শত বাধা পেরিয়ে-দুবেলা ঠিকমতো ভাতও জোটে না মোশারফের by আব্দুল খালেক ফারুক
ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন নৈশ প্রহরী বাবা। তাঁর সামান্য আয়ে কোনো রকমে ঠেলেঠুলে চলছে মোশারফদের সংসারের চাকা। মাঝেমধ্যে এ চাকা চলতেও চায় না।
ফলে পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দুবেলা ঠিকমতো ভাতও জোটে না তাদের পাতে। মাঝেমধ্যে ঘরের বাতিও জ্বলে না কেরোসিনের অভাবে। তবু স্কুলের প্রতি, পড়ালেখার প্রতি প্রবল নেশা মোশারফের। খেয়ে-না খেয়ে শুধু একটি শার্ট আর একটি প্যান্ট পরেই দিনের পর দিন স্কুলে যায় সে। নেই কোনো প্রাইভেট পড়ার সুযোগ। ধারকর্জ করে বাবার কিনে দেওয়া বইখাতায়, কেরোসিনের নিভু নিভু আলোয় দৃঢ় মনোবলে সে করে যাচ্ছে নিজের স্বপ্ন লালন। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও এবারের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে মোশারফ।
কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার হলোখানা খয়ের উল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মোশাররফ হোসেন। তার বাবা হারুন অর রশিদ সলিডারিটি নামে একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) নৈশ প্রহরী হিসেবে চাকরি করেন। মাসিক বেতন মাত্র তিন হাজার টাকা। এই টাকা দিয়েই স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে হয় তাঁর। বাড়িভিটেসহ ১৫ শতক জমি ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই ধরলা নদীর তীরে ভেরভেরি গ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র হারুনের। বছরখানেক আগে ক্যান্সার ধরা পড়ে তাঁর দেহে। থ্রট বা কণ্ঠনালির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। টাকার অভাবে তাঁর চিকিৎসাও চলছে না ঠিকমতো।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১০ ফুট বাই ৮ ফুটের দুটো ঘর নিয়ে মোশারফদের বাড়ি। একটি টিনের দোচালা, অন্যটি খড়ের ঘর। প্রতি ঘরে জায়গা আছে মাত্র একটি কক্ষের। বেড়ার অবস্থাও নাজুক। রান্নাঘর নেই। ঘরের বাইরে মাটির চুলায় কোনো রকমে রান্নাবান্নার কাজ সারেন মোশারফের গৃহিণী মা। এই হাড়-কাঁপুনে শীতেও ভালো কোনো শীতবস্ত্র জোটে না এই পরিবারের ভাগ্যে। এরই মধ্যে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে মোশারফ ও দশম শ্রেণী পড়ুয়া তার বড় ভাই।
গতকাল ছেলের জিপিএ ৫ পাওয়ার খবর পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন হারুন অর রশিদ। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ছাওয়াটাক (ছেলেটাকে) ঠিকমতন খাবার দিবার পাং (পারি) নাই। মাছ-গোশত ত মুখত (মুখে) চড়ে নাই। টাকার জন্য কেরাসিন কিনবার পাং নাই। এমন নানান কষ্টে ছাওয়াটা খুব কষ্ট করি মানুষ হবার নাগছে (লাগছে)।'
তিনি জানান, নৈশ প্রহরী হিসেবে তিনি যে অফিসে কাজ করেন, সেটি বাড়ি থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে। টাকার অভাবে ছেলেদের কোনো শখ-আহ্লাদ পূরণ করতে পারেননি। কেরোসিনের অভাবে যেদিন বাড়িতে বাতি জ্বলে না, সেদিন মোশারফ তাঁর সঙ্গে গিয়ে ওই অফিসের বাইরে জ্বলা বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় পড়ালেখা চালিয়েছে। তাঁর সহকর্মী ও এলাকার মানুষও মাঝেমধ্যে তাকে কিছুটা সহায়তা করেছে। তবে মোশারফের ভালো ফলের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের প্রতি বেশি কৃতজ্ঞ তিনি।
জিপিএ ৫ পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে মোশারফ বলে, 'কষ্ট করেছি বলেই ভালো ফল করতে পেরেছি। আমি চিকিৎসক হতে চাই। জানি, এ জন্য আমাকে জীবনে অনেক কষ্ট করতে হবে। যত বাধাই আসুক, আমি সফল হব।'
মোশারফের প্রতিবেশী কলেজছাত্র ফারুক রানা বলেন, 'ছোটবেলা থেকে মোশারফের মধ্য প্রতিভা লক্ষ্য করছি। বিশেষ করে ওর হাতের লেখা খুবই সুন্দর। ওর বাবার অভাব-অনটন দেখে বিনা পয়সায় ওকে কিছুদিন পড়িয়েছি।'
