হরতাল ডেকে ঘরে বসে পালন-আটক অর্ধশত
কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর এবং বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি মিছিল ছাড়া গতকাল রবিবার রাজধানী ঢাকায় ঢিলেঢালাভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। রাজপথে দেখা যায়নি হরতালের ডাক দেওয়া ইসলামী ও সমমনা ১২ দলের নেতা-কর্মীদের। কেউ পিকেটিং করেনি।
অফিস-আদালত খোলা ছিল। তবে বড় বড় বিপণিবিতানের দোকানপাট বন্ধ ছিল। যানবাহন চলাচল সকালে কিছুটা কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে তা বেড়ে যায়। তবে যাত্রী ছিল কম।
মহানবী (সা.)কে অবমাননা করে যুক্তরাষ্ট্রে বানানো একটি চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে ডাকা এই হরতালে পূর্ণ সতর্কতায় ছিল পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসার হোস্টেল থেকে ৩৮ জনসহ বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ধশত লোককে আটক করে পুলিশ। মিরপুরসহ কয়েকটি স্থানে মিছিল করার সময় পুলিশ ১৪ জনকে আটক করে। সকালে পুরানা পল্টনে দলগুলোর কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল তালাবদ্ধ। তবে ১২ দলের কেন্দ্রীয় এক নেতা জানিয়েছেন, পুলিশি হয়রানির ভয়ে তাঁদের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয় এড়িয়ে চলেন।
যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কমলাপুর, মগবাজার, মহাখালী, ফার্মগেট ও মিরপুর রোডের মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান ছিল ভোর থেকেই। আগের দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলগুলোর কর্মীদের সংঘর্ষ ঘটলেও গতকাল এখানেসহ পল্টন, বায়তুল মোকাররম, হাইকোর্ট মোড় এলাকায় একজন পিকেটারকেও দেখা যায়নি, হয়নি কোনো মিছিল। পুলিশ ছাড়াও বিপুলসংখ্যক র্যাব সদস্য এসব এলাকায় টহল দিয়েছেন।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। সকালে দূরপাল্লার যান চলাচল সীমিত থাকলেও অধিকাংশ ট্রেন নির্ধারিত সময়েই গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বলে কমলাপুর রেলস্টেশনের মাস্টার মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান। প্রশাসনের কেন্দ্র সচিবালয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম চলেছে। মতিঝিল ব্যাংকপাড়ায় স্বাভাবিক লেনদেন হলেও গ্রাহক ছিল অন্য দিনের তুলনায় অনেক কম।
সকাল ৭টার দিকে যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসার হোস্টেলে অভিযান চালিয়ে ৪০ জন ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। সাড়ে ১০টার দিকে কাজীপাড়া এলাকায় হরতালের সমর্থনে একটি ঝটিকা মিছিল বের করে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে হরতালকারীরা। পুলিশ এ সময় পাঁচজনকে আটক করে। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার মোড়ের কাছে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি মিছিল থেকে পুলিশ ছয়জনকে আটক করে। খিলগাঁও, রামপুরা, উত্তরা, মহাখালী, বাবুবাজার ব্রিজসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি মিছিল বের হয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়।
কর্মীশূন্য ইসলামী দলগুলোর কার্যালয়ে লক্ষ করা গেছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কড়া নজরদারি। পুরানা পল্টন আজাদ প্রডাক্টসের গলি ও নোয়াখালী টাওয়ারের আশপাশের গলিতে ছিল পুলিশের তীক্ষ্ন নজর। ইসলামী আন্দোলনের প্রধান কার্যালয় নোয়াখালী টাওয়ারের সামনে দায়িত্বরত মতিঝিল থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. জাকির হোসেন সকাল ৯টায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা ভোর ৫টা থেকে এখানে দায়িত্ব পালন করছি। তবে এখন পর্যন্ত হরতাল সমর্থনকারীদের দেখা যায়নি। সব কিছুই শান্তিপূর্ণভাবে চলছে।'
মাদ্রাসার ৩৮ ছাত্র আটক : রাজধানীর মীরহাজিরবাগ এলাকার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার হোস্টেলে অভিযান চালিয়ে ৩৮ ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল কাশেম কালের কণ্ঠকে বলেন, সকাল ৭টার দিকে ওই এলাকার একটি মেস থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালায় পিকেটাররা। পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা মেসে আশ্রয় নেয়। মেসের বাইরে থেকে ও ভেতরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় পিকেটারদের হাতে এএসআই রুহুল আমিন আহত হন।
সচিবালয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম : প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কার্যক্রম ছিল স্বাভাবিক। এখানকার কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া দর্শনার্থীদের তেমন একটা দেখা যায়নি। সচিবালয় ও এর আশপাশের এলাকা ও সড়কগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সচিবালয়সংলগ্ন সড়কগুলোর একাংশে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
হরতাল শুরুর আগে থেকেই তৎপরতা শুরু করেন সচিবালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। পুলিশ কর্মকর্তারাও ভোর থেকেই পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাভাবিক উপস্থিতি দেখা গেছে।
বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ : ইসলামী সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতালে গতকাল সকাল থেকেই জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় অর্ধশতাধিক পুলিশ। বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীকে কার্যালয়ে দেখা যায়নি। সামনের রাস্তায় যান চলাচল অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছিল। পল্টন থানার এসআই আলী হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সব ধরনের নাশকতা ও অরাজকতা এড়ানোর জন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি। বিএনপি হরতালের ডাক না দিলেও ওপরের নির্দেশে আমরা এখানে অবস্থান করছি।'
সদরঘাট, সায়েদাবাদ, কমলাপুর : হরতালের কোনো প্রভাব পড়েনি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনাল ও কমলাপুর রেলস্টেশনে। সকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা এবং চাঁদপুরের উদ্দেশে নিয়মিত লঞ্চগুলো ছেড়ে যায়। এসব লঞ্চে যাত্রীসংখ্যা ছিল অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক কম। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম-কুমিল্লা রুটের কিছু বাস ছেড়ে গেলেও যাত্রীসংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। এর বিপরীত চিত্র দেখা যায় কমালাপুর রেলস্টেশনে। টিকিট কাউন্টারে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘসারি। তবে যাত্রীরা টিকিট পাচ্ছিলেন সহজেই। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল থেকেই নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন ছেড়ে যায়।
লাগাতার কর্মসূচির হুমকি : গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ আলেমদের মুক্তি না দিলে লাগাতার হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দিয়ে তাঁদের মুক্ত করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন ইসলামী ও সমমনা ১২ দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী। গতকাল মিরপুরে হরতালের পক্ষে মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। ওই মিছিল থেকে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
খলিলুর রহমান বলেন, 'সারা দেশে আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে সরকার পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হামলা চালাচ্ছে। অন্যায়ভাবে বাসাবাড়ি ও মেস থেকে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।' তিনি দাবি করেন, সারা দেশে সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করছে। এতে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে মহানবী (স.)-এর সম্মান হেফাজত ও ইসলাম রক্ষায় সব মুসলমান ঐক্যবদ্ধভাবে যেকোনো কোরবানি করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে আল্লাহর প্রতি আস্থা-বিশ্বাস ফিরিয়ে দেওয়া, মহানবী (স.)-এর অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, কোরআন বিকৃত করার অপচেষ্টা বন্ধ ও ইসলাম নির্মূলের অপতৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
মহানবী (সা.)কে অবমাননা করে যুক্তরাষ্ট্রে বানানো একটি চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে ডাকা এই হরতালে পূর্ণ সতর্কতায় ছিল পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসার হোস্টেল থেকে ৩৮ জনসহ বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ধশত লোককে আটক করে পুলিশ। মিরপুরসহ কয়েকটি স্থানে মিছিল করার সময় পুলিশ ১৪ জনকে আটক করে। সকালে পুরানা পল্টনে দলগুলোর কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল তালাবদ্ধ। তবে ১২ দলের কেন্দ্রীয় এক নেতা জানিয়েছেন, পুলিশি হয়রানির ভয়ে তাঁদের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয় এড়িয়ে চলেন।
যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কমলাপুর, মগবাজার, মহাখালী, ফার্মগেট ও মিরপুর রোডের মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান ছিল ভোর থেকেই। আগের দিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলগুলোর কর্মীদের সংঘর্ষ ঘটলেও গতকাল এখানেসহ পল্টন, বায়তুল মোকাররম, হাইকোর্ট মোড় এলাকায় একজন পিকেটারকেও দেখা যায়নি, হয়নি কোনো মিছিল। পুলিশ ছাড়াও বিপুলসংখ্যক র্যাব সদস্য এসব এলাকায় টহল দিয়েছেন।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। সকালে দূরপাল্লার যান চলাচল সীমিত থাকলেও অধিকাংশ ট্রেন নির্ধারিত সময়েই গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বলে কমলাপুর রেলস্টেশনের মাস্টার মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান। প্রশাসনের কেন্দ্র সচিবালয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম চলেছে। মতিঝিল ব্যাংকপাড়ায় স্বাভাবিক লেনদেন হলেও গ্রাহক ছিল অন্য দিনের তুলনায় অনেক কম।
সকাল ৭টার দিকে যাত্রাবাড়ীর একটি মাদ্রাসার হোস্টেলে অভিযান চালিয়ে ৪০ জন ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। সাড়ে ১০টার দিকে কাজীপাড়া এলাকায় হরতালের সমর্থনে একটি ঝটিকা মিছিল বের করে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে হরতালকারীরা। পুলিশ এ সময় পাঁচজনকে আটক করে। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার মোড়ের কাছে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি মিছিল থেকে পুলিশ ছয়জনকে আটক করে। খিলগাঁও, রামপুরা, উত্তরা, মহাখালী, বাবুবাজার ব্রিজসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি মিছিল বের হয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়।
