বাজেটে নতুন স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টাঃ নির্বাচনের বছরে সরকারের চমক
নির্বাচনের বছর সব সরকারই নিজের সফলতা বেশি বেশি করে তুলে ধরতে চায়। তার
ধারাবাহিকতা রক্ষার কথা বলে পুনরায় ক্ষমতায় আসার জন্য ভোট প্রার্থনা করাই
আসল উদ্দেশ্য। সে লক্ষ্যেই এবারের বাজেটে স্বপ্নের ভবিষ্যত্ গড়ে তোলার কথা
প্রাধান্য পাবে, এটাই স্বাভাবিক।
এ বাজেটে রাজনীতিই
অর্থনীতির ওপরে স্থান করে নেবে বলে সবার ধারণা। সরকারের দেয়া ফানুসে ভরা
কাগুজে হিসাব নিয়ে এর মধ্যেই আলোচনার ঝড় উঠেছে। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা
কতটা বেহিসাবী সেটাও আর কারও অজানা নেই। বিনিয়োগ ছাড়াই প্রবৃদ্ধি অর্জনের
কৌশল আবিষ্কারে এমন সফলতা আর কোনো সরকারের আমলে কমই দেখা গেছে।
মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির যে হিসাব দেয়া হয়েছে সে অনুযায়ী দেশে বিনিয়োগের হার হওয়া উচিত মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ। অথচ দেশে বিনিয়োগের হার ২৪ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি নয়। এখান থেকে উঠতে না পেরে বিনিয়োগ ঘাটতির দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা কম বিনিয়োগ হওয়া থেকেই পরিস্থিতি বোঝা যায়। অথচ এখানে জাতীয় সঞ্চয়ের হার ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে শ্রীলংকায় বিনিয়োগ হার ৩০ দশমিক ৬ শতাংশ আর জাতীয় সঞ্চয় ২৪ শতাংশ। ভারতের এই হার ৩৫ দশমিক ১ শতাংশ এবং সঞ্চয়ের হার ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাত্ সঞ্চয়ের চেয়ে বিনিয়োগের হার বেশি থাকাই স্বাভাবিক। অর্থনীতির তত্ত্বও তাই বলে। কিন্তু বাংলাদেশ উল্টো অবস্থায়!
এখানে বিনিয়োগ, বিশেষ করে বেসরকারি বিনিয়োগের হার নিম্নমুখী। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সময় বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সরকারের সাফল্যের দাবি অনুযায়ী এর উন্নতি হওয়ার কথা। কিন্তু শেষ বছরে এসে বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। এভাবেই পেছন দিকে হাঁটছে দেশের অর্থনীতি। ব্যাংক ঋণের তথ্য থেকেও এর সমর্থন মেলে। এক বছরেই বেসরকারি খাতে ঋণ সরবরাহে প্রবৃদ্ধি অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত অর্থবছরে যেখানে এর হার ছিল প্রায় ১৪ শতাংশ, এ বছর মার্চ পর্যন্ত অর্থাত্ ৯ মাসে তা মাত্র ৭ শতাংশ। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বছর বেসরকারি খাতে আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল। বাস্তবে ঋণ দেয়ার লোক পাওয়াই কঠিন হয়ে উঠেছে।
ব্যাংক ঋণের উচ্চহার ছাড়াও অব্যাহত জ্বালানি সঙ্কট, পরিবহনে বিশৃঙ্খলা, লাগাম ছাড়া দুর্নীতি, সর্বোপরি রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা অর্থনীতির চাকা এভাবেই অচল করে দিয়েছে। ফলে মেয়াদের শেষ বছরে এসে পরিস্থিতি সামাল দিতে অর্থনৈতিক সাফল্য তুলে ধরার প্রয়োজনে সরকার কূটকৌশলের আশ্রয় না নিয়ে পারেনি। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রাক্কলিত হিসাবে চলতি অর্থ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ পাওয়া গেলেও দেখানো হয়েছে ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ। এতেও সন্তুষ্ট হননি অর্থমন্ত্রী। তিনি হাত মুখ নেড়ে জোরের সঙ্গে বলেছেন, প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশের কম হবে না। এই হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও আন্তর্জাতিক ঋণ দাতা সংস্থা বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিবিদদের মতে এবার জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭০ থেকে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। কোনো মতেই সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ২ শতাংশের ধারেকাছে যাবে না।
