সিলেট বিভাগ- নগরে বাস চলাচল স্বাভাবিক আন্তজেলায় অর্ধেক by সুমনকুমার দাশ
(গাড়ি কম চলেছে, যাত্রীও ছিল কম। বাসশ্রমিকেরা ডেকেও যাত্রী পাচ্ছিলেন না। গতকাল সিলেটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে বেলা দেড়টায় তোলা ছবি l প্রথম আলো) ২০-দলীয়
জোটের হরতাল ও টানা অবরোধ কর্মসূচিতে সিলেট বিভাগের সঙ্গে অন্য তিন
জেলার যোগাযোগে পরিবহন চলছে অর্ধেকেরও কম। উল্টোচিত্র দেখা গেল নগরের
ভেতরে।
নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা ও মীরাবাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা গেছে। কোথাও কোথাও যানজট চোখে পড়েছে।
গতকাল বেলা একটা ১৮ মিনিট পর্যন্ত কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে মৌলভীবাজার জেলার উদ্দেশে ১৬টি যাত্রীবাহী বিরতিহীন বাস ছেড়ে গেছে। এর বাইরে আরও অন্তত ১০টি লোকাল বাস একই গন্তব্যে টার্মিনাল ছেড়েছে। হবিগঞ্জ েমাটর মালিক গ্রুপ মৌলভীবাজার রুটের টিকিট ব্যবস্থাপক কল্যাণব্রত কর জানান, হরতাল-অবরোধের আগে ৪৫ থেকে ৫০টি গাড়ি চলত। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০ থেকে ২৫টি গাড়ি চলাচল করছে।
হবিগঞ্জ বাইপাস সড়ক দিয়ে বিরতিহীন ৫০ থেকে ৫৫টি এবং লোকাল ৪০ থেকে ৫০টি বাস চলাচল করত। অবরোধ শুরু হওয়ার পর যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। গতকাল বেলা একটা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ১৩টি বিরতিহীন বাস হবিগঞ্জের উদ্দেশে টার্মিনাল ছেড়েছে। এর বাইরে আরও অন্তত ১০টি লোকাল বাস যাত্রী পরিবহন করেছে।
হবিগঞ্জগামী একটি বাসের চালক বলেন, ‘ঘরে বইসা থাকলে ভাত মিলত নায়! এর লাগি জীবনের ঝুঁকি নিয়া ঘর থাকি বার হইছি। গাড়ি চালানোর সময় ডর-ভয় তো লাগবই!’
হবিগঞ্জের যাত্রী স্কুলশিক্ষক এনামুল হক বলেন, ‘স্ত্রী-সন্তানদের বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করে জরুরি কাজে সিলেট এসেছিলাম। না এসেও উপায় ছিল না। এখন ভালোয়-ভালোয় পরিবারের কাছে ফিরতে পারলেই হলো।’
হবিগঞ্জ মোটর মালিক গ্রুপ হবিগঞ্জ বাইপাস রোডের টিকিট ব্যবস্থাপক মো. সাজন জানান, ভয়ে যাত্রীরা আসছেন না বলে একটি বাস যাত্রীভর্তি হতে অনেক সময় লাগছে।
তিন জেলার মধ্যে সুনামগঞ্জ সড়কে সবচেয়ে বেশি গাড়ি চলাচল করত। সেখানে এখন গাড়ি চলাচল করছে অনেক কম। সুনামগঞ্জ সড়কের সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় অবস্থিত লামাকাজী এম এ খান সেতু টোল প্লাজার কার্যসহকারী মুমিনুল হক জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে প্রতিদিন ৫২০ থেকে ৫৫০টি যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাক, ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা, ৪০০ থেকে ৫০০ ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাস এবং কয়েক হাজার মোটরসাইকেল চলাচল করত। অবরোধের পর যানবাহন চলাচল ৩০ থেকে ৩৫ ভাগে নেমে এসেছে।
গতকাল বেলা তিনটা পর্যন্ত লামাকাজী টোল প্লাজা পেরিয়ে ১১৫টি যাত্রীবাহী বাস-ট্রাক, ৫০টি ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাস এবং পাঁচ শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করেছে। এর আগে গত বুধবার ওই সড়ক দিয়ে ১৬৯টি বাস-ট্রাক এবং ১ হাজার ১০০টি সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করেছে।
বেলা সাড়ে তিনটায় কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে টিকিট কাউন্টার বন্ধ পাওয়া গেছে। এ স্ট্যান্ড থেকে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের পাশাপাশি ছাতক ও দিরাই উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। শ্রমিক ও চালকেরা টেবিল পেতে অস্থায়ীভাবে সাদা কাগজে লিখে টিকিট বিক্রি করছেন। এ সময় বাসচালক আখতার হোসেন জানান, অবরোধ-হরতালের আগে সুনামগঞ্জ সড়কে বিরতিহীন ও লোকাল মিলিয়ে তিন শতাধিক বাস চলাচল করত। এখন সেটা ৩০ থেকে ৪০টিতে ঠেকেছে।
পরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেমে এসেছে স্থবিরতা। ভয় আর আতঙ্কে নগরের অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দিনের পর দিন বন্ধ রাখছেন ব্যবসায়ীরা। সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক তাহমিন আহমদ বলেন, সিলেট বিভাগে কেবল আবাসিক হোটেল ও গেস্টহাউসগুলোতে প্রতিদিন ক্ষতির পরিমাণ দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা। এর বাইরে প্রতিদিনই নানা খাতে কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
সিলেট এমসি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, সিলেট মদনমোহন কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, হরতালের কারণে শিক্ষার্থী না আসায় শ্রেণি-কার্যক্রম বন্ধ আছে। সিলেট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আশফাক আহমদ বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেকটা কম।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোতেও কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।’
নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা ও মীরাবাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা গেছে। কোথাও কোথাও যানজট চোখে পড়েছে।
গতকাল বেলা একটা ১৮ মিনিট পর্যন্ত কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে মৌলভীবাজার জেলার উদ্দেশে ১৬টি যাত্রীবাহী বিরতিহীন বাস ছেড়ে গেছে। এর বাইরে আরও অন্তত ১০টি লোকাল বাস একই গন্তব্যে টার্মিনাল ছেড়েছে। হবিগঞ্জ েমাটর মালিক গ্রুপ মৌলভীবাজার রুটের টিকিট ব্যবস্থাপক কল্যাণব্রত কর জানান, হরতাল-অবরোধের আগে ৪৫ থেকে ৫০টি গাড়ি চলত। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০ থেকে ২৫টি গাড়ি চলাচল করছে।
হবিগঞ্জ বাইপাস সড়ক দিয়ে বিরতিহীন ৫০ থেকে ৫৫টি এবং লোকাল ৪০ থেকে ৫০টি বাস চলাচল করত। অবরোধ শুরু হওয়ার পর যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। গতকাল বেলা একটা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ১৩টি বিরতিহীন বাস হবিগঞ্জের উদ্দেশে টার্মিনাল ছেড়েছে। এর বাইরে আরও অন্তত ১০টি লোকাল বাস যাত্রী পরিবহন করেছে।
হবিগঞ্জগামী একটি বাসের চালক বলেন, ‘ঘরে বইসা থাকলে ভাত মিলত নায়! এর লাগি জীবনের ঝুঁকি নিয়া ঘর থাকি বার হইছি। গাড়ি চালানোর সময় ডর-ভয় তো লাগবই!’
হবিগঞ্জের যাত্রী স্কুলশিক্ষক এনামুল হক বলেন, ‘স্ত্রী-সন্তানদের বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করে জরুরি কাজে সিলেট এসেছিলাম। না এসেও উপায় ছিল না। এখন ভালোয়-ভালোয় পরিবারের কাছে ফিরতে পারলেই হলো।’
হবিগঞ্জ মোটর মালিক গ্রুপ হবিগঞ্জ বাইপাস রোডের টিকিট ব্যবস্থাপক মো. সাজন জানান, ভয়ে যাত্রীরা আসছেন না বলে একটি বাস যাত্রীভর্তি হতে অনেক সময় লাগছে।
তিন জেলার মধ্যে সুনামগঞ্জ সড়কে সবচেয়ে বেশি গাড়ি চলাচল করত। সেখানে এখন গাড়ি চলাচল করছে অনেক কম। সুনামগঞ্জ সড়কের সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় অবস্থিত লামাকাজী এম এ খান সেতু টোল প্লাজার কার্যসহকারী মুমিনুল হক জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে প্রতিদিন ৫২০ থেকে ৫৫০টি যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাক, ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা, ৪০০ থেকে ৫০০ ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাস এবং কয়েক হাজার মোটরসাইকেল চলাচল করত। অবরোধের পর যানবাহন চলাচল ৩০ থেকে ৩৫ ভাগে নেমে এসেছে।
গতকাল বেলা তিনটা পর্যন্ত লামাকাজী টোল প্লাজা পেরিয়ে ১১৫টি যাত্রীবাহী বাস-ট্রাক, ৫০টি ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাস এবং পাঁচ শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করেছে। এর আগে গত বুধবার ওই সড়ক দিয়ে ১৬৯টি বাস-ট্রাক এবং ১ হাজার ১০০টি সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করেছে।
বেলা সাড়ে তিনটায় কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে টিকিট কাউন্টার বন্ধ পাওয়া গেছে। এ স্ট্যান্ড থেকে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের পাশাপাশি ছাতক ও দিরাই উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। শ্রমিক ও চালকেরা টেবিল পেতে অস্থায়ীভাবে সাদা কাগজে লিখে টিকিট বিক্রি করছেন। এ সময় বাসচালক আখতার হোসেন জানান, অবরোধ-হরতালের আগে সুনামগঞ্জ সড়কে বিরতিহীন ও লোকাল মিলিয়ে তিন শতাধিক বাস চলাচল করত। এখন সেটা ৩০ থেকে ৪০টিতে ঠেকেছে।
পরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেমে এসেছে স্থবিরতা। ভয় আর আতঙ্কে নগরের অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দিনের পর দিন বন্ধ রাখছেন ব্যবসায়ীরা। সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক তাহমিন আহমদ বলেন, সিলেট বিভাগে কেবল আবাসিক হোটেল ও গেস্টহাউসগুলোতে প্রতিদিন ক্ষতির পরিমাণ দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা। এর বাইরে প্রতিদিনই নানা খাতে কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
সিলেট এমসি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, সিলেট মদনমোহন কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, হরতালের কারণে শিক্ষার্থী না আসায় শ্রেণি-কার্যক্রম বন্ধ আছে। সিলেট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আশফাক আহমদ বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেকটা কম।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোতেও কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।’
No comments