কারা ছুড়ছে পেট্রলবোমা? by ওয়ালিউল হক
গত
৫ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে লাগাতার অবরোধ। এরই মধ্যে
বিএনপি-জামায়াত জোটের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে দেয়া হচ্ছে হরতালের ডাক। এই
অবরোধ-হরতালের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করছে এক নতুন ধরনের
সহিংসতা। আর তা হচ্ছে পেট্রলবোমা।
পেট্রলবোমা কে বা কারা ছুড়ছে তা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ চলছে। ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে জামায়াত ও বিএনপিকে এবং ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সরকার বা আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রিন্ট ও টেলিভিশন মিডিয়ায় যেসব খবর প্রচারিত হচ্ছে এবং টকশোতে যেসব মতামত দেয়া হচ্ছে, তা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, সন্দেহভাজনদের তালিকায় রয়েছে ১. বিএনপি, ২, জামায়াত, ৩. আওয়ামী লীগ ৪. বিশেষ কোনো মতলববাজ গোষ্ঠী। এখন দেখা যাক, পেট্রলবোমা ছুড়লে কার কী লাভ এবং কার কী ক্ষতি।
বিএনপি
বলা হচ্ছে, বিএনপি পেট্রলবোমা ছুড়ছে এ কারণে যে, সরকার যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে তারা মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। বিএনপি এর বিপরীতে যে যুক্তি দিতে পারে তা হচ্ছে, বিএনপি একটি ব্যাপক জনসমর্থনপুষ্ট দল। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে তারাই জয়লাভ করবেন। অতএব পেট্রলবোমা মেরে তারা জনসমর্থন হারানোর ঝুঁকি নেবেন কেন? আর পেট্রলবোমা ছোড়ার অতীত কোনো রেকর্ড বিএনপির নেই, যা কিনা আওয়ামী লীগের আছে। এ ছাড়া ব্যাপক সহিংসতার কারণে কোনো অগণতান্ত্রিক সরকার যদি ক্ষমতায় আসীন হয় তাহলে নির্বাচন তো পিছিয়ে যাবেই এবং ওই সরকার যে বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল হবে এমন কোনো কথা নেই। যেমনটি দেখা গিয়েছিল মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনদের আমলে। মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের কারসাজির কারণেই ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে শোচনীয় পরাজয়বরণ করতে হয়েছিল।
জামায়াত
বলা হচ্ছে, জামায়াত পেট্রলবোমা ছুড়ছে এ কারণে যে, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতাদের মুক্ত করতে হলে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এ সরকারের পতন ঘটলে এর পরই বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে তাদের নেতাদের মুক্ত করে দেবে।
এই যুক্তির বিপরীতে জামায়াত যে পাল্টা যুক্তি দিতে পারে তা হচ্ছে এই, পেট্রলবোমা মেরে এখন পর্যন্ত কোনো দেশে কোনো সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব হয়নি। অতএব এর মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর কোনো চিন্তা তাদের মাথায় নেই। আর দেশের মধ্যে সহিংসতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর সম্ভব হবে না। আর সে কারণে যদি নির্বাচন পিছিয়ে যায়, তাহলে তাদের কী লাভ হবে? তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেয়া হয় যে, নির্বাচন ঠিকমতো অনুষ্ঠিত হলো এবং বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করল কিন্তু তারা সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায় পরিবর্তন করবে কিভাবে? তারা হয়তো প্রেসিডেন্টকে দিয়ে মাফ করিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাদের সে চেষ্টা সফল নাও হতে পারে। কারণ প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ হচ্ছেন আওয়ামী লীগের একজন সাবেক নেতা এবং আওয়ামী লীগ কর্তৃক নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।
আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ পেট্রলবোমা ছুড়তে পারে এসব কারণেÑ ১. বার্ন ইউনিটের হৃদয়বিদারক দৃশ্যাবলি দেখিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে জনমত গঠন। ২. এসব দৃশ্যাবলি ক্যাসেটবন্দী করে সেগুলো পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠিয়ে তাদের বোঝানোÑ যেহেতু বিএনপি গণতন্ত্রের পথ বর্জন করে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে, অতএব তাদের সাথে আর কোনো আলোচনা হতে পারে না। তাদের রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নির্মূল করতে না পারলেও নির্জীব করে ফেলতে হবে। ৩. স্থানীয় নির্বাচনগুলোর ফলাফল থেকে যেহেতু এটা পরিষ্কার যে, এই মুহূর্তে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সে কারণে নির্বাচনকে যত দিন সম্ভব ঠেকিয়ে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। সহিংসতা যদি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সহিংসতা-পরবর্তী যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের পক্ষে তাড়াতাড়ি নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়। কারণ পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য তাদেরকে অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। ২০০৬ সালের লগি-বৈঠার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পেরেছে। কারণ সময় মানুষের দুঃখ বেদনাকে ভুলিয়ে দেয়।
এসব বক্তবের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ পাল্টা যে যুক্তি দিতে পারে তা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন। তারা জনগণের ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন দেশকে অস্থিতিশীল করার মতো কোনো তৎপরতা তারা নিজেরা তো করবেই না; করতেও দিতে পারে না।
বি-রাজনীতির পক্ষের শক্তি
বি-রাজনীতির পক্ষের শক্তি এ ধরনের বোমাহামলা চালাতে পারে এই যুক্তিতে যে, এর ফলে জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি বিশেষ করে দুই নেত্রীর প্রতি তীব্র ঘৃণার সৃষ্টি হবে এবং তখন তারা ঝোপ বুঝে কোপ মারবেন। টেলিভিশনে প্রদর্শিত বার্ন ইউনিটের মর্মান্তিক দৃশ্য তাদের অনুককূলেই যাচ্ছে। মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনদের আমলে বি-রাজনীতিকরণের চেষ্টা সফল হয়নি বলে তারা যে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে এমনটি মনে করা ঠিক হবে না। তারা যে আবারো চেষ্টা চালাবে সেটাই হচ্ছে স্বাভাবিক।
ওপরের এই যুক্তির বিপক্ষে দাঁড় করার মতো কোনো কিছু আমার মাথায় আসেনি। কেউ যদি পাল্টা যুক্তি দিয়ে সাহায্য করতে পারেন তাহলে তা জানার আগ্রহ রইল।
পেট্রলবোমা কে বা কারা ছুড়ছে তা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ চলছে। ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে জামায়াত ও বিএনপিকে এবং ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সরকার বা আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রিন্ট ও টেলিভিশন মিডিয়ায় যেসব খবর প্রচারিত হচ্ছে এবং টকশোতে যেসব মতামত দেয়া হচ্ছে, তা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, সন্দেহভাজনদের তালিকায় রয়েছে ১. বিএনপি, ২, জামায়াত, ৩. আওয়ামী লীগ ৪. বিশেষ কোনো মতলববাজ গোষ্ঠী। এখন দেখা যাক, পেট্রলবোমা ছুড়লে কার কী লাভ এবং কার কী ক্ষতি।
বিএনপি
বলা হচ্ছে, বিএনপি পেট্রলবোমা ছুড়ছে এ কারণে যে, সরকার যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে তারা মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। বিএনপি এর বিপরীতে যে যুক্তি দিতে পারে তা হচ্ছে, বিএনপি একটি ব্যাপক জনসমর্থনপুষ্ট দল। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে তারাই জয়লাভ করবেন। অতএব পেট্রলবোমা মেরে তারা জনসমর্থন হারানোর ঝুঁকি নেবেন কেন? আর পেট্রলবোমা ছোড়ার অতীত কোনো রেকর্ড বিএনপির নেই, যা কিনা আওয়ামী লীগের আছে। এ ছাড়া ব্যাপক সহিংসতার কারণে কোনো অগণতান্ত্রিক সরকার যদি ক্ষমতায় আসীন হয় তাহলে নির্বাচন তো পিছিয়ে যাবেই এবং ওই সরকার যে বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল হবে এমন কোনো কথা নেই। যেমনটি দেখা গিয়েছিল মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনদের আমলে। মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের কারসাজির কারণেই ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে শোচনীয় পরাজয়বরণ করতে হয়েছিল।
জামায়াত
