মৃগি রোগের নানান কথা by ডা: মৌসুমী রিদওয়ান
মানব মস্তিষ্কের কার্যপ্রণালীতে বিঘœতার সৃষ্টি হলে মৃগি রোগ দেখা দেয়। মৃগি রোগ মস্তিষ্কের রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় নিউরোলোজিক্যাল ডিজিজ। ঊনবিংশ শতাব্দীতে গবেষকদের ধারণা ছিল মৃগি রোগ থাকলেই ব্যক্তির বুদ্ধি-বিচার বিবেচনা বোধের উৎকর্ষতা কমে যায়। কিন্তু বর্তমানকালের গবেষকেরা মনে করেন, মৃগি রোগে আক্রান্তদের খুব কম অংশে বিচার-বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি দেখা যায়। গবেষণাগুলো বিভিন্ন ইনস্টিটিউশনে চালানো হয়েছিল যেখানে জটিল মৃগি রোগীদের রাখা হতো। তবে সেখানে জন্মগতভাবে মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন কি না, তা পৃথক করে দেখা হয়নি।
মৃগি রোগের কারণে যেসব ছেলেমেয়ে তাদের লেখাপড়ায় ক্রমেই অবনতি করতে থাকে, গবেষকেরা সেসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেনÑ
মৃগি রোগের কারণে যেসব ছেলেমেয়ে তাদের লেখাপড়ায় ক্রমেই অবনতি করতে থাকে, গবেষকেরা সেসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেনÑ
1শিশুর মনোযোগের সমস্যা যা শিক্ষাকার্যে মারাত্মকভাবে বিঘœ ঘটায়।
2মৃগি রোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক।
3মৃগি রোগে আক্রান্ত হওয়ার যে নেতিবাচক সামাজিক মিথষ্ক্রিয়তা থাকে তাতে ছেলেমেয়ের শিক্ষণ দিক কম বেশি বিঘিœত হয়।
4মৃগি রোগ সংশ্লিষ্ট অস্বাভাবিক যাবতীয় কর্মকাণ্ডে মস্তিষ্কের ক্ষরণ কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
5মৃগি রোগ আক্রান্ত ছেলেমেয়েদের স্কুলে উপস্থিতি সাধারণ শিশুদের চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে কম দেখা যায় সেটিও শিশুর শিক্ষণকে বিঘিœত করে।
6মৃগী প্রতিরোধক বিভিন্ন ওষুধ বিশেষ করে যখন বেশি ডোজ ব্যবহার করা হয়।
মৃগি রোগে আক্রান্ত শিশুর ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হলে এ ধরনের ক্ষতি অনেকাংশ কম করা যায়। তবে মৃগি রোগের যথাযথ চিকিৎসা ও নিয়মিত ফলোআপ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
মৃগি রোগের মনের পরিবর্তন
যেসব মানুষ যারা দীর্ঘ দিন মৃগি রোগে ভুগছেন তাদের মনের মধ্যে কিছু কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, মৃগি রোগীদের ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে এ রকমের স্থায়ী কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। এই পরিবর্তনগুলো হলোÑ
7ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন
8বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি
9স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে নিজের ক্ষতি সাধন
10 বিষণœতার সমস্যা
11আবেগ মনোবৃত্তি বৃদ্ধি
12আত্মহত্যার প্রবণতা
13সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া
ঊনবিংশ শতাব্দীর গবেষকেরা ধারণা পোষণ করেন, মৃগি রোগীদের ব্যক্তিত্ব দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গবেষকেরা মৃগি রোগীদের ইপিলেপ্টিক পার্সোনালিটি বা মৃগীয় ব্যক্তিত্ব নামে অবহিত করেন। এই এপিলেপ্টিক পার্সোনালিটির বৈশিষ্ট্যগুলো ছিল-
14ঝগড়া করার প্রবণতা
