অভিমত -গণতন্ত্র বনাম জনগণ by বেগ মাহতাব উদ্দীন
গণতন্ত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা হলো, জনগণের সরকার, জনগণ দ্বারা গঠিত সরকার, জনগণের জন্য সরকার। এর কোনটি আমাদের জনগণের জন্য বা রাজনৈতিক নেতাদের জন্য বর্তমানে প্রযোজ্য, তা বলা কঠিন। আমাদের দেশে গণতন্ত্রের মানে হলো দলীয়প্রধানদের আদেশ-নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা, হরতাল ডাকা, সংসদ বর্জন করে বেতনভাতা নেয়া, সরকারি দলের লুটপাট ও সন্ত্রাস, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে বোবা বানিয়ে দেয়া ইত্যাদি। একটি গল্প মনে পড়ে গেলÑ এক অন্ধকে তার এক বন্ধু হাইকোর্ট দেখাতে নদীর পাড়ে নিয়ে গেল, নদীর পাড়ে গিয়ে বলল, দেখ বন্ধু, হাইকোর্ট কত সুন্দর। তখন নদী দিয়ে একটি নৌকা যাচ্ছিল। নৌকার পানির শব্দ অন্ধের কানে গেলে অন্ধ বন্ধুর কাছে জানতে চাইল হাইকোর্টের সামনে পানির শব্দ কেন? বন্ধু অন্ধকে বলল, আরে বোকা, বিচারপতি বিচার করতে করতে কান্ত হয়ে পানি পান করছেন। সহজ-সরল অন্ধ সে কথা বিশ্বাস করে ধরে নিলো, সে হাইকোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। খুশিও হলো, কারণ অন্ধ হয়েও হাইকোর্ট দেখতে পেল ভেবে। বর্তমানে আমাদের দেশের নেতানেত্রীরা ১৬ কোটি মানুষকে নদীর পাড়ে নিয়ে গণতন্ত্রের হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন। আর আমরা কেউ কেউ বাধ্য হয়ে, আবার কেউ স্নেহধন্য হয়ে সব কিছু মেনে নিচ্ছি। যারা মেনে নিতে পারছি না, তাদের ‘রেললাইন ধরে দৌড়াতে হচ্ছে’। পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার ৩০-৪০ ভাগ লোক সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত, বাকি ৪০ ভাগ গণজোয়ারে ভোট দেয়। বাকি ২০ ভাগ কোনো ঝামেলায় জড়াতে চান না, এমনকি ভোটও দিতে চান না। তার পরও ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাউকে না কাউকে ভোট দিতে হয়। একশ্রেণীর লোক আছেন, যাদের বলা হয় সুশীলসমাজ। এই শ্রেণীর সম্মানিত সুধীজনেরা রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে থাকেন; তারা রাজনীতির নোংরা নর্দমা পরিষ্কার করার জন্য এগিয়ে আসেন না। ফলে রাজনীতি আরো কলুষিত হচ্ছে, ধ্বংস হতে বসেছে সামাজিক ব্যবস্থা। ভালো মানুষেরা রাজনীতির অঙ্গন থেকে দূরে থাকায় অসৎ ব্যক্তি ও অসাধু ব্যবসায়ীরা রাজনীতিকে ব্যবহার করে আখের গোছাচ্ছেন। ফলে অধঃপতিত হচ্ছে দেশের রাজনীতি, ভেঙে পড়ছে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, ধ্বংস হচ্ছে অর্থনীতি। আর এর সুযোগ নিচ্ছে আমলাতন্ত্র। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে। সরকারের বিপক্ষে কথা বললে মিডিয়ার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থা পরিবর্তনের জন্য সুশীলসমাজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্ণধারেরা যদি এক হয়ে একই মঞ্চে এসে প্রতিবাদ না করেন, তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে দেশ রাজনৈতিকভাবে শূন্য হয়ে যাবে। যখন দেখি অবসরপ্রাপ্ত আমলা, শিক্ষাবিদ, প্রবীণ রাজনীতিবিদ, বিতর্কিত ব্যক্তিদের পক্ষে কথা বলেন তখন মনে হয় কালো টাকা ও ক্ষমতার কাছে আমরা সবাই জিম্মি। অথচ আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনের সূরা আল ইমরানের ১০৪ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে একদল লোক থাকা দরকার যারা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেয়।’ একই সূরার ১১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সেই জাতি, তোমাদের সৃষ্টি করেছি। কারণ, তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেবে আর অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য নিষেধ করবে, তাহলেই তুমি মুমিন।’
