চট্টগ্রামে শিক্ষিকা খুন- ফিল্মি কায়দায় অঞ্জলীকে হত্যা, পথ আগলে দাঁড়ায় ৪ জন by মহিউদ্দীন জুয়েল
(বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থল চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হয়েছেন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অঞ্জলী দেবী (৫৭)। শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নগরের চকবাজার তেলাপট্টি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ খুনের সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি। খুনের কারণ কী, সে বিষয়ে পরিবার বা পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি। সহকর্মী ও স্বজনদের আহাজারি। ছবি: প্রথম আলো) বাসা
থেকে বেরিয়ে পেছনে ফিরলেন অঞ্জলী দেবী। হয়তো কিছু ফেলে এসেছিলেন। কিন্তু
এরই মধ্যে তার গতিরোধ করে দাঁড়ায় ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা। তারা এ সময়
কয়টা বাজে বলে কথা বলার চেষ্টা করে। তাকে ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে একজন ধারালো
ছোরা দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকবার তাকে রামদা দিয়ে আঘাত করা হয়। এ সময়
এক পথচারী আল্লাগো বলে চিৎকার দিলে দ্রুত হাঁটতে থাকে খুনিরা। তারপর
সিগারেট ধরিয়ে সবার সামনে দিয়ে আড়াল হয়ে যায়।
চট্টগ্রামে সরকারি নার্সিং কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা অঞ্জলী দেবী (৫০)-কে এভাবেই ফিল্মি কায়দায় হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় ব্যাপক চাঞ্চল্য। তোলপাড় চলছে পুলিশ বিভাগেও। ঘটনার ১০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও কোন খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে সে ব্যাপারে পারিবারিকভাবে কিছু জানা না গেলেও পুলিশ তার কর্মস্থলে অস্থিরতার ক্লু ধরে অনুসন্ধান করছে। একই সঙ্গে ভুল টার্গেটে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলেও ধারণা তাদের। তবে যারা খুন করেছে তারা সবাই পেশাদার খুনি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত বলে অনেকটা নিশ্চিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কেননা আঘাতের আলামত দেখে তাই মনে করছে পুলিশ বিভাগ। নিহত অঞ্জলী দেবীর স্বামীর নাম ডা. রাজেন্দ্র লাল চৌধুরী। তিনিও পেশায় একজন শিক্ষক। তার দুই মেয়েও সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করছেন। শহরের পাঁচলাইশ এলাকার তেলোপট্টির মোড় এলাকায় ১০ মাস হলো তিনি বাসাভাড়া নিয়েছিলেন। ওই এলাকার সাধন বণিকের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকতেন অঞ্জলী। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায়। হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল দুপুর ২টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে দেখা যায় সেখানে চলছে শোকের মাতম। তার কলেজের শ’ শ’ শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। মায়ের জন্য মেয়েদের চিৎকার আশপাশের পরিবেশ ভারি করে তুলছিল। স্বামী রাজেন্দ্র লাল চৌধুরী শোকে নির্বাক হয়ে পড়েছেন। বারবারই তিনি বলছিলেন, আমাদের কোন শত্রু ছিল না। ওরা ভুল মানুষকে হত্যা করলো। ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী, পারিবারিক লোকজন ও মেডিক্যাল পুলিশ জানায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় তেলোপট্টির সেই নিজের বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থল নার্সিং কলেজের দিকে যাচ্ছিলেন অঞ্জলী দেবী। এ সময় বাসার ঠিক ৩০-৪০ গজ দূরে যেতেই তিনি পেছনে ফেরেন। তার গতিরোধ করে ৪ সন্ত্রাসী দাঁড়ালে তিনি তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তাদের একজন কয়টা বাজে বলে অঞ্জলীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। ৩০ সেকেন্ড দাঁড়ানোর পরই খুনিরা ফাঁকা রাস্তায় তাকে একা পেয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। প্রথমে তার মাথায় আঘাত করা হয়। এরপর ৩টি কোপ দেয়া হয় পিঠে ও ঘাড়ে। আশপাশের লোকজন এ ঘটনা দেখে এগিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র থাকায় তারা সাহস করেননি। এক ব্যক্তি দূর থেকে পাথর ছুড়লে সন্ত্রাসীরা দ্রুত হেঁটে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় অঞ্জলী দেবীর স্বামী রাজেন্দ্র লাল বাথরুমে ছিলেন। তিনি জানান, বাড়ির দারোয়ান রণজিত তাকে প্রথমে হত্যার কথা জানান। এরপর দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