বলা হচ্ছে, জামায়াত পেট্রলবোমা ছুড়ছে এ কারণে যে, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতাদের মুক্ত করতে হলে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এ সরকারের পতন ঘটলে এর পরই বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে তাদের নেতাদের মুক্ত করে দেবে।
এই যুক্তির বিপরীতে জামায়াত যে পাল্টা যুক্তি দিতে পারে তা হচ্ছে এই, পেট্রলবোমা মেরে এখন পর্যন্ত কোনো দেশে কোনো সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব হয়নি। অতএব এর মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর কোনো চিন্তা তাদের মাথায় নেই। আর দেশের মধ্যে সহিংসতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর সম্ভব হবে না। আর সে কারণে যদি নির্বাচন পিছিয়ে যায়, তাহলে তাদের কী লাভ হবে? তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেয়া হয় যে, নির্বাচন ঠিকমতো অনুষ্ঠিত হলো এবং বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করল কিন্তু তারা সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায় পরিবর্তন করবে কিভাবে? তারা হয়তো প্রেসিডেন্টকে দিয়ে মাফ করিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাদের সে চেষ্টা সফল নাও হতে পারে। কারণ প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ হচ্ছেন আওয়ামী লীগের একজন সাবেক নেতা এবং আওয়ামী লীগ কর্তৃক নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।
আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ পেট্রলবোমা ছুড়তে পারে এসব কারণেÑ ১. বার্ন ইউনিটের হৃদয়বিদারক দৃশ্যাবলি দেখিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে জনমত গঠন। ২. এসব দৃশ্যাবলি ক্যাসেটবন্দী করে সেগুলো পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠিয়ে তাদের বোঝানোÑ যেহেতু বিএনপি গণতন্ত্রের পথ বর্জন করে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে, অতএব তাদের সাথে আর কোনো আলোচনা হতে পারে না। তাদের রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নির্মূল করতে না পারলেও নির্জীব করে ফেলতে হবে। ৩. স্থানীয় নির্বাচনগুলোর ফলাফল থেকে যেহেতু এটা পরিষ্কার যে, এই মুহূর্তে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে পরাজিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সে কারণে নির্বাচনকে যত দিন সম্ভব ঠেকিয়ে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। সহিংসতা যদি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সহিংসতা-পরবর্তী যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের পক্ষে তাড়াতাড়ি নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়। কারণ পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্য তাদেরকে অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। ২০০৬ সালের লগি-বৈঠার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পেরেছে। কারণ সময় মানুষের দুঃখ বেদনাকে ভুলিয়ে দেয়।
এসব বক্তবের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ পাল্টা যে যুক্তি দিতে পারে তা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন। তারা জনগণের ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন দেশকে অস্থিতিশীল করার মতো কোনো তৎপরতা তারা নিজেরা তো করবেই না; করতেও দিতে পারে না।
বি-রাজনীতির পক্ষের শক্তি
বি-রাজনীতির পক্ষের শক্তি এ ধরনের বোমাহামলা চালাতে পারে এই যুক্তিতে যে, এর ফলে জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি বিশেষ করে দুই নেত্রীর প্রতি তীব্র ঘৃণার সৃষ্টি হবে এবং তখন তারা ঝোপ বুঝে কোপ মারবেন। টেলিভিশনে প্রদর্শিত বার্ন ইউনিটের মর্মান্তিক দৃশ্য তাদের অনুককূলেই যাচ্ছে। মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনদের আমলে বি-রাজনীতিকরণের চেষ্টা সফল হয়নি বলে তারা যে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে এমনটি মনে করা ঠিক হবে না। তারা যে আবারো চেষ্টা চালাবে সেটাই হচ্ছে স্বাভাবিক।
ওপরের এই যুক্তির বিপক্ষে দাঁড় করার মতো কোনো কিছু আমার মাথায় আসেনি। কেউ যদি পাল্টা যুক্তি দিয়ে সাহায্য করতে পারেন তাহলে তা জানার আগ্রহ রইল।
No comments