সংবর্ধনা-বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ হতে হবে
জীবনে প্রলোভন আসতে পারে। কিন্তু ওই পথে পা বাড়ানো যাবে না। সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে ভালো কিছু অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। নিজের বিবেককে সব সময় জাগ্রত রাখতে হবে। বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতা তৈরি হলেই কেবল মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকা যাবে—এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গুণীজনেরা এসব কথা বলেছেন।
সংবর্ধিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তাঁরা বলেন, নিজের ভেতরে আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। আত্মবিশ্বাসী মানুষ অশুভর বিরুদ্ধে লড়াই করে সত্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। প্রত্যেকে নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে সক্ষম হলে অবশ্যই দেশ এগিয়ে যাবে।
প্রথম আলোর আয়োজনে ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবি) সহযোগিতায় গতকাল বৃহস্পতিবার জামালপুর, ঝালকাঠি, রাজবাড়ী, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান—এই পাঁচ জেলার শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা সার্বিক সহায়তা দেন।
কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রচার সহযোগী মাছরাঙা টেলিভিশন, এবিসি রেডিও এবং প্রথম আলো ডট কম।
ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
জামালপুর: শহরের পৌর পাবলিক হলে সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। গান, কবিতা আবৃতি, সাফল্যের গল্প, দেশ নিয়ে কৃতীদের স্বপ্ন ও আশাবাদ এবং গুণীজনদের আলাপচারিতায় পুরো আয়োজনটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর জামালপুর প্রতিনিধি মোস্তফা মনজু। এতে জেলার পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভালো ফলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে বই ও ক্লাসমুখী হতে হবে। শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে।’
ভালো চিন্তা করলে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠা যায়। সে কারণে সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখার পরামর্শ দেন জামালপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার।
জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রেজুয়ান বলেন, অশুভ কিছু যাতে তোমাদের দমাতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
ভালো মানুষ হতে হবে—জীবনের লক্ষ্য স্থির করার সময় এ বিষয়টি সব সময় মাথায় রাখার পরামর্শ দেন নজরুল সংগীতশিল্পী এস এম সোলায়মান।
অনুষ্ঠানে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মামুন স্মৃতি পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের হাতে সম্মাননা পদক (ক্রেস্ট) তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের মাঝে কৃতী শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রসংগীত, দেশের গান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা আবৃতি করেন। সবশেষে ধন্যবাদ বক্তব্য দেন জামালপুর বন্ধুসভার সভাপতি প্রভাষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
ঝালকাঠি: জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ঝালকাঠি প্রতিনিধি মো. আক্কাস সিকদার। এতে জেলার ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে অভিনন্দনপত্র বিতরণ ও গুণীদের আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে ছিল গান, নৃত্য, আবৃতি, কৌতুক ও একক অভিনয়।
আলোচনা পর্বে যশোর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ গুলনাহার বেগম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা কোন প্রলোভনে পা দেবে না। প্রলোভন থেকে দূরে থাকতে হবে। সততা এবং নিষ্ঠার মাধ্যমে যা কিছু ভালো, তা অর্জন করতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পরামর্শ দেন ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বিমল চক্রবর্ত্তী।
ঝালকাঠি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. রুস্তম আলী বলেন, সমাজকে আলোকিত করার দায়িত্ব নিতে হবে তোমাদের।
মুক্তমনে কথা বলার চর্চা করার আহ্বান জানান ঝালকাঠি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুরুল আমীন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঝালকাঠির সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক মো. লাল মিয়া, রাজাপুর মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক কামরুন্নেছা আজাদ, ঝালকাঠি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মারুফা বেগম, উদ্বোধন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামছুল হক, রাজাপুর আদাখেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আক্কাস হোসেন, শুক্তাগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান, প্রথম আলো ঝালকাঠি বন্ধুসভার সভাপতি আফজাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফা বেগমের হাতে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