দু’টি রাজনৈতিক জোট দেশের মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে, এক দল স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত। আরেক দল আছে, যারা স্বাধীনতার ঘোষক ইস্যু এবং নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার কাজে ব্যস্ত। দেশের কথা কেউ ভাবছেন বলে মনে হয় না। দুই দলই পারিবারিক প্রাধান্য এবং পরিবারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই করে যাচ্ছেন। এ দিকে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের, ওষ্ঠাগত হচ্ছে জনজীবন। দুই জোটে যারা আছেন তাদের অবস্থা, ধরি মাছ না ছুঁই পানি। স্বার্থে আঘাত লাগলেই জোটের বদনাম, কিছু পেলে জোটের সুনাম। একদল ক্ষমতায় এলে অন্য দল দেশ ছেড়ে পালায়। নিরীহ জনগণ যেহেতু পালাতে পারে না, তাই তাদের সরকারদলীয় ক্যাডারদের অত্যাচার নীরবে সহ্য করতে হয়। আদেশ-নির্দেশই হলো গণতন্ত্র। দেশের রাজনীতি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এ জন্য নির্বাচনের আগে খোঁজা হয়, কে কত টাকা দিয়ে দলীয় মনোনয়ন কিনতে পারবে। দর-দামে মিললে নেত্রীর সামনে বসে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মাজারে ফুল দিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় এলেই সব ঠিক। এরপর নির্বাচন এবং এমপি। তারপর শুরু হয় রাজনৈতিক বাণিজ্য। আর আমলারা ওইসব অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত, ক্যাডার ও কালো টাকার মালিকদের ধুয়ে-মুছে পূতপবিত্র করে সমাজের মধ্যমণি বানিয়ে দেন। এরপর এক দল সংসদে যায় আরেক দল রাজপথে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনজীবনকে অশান্ত করে তোলে। এর শিকার হয় সাধারণ জনগণ। ভারতে কিছু দিন আগে নির্বাচন হয়ে গেল, কংগ্রেসের মতো ঐতিহ্যবাহী দল হেরে গেল। তারা সাথে সাথে পরাজয় শিকার করে নিলো, এটাই গণতন্ত্র। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রাহুলকে পুলিশ আটক করল এবং পরে ছেড়ে দিলো। আমাদের দেশের নামীদামি রাজনীতিবিদদের কাছে জানতে চাই, আমাদের দেশের কোনো ‘যুবরাজ’কে পুলিশে ধরলে আপনারা কী করতেন? কমপক্ষে ১০০ গাড়ি আগুনে পুড়ত, কমপক্ষে সাত দিন হরতাল হতো, শতাধিক টোকাইয়ের জীবনহানি হতো (যাদের বলা হতো শহীদ); সর্বোপরি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষতি হতো হাজার কোটি টাকা।
গণতন্ত্রে সমালোচনা থাকতে হবে। কোনো মানুষই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। কেউ সমালোচনা করলে স্বাগত জানাতে হবেÑ এটাই গণতন্ত্রের মূল কথা। যে নিজের সমালোচনা করতে পারে, সেই সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান। আত্মসমালোচনা করতে শিখুন, দেশ ও জাতিকে কিছু দিতে পারবেন। ভুল শিকার করলে কেউ ছোট হয় না বরং বড় হয়, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। মানুষ সত্যবাদীকে পছন্দ করে। একজন রাজনীতিবিদের সত্য কথা বলার সাহস থাকতে হবে এবং সত্য কথা শোনার মানসিকতা ও ধৈর্য থাকতে হবে। রাজনীতিবিদের উচিত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করা। গণতন্ত্রে প্রকৃত কথা হলো, জনগণের স্বাধীন মত প্রকাশ। রাষ্ট্র এবং জনগণ একে অপরের পরিপূরক। আমরা স্বাধীনতার চার দশক পূর্ণ করেছি। একটা দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর বেশি হলে ১০ বছর কিছু বিশৃঙ্খলা থাকে, তারপর আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক অবস্থায় আসে। কিন্তু আমাদের দেশে দিন যত যাচ্ছে ততই যেন আমরা পেছনের দিকে চলছি।
