বিশ্বকাপ ক্রিকেট
চলে
এসেছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। চার বছর পর আবার ক্রিকেটপ্রেমীরা মাঠে কিংবা
টিভি পর্দার সামনে বসে পড়বে ওয়ানডে ক্রিকেটের রথী-মহারথীদের জমজমাট লড়াই
দেখতে। বাংলাদেশে শুক্রবার রাত শেষে শনিবারের সূর্যোদয়ের আগেই
নিউনিজ্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে শুরু হয়ে যাবে ব্যাটে-বলে ১৬ দলের
শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের প্রতিযোগিতা। সত্তরের দশকে যাত্রা শুরুর পর চার দশকে এ
খেলার প্রতি আকর্ষণ কতই না বেড়েছে। ক্রিকেট বিনোদনের নতুন ফরম্যাট 'টি-
টোয়েন্টির' আবির্ভাবের পরও যা ঔজ্জ্বল্য হারায়নি। ব্যাটসম্যানরা কত বিচিত্র
ধরনের শট খেলছেন। বোলাররা ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করার জন্য স্পিন ও পেসে
নিত্যনতুন উদ্ভাবন করে চলেছেন। ফিল্ডিংও হয়ে উঠছে আকর্ষণীয়। ক্ষিপ্রতা ও
অনুমান ক্ষমতাগুণে এখন ফিল্ডাররাও ব্যাটিং-বোলিংয়ে সেরাদের সঙ্গে সমানে
সমান থাকছেন। টুর্নামেন্ট চলবে টানা দেড় মাস। ফাইনালের মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত
হবে ২৯ মার্চ, অপর আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। তবে খেলা শুরুর
দু'দিন আগেই গতকাল অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মেলবোর্ন ও ক্রাইস্টচার্চে মনোমুগ্ধকর
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এতে ছিল সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো কতই না আয়োজন।
জমকালো ও চোখ ধাঁধানো এ অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে লাল-সবুজের পতাকার দেশ
বাংলাদেশের শিল্পীদের চমৎকার অনুষ্ঠানও বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে। সবশেষে
বিশ্ব মুগ্ধ হয় লাল-নীল-সবুজ-বেগুনি আলোর ঝলকানি আর আতশবাজির ভেলকিতে।
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের যৌথ আয়োজক
ছিল ১৯৯২ সালে। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ক্যারিশমেটিক ক্রিকেটার ইমরান
খানের নেতৃত্বে পাকিস্তান। এবার কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে
মেসবাহ-উল হকের নেতৃত্বাধীন দলটি? নাকি স্বাগতিক দুটি দেশের কোনোটির গলায়
পরানো হবে জয়মাল্য? দীর্ঘ দুই দশক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নির্বাসিত থাকার পর
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ আসরে ফিরে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা এবং প্রথম খেলা
থেকেই জানিয়ে দিল_ সেরাদের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেই তাদের রাখতে হবে। পরের
প্রতিটি আসরেই এ দলটি চমকপ্রদ খেলা উপহার দিয়েছে। কিন্তু শ্রেষ্ঠত্বের
শিরোপা এখন পর্যন্ত অধরা। এবার কি ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বলে সেঞ্চুরি
হাঁকানো ডি ভিলিয়ার্সের নেতৃত্বাধীন দলটি শাপমোচন ঘটাতে পারবে? নাকি
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল ভারতই ধরে রাখবে শিরোপা? ক্রিকেটের জন্মভূমি
ইংল্যান্ড এখন পর্যন্ত এ শিরোপা পায়নি। সন্দেহ নেই যে তারাও এবার মরিয়া
চেষ্টা চালাবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলংকার মতো সাবেক চ্যাম্পিয়নদের দলকেও
কিন্তু হিসাবের বাইরে রাখছে না। সব মিলিয়েই ক্রিকেট বোদ্ধারা বলছেন, এবার
চ্যাম্পিয়ন দল কে হবে সেটা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা খুবই কঠিন। প্রকৃতই,
ইতিহাসের সবচেয়ে উন্মুক্ত বিশ্বকাপের আজ যাত্রা শুরু।
বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মতো দল বিশ্বকাপ জয় করবে, এমন কথা কেউ বলছে না। আইসিসির চার সহযোগী দেশকে নিয়েও বাজি ধরার লোক পাওয়া যাবে না। কিন্তু খেলাটা যে সেই জন্মলগ্ন থেকেই 'গৌরবময় অনিশ্চয়তার' অভিধা নিয়ে চলছে! মাঠের খেলায় এমনকি অতি দুর্বল প্রতিপক্ষের 'সেরাদিনে' কোন মহারথী ঘায়েল হবে, কে জানে। এ কারণে বাংলাদেশকে নিয়ে কোটি কোটি মানুষের চলছে স্বপ্নের জাল বোনা।
বাংলাদেশের ক্রিকেট জনপ্রিয় খেলায় পরিণত হয়েছে। একমাত্র এ খেলাতেই আমরা বিশ্ব আসরে বারবার নিজেদের যোগ্যতায় অংশ নিতে পারছি। শহর ও গ্রাম সর্বত্রই কিশোর ও তরুণদের প্রধান আগ্রহের খেলা ক্রিকেট। যে কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মাঠে বিপুল দর্শকের সমাগম ঘটে। টিকিট নিয়ে চলে কাড়াকাড়ি। জাতীয় দলের সাফল্যের প্রত্যাশায় উন্মুখ থাকে গোটা দেশ। আমাদের রাজনীতিতে বিভাজন আছে। কিন্তু মাশরাফি-সাকিব-মুশফিক বাহিনীকে সবাই একাত্ম হয়ে উৎসাহ দেয় এবং খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটা প্রত্যাশা করে। গণমাধ্যমেও ক্রিকেট ক্রেজের প্রতিফলন। বিশ্বকাপ উপলক্ষে সংবাদপত্র এবং বেতার-টিভিতে কতই না আয়োজন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ক্রিকেটের কারণে বাংলাদেশের আলাদা এক পরিচিতি গড়ে উঠেছে। আমাদের জাতীয় দল যদি নিজের শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী স্বাভাবিক খেলা উপহার দিতে পারে, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান যদি ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠতে পারেন, তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে না। এজন্য চাই সংকল্প_ আমরা পারি, আমরা নিশ্চয়ই পারব। বিশ্বকাপ সফল হোক। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা আর মধুরেণ সমাপয়েতে সবাই উন্মাতাল হোক, এটাই প্রত্যাশা।
বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মতো দল বিশ্বকাপ জয় করবে, এমন কথা কেউ বলছে না। আইসিসির চার সহযোগী দেশকে নিয়েও বাজি ধরার লোক পাওয়া যাবে না। কিন্তু খেলাটা যে সেই জন্মলগ্ন থেকেই 'গৌরবময় অনিশ্চয়তার' অভিধা নিয়ে চলছে! মাঠের খেলায় এমনকি অতি দুর্বল প্রতিপক্ষের 'সেরাদিনে' কোন মহারথী ঘায়েল হবে, কে জানে। এ কারণে বাংলাদেশকে নিয়ে কোটি কোটি মানুষের চলছে স্বপ্নের জাল বোনা।
বাংলাদেশের ক্রিকেট জনপ্রিয় খেলায় পরিণত হয়েছে। একমাত্র এ খেলাতেই আমরা বিশ্ব আসরে বারবার নিজেদের যোগ্যতায় অংশ নিতে পারছি। শহর ও গ্রাম সর্বত্রই কিশোর ও তরুণদের প্রধান আগ্রহের খেলা ক্রিকেট। যে কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মাঠে বিপুল দর্শকের সমাগম ঘটে। টিকিট নিয়ে চলে কাড়াকাড়ি। জাতীয় দলের সাফল্যের প্রত্যাশায় উন্মুখ থাকে গোটা দেশ। আমাদের রাজনীতিতে বিভাজন আছে। কিন্তু মাশরাফি-সাকিব-মুশফিক বাহিনীকে সবাই একাত্ম হয়ে উৎসাহ দেয় এবং খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটা প্রত্যাশা করে। গণমাধ্যমেও ক্রিকেট ক্রেজের প্রতিফলন। বিশ্বকাপ উপলক্ষে সংবাদপত্র এবং বেতার-টিভিতে কতই না আয়োজন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ক্রিকেটের কারণে বাংলাদেশের আলাদা এক পরিচিতি গড়ে উঠেছে। আমাদের জাতীয় দল যদি নিজের শক্তি-সামর্থ্য অনুযায়ী স্বাভাবিক খেলা উপহার দিতে পারে, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান যদি ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠতে পারেন, তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে না। এজন্য চাই সংকল্প_ আমরা পারি, আমরা নিশ্চয়ই পারব। বিশ্বকাপ সফল হোক। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা আর মধুরেণ সমাপয়েতে সবাই উন্মাতাল হোক, এটাই প্রত্যাশা।
No comments