পাবনার আওয়ামী লীগ রাজনীতি: অপূর্ণ কমিটির পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সাংসদের হাতে
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের অসম্পূর্ণ কমিটির পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাংসদ গোলাম ফারুকের হাতে। ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেও তিনি থাকেন নিজের নির্বাচনী এলাকা ঈশ্বরদীতে।
নয় বছর পর গত বছরের ২০ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন হয়। তাতে শুধু সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি পরে ঘোষণা করা হবে বলা হলেও গত ছয় মাসে তা হয়নি। এতে যাঁরা নেতৃত্বে আসার অপেক্ষায় ছিলেন, তাঁরা হতাশ হয়ে আছেন। বেশি হতাশ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় দলের একক আধিপত্য এখন আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাংসদ গোলাম ফারুকের। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ততা, শারীরিক অসুস্থতা এবং নিজের নির্বাচনী এলাকা ঈশ্বরদীতে থাকায় দলে সভাপতির দৃশ্যমান তৎপরতা অনুপস্থিত। আর সদরে থাকায় এবং বয়সে তরুণ বলে নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে থাকছেন তরুণ নেতা-কর্মীরা। দলীয় কার্যালয়েও তরুণদের ভিড় বেশি। পদ-পদবি ঠিক না হওয়ায় জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে কার্যালয়ে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।
সাংসদকে ঘিরে তৈরি হওয়া বলয়কে অবশ্য নেতিবাচকভাবে দেখছেন অনেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জ্যেষ্ঠ নেতা প্রথম আলোকে বলেন, যেখানে মধু আছে, সেখানে ভ্রমর আসবেই। অনেকেই সাংসদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সুবিধা নিতে পারছে। ফলে তাঁকে ঘিরে তো ভিড় থাকবেই। কিন্তু এতে দলের খুব ক্ষতি হচ্ছে। প্রকৃত মেধাবী ও ত্যাগী নেতারা দল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।
এদিকে এক কমিটিতেই প্রায় ১১ বছর পার করছে যুবলীগ। এই কমিটির কেউ কেউ এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করছেন। অনেকে নিষ্ক্রিয়। জেলা ছাত্রলীগ এক কমিটিতে চলছে ছয় বছর ধরে। গত ১৬ মে ছাত্রলীগের কাউন্সিল হয়েছে, কিন্তু কমিটি হয়নি। ফলে সাংগঠনিক সক্রিয়তার চেয়ে ব্যক্তি-প্রভাবে চলছে সব কটি সংগঠন।
দলীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছিল ২০০৫ সালের ১২ জুন। তখনো সভাপতি ছিলেন পাবনা-৪ আসনের সাংসদ ও বর্তমান ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ। সহসভাপতি ছিলেন পাবনা-৩ আসনের সাংসদ মকবুল হোসেন। তিনি থাকেন নির্বাচনী এলাকা ভাঙ্গুড়ায়। সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক টুকু দীর্ঘদিন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। ব্যস্ততার কারণে দলে সময় দিতে পারেননি। ফলে অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছিল পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ।
তখন জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে অবস্থান তৈরি করে নেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম সাইদুল হক ও সহসভাপতি রেজাউর রহিম। কিন্তু এম সাইদুল হককে পাবনা জেলা পরিষদে প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর তরুণ নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলে জায়গা করে নেন ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক।
দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সর্বশেষ কাউন্সিলে সভাপতি পদ পেতে তৎপরতা চালান শামসুর রহমান শরীফ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম সাইদুল হক ও সহসভাপতি রেজাউর রহিম। এর মধ্যে সাইদুল হক প্রায় ২০ বছর সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে তিনি এবার সভাপতির পদ পাবেন বলে আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু সমঝোতার ভিত্তিতে বিগত কমিটির সভাপতি শামসুর রহমান শরীফকেই সভাপতি পদে বহাল রাখা হয়। জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি করা হয় রেজাউর রহিমকে। আর সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী হন গোলাম ফারুক।
সাইদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের ক্রান্তিকালীন সময়গুলোতে সর্বোচ্চ শ্রম দিয়েছি। ১৯৯৩ সালে রফিকুল ইসলাম বকুল প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে বিএনপিতে চলে যায়। দলের চরম খারাপ অবস্থা। গ্রামে গ্রামে ঘুরে দল গুছিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিয়ে দলকে রক্ষা করেছি। বয়স তো প্রায় শেষ, তাই এবার সভাপতি পদের জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম। কিন্তু তা হয়নি। তবে দলীয় প্রধান যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমি তা আনন্দচিত্তে মেনে নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি চাই, আরও যাঁরা প্রবীণ নেতা আছেন, দলের স্বার্থে তাঁদের মূল্যায়ন করা হোক।’
এ প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাংসদ গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন নেতৃত্ব আসবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে জ্যেষ্ঠ নেতাদের বাদ দিয়ে কিছু হবে না। তাঁরা আমাদের মাথার ওপর ছায়ার মতো। নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে আমরা একটি সময়েপযোগী কমিটি গঠনের কাজ করছি।’ তিনি বলেন, ‘জেলা সভাপতি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া শারীরিকভাবেও কিছুটা অসুস্থ। ফলে সময় দিতে পারছেন না। তবে সার্বক্ষণিক আলোচনা করেই আমরা কাজ করছি। খুব শিগগির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ শেষ হবে।’