15অস্বাভাবিক আত্মকেন্দ্রিকতা
16খিটখিটে তিরিক্ষি মেজাজ
17ধর্মের দিক হতে গোড়া
18যেকোনো প্রসঙ্গ নিয়েই চিন্তা করতে থাকা
ব্যক্তিত্বের সাথে মৃগীয় সম্পর্ক গবেষকদের দু’টি দিক বেশ আলোচিত। এগুলো হলোÑ
19যারা মস্তিষ্কের টেম্পেরার লোবের মৃগীর সমস্যাতে ভুগে থাকেন তাদের বেলাতেই এ ধরনের পরিবর্তন বেশি দেখা যায়।
20হিংসাত্মক মনোদৃষ্টিকে অনেক ক্ষেত্রে মৃগি রোগ সংশ্লিষ্ট মনে করে নেয়া হয়। গবেষণায় এর সাথে মৃগীর যে যোগসূত্র পাওয়া গেছে সেটি আসলে তেমন বেশি সুস্পষ্ট নয়।
আধুনিক গবেষকেরা, ব্যক্তিত্ব সমস্যার ব্যাপারেও দ্বিমত পোষণ করেন। তাদের ভাষ্য হলো মৃগি রোগে ব্যক্তিত্বের কিছু পরিবর্তন ঘটতে পারে; কিন্তু তা মৃগীয় ব্যক্তিত্ব এমন কোনো সুস্পষ্ট আঙ্গিক ঘটে না। এ ক্ষেত্রে সামাজিক সীমাবদ্ধতা অনেক বেশি প্রভাব রাখে। মৃগি রোগীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, নানান ধরনের সামাজিক বিধিনিষেধ, রোগীদের নিজেদের বিভিন্ন আড়ষ্টতাবোধÑ এসব বিভিন্ন কারণে আচরণ ব্যক্তিত্ব বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়, তা কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট আঙ্গিকে ঘটে না।
যারা দীর্ঘ দিন ধরে জটিল মৃগি রোগে ভুগে থাকেন তারা জীবনের একসময় মারাত্মক মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। সন্দেহ, সংশয় উপসর্গ এদের বেলায় বেশি মাত্রায় হতে দেখা যায়। সন্দেহ সংশয়ের কারণে রোগী খাবার গ্রহণ পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে পারে। মৃগি রোগীরা যে ধরনের সাইকোসিস সমস্যায় আক্রান্ত হয় তাকে বলা হয় ক্রনিক প্যারানয়েড হ্যালুসিনেটরি সাইকোসিস।
মৃগি রোগীর যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। নয়তো জটিলতা বাড়লে এবং তা দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকলে মানসিক সমস্যারও সৃষ্টি হতে পারে। মৃগি রোগ কোনো অভিশাপ নয়। এটি নয় কোনো পাপের পরিণাম। মৃগি রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা রয়েছে। তবে সে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। মৃগি রোগীর ব্যাপারে মানসিক বিশেষজ্ঞ আপনাকে নানাভাবে সাহায্য করতে পারেন।
2মৃগি রোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক।
3মৃগি রোগে আক্রান্ত হওয়ার যে নেতিবাচক সামাজিক মিথষ্ক্রিয়তা থাকে তাতে ছেলেমেয়ের শিক্ষণ দিক কম বেশি বিঘিœত হয়।
4মৃগি রোগ সংশ্লিষ্ট অস্বাভাবিক যাবতীয় কর্মকাণ্ডে মস্তিষ্কের ক্ষরণ কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
5মৃগি রোগ আক্রান্ত ছেলেমেয়েদের স্কুলে উপস্থিতি সাধারণ শিশুদের চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে কম দেখা যায় সেটিও শিশুর শিক্ষণকে বিঘিœত করে।
6মৃগী প্রতিরোধক বিভিন্ন ওষুধ বিশেষ করে যখন বেশি ডোজ ব্যবহার করা হয়।
মৃগি রোগে আক্রান্ত শিশুর ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হলে এ ধরনের ক্ষতি অনেকাংশ কম করা যায়। তবে মৃগি রোগের যথাযথ চিকিৎসা ও নিয়মিত ফলোআপ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
মৃগি রোগের মনের পরিবর্তন
