দেশে পাঁচ বছরে ইয়াবার ব্যবহার বেড়েছে ৭ গুণ- আটকের পরিমাণ বেড়েছে ৫০ গুণ by তানভীর সোহেল
দেশে
গত পাঁচ বছরে মাদকদ্রব্য ইয়াবা বড়ির পাচার ও ব্যবহার বেড়েছে ৭০১ শতাংশ,
অর্থাৎ ৭ গুণ। একই সময়ে দেশে ইয়াবা আটকের পরিমাণ বেড়েছে ৫ হাজার শতাংশ,
অর্থাৎ ৫০ গুণ। মাদক সেবনকারী তরুণদের একটি বড় অংশের কাছে এখন সবচেয়ে বেশি
চাহিদা ইয়াবার।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। এই অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে বছরজুড়ে দেশে ইয়াবা বড়ি কেনাবেচা হতো চার কোটির মতো। মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে ২০১৪ সালে তা ২৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ এই সময়ে ব্যবহার বেড়েছে ৭০১ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে ২০০৯ সালে ইয়াবা আটকের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৯ হাজারটি। আর ২০১৪ সালে ইয়াবা আটকের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখ ১২ হাজারটি। পাঁচ বছর আগের চেয়ে যা প্রায় ৪ হাজার ৯২৪ শতাংশ বেশি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতিবছর যে পরিমাণ ইয়াবা আটক হচ্ছে, তার চেয়ে ৪২ গুণেরও বেশি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক ইয়াবার পরিমাণ ৬৫ লাখের কিছু বেশি। অথচ এই সময়ে কমপক্ষে ২৬ কোটি ইয়াবা দেশে কেনাবেচা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করেন—এমন কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, এই ব্যবসার সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনৈতিক দলের নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে দ্রুত বাংলাদেশে ইয়াবা আসা এবং এর ফলে ব্যবহার বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামী পাঁচ বছরে ইয়াবার ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে যাবে। কয়েক দিন আগে ফেনীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিজস্ব ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রায় সাত লাখ ইয়াবা বড়িসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এক সহকারী উপপরিদর্শক।
সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ ইয়াবা বড়িই আসে মিয়ানমার থেকে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদীসংলগ্ন স্থানে গড়ে ওঠা সাতটি কারখানায় উৎপাদিত ইয়াবা চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসে। এসব কারখানায় প্রতিদিন দুই লাখ ইয়াবা বড়ি বাংলাদেশে পাচারের জন্য তৈরি করা হয়। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে গড়ে ওঠা ইয়াবা তৈরির আরও শতাধিক কারখানা রয়েছে। এগুলো থেকে সমুদ্রপথে বাংলাদেশে ইয়াবা ঢুকছে। বড় চালানগুলো মূলত এসব কারখানা থেকে সমুদ্রপথে আসে। এর বাইরে ভারতের কয়েকটি সীমান্ত দিয়েও ইয়াবা আসে। থাইল্যান্ড থেকেও কেউ কেউ ইয়াবা কিনে এনে থাকেন। তবে এর পরিমাণ অনেক কম।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে গড়ে ওঠা ইয়াবা তৈরির ৩৭টি কারখানা ও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মিয়ানমারের ৪৭ জন নাগরিকের ব্যাপারে সুস্পষ্ট তথ্য দেওয়া হয় মিয়ানমার সরকারের কাছে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে বাংলাদেশকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। চলতি বছরের মে মাসেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিয়ানমারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকেও আবার এই তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁদের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াবা এখন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক। ধরা যা পড়ছে, তার চেয়ে বহুগুণ বেশি আসক্তদের কাছে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এখন প্রতিদিন ১০ লাখের কাছাকাছি ইয়াবা হাতবদল হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ইয়াবার সবচেয়ে বড় বাজার।
বাংলাদেশে ইয়াবার বাজার: মিয়ানমার থেকে আসা প্রতিটি ইয়াবা টেকনাফে বাংলাদেশের চোরাকারবারির কাছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য এটা নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। এই ইয়াবা কয়েক দফায় হাতবদল হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ইয়াবা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঢাকায়। এরপর চট্টগ্রাম। এ ছাড়া দেশের বড় শহরগুলোতেও এর চাহিদা রয়েছে। ঢাকায় প্রতিটি ইয়াবা বড়ি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে গেলে বা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার হলে প্রতিটি ইয়াবার দাম হয় ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার মতে, বাংলাদেশে ইয়াবার বাজার ১২ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, চীন ও থাইল্যান্ড একসময় ইয়াবার বড় বাজার ছিল। কিন্তু ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওই দেশ দুটি ইয়াবার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে হত্যাও করা হয়। সেখানে এখন ইয়াবার বাজার পড়ে গেছে। এখন বাংলাদেশই এর বড় বাজার। এ দেশে তরুণদের কাছে মাদক হিসেবে ইয়াবার চাহিদাও ব্যাপক।