তানভীর হত্যা মামলা: ওসমান পরিবারের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদই করা হয়নি তিন সন্দেহভাজনকে ধরেই পুলিশের দায়িত্ব শেষ! by গোলাম মর্তুজা ও আসিফ হোসেন
তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেই দায়িত্ব
শেষ করল পুলিশ। এ কারণে থমকে আছে নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত কিশোর তানভীর
মুহাম্মদ (ত্বকী) হত্যা মামলার তদন্ত। তবে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জোর গলায়
বলে চলেছেন, তদন্ত চলছে।
এই হত্যার জন্য তানভীরের পরিবার,
স্থানীয় মানুষ ও রাজনীতিকেরা বারবারই প্রভাবশালী শামীম ওসমান পরিবারকে
দায়ী করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত ওই পরিবারের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত
করেনি। পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও তাঁদের কেউই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার
দায় স্বীকার করেননি। হত্যার স্থান, কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেসব কিছুই
জানতে পারেনি পুলিশ।
সর্বশেষ তানভীরের বাবার রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্তভার কেন র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হবে না জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই রুলের শুনানি এখনো হয়নি।
গত ৬ মার্চ বিকেলে শহরের পুরাতন কোর্ট রোড সড়কের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় তানভীর। তাৎক্ষণিকভাবে ছেলে নিখোঁজের ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জ সদর থানার পুলিশ ও র্যাবকে জানান বাবা রফিউর রাব্বি। ৮ মার্চ সকালে শহরের চারারগোপ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর হারবার থেকে তানভীরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন, মাথায় আঘাতের জখম ও অণ্ডকোষ থেঁতলানো ছিল। রফিউর রাব্বির অভিযোগ, ছেলেটিকে জীবিত খুঁজে পেতে পুলিশ-র্যাব কোনো চেষ্টাই করেনি। লাশ উদ্ধারের পর খুনিদের ধরতেও কোনো চেষ্টা নেই পুলিশের।
রফিউর রাব্বি এলাকার অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা রয়েছে, নারায়ণগঞ্জের গণজাগরণ মঞ্চেরও অন্যতম উদ্যোক্তা তিনি। বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করে এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে কাজ করে তিনি ওসমান পরিবারের বিরাগভাজন হন।
তানভীরের সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত বিরোধ ছিল না। সে বাসা থেকে বের হতো খুবই কম। পড়াশোনা নিয়েই দিন কাটত তার।
লাশ উদ্ধারের দিনই তার বাবা রফিউর রাব্বি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। ১৮ মার্চ এই হত্যার জন্য সাতজনকে দায়ী করে পুলিশ সুপারকে (এসপি) চিঠি দেন রাব্বি। এই সাতজন হলেন সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান, অয়নের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রিফাত ওসমান, সালেহ রহমান ওরফে সীমান্ত, শামীম ওসমানের সহযোগী হিসেবে পরিচিত জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে ক্যাঙারু পারভেজ, মিজানুর রহমান সুজন ও রাজীব দাস।
এঁদের মধ্যে পুলিশ রিফাত ওসমান ও সালেহ রহমানকে গ্রেপ্তার করে। তালিকার বাইরে থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে ইউসুফ আলী ওরফে লিটন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের হেফাজতে (রিমান্ডে) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁরা কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলেও তাঁদের কাছ থেকে কিছু তথ্য মিলেছে। এঁরা জানিয়েছেন, ৬ মার্চ বিকেলে স্থানীয় সায়েম প্লাজার সামনে থেকে একটি টয়োটা সিডান গাড়িতে তানভীরকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, অনেক তথ্য জানলেও পুলিশের তদন্ত এর বেশি এগোচ্ছে না। প্রভাবশালী পরিবারটির পক্ষে আরও অনেক প্রভাবশালী প্রভাব খাটানোর কারণে পুলিশ কাজ করতে পারেনি। পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা, শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া এ মামলার তদন্ত এগোনো খুবই কঠিন। ফলে জেলা পুলিশের কর্তা ব্যক্তিরা মামলার তদন্তভার অন্য কোনো সংস্থায় দিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার চেষ্টায় রয়েছেন।