দল পরিচালনা ও কমিটি গঠনে বিলম্বের বিষয়ে সভাপতি ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
নয় বছর পর গত বছরের ২০ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন হয়। তাতে শুধু সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি পরে ঘোষণা করা হবে বলা হলেও গত ছয় মাসে তা হয়নি। এতে যাঁরা নেতৃত্বে আসার অপেক্ষায় ছিলেন, তাঁরা হতাশ হয়ে আছেন। বেশি হতাশ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় দলের একক আধিপত্য এখন আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাংসদ গোলাম ফারুকের। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ততা, শারীরিক অসুস্থতা এবং নিজের নির্বাচনী এলাকা ঈশ্বরদীতে থাকায় দলে সভাপতির দৃশ্যমান তৎপরতা অনুপস্থিত। আর সদরে থাকায় এবং বয়সে তরুণ বলে নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে থাকছেন তরুণ নেতা-কর্মীরা। দলীয় কার্যালয়েও তরুণদের ভিড় বেশি। পদ-পদবি ঠিক না হওয়ায় জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে কার্যালয়ে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।
সাংসদকে ঘিরে তৈরি হওয়া বলয়কে অবশ্য নেতিবাচকভাবে দেখছেন অনেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জ্যেষ্ঠ নেতা প্রথম আলোকে বলেন, যেখানে মধু আছে, সেখানে ভ্রমর আসবেই। অনেকেই সাংসদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সুবিধা নিতে পারছে। ফলে তাঁকে ঘিরে তো ভিড় থাকবেই। কিন্তু এতে দলের খুব ক্ষতি হচ্ছে। প্রকৃত মেধাবী ও ত্যাগী নেতারা দল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।
এদিকে এক কমিটিতেই প্রায় ১১ বছর পার করছে যুবলীগ। এই কমিটির কেউ কেউ এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করছেন। অনেকে নিষ্ক্রিয়। জেলা ছাত্রলীগ এক কমিটিতে চলছে ছয় বছর ধরে। গত ১৬ মে ছাত্রলীগের কাউন্সিল হয়েছে, কিন্তু কমিটি হয়নি। ফলে সাংগঠনিক সক্রিয়তার চেয়ে ব্যক্তি-প্রভাবে চলছে সব কটি সংগঠন।
দলীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছিল ২০০৫ সালের ১২ জুন। তখনো সভাপতি ছিলেন পাবনা-৪ আসনের সাংসদ ও বর্তমান ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ। সহসভাপতি ছিলেন পাবনা-৩ আসনের সাংসদ মকবুল হোসেন। তিনি থাকেন নির্বাচনী এলাকা ভাঙ্গুড়ায়। সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক টুকু দীর্ঘদিন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। ব্যস্ততার কারণে দলে সময় দিতে পারেননি। ফলে অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছিল পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ।
তখন জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে অবস্থান তৈরি করে নেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম সাইদুল হক ও সহসভাপতি রেজাউর রহিম। কিন্তু এম সাইদুল হককে পাবনা জেলা পরিষদে প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর তরুণ নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলে জায়গা করে নেন ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক।
দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সর্বশেষ কাউন্সিলে সভাপতি পদ পেতে তৎপরতা চালান শামসুর রহমান শরীফ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম সাইদুল হক ও সহসভাপতি রেজাউর রহিম। এর মধ্যে সাইদুল হক প্রায় ২০ বছর সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে তিনি এবার সভাপতির পদ পাবেন বলে আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু সমঝোতার ভিত্তিতে বিগত কমিটির সভাপতি শামসুর রহমান শরীফকেই সভাপতি পদে বহাল রাখা হয়। জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি করা হয় রেজাউর রহিমকে। আর সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী হন গোলাম ফারুক।
সাইদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের ক্রান্তিকালীন সময়গুলোতে সর্বোচ্চ শ্রম দিয়েছি। ১৯৯৩ সালে রফিকুল ইসলাম বকুল প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে বিএনপিতে চলে যায়। দলের চরম খারাপ অবস্থা। গ্রামে গ্রামে ঘুরে দল গুছিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিয়ে দলকে রক্ষা করেছি। বয়স তো প্রায় শেষ, তাই এবার সভাপতি পদের জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম। কিন্তু তা হয়নি। তবে দলীয় প্রধান যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমি তা আনন্দচিত্তে মেনে নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি চাই, আরও যাঁরা প্রবীণ নেতা আছেন, দলের স্বার্থে তাঁদের মূল্যায়ন করা হোক।’
এ প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাংসদ গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন নেতৃত্ব আসবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে জ্যেষ্ঠ নেতাদের বাদ দিয়ে কিছু হবে না। তাঁরা আমাদের মাথার ওপর ছায়ার মতো। নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে আমরা একটি সময়েপযোগী কমিটি গঠনের কাজ করছি।’ তিনি বলেন, ‘জেলা সভাপতি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া শারীরিকভাবেও কিছুটা অসুস্থ। ফলে সময় দিতে পারছেন না। তবে সার্বক্ষণিক আলোচনা করেই আমরা কাজ করছি। খুব শিগগির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ শেষ হবে।’
দল পরিচালনা ও কমিটি গঠনে বিলম্বের বিষয়ে সভাপতি ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
No comments