পরে সাংস্কৃতিক আয়োজনে গান গেয়ে শোনান বরিশালের শিল্পী তন্ময় মিত্র, বন্ধুসভার মনির হোসেন, জয়ন্ত সাহা, সোমা হালদার, বন্যা সাহা, নুসরাত জাহান, আবৃত্তি করে সংহিত্য রায় ও ফাতিমা আকতার।
রাজবাড়ী: দুপুরের আগেই কৃতী শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। বেলা সোয়া ৩টায় একাডেমীর মিলনায়তনে বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর রাজবাড়ী প্রতিনিধি মো. এজাজ আহম্মেদ। এতে জেলার পাঁচ উপজেলার প্রায় তিন শ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদিন কৃতীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যে কলেজেই ভর্তি হও না কেন নিয়মিত ক্লাস করতে হবে। নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সব সময় যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করতে হবে। দেখবে তুমি একা নও তোমার সঙ্গে দেশও এগিয়ে যাবে।’
ইতিবাচক লক্ষ্য অর্জনে নিজেকে বদলে ফেলার পরামর্শ দেনপ্রথম আলোর বদলে যাও বদলে দাও মিছিল কর্মসূচির সমন্বয়ক শওকত আলী।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা দুই হাত উঁচিয়ে মাদক, ইভ টিজিং ও মুখস্থকে ‘না’ বলার শপথ নেয়। তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করান রাজবাড়ী সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. নুরুজ্জামান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইউসিবির রাজবাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম, বন্ধুসভার সভাপতি মো. আজমল হোসেন।
কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেদের অনুভূতির কথা জানান মো. সাগর আহমেদ, নুসরাত জাহান, রুবাইয়া বিশ্বাসসহ অনেকে। সাগর তার অনুভূতির কথা প্রকাশ করতে গিয়ে বলে ‘বন্ধুরা, স্বপ্ন দেখতে হবে আকাশের মতো, নইলে আকাশছোঁয়ার স্পর্ধা কোথায় পাব।’
অনুষ্ঠানে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা দেওয়া হয় রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়কে।
আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে ছিল গান, কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য। এতে ‘শাড়ি’ কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধুসভার সহসভাপতি শিমূল কুমার দাশ। কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংগীত পরিবেশন করে নুসরাত জাহান, রিয়াশাত আকতার, ফারজানা ইসলাম, আমেনা আক্তার। এ ছাড়া বন্ধুসভার সদস্য মৃত্যুঞ্জয় হালদার, সুমী দাশ ও সাথী সরকার সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেন।
বান্দরবান: টানা কয়েক দিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দমাতে পারেনি কৃতী শিক্ষার্থীদের। গতকাল সকালে নির্ধারিত সময়ের আগেই জেলার দুর্গম বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজির হয় শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১১টায় বান্দরবান সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মিলনায়তনে বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর বান্দরবান প্রতিনিধি বুদ্ধজ্যোতি চাকমা। অনুষ্ঠানে জেলার ৩২ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আলোচনা পর্বে বান্দরবান সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জ্ঞানরঞ্জন চাকমা বলেন, পরীক্ষায় সাফল্য পেতে হলে নিয়মিত অধ্যয়নের বিকল্প নেই।
দেশ ও সমাজকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ইয়াকুব আলী।
বান্দরবান ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বদরুল হক বলেন, শুধু স্কুলের ওপর নির্ভর না করে বাড়িতেও পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
কৃতীদের মধ্যে বক্তব্য দেন নানওয়াই ম্রো, জান্নাতুল ফেরদৌসি।
অনুষ্ঠানে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজকে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা দেওয়া হয়।
খাগড়াছড়ি: জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বেলা ১১টায় বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি সৈকত দেওয়ান। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৩৩ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুসভার সদস্যরা আদিবাসী নৃত্য, দলীয় নৃত্য ও গান গেয়ে শোনান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শ্রীলা তালুকদার বলেন, নিয়মিত পড়াশোনার মাধ্যমে এই সাফল্য ধরে রাখতে হবে।
নিজের ভেতরে বড় হওয়ার স্বপ্ন লালন করার পরামর্শ দেন খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মেজর নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিবেক জাগ্রত রাখা গেলে মন্দ থেকে দূরে থাকা যাবে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের প্রভাষক আনোয়ার হোসেন, নতুন কুঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষকা রুশদীনা আখতার।