যেসব মানুষ যারা দীর্ঘ দিন মৃগি রোগে ভুগছেন তাদের মনের মধ্যে কিছু কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, মৃগি রোগীদের ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে এ রকমের স্থায়ী কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। এই পরিবর্তনগুলো হলোÑ
7ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন
8বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি
9স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে নিজের ক্ষতি সাধন
10 বিষণœতার সমস্যা
11আবেগ মনোবৃত্তি বৃদ্ধি
12আত্মহত্যার প্রবণতা
13সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া
ঊনবিংশ শতাব্দীর গবেষকেরা ধারণা পোষণ করেন, মৃগি রোগীদের ব্যক্তিত্ব দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গবেষকেরা মৃগি রোগীদের ইপিলেপ্টিক পার্সোনালিটি বা মৃগীয় ব্যক্তিত্ব নামে অবহিত করেন। এই এপিলেপ্টিক পার্সোনালিটির বৈশিষ্ট্যগুলো ছিল-
14ঝগড়া করার প্রবণতা
15অস্বাভাবিক আত্মকেন্দ্রিকতা
16খিটখিটে তিরিক্ষি মেজাজ
17ধর্মের দিক হতে গোড়া
18যেকোনো প্রসঙ্গ নিয়েই চিন্তা করতে থাকা
ব্যক্তিত্বের সাথে মৃগীয় সম্পর্ক গবেষকদের দু’টি দিক বেশ আলোচিত। এগুলো হলোÑ
19যারা মস্তিষ্কের টেম্পেরার লোবের মৃগীর সমস্যাতে ভুগে থাকেন তাদের বেলাতেই এ ধরনের পরিবর্তন বেশি দেখা যায়।
20হিংসাত্মক মনোদৃষ্টিকে অনেক ক্ষেত্রে মৃগি রোগ সংশ্লিষ্ট মনে করে নেয়া হয়। গবেষণায় এর সাথে মৃগীর যে যোগসূত্র পাওয়া গেছে সেটি আসলে তেমন বেশি সুস্পষ্ট নয়।
আধুনিক গবেষকেরা, ব্যক্তিত্ব সমস্যার ব্যাপারেও দ্বিমত পোষণ করেন। তাদের ভাষ্য হলো মৃগি রোগে ব্যক্তিত্বের কিছু পরিবর্তন ঘটতে পারে; কিন্তু তা মৃগীয় ব্যক্তিত্ব এমন কোনো সুস্পষ্ট আঙ্গিক ঘটে না। এ ক্ষেত্রে সামাজিক সীমাবদ্ধতা অনেক বেশি প্রভাব রাখে। মৃগি রোগীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, নানান ধরনের সামাজিক বিধিনিষেধ, রোগীদের নিজেদের বিভিন্ন আড়ষ্টতাবোধÑ এসব বিভিন্ন কারণে আচরণ ব্যক্তিত্ব বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়, তা কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট আঙ্গিকে ঘটে না।
যারা দীর্ঘ দিন ধরে জটিল মৃগি রোগে ভুগে থাকেন তারা জীবনের একসময় মারাত্মক মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। সন্দেহ, সংশয় উপসর্গ এদের বেলায় বেশি মাত্রায় হতে দেখা যায়। সন্দেহ সংশয়ের কারণে রোগী খাবার গ্রহণ পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে পারে। মৃগি রোগীরা যে ধরনের সাইকোসিস সমস্যায় আক্রান্ত হয় তাকে বলা হয় ক্রনিক প্যারানয়েড হ্যালুসিনেটরি সাইকোসিস।
মৃগি রোগীর যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। নয়তো জটিলতা বাড়লে এবং তা দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকলে মানসিক সমস্যারও সৃষ্টি হতে পারে। মৃগি রোগ কোনো অভিশাপ নয়। এটি নয় কোনো পাপের পরিণাম। মৃগি রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা রয়েছে। তবে সে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। মৃগি রোগীর ব্যাপারে মানসিক বিশেষজ্ঞ আপনাকে নানাভাবে সাহায্য করতে পারেন।
No comments