এ অবস্থায় নির্বাচনী বছরের কৌশল নিয়েই সরকার এ যাবতকালের সর্ববৃহত্ বাজেট হাজির করতে যাচ্ছে। বাস্তবায়নের চেয়ে সেখানে রাজনৈতিক চমকই প্রাধান্য পাবে—সেটা এর মধ্যেই সবার জানা হয়ে গেছে। অর্থমন্ত্রীর কথাবার্তা থেকেও সেটা পরিষ্কার। তবে কথার চমক দিয়ে বাজিমাত করা গেলেও তা যে সাময়িক, সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির যে হিসাব দেয়া হয়েছে সে অনুযায়ী দেশে বিনিয়োগের হার হওয়া উচিত মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ। অথচ দেশে বিনিয়োগের হার ২৪ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি নয়। এখান থেকে উঠতে না পেরে বিনিয়োগ ঘাটতির দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা কম বিনিয়োগ হওয়া থেকেই পরিস্থিতি বোঝা যায়। অথচ এখানে জাতীয় সঞ্চয়ের হার ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে শ্রীলংকায় বিনিয়োগ হার ৩০ দশমিক ৬ শতাংশ আর জাতীয় সঞ্চয় ২৪ শতাংশ। ভারতের এই হার ৩৫ দশমিক ১ শতাংশ এবং সঞ্চয়ের হার ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাত্ সঞ্চয়ের চেয়ে বিনিয়োগের হার বেশি থাকাই স্বাভাবিক। অর্থনীতির তত্ত্বও তাই বলে। কিন্তু বাংলাদেশ উল্টো অবস্থায়!
এখানে বিনিয়োগ, বিশেষ করে বেসরকারি বিনিয়োগের হার নিম্নমুখী। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সময় বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সরকারের সাফল্যের দাবি অনুযায়ী এর উন্নতি হওয়ার কথা। কিন্তু শেষ বছরে এসে বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। এভাবেই পেছন দিকে হাঁটছে দেশের অর্থনীতি। ব্যাংক ঋণের তথ্য থেকেও এর সমর্থন মেলে। এক বছরেই বেসরকারি খাতে ঋণ সরবরাহে প্রবৃদ্ধি অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত অর্থবছরে যেখানে এর হার ছিল প্রায় ১৪ শতাংশ, এ বছর মার্চ পর্যন্ত অর্থাত্ ৯ মাসে তা মাত্র ৭ শতাংশ। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বছর বেসরকারি খাতে আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল। বাস্তবে ঋণ দেয়ার লোক পাওয়াই কঠিন হয়ে উঠেছে।
ব্যাংক ঋণের উচ্চহার ছাড়াও অব্যাহত জ্বালানি সঙ্কট, পরিবহনে বিশৃঙ্খলা, লাগাম ছাড়া দুর্নীতি, সর্বোপরি রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা অর্থনীতির চাকা এভাবেই অচল করে দিয়েছে। ফলে মেয়াদের শেষ বছরে এসে পরিস্থিতি সামাল দিতে অর্থনৈতিক সাফল্য তুলে ধরার প্রয়োজনে সরকার কূটকৌশলের আশ্রয় না নিয়ে পারেনি। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রাক্কলিত হিসাবে চলতি অর্থ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ পাওয়া গেলেও দেখানো হয়েছে ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ। এতেও সন্তুষ্ট হননি অর্থমন্ত্রী। তিনি হাত মুখ নেড়ে জোরের সঙ্গে বলেছেন, প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশের কম হবে না। এই হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও আন্তর্জাতিক ঋণ দাতা সংস্থা বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিবিদদের মতে এবার জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭০ থেকে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। কোনো মতেই সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ২ শতাংশের ধারেকাছে যাবে না।
এ অবস্থায় নির্বাচনী বছরের কৌশল নিয়েই সরকার এ যাবতকালের সর্ববৃহত্ বাজেট হাজির করতে যাচ্ছে। বাস্তবায়নের চেয়ে সেখানে রাজনৈতিক চমকই প্রাধান্য পাবে—সেটা এর মধ্যেই সবার জানা হয়ে গেছে। অর্থমন্ত্রীর কথাবার্তা থেকেও সেটা পরিষ্কার। তবে কথার চমক দিয়ে বাজিমাত করা গেলেও তা যে সাময়িক, সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
No comments