হলোখানা খয়ের উল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, 'এ বছর এই স্কুল থেকে শতভাগ পাস করার পাশাপাশি জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯ জন। এর মধ্যে মোশারফ অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও ভালো ফল করে আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। ওর সাফল্যে খুবই ভালো লাগছে।'
কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার হলোখানা খয়ের উল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মোশাররফ হোসেন। তার বাবা হারুন অর রশিদ সলিডারিটি নামে একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) নৈশ প্রহরী হিসেবে চাকরি করেন। মাসিক বেতন মাত্র তিন হাজার টাকা। এই টাকা দিয়েই স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে হয় তাঁর। বাড়িভিটেসহ ১৫ শতক জমি ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই ধরলা নদীর তীরে ভেরভেরি গ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র হারুনের। বছরখানেক আগে ক্যান্সার ধরা পড়ে তাঁর দেহে। থ্রট বা কণ্ঠনালির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। টাকার অভাবে তাঁর চিকিৎসাও চলছে না ঠিকমতো।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১০ ফুট বাই ৮ ফুটের দুটো ঘর নিয়ে মোশারফদের বাড়ি। একটি টিনের দোচালা, অন্যটি খড়ের ঘর। প্রতি ঘরে জায়গা আছে মাত্র একটি কক্ষের। বেড়ার অবস্থাও নাজুক। রান্নাঘর নেই। ঘরের বাইরে মাটির চুলায় কোনো রকমে রান্নাবান্নার কাজ সারেন মোশারফের গৃহিণী মা। এই হাড়-কাঁপুনে শীতেও ভালো কোনো শীতবস্ত্র জোটে না এই পরিবারের ভাগ্যে। এরই মধ্যে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে মোশারফ ও দশম শ্রেণী পড়ুয়া তার বড় ভাই।
গতকাল ছেলের জিপিএ ৫ পাওয়ার খবর পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন হারুন অর রশিদ। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ছাওয়াটাক (ছেলেটাকে) ঠিকমতন খাবার দিবার পাং (পারি) নাই। মাছ-গোশত ত মুখত (মুখে) চড়ে নাই। টাকার জন্য কেরাসিন কিনবার পাং নাই। এমন নানান কষ্টে ছাওয়াটা খুব কষ্ট করি মানুষ হবার নাগছে (লাগছে)।'
তিনি জানান, নৈশ প্রহরী হিসেবে তিনি যে অফিসে কাজ করেন, সেটি বাড়ি থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরে। টাকার অভাবে ছেলেদের কোনো শখ-আহ্লাদ পূরণ করতে পারেননি। কেরোসিনের অভাবে যেদিন বাড়িতে বাতি জ্বলে না, সেদিন মোশারফ তাঁর সঙ্গে গিয়ে ওই অফিসের বাইরে জ্বলা বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় পড়ালেখা চালিয়েছে। তাঁর সহকর্মী ও এলাকার মানুষও মাঝেমধ্যে তাকে কিছুটা সহায়তা করেছে। তবে মোশারফের ভালো ফলের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের প্রতি বেশি কৃতজ্ঞ তিনি।
জিপিএ ৫ পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে মোশারফ বলে, 'কষ্ট করেছি বলেই ভালো ফল করতে পেরেছি। আমি চিকিৎসক হতে চাই। জানি, এ জন্য আমাকে জীবনে অনেক কষ্ট করতে হবে। যত বাধাই আসুক, আমি সফল হব।'
মোশারফের প্রতিবেশী কলেজছাত্র ফারুক রানা বলেন, 'ছোটবেলা থেকে মোশারফের মধ্য প্রতিভা লক্ষ্য করছি। বিশেষ করে ওর হাতের লেখা খুবই সুন্দর। ওর বাবার অভাব-অনটন দেখে বিনা পয়সায় ওকে কিছুদিন পড়িয়েছি।'
হলোখানা খয়ের উল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, 'এ বছর এই স্কুল থেকে শতভাগ পাস করার পাশাপাশি জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯ জন। এর মধ্যে মোশারফ অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও ভালো ফল করে আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। ওর সাফল্যে খুবই ভালো লাগছে।'
No comments