বাঁচার লড়াইয়ে কৃষক by প্রফেসর মো. শাদাত উল্লা
বাংলাদেশ
কৃষি প্রধান দেশ। এ দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতির ভিত্তিই
হচ্ছে কৃষি। স্বাধীনতা পরবর্তী প্রতিটি সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল কৃষিতে
উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন। তাইতো কৃষির গুরুত্ব
অনুধাবন করেই কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণীর পদমর্যাদায় উন্নীত করেন বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান। কৃষি শিক্ষা ও কৃষিবিদদের যথাযথ মূল্যায়নের ঐতিহাসিক
ঘোষণাটি তিনি ১৯৭৩ সালের এই দিনে দিয়েছিলেন। ফলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কৃষি
শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন তথা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ
দেশের অর্থনীতিতে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়। সেই থেকে
কৃষিবিদরা ১৩ই ফেব্রুয়ারিকে কৃষিবিদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন। বঙ্গবন্ধু
খুব ভাল করেই জানতেন যে, কৃষি প্রধান দেশে বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থার
উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন ছাড়া কিছুতেই সোনার বাংলা গড়া সম্ভব নয়। তাই তিনি তার
শাসনামলে কৃষি খাতকে সচল ও মজবুত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সে সঙ্গে গ্রহণ
করেছিলেন বিপুল কাঠামোগত ও নীতিগত সংস্থার উদ্যোগ। স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গেই
বিধ্বস্ত অর্থনীতির মধ্যে বঙ্গবন্ধু গ্রামের ২২ লাখ চাষি পরিবারকে
পুনর্বাসনের কাজে হাত দেন। তাদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও আনুষঙ্গিক
উপকরণ সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে ১৯৭২ সালে
১৬ হাজার ১২৫ টন উচ্চ ফলনশীল ধান, ৪৪ টন পাটের বীজ, এক হাজার ৩৭ টন গমের
বীজ বিতরণের ব্যবস্থা করেন। বর্তমানেও কৃষিবান্ধব সরকারের নীতি ও বিনিয়োগের
কারণে আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। শাকসবজি ও ফলমূলের
সঙ্গে সাম্প্রতিককালে আলু রপ্তানি বাংলাদেশের কৃষির উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
শুধু তাই নয়, শ্রীলঙ্কায় ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো
খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক দেশের বনেদি তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ।
স্নাতক শেষ করে চাকরিতে যোগদানের সময় কৃষিবিদদের দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হতো। ফলে চিকিৎসক এবং প্রকৌশলীদের মতো কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার মর্যাদা দেয়ার দাবি উঠতে থাকে স্বাধীনতার আগে থেকেই। স্বাধীনতার পরও তাদের এ দাবি অব্যাহত থাকে। ১৯৭৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় কৃষিবিদদের দাবি মেনে নেন। ওই দিনই কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করেন। কালের পরিক্রমায় কৃষি গ্র্যাজুয়েটরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবশ্য তাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও ১৯৯৬ সন পর্যন্ত খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করতে পারেনি দেশ। কারণ লোকসংখ্যা সাড়ে সাত কোটি থেকে ১৩ কোটিতে উন্নীত হয়েছিল। এ সমস্যা সমাধানে কৃষিবিদ ও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সার, বীজ, তেল ও অন্যান্য সুবিধা না দেয়ায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়নি। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কৃষি উন্নয়নে যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হয়। সার, বীজ, সেচ ব্যবস্থা উন্নয়ন, খাদ্য মজুদ বৃদ্ধি, কৃষিপণ্যের সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাসহ কৃষি উন্নয়নে বিভিন্ন যুগান্তকারী পরিবর্তন সুচিত হয়। ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করে। কৃষিই কৃষ্টির মূল। বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে আমরা যতই উন্নতি করি না কেন, খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য আমাদের বারবার ফিরে যেতে হয় কৃষি ও কৃষকের কাছে। আর এতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন এ দেশের কৃষিবিজ্ঞানীরা ও কৃষিবিদরা। স্বাধীনতার সময় এই দেশে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি। বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি। প্রতিনিয়তই আমাদের দেশের আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বিশেষ করে শিল্প-কারখানা স্থাপন, নগরায়ন, আবাসন, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও নদীভাঙনের ফলে প্রতি বছর ৬৮ হাজার ৭০০ হেক্টর করে কৃষিজমি কমছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার কারণেও প্রতিদিন ২০ শতাংশ করে ফসলি জমি কমছে। সে সঙ্গে বাড়ছে মানুষের খাদ্যের চাহিদা। এই বিপুল পরিমাণ জনগণকে খাদ্যের চাহিদা মিটাতে কৃষিবিদরা দিন রাত পরিশ্রম করে নতুন নতুন জাত