এ হত্যার ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করায় পুলিশের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সংস্থাও তদন্ত করেছে। সরকার ও পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে খোঁজখবর করা হয়েছে। এ রকম একটি সংস্থার দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শামীম ওসমান পরিবারকে সন্দেহ করার মতো যথেষ্ট প্রমাণাদি তাঁরা পেয়েছেন। এখন তারা আসলেই জড়িত কি না, তা তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।
এ ছাড়া ৯ মার্চ এক সমাবেশে শামীম ওসমানের ভাই সেলিম ওসমান দাবি করেন, তানভীরকে খুন করেছে জামায়াত-শিবির। সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ বণিক সমিতির সভাপতি এবং বিকেএমইএরও সভাপতি।
তবে পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম দাবি করেছেন, তদন্তে শামীম ওসমান পরিবারের সংশ্লিষ্টতা মেলেনি। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তদন্ত একটা চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে যে নাম আসবে না তা নয়। তিনি বলেন, তদন্তের বিষয়ে পুলিশের ওপর কোনো রাজনৈতিক চাপ নেই।
এলাকাবাসী বলছেন, সাধারণ মানুষেরও শামীম ওসমান পরিবারকেই সন্দেহ। স্থানীয় সাংসদ সারাহ বেগম কবরী ও মেয়র সেলিনা হায়াৎ বারবার এ অভিযোগ করেছেন।
রফিউর রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, তিন মাসেও তদন্তের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। নারায়ণগঞ্জের ৯০ শতাংশ মানুষ একটি গোষ্ঠীকে সন্দেহ করে। এরা প্রতিনিয়ত তাদের কর্মকাণ্ডে সেই সন্দেহকে পোক্ত করে তুলছে। অথচ পুলিশ একেবারেই নীরব। তিনি বলেন, সাতজনের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল, তা-ও নিচ থেকে দুজনকে ধরে তৎপরতা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। তোলপাড়ের কারণে প্রাথমিক পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লোক দেখানো কিছু তৎপরতা চালিয়েছিল। শোনা যায়, শামীম ওসমান তাঁর ছেলেকে ইতিমধ্যেই বিদেশে রেখে এসেছেন। ত্বকী মঞ্চকে থামাতে তাদের মামলা, হামলা, হুমকি চলছে সমানতালে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে শামীম ওসমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
সর্বশেষ তানভীরের বাবার রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্তভার কেন র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হবে না জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই রুলের শুনানি এখনো হয়নি।
গত ৬ মার্চ বিকেলে শহরের পুরাতন কোর্ট রোড সড়কের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় তানভীর। তাৎক্ষণিকভাবে ছেলে নিখোঁজের ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জ সদর থানার পুলিশ ও র্যাবকে জানান বাবা রফিউর রাব্বি। ৮ মার্চ সকালে শহরের চারারগোপ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর হারবার থেকে তানভীরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন, মাথায় আঘাতের জখম ও অণ্ডকোষ থেঁতলানো ছিল। রফিউর রাব্বির অভিযোগ, ছেলেটিকে জীবিত খুঁজে পেতে পুলিশ-র্যাব কোনো চেষ্টাই করেনি। লাশ উদ্ধারের পর খুনিদের ধরতেও কোনো চেষ্টা নেই পুলিশের।
রফিউর রাব্বি এলাকার অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা রয়েছে, নারায়ণগঞ্জের গণজাগরণ মঞ্চেরও অন্যতম উদ্যোক্তা তিনি। বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করে এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে কাজ করে তিনি ওসমান পরিবারের বিরাগভাজন হন।
তানভীরের সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত বিরোধ ছিল না। সে বাসা থেকে বের হতো খুবই কম। পড়াশোনা নিয়েই দিন কাটত তার।
