৩২ গণমাধ্যম ব্যক্তির মীনা অ্যাওয়ার্ড লাভ
শিশুদের অধিকার তুলে ধরার বিষয়ে গত এক বছরে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য
৩২ জন সাংবাদিক, প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ও লেখককে সম্মানিত করেছে ইউনিসেফ।
রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।প্রায় ৫০০ জন প্রতিযোগীর মধ্য থেকে ইউনিসেফের ২০১২ সালের ৮ম মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের জন্য ৩২ জনের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
১৮ বছরের নিচে ও ১৮ বছরের উপরে সৃজনশীল ও রিপোর্টিং এই দুই বিভাগে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণীতে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফ প্রতিনিধি প্যাসকেল ভিলনোভ। অন্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জাদুকর ও ইউনিসেফের শিশু অধিকার বিষয়ক অ্যাডভোকেট জুয়েল আইচ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
প্রতিযোগিতার বিচারকমণ্ডলীর মধ্যে ছিলেন কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, সাংবাদিক ও সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের ব্যুরো চিফ ফরিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবায়েত ফেরদৌস, বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান প্রধান শামীম শাহেদ, রতন পাল, শাহনুর ওয়াহিদ, কাদির কল্লোল প্রমুখ।
তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তাঁর বক্তব্যে বলেন, “এই পুরস্কার প্রমাণ করে যে দেশের তরুণ প্রজন্ম অনেক সম্ভবনাময়। তবে এই প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগাতে করতে হবে। এখন যারা তরুণ, তারাই সামনের দিনগুলোতে এ দেশের প্রতিনিধত্ব যারা করবেন। আর তরুণদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই দেশ এগিয়ে যাবে নতুন সম্ভাবনার দিকে।”
ইউনিসেফ প্রতিনিধি প্যাসকেল ভিলনোভ বলেন, “একটি দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো শিশু। শিশুদের প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ শিশু। শিশুদের নিয়ে এই সমস্ত রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে অনেক বেশি সচেতনতামূলক কাজ করা সম্ভব। গণমাধ্যমে শিশুদের অধিকারের বিষয়গুলো বেশি করে তুলে ধরাই এই অ্যাওয়ার্ডের মূল উদ্দেশ্য।”
প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সৃজনশীলতা ও সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান স্মরণীয় করে রাখার জন্য ২০০৫ সালে ইউনিসেফ মীনা অ্যাওয়ার্ড চালু করে। বাংলাদেশের শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক সবার কাছে জনপ্রিয় কার্টুন মীনার নামানুসারে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়েছে। কার্টুনে মীনা একজন কন্যা শিশুর প্রতিনিধিত্ব করে, যে সমাজের পরিবর্তনের আশা দেখায়, শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলে।
চলতি বছর সৃজনশীলতায় ১৮ বছরের নিচে ১ম পুরস্কার পেয়েছেন যুবায়ের বিন শাফি, ২য় পুরস্কার পেয়েছেন প্রথম আলোর ফইয়াজ রহমান টিউলিপ, ৩য় পুরস্কার পেয়েছেন মাসিক টইটুম্বরের মোঃ আকিব হায়দার। ১৮ বছরের উপরে ১ম পুরস্কার পেয়েছেন মাসিক টইটুম্বরের আবুল কালাম আজাদ, ২য় পুরস্কার পেয়েছেন মাসিক শিশুর পপি চৌধুরী, ৩য় পুরস্কার পেয়েছেন মাসিক শিশুর কাজি কেয়া ও আনন্দ আলোর হুমায়ুন কবির ঢালি।
রিপোর্টিংয়ে ১৮ বছরের নিচে প্রিন্ট মিডিয়ায় ১ম পুরস্কার পেয়েছেন কুমিল্লা ডাকের মোঃ ওমর ফারুক, ২য় পুরস্কার পেয়েছেন সকালের খবরের হোসেন মোঃ সাগর, ৩য় পুরস্কার পেয়েছেন ত্রৈমাসিক শিশু বলির রাবেয়া বর্ষা ওনিতা। ১৮ বছরের উপরে ১ম পুরস্কার পেয়েছেন ডেইলি স্টারের মির্জা শাকিল, ২য় পুরস্কার পেয়েছেন যুগান্তরের মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল, ৩য় পুরস্কার পেয়েছেন নিউ এজের মুক্তশ্রি চাকমা সাথি।
টেলিভিশনের সৃজনশীলতায় ১৮ বছরের নিচে ১ম হয়েছেন চ্যানেল আইয়ের ফইয়াজ উদ্দিন বেলাল, ২য় হয়েছেন এটিএন বাংলার নাজিবুর রহমান ছোটন, ৩য় হয়েছেন সোহেল রানা সবুজ। এতে ১৮ বছরের উপরে সৃজনশীলতায় ১ম হয়েছেন এটিএন নিউজের মুন্নি সাহা, ২য় হয়েছেন একুশে টিভির মোঃ শওকত হোসেন, ৩য় হয়েছেন বৈশাখি টিভির ফাতেমা আকতার ঝুমকি।
টেলিভিশন রিপোর্টিংয়ে ১৮ বছরের নিচে ১ম হয়েছেন একুশে টিভির সোহেল রানা সবুজ, ২য় হয়েছেন একুশে টিভির তৌহিদুল আলম, ৩য় হয়েছেন দিগন্ত টিভির মাহমুদুর রহমান ফাইয়াদ। ১৮ বছরের উপরে ১ম হয়েছেন বাংলাভিশনের সানজিদ আহমেদ, ২য় হয়েছেন সময় টিভির হাফিজুর রহমান, ৩য় হয়েছেন বৈশাখি টিভির মাকসুদ উদ নবী।
রেডিওতে সৃজনশীলতায় ১ম হয়েছেন এবিসি রেডিওর মোরশেদ নোমান, ২য় হয়েছেন বাংলাদেশ বেতারের ঢাকা রোকনুজ্জামান, ৩য় হয়েছেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর শাহিন আখতার। রিপোর্টিংয়ে ১৮ বছরের উপরে ১ম হয়েছেন এবিসি রেডিওর শাহনাজ শারমিন, ২য় হয়েছেন রেডিও টুডের শাকিল মাহমুদ, ৩য় হয়েছেন রেডিও টুডের মাহবুবুর রহমান।
No comments