প্রস্তুত কুয়াকাটা by শরিফুল হক শাহীন ও হোসাইন আমির
কুয়াকাটার সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত উপভোগ করার
স্থান ইকোপার্ক, গঙ্গামতির লেক, গঙ্গামতির ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, রাখাইন মহিলা
মার্কেট, ছায়া ঘেরা নারিকেল কুঞ্জ, লেম্বুর চরের শুঁটকি পল্লী, রাখাইন
পল্লী, কেরানি পাড়া বৌদ্ধ বিহারের বৌদ্ধ মূর্তি, কুয়াকাটা সংলগ্ন মিশ্রি
পাড়ায় অবস্থিত এশিয়ার সর্ব বৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তি, সাগর থেকে জেগে ওঠা নৌকা,
সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চল খ্যাত ফাতরার সবুজ বন, ঝাউ বাগান, মৎস্যবন্দর মহিপুর
ও মম্বীপাড়ার সৎ সঙ্গের মন্দির নিয়ে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা এখন পর্যটকদের
অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। পর্যটন স্পটগুলোতে গমন উপযোগী স্থানীয় ভাড়ায় চালিত
যানবাহনেও তাই সাজ সাজ রব। অপরদিকে ঈদুল-আজহার উৎসবের সরকারি ছুটির দিনগুলো
আনন্দের সঙ্গে কাটানোর জন্য দেশ-বিদেশের শত শত পর্যটকরা প্রকৃতির নিবিড়
পরশ নিতে ইতিমধ্যেই কুয়াকাটার খ্যাতনামা সকল আবাসিক হোটেলগুলোতো বুকিং দিয়ে
রেখেছেন। পরিস্থিতি এমন যে, ঈদের পর ১০ দিনের মধ্যে হোটেলের কোন সিট খালি
নেই। ব্যক্তি মালিকানাধীন বিলাসবহুল আবাসিক হোটেলগুলো পর্যটকদেরকে আকৃষ্ট
করার জন্য বাড়িয়েছে সেবার মান। কুয়াকাটা ইন্টারন্যাশনাল, বনানী প্যালেস,
গোল্ডেন প্যালেস, নীলাঞ্জনা, পর্যটন হলিডে হোম্স ও স্কাই প্যালেস হোটেলসহ
একাধিক হোটেল মালিক জানান, অবস্থা দেখে মনে হয় গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি
পর্যটকের আগমন হবে। কুয়াকাটার বিলাসবহুল হোটেল নীলাঞ্জনার ম্যানেজার সৈয়দ
মো. মোস্তাফা হাবিব জানান, বর্ষা মওসুমে কুয়াকাটা কেন্দ্রিক পর্যটন ব্যবসা
ছিল খুবই মন্দা। এছাড়া গত মাসে খেপুপাড়ার ফেরি চারদিন বন্ধ থাকায় কুয়াকাটার
সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ বন্ধ থাকায় পর্যটকরা কুয়াকাটায় আসেনি। তবে এবার
ঈদুল-আজহার পরের দিন থেকে ১০ দিনের সিট অগ্রিম ফোনের মাধ্যমে বুকিং হয়ে
গেছে। তিনি কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের তিনটি ফেরি উন্নয়ের দাবি জানান। হোটেল
ব্যবসায়ী শেখ ইসহাক আলী জানান, কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, সাগরের
নীল ঢেউ, বালুকারাশি, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মতো লোভনীয় সৌন্দর্যই কুয়াকাটা
ভ্রমণের স্মৃতিকে অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখে মননে এবং পুনরায় নিজের অজান্তেই
নিজেকে প্রকৃতির কাছে টেনে আনে। তিনি আরও বলেন, কলাপাড়া-কুয়াকাটা ২২ কিমি.
সড়কের ঝক্কি-ঝামেলা না থাকলে কুয়াকাটায় ঈদ উৎসবের অবকাশ যাপন ছাড়াও বছরের
অধিকাংশ সময়ে নিড়িবিলি সময় কাটাতে দেশ-বিদেশের হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটবে।
কুয়াকাটার শিশুদের খেলনা সামগ্রী বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান, বর্ষা
মওসুমে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন ছিল খুবই কম। পর্যটকদের আগমন কম থাকায়
বেচাকেনা একেবারে বন্ধ যাবার উপক্রম হয়েছিল। বর্ষার চারমাস বসে বসে খেতে
খেতে চালান শেষ হবার উপক্রম হয়েছে। তাই গত সপ্তাহে দুই লাখ টাকা ধার এনে
দোকানে মালামাল উঠিয়েছি। তার ধারণা এবার ঈদুল-আজহার উৎসবের পরের দিন থেকে
কুয়াকাটায় পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় লেগে থাকবে। কুয়াকাটা পুলিশ ফাঁড়ির
ইনচার্জ জানান, এবার ঈদুল-আজহার উৎসবের পরের দিন থেকে কুয়াকাটায় পর্যটকদের
উপচেপড়া ভিড় লেগে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা
যাতে কোন ঝামেলায় না পড়ে অথবা কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার
জন্য বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে আমাদের
পুলিশের টহল অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
No comments