আবিষ্কার করছেন। আর এই নতুন নতুন জাত কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন কৃষিবিদরা। উন্নতজাতের বীজ, সুষম সারে ব্যবহার, সেচ সুবিধার কারণে আমাদের কৃষি উৎপাদন উল্লেখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে কৃষিতে এখন বহুমুখীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ ঘটছে। সম্প্রতি লবণাক্ত পানি সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবনের ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় জেলায় ধান চাষ আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানীরা জলাবদ্ধতা ও খরা সহিষ্ণু জাতও উদ্ভাবন করেছে। অদূর ভবিষ্যতে আমাদের হেক্টর প্রতি ফলন আরও বেড়ে যাবে। বর্তমানে কৃষিকে কেন্দ্র করে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে । ইতিমধ্যে দেশে ডেইরি ও পোলট্রি শিল্প বিকশিত হয়েছে। এছাড়াও উন্নতমানের ফল ও রকমারি ফুলের চাষও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই কৃষিকে আর কৃষকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কোন অবকাশ নেই। আজ কৃষি একটা শিল্প আর এ শিল্পে অংশগ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে দেশের প্রতিটি মানুষের।
স্নাতক শেষ করে চাকরিতে যোগদানের সময় কৃষিবিদদের দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হতো। ফলে চিকিৎসক এবং প্রকৌশলীদের মতো কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার মর্যাদা দেয়ার দাবি উঠতে থাকে স্বাধীনতার আগে থেকেই। স্বাধীনতার পরও তাদের এ দাবি অব্যাহত থাকে। ১৯৭৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় কৃষিবিদদের দাবি মেনে নেন। ওই দিনই কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করেন। কালের পরিক্রমায় কৃষি গ্র্যাজুয়েটরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবশ্য তাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও ১৯৯৬ সন পর্যন্ত খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করতে পারেনি দেশ। কারণ লোকসংখ্যা সাড়ে সাত কোটি থেকে ১৩ কোটিতে উন্নীত হয়েছিল। এ সমস্যা সমাধানে কৃষিবিদ ও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সার, বীজ, তেল ও অন্যান্য সুবিধা না দেয়ায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়নি। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কৃষি উন্নয়নে যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হয়। সার, বীজ, সেচ ব্যবস্থা উন্নয়ন, খাদ্য মজুদ বৃদ্ধি, কৃষিপণ্যের সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাসহ কৃষি উন্নয়নে বিভিন্ন যুগান্তকারী পরিবর্তন সুচিত হয়। ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করে। কৃষিই কৃষ্টির মূল। বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে আমরা যতই উন্নতি করি না কেন, খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য আমাদের বারবার ফিরে যেতে হয় কৃষি ও কৃষকের কাছে। আর এতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন এ দেশের কৃষিবিজ্ঞানীরা ও কৃষিবিদরা। স্বাধীনতার সময় এই দেশে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি। বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি। প্রতিনিয়তই আমাদের দেশের আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বিশেষ করে শিল্প-কারখানা স্থাপন, নগরায়ন, আবাসন, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও নদীভাঙনের ফলে প্রতি বছর ৬৮ হাজার ৭০০ হেক্টর করে কৃষিজমি কমছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার কারণেও প্রতিদিন ২০ শতাংশ করে ফসলি জমি কমছে। সে সঙ্গে বাড়ছে মানুষের খাদ্যের চাহিদা। এই বিপুল পরিমাণ জনগণকে খাদ্যের চাহিদা মিটাতে কৃষিবিদরা দিন রাত পরিশ্রম করে নতুন নতুন জাত আবিষ্কার করছেন। আর এই নতুন নতুন জাত কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন কৃষিবিদরা। উন্নতজাতের বীজ, সুষম সারে ব্যবহার, সেচ সুবিধার কারণে আমাদের কৃষি উৎপাদন উল্লেখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে কৃষিতে এখন বহুমুখীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ ঘটছে। সম্প্রতি লবণাক্ত পানি সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবনের ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় জেলায় ধান চাষ আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানীরা জলাবদ্ধতা ও খরা সহিষ্ণু জাতও উদ্ভাবন করেছে। অদূর ভবিষ্যতে আমাদের হেক্টর প্রতি ফলন আরও বেড়ে যাবে। বর্তমানে কৃষিকে কেন্দ্র করে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে । ইতিমধ্যে দেশে ডেইরি ও পোলট্রি শিল্প বিকশিত হয়েছে। এছাড়াও উন্নতমানের ফল ও রকমারি ফুলের চাষও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই কৃষিকে আর কৃষকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কোন অবকাশ নেই। আজ কৃষি একটা শিল্প আর এ শিল্পে অংশগ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে দেশের প্রতিটি মানুষের।
No comments