আরাফাতের দেহাবশেষ উত্তোলন শুরু-দেহাবশেষের নমুনা সংগ্রহ করে তাতে বিষের অস্তিত্ব আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হবে
ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের নেতা ইয়াসির আরাফাতের (৭৫) দেহাবশেষের নমুনা সংগ্রহ করতে তাঁর কবর খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছে। ফিলিস্তিনি দুই কর্মকর্তা গতকাল রবিবার জানান, পশ্চিম তীরের রামাল্লায় প্রেসিডেন্ট ভবন চত্বরে আরাফাতের কবর খোঁড়ার কাজে হাত দিয়েছেন ফরাসি, সুইস ও রুশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত তদন্তদল।
'পলোনিয়াম' নামের তেজস্ক্রিয় উপাদানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে কি না- তা নিশ্চিত হতে দেহাবশেষের নমুনা পরীক্ষা করে দেখবেন তদন্তকারীরা।আরাফাতকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে- তাঁর স্ত্রী সুহা এবং কন্যা জাওরা আরাফাতের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্যারিসের একটি আদালত আগস্টের শেষদিকে এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ফ্রান্সের একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর মারা যান আরাফাত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফিলিস্তিনি ওই দুই কর্মকর্তা জানান, পাথরে বাঁধাই করা আরাফাতের কবরটিকে একটি সুদৃশ্য সমাধিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ফলে সেটি খুঁড়ে দেহাবশেষ তুলতে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এ কাজে গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে বলেও কর্মকর্তারা জানান।
আরাফাতের মৃত্যুর কারণ নিয়ে নানা জল্পনা রয়েছে। সম্ভাব্য যে কয়টি কারণের কথা আলোচনায় আছে এর অন্যতম বিষপ্রয়োগ। ফিলিস্তিনিদের অনেকেরই বিশ্বাস, আরাফাতকে বিষ দিয়ে হত্যা করেছে ইসরায়েল। গত ৩ জুলাই কাতারভিত্তিক টেলিশন চ্যানেল আল-জাজিরায় প্রচারিত এক তথ্যচিত্রে তাঁর মৃত্যু পলোনিয়ামে হতে পারে অনুমান করা হয়। আরাফাতের ব্যবহার্য জিনিসপত্রে ওই তেজস্ক্রিয় উপাদানটির অস্তিত্ব পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এমন অনুমান করে সুইজারল্যান্ডের লসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রেডিয়েশন ফিজিকসের গবেষকদল। আল-জাজিরার সঙ্গে তারা যৌথভাবে অনুসন্ধানটি চালায়। এ পটভূমিতে সুহা-জাওরা ৩১ জুলাই আদালতের দারস্থ হন।
তদন্তের অংশ হিসেবে আরাফাতের দেহাবশেষের নমুনা পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত হয়। তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত ফরাসি তদন্তদলের সঙ্গে ইনস্টিটিউট অব রেডিয়েশন ফিজিকসের গবেষকদলকেও রামাল্লায় যাওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। রাশিয়াও তদন্তকাজে সাহায্যের আগ্রহ দেখায়। সে অনুযায়ী, এ তিন দেশের প্রতিনিধিরা এখন রামাল্লায় অবস্থান করছেন।
সূত্র : এপি, এএফপি।
No comments