কর্মীশূন্য ইসলামী দলগুলোর কার্যালয়ে লক্ষ করা গেছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কড়া নজরদারি। পুরানা পল্টন আজাদ প্রডাক্টসের গলি ও নোয়াখালী টাওয়ারের আশপাশের গলিতে ছিল পুলিশের তীক্ষ্ন নজর। ইসলামী আন্দোলনের প্রধান কার্যালয় নোয়াখালী টাওয়ারের সামনে দায়িত্বরত মতিঝিল থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. জাকির হোসেন সকাল ৯টায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা ভোর ৫টা থেকে এখানে দায়িত্ব পালন করছি। তবে এখন পর্যন্ত হরতাল সমর্থনকারীদের দেখা যায়নি। সব কিছুই শান্তিপূর্ণভাবে চলছে।'
মাদ্রাসার ৩৮ ছাত্র আটক : রাজধানীর মীরহাজিরবাগ এলাকার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার হোস্টেলে অভিযান চালিয়ে ৩৮ ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল কাশেম কালের কণ্ঠকে বলেন, সকাল ৭টার দিকে ওই এলাকার একটি মেস থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালায় পিকেটাররা। পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা মেসে আশ্রয় নেয়। মেসের বাইরে থেকে ও ভেতরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় পিকেটারদের হাতে এএসআই রুহুল আমিন আহত হন।
সচিবালয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম : প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কার্যক্রম ছিল স্বাভাবিক। এখানকার কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া দর্শনার্থীদের তেমন একটা দেখা যায়নি। সচিবালয় ও এর আশপাশের এলাকা ও সড়কগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সচিবালয়সংলগ্ন সড়কগুলোর একাংশে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
হরতাল শুরুর আগে থেকেই তৎপরতা শুরু করেন সচিবালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। পুলিশ কর্মকর্তারাও ভোর থেকেই পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাভাবিক উপস্থিতি দেখা গেছে।
বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ : ইসলামী সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতালে গতকাল সকাল থেকেই জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় অর্ধশতাধিক পুলিশ। বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীকে কার্যালয়ে দেখা যায়নি। সামনের রাস্তায় যান চলাচল অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছিল। পল্টন থানার এসআই আলী হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সব ধরনের নাশকতা ও অরাজকতা এড়ানোর জন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি। বিএনপি হরতালের ডাক না দিলেও ওপরের নির্দেশে আমরা এখানে অবস্থান করছি।'
সদরঘাট, সায়েদাবাদ, কমলাপুর : হরতালের কোনো প্রভাব পড়েনি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনাল ও কমলাপুর রেলস্টেশনে। সকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা এবং চাঁদপুরের উদ্দেশে নিয়মিত লঞ্চগুলো ছেড়ে যায়। এসব লঞ্চে যাত্রীসংখ্যা ছিল অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক কম। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম-কুমিল্লা রুটের কিছু বাস ছেড়ে গেলেও যাত্রীসংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। এর বিপরীত চিত্র দেখা যায় কমালাপুর রেলস্টেশনে। টিকিট কাউন্টারে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘসারি। তবে যাত্রীরা টিকিট পাচ্ছিলেন সহজেই। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল থেকেই নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন ছেড়ে যায়।
লাগাতার কর্মসূচির হুমকি : গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ আলেমদের মুক্তি না দিলে লাগাতার হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দিয়ে তাঁদের মুক্ত করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন ইসলামী ও সমমনা ১২ দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী। গতকাল মিরপুরে হরতালের পক্ষে মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। ওই মিছিল থেকে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
খলিলুর রহমান বলেন, 'সারা দেশে আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে সরকার পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হামলা চালাচ্ছে। অন্যায়ভাবে বাসাবাড়ি ও মেস থেকে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।' তিনি দাবি করেন, সারা দেশে সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করছে। এতে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে মহানবী (স.)-এর সম্মান হেফাজত ও ইসলাম রক্ষায় সব মুসলমান ঐক্যবদ্ধভাবে যেকোনো কোরবানি করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে আল্লাহর প্রতি আস্থা-বিশ্বাস ফিরিয়ে দেওয়া, মহানবী (স.)-এর অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, কোরআন বিকৃত করার অপচেষ্টা বন্ধ ও ইসলাম নির্মূলের অপতৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
No comments