ইন্টারনেটে প্রেম অতঃপর...
ইন্টারনেটের কল্যাণে অসম এক প্রেমের সম্পর্ক গড়েছেন বৃটিশ নারী জ্যান মাখলোউফি। তিনি ৭ সন্তানের জননী। আছে ১০ বছর বয়সী এক নাতি। কিন্তু প্রেম মানে না কোন বাধা। তাই তিনি তিউনিশিয়ার ৩২ বছর বয়সী এক টগবগে যুবকের প্রেমে হাবুডুবু খেতে থাকেন। একপর্যায়ে উড়ে যান তিউনিশিয়া। বিয়ে করেন প্রেমিককে। তার নাম মোহামেদ। তিনি মুসলিম। তাই ধর্মান্তরিত হয়ে জ্যান মাখলোউফিও মুসলিম হয়েছেন। এখন তিনি স্বামীকে নিয়ে ফিরতে চান দেশে। কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে ভিসায়। তিনি ভিসা পাচ্ছেন না। এ নিয়ে মাঝে-মধ্যেই মিডিয়ায় লেখালেখি হচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল ডেইলি মেইল এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে বলা হয়- ৪৭ বছর বয়সী এক বৃটিশ নারী বিয়ে করেছেন ৩২ বছর বয়সী তিউনিশিয়ার এক পুরুষকে। আপাতদৃষ্টিতে এতে খুব একটা খটকা লাগার কথা নয়। কিন্তু বৃটিশ ওই নারীর সাত সন্তান রয়েছে এবং ১০ বছর বয়সী এক নাতিও রয়েছে! ইন্টারনেটে চ্যাটের মাধ্যমে তিউনিশিয়ান যুবক মোহামেদের সঙ্গে ওই বৃটিশ নারী জ্যান মাখলোউফির পরিচয়। এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন তাকে বিয়ে করার। তার এমন সিদ্ধান্ত শুনে পরিবার রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে এসব কিছুই পরোয়া না করে তিউনিশিয়া উড়ে গিয়ে বিয়ে করেন মোহামেদকে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। এখন তিনি মোহামেদের জন্য ভিসার আবেদনও করেছেন বৃটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এমনকি মোহামেদ যেহেতু মুসলিম, সেহেতু এখন তিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে যাচ্ছেন! নিজের আগের বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরই অনলাইনে চ্যাটিং করতে গিয়ে মোহামেদের প্রেমে পড়ে যান জ্যান। সকলে তাকে বুঝিয়েছিলেন, এটি মূলত ভালবাসা নয়, বরং তাকে ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে বসবাস করার ফন্দি আঁটছে মোহামেদ। কিন্তু কারও কথা না শুনে সোজা তিউনিশিয়া গিয়ে তারা দু’জন বিয়ে করে ফেলেন। এখন দ্রুত মুসলিম হতে চান তিনি এবং মুসলিম হয়ে হিজাবও পরতে চান। এদিকে মোহামেদের ভিসার জন্য আবেদন জানানো হলেও, তা প্রত্যাখ্যান করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এখন জ্যানের দেয়া হাতখরচের উপরই চলে যায় তার জীবন। কাজের খোঁজও চলছে। অপরদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোহামেদের ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করার পর এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, উপ-প্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ, এমনকি বৃটেনের রানীর সমর্থন চেয়েছেন জ্যান। তিনি বলেন, অনেক মানুষই মনে করছে এটা প্রতারণা। কিন্তু আমি জানি, এটি তা নয়। সে আমাকে বহুবার বলেছে যে সে আর কারও কাছে থাকতে চায় না। সে কেবল আমার সঙ্গেই থাকতে চায়। তিউনিশিয়ার পুরুষদের সমপর্কে তিনি বলেন, তিউনিশিয়ায় গিয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে যে সকল পুরুষের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, তারা আসলেই ভাল। আমার যদি এক মিনিটের জন্যও মনে হতো যে এটা প্রতারণা, তাহলে আমি তাকে বিয়ে করতাম না। তিনি বলেন, প্রায় দু’বছর হলো আমরা বিয়ে করেছি। যদি এটা প্রতারণাই হতো, তাহলে নিশ্চয়ই এতদিনে সে আমাকে ছেড়ে চলে যেতো। ধর্মান্তরিত হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমি যখন ধর্মান্তরিত হয়ে হিজাব পরতে চাইলাম, সে আমাকে এসব নিয়ে কিছুই বলেনি। তার মতে এটা আমার সিদ্ধান্ত। আমি যদি করতে চাই, তাহলে করতে পারি।
No comments