লাশ উদ্ধারের দিনই তার বাবা রফিউর রাব্বি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। ১৮ মার্চ এই হত্যার জন্য সাতজনকে দায়ী করে পুলিশ সুপারকে (এসপি) চিঠি দেন রাব্বি। এই সাতজন হলেন সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান, অয়নের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রিফাত ওসমান, সালেহ রহমান ওরফে সীমান্ত, শামীম ওসমানের সহযোগী হিসেবে পরিচিত জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে ক্যাঙারু পারভেজ, মিজানুর রহমান সুজন ও রাজীব দাস।
এঁদের মধ্যে পুলিশ রিফাত ওসমান ও সালেহ রহমানকে গ্রেপ্তার করে। তালিকার বাইরে থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে ইউসুফ আলী ওরফে লিটন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের হেফাজতে (রিমান্ডে) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁরা কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলেও তাঁদের কাছ থেকে কিছু তথ্য মিলেছে। এঁরা জানিয়েছেন, ৬ মার্চ বিকেলে স্থানীয় সায়েম প্লাজার সামনে থেকে একটি টয়োটা সিডান গাড়িতে তানভীরকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, অনেক তথ্য জানলেও পুলিশের তদন্ত এর বেশি এগোচ্ছে না। প্রভাবশালী পরিবারটির পক্ষে আরও অনেক প্রভাবশালী প্রভাব খাটানোর কারণে পুলিশ কাজ করতে পারেনি। পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা, শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া এ মামলার তদন্ত এগোনো খুবই কঠিন। ফলে জেলা পুলিশের কর্তা ব্যক্তিরা মামলার তদন্তভার অন্য কোনো সংস্থায় দিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার চেষ্টায় রয়েছেন।
এ হত্যার ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করায় পুলিশের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সংস্থাও তদন্ত করেছে। সরকার ও পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে খোঁজখবর করা হয়েছে। এ রকম একটি সংস্থার দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শামীম ওসমান পরিবারকে সন্দেহ করার মতো যথেষ্ট প্রমাণাদি তাঁরা পেয়েছেন। এখন তারা আসলেই জড়িত কি না, তা তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।
এ ছাড়া ৯ মার্চ এক সমাবেশে শামীম ওসমানের ভাই সেলিম ওসমান দাবি করেন, তানভীরকে খুন করেছে জামায়াত-শিবির। সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ বণিক সমিতির সভাপতি এবং বিকেএমইএরও সভাপতি।
তবে পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম দাবি করেছেন, তদন্তে শামীম ওসমান পরিবারের সংশ্লিষ্টতা মেলেনি। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তদন্ত একটা চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে যে নাম আসবে না তা নয়। তিনি বলেন, তদন্তের বিষয়ে পুলিশের ওপর কোনো রাজনৈতিক চাপ নেই।
এলাকাবাসী বলছেন, সাধারণ মানুষেরও শামীম ওসমান পরিবারকেই সন্দেহ। স্থানীয় সাংসদ সারাহ বেগম কবরী ও মেয়র সেলিনা হায়াৎ বারবার এ অভিযোগ করেছেন।
রফিউর রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, তিন মাসেও তদন্তের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। নারায়ণগঞ্জের ৯০ শতাংশ মানুষ একটি গোষ্ঠীকে সন্দেহ করে। এরা প্রতিনিয়ত তাদের কর্মকাণ্ডে সেই সন্দেহকে পোক্ত করে তুলছে। অথচ পুলিশ একেবারেই নীরব। তিনি বলেন, সাতজনের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল, তা-ও নিচ থেকে দুজনকে ধরে তৎপরতা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। তোলপাড়ের কারণে প্রাথমিক পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লোক দেখানো কিছু তৎপরতা চালিয়েছিল। শোনা যায়, শামীম ওসমান তাঁর ছেলেকে ইতিমধ্যেই বিদেশে রেখে এসেছেন। ত্বকী মঞ্চকে থামাতে তাদের মামলা, হামলা, হুমকি চলছে সমানতালে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে শামীম ওসমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
No comments