বাংলাদেশিদের লিলুয়া হোম থেকে পালানোর চেষ্টা
পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার লিলয়ায় রাজ্য সরকারের নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের হোম থেকে বারেবারে নিবাসীর পালানোর ঘটনা ঘটছে। গত ছয় মাসে কম করে ছয় থেকে আটবার আবাসিক পালানোর ঘটনা ঘটেছে। কখনো সংঘবদ্ধভাবে, কখনো বা দু-চার জন মিলে। এই হোমে বর্তমানে যে ২৪০ জন আবাসিক রয়েছে তাদের ১১৩ জনই বাংলাদেশি। ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আদালতের নির্দেশে হোমে রয়েছে। এই ১১৩ জনের মধ্যে ৩০ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিলেও তাদের ফেরত পাঠানো হয় নি। আর তাই হোমের বাংলাদেশি আবাসিকরা মনে করেন, তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে না। বরং হোমেই বন্দী থাকতে হবে। আর তাই বাংলাদেশি আবাসিকরাই সব সময় পালিয়ে যাবার ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা নেয় বলে হোম সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। এছাড়া হোমে রযেছে নানা অব্যাস্থা। হোমের আবাসিকদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগও বিভিন্ন সময়ে উঠেছে। গত বুধবার সকালে লিলুয়া হোম থেকে ২৫ জন আাবাসিক পাঁচির টপকে পালানোর চেষ্টা করে। এদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি তা অবশ্য জানা যায়নি। পুলিশ এদিন সন্ধ্যায় জানিযেছে, কয়েকজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অনেকের কোনও খোঁজ নেই। সুনির্দ্দিষ্টভাবে কতজন পলাতক তার কোনও হিসেব হোম কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেনি। গত জুলাই মাসে পনেরো দিনের মধ্যে চার বার আবাসিক পালানোর ঘটনা ঘটে লিলুয়ার এই হোমে। ৩১ জুলাই আবাসিক পালানোকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয় হোম চত্বর। হোম থেকে জানলার গ্রিল ভেঙে ৩৫ জন বাংলাদেশি মহিলা পালিয়ে গিয়েছিল। যদিও সকলকেই উদ্ধার করা হয়েছিল। গত রবিবারও ওই হোম থেকে পাঁচির টপকে পালিয়েছিলেন দু’জন আবাসিক। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এর আগে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা হোমের অব্যবস্থার কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, হোম পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল। এখানে নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে। খাবারদাবার নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। সমস্ত বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু সেই ব্যবস্থার পরিণাম যে কী, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বুধবার ২৫ জন আবাসিকের পলায়নের ঘটনা।
No comments