‘পরে দিবো’ by উত্তম কুমার মোহন্ত
বাইদো বালা আর খিরো বালা মা-মেয়ে। পৃথিবীতে আপন বলে তাদের কেউ নেই বলা চলে। ফুলবাড়ী জেলেপাড়ার নিরোত চন্দ্র বিশ্বাসের স্ত্রী বাইদো বালা (৬৫)। ২০ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। এরপর প্রতিবন্ধী কন্যা খিরো বালাকে (৪০) নিয়ে তার কষ্টের দিন শুরু হয়। সম্বল বলতে বাইদো বালার ছিল স্বামীর একটি কুঁড়েঘর সমান ভিটা। মেয়ে খিরো বালাকে বিয়ে দেয়ার সময় ওই ভিটি বিক্রি হয়ে যায়। দুই বছর যেতে না যেতে মারা যায় মেয়ে জামাই। শেষে খিরো বালা ফিরে আসে মায়ের ঘরে। বাইদো বালা তখন সম্পূর্ণরূপে ভিখারিণী। তিনি বলেন, ‘ভিক্ষা করিম এটা কি মোর কপালোত লেখা ছিল? দুনিয়াই কাহো থাকিবে না এটা কি মুই জানমু। সবায় লোক ভোটের সময় ভাল ভাল কথা কয়। বয়স্ক ভাতা দিবে। ইলিফ দিবে। বিধবা টাকা দিবে। কই কোন দাওয়ানীর বেটাতো কিছু দিলো না। সরকারও না। আর এই শরীর নিয়া যে কয়দিন বাচিম- ভিক্ষা করিম খাইম। খিরো মোর মাইয়া, অকতো ফেলের পারিম না। যা মাইনষে দেয় সেইটায় ভাগ করি খামো।’ বাইদো বালা যে একটি ছোট চালায় থাকেন সেটা পাশের বাড়ির ভানু চন্দ্র সরকারের। হতদরিদ্র পরিবার হওয়ায় ভানু ১ শতক জমি বাইদো বালা ও খিরো বালাকে থাকার জন্য দেন। বর্তমানে মা-মেয়ে দু’জনেই ভিক্ষা করে এখানেই জীবনযাপন করেন। এভাবে অভাব অনটনে চলে জীবন-জীবিকা। এ যেন দেখার কেউ নেই। খিরো বালা ও বাইদো বালার ভাগ্যে কোনদিনও মাছ, মাংস জোটেনি। তারা মনের দুঃখে নিরামিষ খেয়ে দিন পার করছেন। কি নির্মম ভাগ্য বাইদো বালা ও তার প্রতিবন্ধী মেয়ে খিরো বালার। ভিক্ষাবৃত্তি না করলে উপবাস থাকতে হয় তাদের। এদিকে বাইদো বালার বয়স বাড়ায় সে আর প্রতিদিন ঠিকমতো ভিক্ষা করতে পারে না। তিনি সমাজের কাছে প্রশ্ন করেন, ‘বাহে মোর অভাব কি চিরদিন থাকবে? বাহে মুই কি কোন দিন বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা পাবার নং?‘
এভাবে কাঁদেন আর বলেন, ‘তোমরাই কনতো বাহে, মোর কত বয়স হলে মুই বয়স্ক ভাতা পাইম? মোর মাইয়াটার স্বামী নাই তার জন্যে কি একটা বিধবা ভাতা পাইবে না?’ বাইদো বালা আরও জানান, ‘চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে গেইতে আসতে রাস্তার ঘাস মরিয়া যায়, তবু মোর বয়স্ক ভাতা হলো না? তাহলে কি মুই আর কোনদিন বয়স্ক ভাতা পাইম না?’ এদিকে বাইদো বালা ও খিরো বালার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ওই ওয়ার্ডের বকুল মেম্বার ও চেয়ারম্যান মইনুল হকের কাছে গেলে পরে দিবো পরে দিবো, এখন বাজেট নেই। এভাবে বছরের পর পর একই কথা বলে আসছে। এ ব্যাপারে কুটিচন্দ্রখানা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বকুল মিয়া জানান, ওরা তো এ বিষয়ে আমাকে জানাননি। তবে তারা ভাতা পাবার যোগ্য। সামনে বাজেট এলে দেয়ার চেষ্টা করবো। ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মইনুল হকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ ব্যাপারে বাইদো বালা ও খিরো বালা আমাকে বার বার জানিয়েছে। পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় দিতে পারিনি। তবে এবার বাজেট এলে তাদেরকে দেয়া হবে। চিন্তার কোন কারণ নেই সাংবাদিক ভাই।
এভাবে কাঁদেন আর বলেন, ‘তোমরাই কনতো বাহে, মোর কত বয়স হলে মুই বয়স্ক ভাতা পাইম? মোর মাইয়াটার স্বামী নাই তার জন্যে কি একটা বিধবা ভাতা পাইবে না?’ বাইদো বালা আরও জানান, ‘চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে গেইতে আসতে রাস্তার ঘাস মরিয়া যায়, তবু মোর বয়স্ক ভাতা হলো না? তাহলে কি মুই আর কোনদিন বয়স্ক ভাতা পাইম না?’ এদিকে বাইদো বালা ও খিরো বালার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ওই ওয়ার্ডের বকুল মেম্বার ও চেয়ারম্যান মইনুল হকের কাছে গেলে পরে দিবো পরে দিবো, এখন বাজেট নেই। এভাবে বছরের পর পর একই কথা বলে আসছে। এ ব্যাপারে কুটিচন্দ্রখানা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বকুল মিয়া জানান, ওরা তো এ বিষয়ে আমাকে জানাননি। তবে তারা ভাতা পাবার যোগ্য। সামনে বাজেট এলে দেয়ার চেষ্টা করবো। ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মইনুল হকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ ব্যাপারে বাইদো বালা ও খিরো বালা আমাকে বার বার জানিয়েছে। পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় দিতে পারিনি। তবে এবার বাজেট এলে তাদেরকে দেয়া হবে। চিন্তার কোন কারণ নেই সাংবাদিক ভাই।
No comments