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। এই অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে বছরজুড়ে দেশে ইয়াবা বড়ি কেনাবেচা হতো চার কোটির মতো। মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে ২০১৪ সালে তা ২৮ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ এই সময়ে ব্যবহার বেড়েছে ৭০১ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে ২০০৯ সালে ইয়াবা আটকের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৯ হাজারটি। আর ২০১৪ সালে ইয়াবা আটকের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখ ১২ হাজারটি। পাঁচ বছর আগের চেয়ে যা প্রায় ৪ হাজার ৯২৪ শতাংশ বেশি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতিবছর যে পরিমাণ ইয়াবা আটক হচ্ছে, তার চেয়ে ৪২ গুণেরও বেশি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক ইয়াবার পরিমাণ ৬৫ লাখের কিছু বেশি। অথচ এই সময়ে কমপক্ষে ২৬ কোটি ইয়াবা দেশে কেনাবেচা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করেন—এমন কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, এই ব্যবসার সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনৈতিক দলের নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে দ্রুত বাংলাদেশে ইয়াবা আসা এবং এর ফলে ব্যবহার বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামী পাঁচ বছরে ইয়াবার ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে যাবে। কয়েক দিন আগে ফেনীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিজস্ব ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রায় সাত লাখ ইয়াবা বড়িসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এক সহকারী উপপরিদর্শক।
সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ ইয়াবা বড়িই আসে মিয়ানমার থেকে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদীসংলগ্ন স্থানে গড়ে ওঠা সাতটি কারখানায় উৎপাদিত ইয়াবা চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসে। এসব কারখানায় প্রতিদিন দুই লাখ ইয়াবা বড়ি বাংলাদেশে পাচারের জন্য তৈরি করা হয়। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে গড়ে ওঠা ইয়াবা তৈরির আরও শতাধিক কারখানা রয়েছে। এগুলো থেকে সমুদ্রপথে বাংলাদেশে ইয়াবা ঢুকছে। বড় চালানগুলো মূলত এসব কারখানা থেকে সমুদ্রপথে আসে। এর বাইরে ভারতের কয়েকটি সীমান্ত দিয়েও ইয়াবা আসে। থাইল্যান্ড থেকেও কেউ কেউ ইয়াবা কিনে এনে থাকেন। তবে এর পরিমাণ অনেক কম।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে গড়ে ওঠা ইয়াবা তৈরির ৩৭টি কারখানা ও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মিয়ানমারের ৪৭ জন নাগরিকের ব্যাপারে সুস্পষ্ট তথ্য দেওয়া হয় মিয়ানমার সরকারের কাছে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে বাংলাদেশকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। চলতি বছরের মে মাসেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিয়ানমারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকেও আবার এই তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁদের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াবা এখন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর মাদক। ধরা যা পড়ছে, তার চেয়ে বহুগুণ বেশি আসক্তদের কাছে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এখন প্রতিদিন ১০ লাখের কাছাকাছি ইয়াবা হাতবদল হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ইয়াবার সবচেয়ে বড় বাজার।
বাংলাদেশে ইয়াবার বাজার: মিয়ানমার থেকে আসা প্রতিটি ইয়াবা টেকনাফে বাংলাদেশের চোরাকারবারির কাছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য এটা নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। এই ইয়াবা কয়েক দফায় হাতবদল হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ইয়াবা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঢাকায়। এরপর চট্টগ্রাম। এ ছাড়া দেশের বড় শহরগুলোতেও এর চাহিদা রয়েছে। ঢাকায় প্রতিটি ইয়াবা বড়ি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে গেলে বা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার হলে প্রতিটি ইয়াবার দাম হয় ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার মতে, বাংলাদেশে ইয়াবার বাজার ১২ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, চীন ও থাইল্যান্ড একসময় ইয়াবার বড় বাজার ছিল। কিন্তু ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওই দেশ দুটি ইয়াবার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে হত্যাও করা হয়। সেখানে এখন ইয়াবার বাজার পড়ে গেছে। এখন বাংলাদেশই এর বড় বাজার। এ দেশে তরুণদের কাছে মাদক হিসেবে ইয়াবার চাহিদাও ব্যাপক।
No comments