এক দল ক্ষমতায় এলে আরেক দল ক্ষিপ্ত হয়। নির্বাচনের আগে জনগণকে অনেক কিছু দিয়ে থাকে, নির্বাচনের পরে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। মানুষ এ অবস্থার পরিবর্তন চায়। নেতানেত্রীরা যখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তখন তারা যা বলেন, এর প্রতিবাদ করার সুযোগ যদি সাধারণ মানুষের থাকত, তাহলে দেখা যেত ‘কত ধানে কত চাল’।
দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানুষ এই দুই জোটের পাশাপাশি তৃতীয় জোট চায় বলে অনেকের ধারণা; কিন্তু তা-ও সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণ আমার যেটা মনে হয়েছে, তা হলো দুই জোটের বাইরে যারা আছেন তাদের প্রত্যেকে নিজের মতের প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত। তারা নিজের ইচ্ছাকে জনগণের কাছে তুলে ধরে বিখ্যাত হতে চান। তারা জনগণের ভাষা বোঝেন না, আর বুঝলেও গুরুত্ব দেন না। কে নেতৃত্ব দেবেন তা নিয়েও রয়েছে মতপার্থক্য। কেউ কারো ওপর আস্থাশীল নন। জনগণের সুখ-দুঃখ মাথায় নিয়ে নিজেদের বিলিয়ে দিতে পারলে জনগণের নেতা হওয়া যায়; এ কথা কেউ বুঝতে চান না। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের অবস্থা অর্জনের মাধ্যমে সুশীলসমাজসহ বিবেকবানেরা একই মঞ্চে এসে শক্তিশালী একটি জোট প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে কায়েমি স্বার্থবাদী নেতানেত্রীরা আমাদের নদীর পাড়ে নিয়ে হাইকোর্ট দেখাতেই থাকবেন, আর আমরা দেখতেই থাকব।
দু’টি রাজনৈতিক জোট দেশের মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে, এক দল স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত। আরেক দল আছে, যারা স্বাধীনতার ঘোষক ইস্যু এবং নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার কাজে ব্যস্ত। দেশের কথা কেউ ভাবছেন বলে মনে হয় না। দুই দলই পারিবারিক প্রাধান্য এবং পরিবারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই করে যাচ্ছেন। এ দিকে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের, ওষ্ঠাগত হচ্ছে জনজীবন। দুই জোটে যারা আছেন তাদের অবস্থা, ধরি মাছ না ছুঁই পানি। স্বার্থে আঘাত লাগলেই জোটের বদনাম, কিছু পেলে জোটের সুনাম। একদল ক্ষমতায় এলে অন্য দল দেশ ছেড়ে পালায়। নিরীহ জনগণ যেহেতু পালাতে পারে না, তাই তাদের সরকারদলীয় ক্যাডারদের অত্যাচার নীরবে সহ্য করতে হয়। আদেশ-নির্দেশই হলো গণতন্ত্র। দেশের রাজনীতি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এ জন্য নির্বাচনের আগে খোঁজা হয়, কে কত টাকা দিয়ে দলীয় মনোনয়ন কিনতে পারবে। দর-দামে মিললে নেত্রীর সামনে বসে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মাজারে ফুল দিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় এলেই সব ঠিক। এরপর নির্বাচন এবং এমপি। তারপর শুরু হয় রাজনৈতিক বাণিজ্য। আর আমলারা ওইসব অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত, ক্যাডার ও কালো টাকার মালিকদের ধুয়ে-মুছে পূতপবিত্র করে সমাজের মধ্যমণি বানিয়ে দেন। এরপর এক দল সংসদে যায় আরেক দল রাজপথে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনজীবনকে অশান্ত করে তোলে। এর শিকার হয় সাধারণ জনগণ। ভারতে কিছু দিন আগে নির্বাচন হয়ে গেল, কংগ্রেসের মতো ঐতিহ্যবাহী দল হেরে গেল। তারা সাথে সাথে পরাজয় শিকার করে নিলো, এটাই গণতন্ত্র। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় রাহুলকে পুলিশ আটক করল এবং পরে ছেড়ে দিলো। আমাদের দেশের নামীদামি রাজনীতিবিদদের কাছে জানতে চাই, আমাদের দেশের কোনো ‘যুবরাজ’কে পুলিশে ধরলে আপনারা কী করতেন? কমপক্ষে ১০০ গাড়ি আগুনে পুড়ত, কমপক্ষে সাত দিন হরতাল হতো, শতাধিক টোকাইয়ের জীবনহানি হতো (যাদের বলা হতো শহীদ); সর্বোপরি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষতি হতো হাজার কোটি টাকা।
গণতন্ত্রে সমালোচনা থাকতে হবে। কোনো মানুষই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। কেউ সমালোচনা করলে স্বাগত জানাতে হবেÑ এটাই গণতন্ত্রের মূল কথা। যে নিজের সমালোচনা করতে পারে, সেই সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান। আত্মসমালোচনা করতে শিখুন, দেশ ও জাতিকে কিছু দিতে পারবেন। ভুল শিকার করলে কেউ ছোট হয় না বরং বড় হয়, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। মানুষ সত্যবাদীকে পছন্দ করে। একজন রাজনীতিবিদের সত্য কথা বলার সাহস থাকতে হবে এবং সত্য কথা শোনার মানসিকতা ও ধৈর্য থাকতে হবে। রাজনীতিবিদের উচিত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করা। গণতন্ত্রে প্রকৃত কথা হলো, জনগণের স্বাধীন মত প্রকাশ। রাষ্ট্র এবং জনগণ একে অপরের পরিপূরক। আমরা স্বাধীনতার চার দশক পূর্ণ করেছি। একটা দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর বেশি হলে ১০ বছর কিছু বিশৃঙ্খলা থাকে, তারপর আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক অবস্থায় আসে। কিন্তু আমাদের দেশে দিন যত যাচ্ছে ততই যেন আমরা পেছনের দিকে চলছি।
এক দল ক্ষমতায় এলে আরেক দল ক্ষিপ্ত হয়। নির্বাচনের আগে জনগণকে অনেক কিছু দিয়ে থাকে, নির্বাচনের পরে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। মানুষ এ অবস্থার পরিবর্তন চায়। নেতানেত্রীরা যখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তখন তারা যা বলেন, এর প্রতিবাদ করার সুযোগ যদি সাধারণ মানুষের থাকত, তাহলে দেখা যেত ‘কত ধানে কত চাল’।
দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানুষ এই দুই জোটের পাশাপাশি তৃতীয় জোট চায় বলে অনেকের ধারণা; কিন্তু তা-ও সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণ আমার যেটা মনে হয়েছে, তা হলো দুই জোটের বাইরে যারা আছেন তাদের প্রত্যেকে নিজের মতের প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত। তারা নিজের ইচ্ছাকে জনগণের কাছে তুলে ধরে বিখ্যাত হতে চান। তারা জনগণের ভাষা বোঝেন না, আর বুঝলেও গুরুত্ব দেন না। কে নেতৃত্ব দেবেন তা নিয়েও রয়েছে মতপার্থক্য। কেউ কারো ওপর আস্থাশীল নন। জনগণের সুখ-দুঃখ মাথায় নিয়ে নিজেদের বিলিয়ে দিতে পারলে জনগণের নেতা হওয়া যায়; এ কথা কেউ বুঝতে চান না। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের অবস্থা অর্জনের মাধ্যমে সুশীলসমাজসহ বিবেকবানেরা একই মঞ্চে এসে শক্তিশালী একটি জোট প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে কায়েমি স্বার্থবাদী নেতানেত্রীরা আমাদের নদীর পাড়ে নিয়ে হাইকোর্ট দেখাতেই থাকবেন, আর আমরা দেখতেই থাকব।
No comments