বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানি একাকার হয়ে এসব এলাকাসমূহ প্লাবিত হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিদ্যুৎহীন মহেশখালীবাসী: গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মহেশখালীবাসী। গতকাল রাত থেকে মহেশখালীতে বিদ্যুৎ নেই। বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে মূল লাইন ছিড়ে যাওয়ার ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে বান্দরবানে পাহাড় ধসে আলিফ (০৮) ও মীম (০৬) নামে ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় মাটি চাপা পড়ে আহত হয়েছেন তাদের বাবা মো. রাজ্জাক ও মা খালেদা বেগমসহ পাঁচজন। গতকাল ভোররাতে শহরের বনরূপাপাড়ার সিদ্দিকনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, ভোররাতে হঠাৎ বিকট শব্দে পাহাড়ের টিলায় থাকা কয়েকটি বসতঘরসহ আশপাশের প্রায় ৫-৬টি বাড়ি ধসে পড়ে। এ সময় ঘরের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা দুই শিশু মাটি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এতে তাদের বাবা-মাসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। খবর পেয়ে দমকলবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় হতাহতদের উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠায়। বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
No comments