বৈকালীন স্বাস্থ্যসেবা-বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) বৈকালীন আউটডোর সেবার আওতায় গত এক বছরে ৫১ হাজার ৬২৪ জন রোগীকে অপেক্ষাকৃত স্বল্প ফিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা দিয়ে বিরল ও উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।


বস্তুত প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও স্টাফদের মধ্যে সেবার মনোভাব জাগ্রত করতে পারার কারণেই এহেন জননন্দিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। আর এহেন ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের অবদান যে সবচেয়ে বেশি_ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রোববার সমকালে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিরাচরিত ধারার ব্যতিক্রম এই নতুন ধারা সরকারি হাসপাতালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে সন্তোষের ভাব লক্ষ্য করা গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। স্মর্তব্য যে, সাধারণত বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে একজন রোগীকে ৫শ' থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়। তাছাড়া গুটিকয় বেসরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে উন্নতমানের যন্ত্রপাতিও নেই। দুইশ' টাকা দিয়ে নিম্নআয়ের, বিশেষ করে নিম্নমধ্যবিত্তের পক্ষেও চিকিৎসাসেবা নেওয়া সম্ভব। তাই অফিস সময়ের বাইরে হাসপাতাল প্রাঙ্গণেই অপেক্ষাকৃত কম ফির বিনিময়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসাসেবা চালু সাধারণ রোগীর জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। দেশের ২১টি সরকারি হাসপাতালের সবক'টিতেই যদি একই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বৈকালীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা যেত, তাহলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিপুলসংখ্যক স্বল্প আয়ের মানুষ উপকৃত হতে পারতেন। কিন্তু অন্য হাসপাতালে এখনও চিকিৎসকদের মধ্যে সেবার প্রকৃত মনোভাব জাগ্রত করা যায়নি। এ ব্যবস্থা সরকারি হাসপাতালগুলোতে চালু করার ব্যাপারে বিভিন্ন সময় প্রস্তাব উত্থাপিত হলেও সিনিয়র ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনেকের মধ্যে অনীহা থাকায় তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল এই দুরূহ কাজটিই করে দেখিয়েছে যে, কর্মক্ষম ও উপযুক্ত নেতৃত্ব থাকলে এবং চিকিৎসকদের মধ্যে সেবার মনোভাব জাগ্রত করতে পারলে সব হাসপাতালেই বৈকালীন চিকিৎসাসেবা চালু করা সম্ভব। আমরা আশা করব, পর্যায়ক্রমে দেশের সবক'টি সরকারি হাসপাতাল বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের বৈকালীন স্বাস্থ্যসেবার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবে।
 

No comments

Powered by Blogger.