স্ত্রী হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রাজেন্দ্র লাল চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, আমি ফতেয়াবাদ এলাকায় প্রাইভেট ডাক্তারি করি। আমার স্ত্রী ২৩ বছর ধরে নার্সিং কলেজের শিক্ষক। কোন দিন কারও সঙ্গে দুই কথা হয়নি। কিন্তু কেন তাকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো তা জানি না। আমরা যে মামলা করবো তার কোন কারণও খুঁজে পাচ্ছি না। সন্ত্রাসীরা আসলেই কি অঞ্জলী দেবীকে মারতে এসেছিল! আমি এ খুনের বিচার চাই। অঞ্জলী দেবীর দুই মেয়ে। বড় মেয়ে অর্পিতা চৌধুরী। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন। গতকাল ঘটনার পরপরই তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার মায়ের সঙ্গে কোন বিরোধ নেই কারোর। তিনি কলেজে কেমন শিক্ষক ছিলেন তা তার সহকর্মীরা ভাল বলতে পারবেন। কিছুদিন আগে তার কলেজে অধ্যক্ষের অপসারণ নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল। কিন্তু আমার মা সেসব ঝামেলার বাইরে ছিলেন। একই রকম অভিমত ব্যক্ত করে ছোট মেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী সঙ্গীতা চৌধুরী বলেন, খবরটি শুনে মনে হলো কোন পৈশাচিক ঘটনার খবর শুনলাম। আমার মাকে এভাবে খুন করবে কে? যারা হত্যা করেছে তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে খুনের ঘটনার বিচার চেয়ে আন্দোলন করছিলেন নার্সিং কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা খুনিদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান। কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রায়হান জান্নাত বলেন, ম্যাডামকে কেউ খুন করতে পারে তা বিশ্বাস করতে পারছি না। তাকে যেভাবে মারা হলো তা বীভৎস। চেহারা রক্তে ভেসে গেছে। মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এভাবে কেউ কাউকে মারতে পারে? অথচ তিনি ছিলেন আমাদের সবার প্রিয় শিক্ষক।
নার্সিং কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মিনারা খানম বলেন, কলেজে তার সঙ্গে কোন দিন বিরোধ তৈরি হয়নি কারোর। তিনি ছিলেন চুপচাপ। আমরা তার ঘটনার বিচার চাচ্ছি। এ ঘটনায় সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নগর পুলিশ জানায়, পাঁচলাইশ থানায় এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। যেখানে মারা হয়েছে সেখানকার খুনিদের তালিকা বের করে চিহ্নিত করার কাজ চলছে। কারণ যারা খুন করেছে তারা এর আগেও অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। নিশ্চয় কেউ ভাড়া করা খুনি দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। কিছুদিন আগে নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ অপসারণ নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল। সেখানে তার ভূমিকার বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি। তা ছাড়া তার স্বামী রাজেন্দ্র লাল চৌধুরীর আরও একটি সংসার রয়েছে। সেখানকার কারোর সঙ্গে বিরোধ ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একজনকে মারতে এসে আরেকজনকে মারার বিষয়টিও উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার দীপকজ্যোতি খিসা বলেন, ঘটনাটি নৃশংস। খুনের আলামত দেখে বোঝা যাচ্ছে পূর্বপরিকল্পিত। এ ঘটনায় পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনাটি বেশ রহস্যজনক। রাতেই অভিযানে নামবে পুলিশ।
চট্টগ্রামে সরকারি নার্সিং কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা অঞ্জলী দেবী (৫০)-কে এভাবেই ফিল্মি কায়দায় হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় ব্যাপক চাঞ্চল্য। তোলপাড় চলছে পুলিশ বিভাগেও। ঘটনার ১০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও কোন খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে সে ব্যাপারে পারিবারিকভাবে কিছু জানা না গেলেও পুলিশ তার কর্মস্থলে অস্থিরতার ক্লু ধরে অনুসন্ধান করছে। একই সঙ্গে ভুল টার্গেটে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলেও ধারণা তাদের। তবে যারা খুন করেছে তারা সবাই পেশাদার খুনি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত বলে অনেকটা নিশ্চিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কেননা আঘাতের আলামত দেখে তাই মনে করছে পুলিশ বিভাগ। নিহত অঞ্জলী দেবীর স্বামীর নাম ডা. রাজেন্দ্র লাল চৌধুরী। তিনিও পেশায় একজন শিক্ষক। তার দুই মেয়েও সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করছেন। শহরের পাঁচলাইশ এলাকার তেলোপট্টির মোড় এলাকায় ১০ মাস হলো তিনি বাসাভাড়া নিয়েছিলেন। ওই এলাকার সাধন বণিকের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকতেন অঞ্জলী। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায়। হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল দুপুর ২টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে দেখা যায় সেখানে চলছে শোকের মাতম। তার কলেজের শ’ শ’ শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। মায়ের জন্য মেয়েদের চিৎকার আশপাশের পরিবেশ ভারি করে তুলছিল। স্বামী রাজেন্দ্র লাল চৌধুরী শোকে নির্বাক হয়ে পড়েছেন। বারবারই তিনি বলছিলেন, আমাদের কোন শত্রু ছিল না। ওরা ভুল মানুষকে হত্যা করলো। ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী, পারিবারিক লোকজন ও মেডিক্যাল পুলিশ জানায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় তেলোপট্টির সেই নিজের বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থল নার্সিং কলেজের দিকে যাচ্ছিলেন অঞ্জলী দেবী। এ সময় বাসার ঠিক ৩০-৪০ গজ দূরে যেতেই তিনি পেছনে ফেরেন। তার গতিরোধ করে ৪ সন্ত্রাসী দাঁড়ালে তিনি তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তাদের একজন কয়টা বাজে বলে অঞ্জলীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। ৩০ সেকেন্ড দাঁড়ানোর পরই খুনিরা ফাঁকা রাস্তায় তাকে একা পেয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। প্রথমে তার মাথায় আঘাত করা হয়। এরপর ৩টি কোপ দেয়া হয় পিঠে ও ঘাড়ে। আশপাশের লোকজন এ ঘটনা দেখে এগিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র থাকায় তারা সাহস করেননি। এক ব্যক্তি দূর থেকে পাথর ছুড়লে সন্ত্রাসীরা দ্রুত হেঁটে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় অঞ্জলী দেবীর স্বামী রাজেন্দ্র লাল বাথরুমে ছিলেন। তিনি জানান, বাড়ির দারোয়ান রণজিত তাকে প্রথমে হত্যার কথা জানান। এরপর দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
স্ত্রী হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রাজেন্দ্র লাল চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, আমি ফতেয়াবাদ এলাকায় প্রাইভেট ডাক্তারি করি। আমার স্ত্রী ২৩ বছর ধরে নার্সিং কলেজের শিক্ষক। কোন দিন কারও সঙ্গে দুই কথা হয়নি। কিন্তু কেন তাকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো তা জানি না। আমরা যে মামলা করবো তার কোন কারণও খুঁজে পাচ্ছি না। সন্ত্রাসীরা আসলেই কি অঞ্জলী দেবীকে মারতে এসেছিল! আমি এ খুনের বিচার চাই। অঞ্জলী দেবীর দুই মেয়ে। বড় মেয়ে অর্পিতা চৌধুরী। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন। গতকাল ঘটনার পরপরই তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার মায়ের সঙ্গে কোন বিরোধ নেই কারোর। তিনি কলেজে কেমন শিক্ষক ছিলেন তা তার সহকর্মীরা ভাল বলতে পারবেন। কিছুদিন আগে তার কলেজে অধ্যক্ষের অপসারণ নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল। কিন্তু আমার মা সেসব ঝামেলার বাইরে ছিলেন। একই রকম অভিমত ব্যক্ত করে ছোট মেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী সঙ্গীতা চৌধুরী বলেন, খবরটি শুনে মনে হলো কোন পৈশাচিক ঘটনার খবর শুনলাম। আমার মাকে এভাবে খুন করবে কে? যারা হত্যা করেছে তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে খুনের ঘটনার বিচার চেয়ে আন্দোলন করছিলেন নার্সিং কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা খুনিদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান। কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রায়হান জান্নাত বলেন, ম্যাডামকে কেউ খুন করতে পারে তা বিশ্বাস করতে পারছি না। তাকে যেভাবে মারা হলো তা বীভৎস। চেহারা রক্তে ভেসে গেছে। মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এভাবে কেউ কাউকে মারতে পারে? অথচ তিনি ছিলেন আমাদের সবার প্রিয় শিক্ষক।
নার্সিং কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মিনারা খানম বলেন, কলেজে তার সঙ্গে কোন দিন বিরোধ তৈরি হয়নি কারোর। তিনি ছিলেন চুপচাপ। আমরা তার ঘটনার বিচার চাচ্ছি। এ ঘটনায় সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নগর পুলিশ জানায়, পাঁচলাইশ থানায় এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। যেখানে মারা হয়েছে সেখানকার খুনিদের তালিকা বের করে চিহ্নিত করার কাজ চলছে। কারণ যারা খুন করেছে তারা এর আগেও অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। নিশ্চয় কেউ ভাড়া করা খুনি দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। কিছুদিন আগে নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ অপসারণ নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল। সেখানে তার ভূমিকার বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি। তা ছাড়া তার স্বামী রাজেন্দ্র লাল চৌধুরীর আরও একটি সংসার রয়েছে। সেখানকার কারোর সঙ্গে বিরোধ ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একজনকে মারতে এসে আরেকজনকে মারার বিষয়টিও উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার দীপকজ্যোতি খিসা বলেন, ঘটনাটি নৃশংস। খুনের আলামত দেখে বোঝা যাচ্ছে পূর্বপরিকল্পিত। এ ঘটনায় পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনাটি বেশ রহস্যজনক। রাতেই অভিযানে নামবে পুলিশ।
No comments