খুলনায় ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নিলো আওয়ামী লীগ-বিএনপি by রাশিদুল ইসলাম
জাতীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পরস্পরবিরোধী অবস্থান থাকলেও মংলায় দু’দলের শীর্ষনেতারা টেন্ডারবাজি করেছেন ঐক্যবদ্ধভাবে। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে পৌরসভার ড্রেন ও সড়ক নির্মাণের প্রায় ২৫ কোটি টাকার কাজ আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমর্থিত ঠিকাদাররা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মংলা) আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেয়র জুলফিকার আলী এ টেন্ডার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। সরকারি দল ও বিরোধী দলের প্রভাবশালী এ দুই নেতার অনুসারীদের বাধার কারণে সাধারণ ঠিকাদাররা শিডিউল কিনতে ও জমা দিতে পারেননি। সূত্র জানায়, এডিবির অর্থায়নে মংলা পৌরসভা এলাকায় ড্রেন, কালভার্ট ও সড়ক নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। গত সোমবার ছিল শিডিউল বিক্রির শেষ দিন। ওই দিন পর্যন্ত তিন গ্রুপে মাত্র ১২টি শিডিউল বিক্রি হয়। গতকাল ছিল শিডিউল জমা দেয়ার শেষ দিন। দুপুরের পর টেন্ডার বাক্স খোলার পরে তাতে ওই তিন গ্রুপের কাজে ৯টি শিডিউল জমা পড়ে। সাধারণ ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় এমপি তালুকদার আবদুল খালেক ও পৌরসভার মেয়র জুলফিকার আলীর লোকজন এক সপ্তাহ ধরে পৌরসভা এলাকায় পাহারা বসায়। শিডিউল কিনতে গেলে কবির, নূর আলম ও ইকবালের নেতৃত্বে বাধা দেয়। তারা বলেন, স্থানীয় এমপি ও মেয়রের সঙ্গে কথা না বলে কেউ শিডিউল কিনতে পারবে না। তাদের বাধার কারণে ঠিকাদাররা শিডিউল কিনতে ও জমা দিতে পারেননি। শিডিউল জমাদানের শেষদিনে সকাল থেকে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা পৌর ভবনে পাহারা বসান। সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা গ্রুপ জানায়, দুই কোটি টাকার বিনিময়ে তারা মধ্যস্থতা করেছে। এখানে জোর করে কোন ঠিকাদারের কাছ থেকে শিডিউল কেড়ে নেয়া হয়নি। যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, কারও শিডিউল কেড়ে নেয়া বা জমাদানে বাধা দেয়া হয়নি। সারা দেশে তো সমঝোতার ভিত্তিতেই কাজ হয়। এখানে হলেও দোষ কি? মেয়র জুলফিকার আলী বলেন, যাদের লাইসেন্সে শিডিউল কেনার যোগ্যতা নেই তারাই প্রচার করে বেড়াচ্ছে সিন্ডিকেট হয়েছে। শিডিউল কিনতে বা জমা দিতে বাধা দেয়ার কোন অভিযোগ আমার কাছে আসে নি। আর মেয়র ইচ্ছা করলেই কোন ঠিকাদারকে কাজ দিতে পারেন না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ঠিক নয়। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, একই প্যাকেজের তিন গ্রুপের ১নং গ্রুপে প্রায় ১১ কোটি, দ্বিতীয় গ্রুপে সাড়ে ৪ কোটি ও তৃতীয় গ্রুপে ৯ কোটি টাকার কাজ। এ তিনটি কাজের জন্য ১২টি শিডিউল বিক্রি হয়। এরই মধ্যে ৯টি শিডিউল জমা পড়ে। পৌরসভা ছাড়াও বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকেও শিডিউল বিক্রি হয়েছে। তাই সিন্ডিকেট হওয়ার কথা নয়।
No comments