অনুষ্ঠানে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা দেওয়া হয় খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজকে।
প্রথম আলোর আয়োজনে ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবি) সহযোগিতায় গতকাল বৃহস্পতিবার জামালপুর, ঝালকাঠি, রাজবাড়ী, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান—এই পাঁচ জেলার শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা সার্বিক সহায়তা দেন।
কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রচার সহযোগী মাছরাঙা টেলিভিশন, এবিসি রেডিও এবং প্রথম আলো ডট কম।
ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
জামালপুর: শহরের পৌর পাবলিক হলে সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। গান, কবিতা আবৃতি, সাফল্যের গল্প, দেশ নিয়ে কৃতীদের স্বপ্ন ও আশাবাদ এবং গুণীজনদের আলাপচারিতায় পুরো আয়োজনটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর জামালপুর প্রতিনিধি মোস্তফা মনজু। এতে জেলার পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভালো ফলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে বই ও ক্লাসমুখী হতে হবে। শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে।’
ভালো চিন্তা করলে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠা যায়। সে কারণে সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখার পরামর্শ দেন জামালপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার।
জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রেজুয়ান বলেন, অশুভ কিছু যাতে তোমাদের দমাতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
ভালো মানুষ হতে হবে—জীবনের লক্ষ্য স্থির করার সময় এ বিষয়টি সব সময় মাথায় রাখার পরামর্শ দেন নজরুল সংগীতশিল্পী এস এম সোলায়মান।
অনুষ্ঠানে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মামুন স্মৃতি পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের হাতে সম্মাননা পদক (ক্রেস্ট) তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের মাঝে কৃতী শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রসংগীত, দেশের গান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা আবৃতি করেন। সবশেষে ধন্যবাদ বক্তব্য দেন জামালপুর বন্ধুসভার সভাপতি প্রভাষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
ঝালকাঠি: জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ঝালকাঠি প্রতিনিধি মো. আক্কাস সিকদার। এতে জেলার ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে অভিনন্দনপত্র বিতরণ ও গুণীদের আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে ছিল গান, নৃত্য, আবৃতি, কৌতুক ও একক অভিনয়।
আলোচনা পর্বে যশোর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ গুলনাহার বেগম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা কোন প্রলোভনে পা দেবে না। প্রলোভন থেকে দূরে থাকতে হবে। সততা এবং নিষ্ঠার মাধ্যমে যা কিছু ভালো, তা অর্জন করতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পরামর্শ দেন ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বিমল চক্রবর্ত্তী।
ঝালকাঠি সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. রুস্তম আলী বলেন, সমাজকে আলোকিত করার দায়িত্ব নিতে হবে তোমাদের।
মুক্তমনে কথা বলার চর্চা করার আহ্বান জানান ঝালকাঠি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুরুল আমীন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঝালকাঠির সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক মো. লাল মিয়া, রাজাপুর মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক কামরুন্নেছা আজাদ, ঝালকাঠি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মারুফা বেগম, উদ্বোধন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামছুল হক, রাজাপুর আদাখেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আক্কাস হোসেন, শুক্তাগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান, প্রথম আলো ঝালকাঠি বন্ধুসভার সভাপতি আফজাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে ঝালকাঠি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফা বেগমের হাতে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
পরে সাংস্কৃতিক আয়োজনে গান গেয়ে শোনান বরিশালের শিল্পী তন্ময় মিত্র, বন্ধুসভার মনির হোসেন, জয়ন্ত সাহা, সোমা হালদার, বন্যা সাহা, নুসরাত জাহান, আবৃত্তি করে সংহিত্য রায় ও ফাতিমা আকতার।
রাজবাড়ী: দুপুরের আগেই কৃতী শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। বেলা সোয়া ৩টায় একাডেমীর মিলনায়তনে বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর রাজবাড়ী প্রতিনিধি মো. এজাজ আহম্মেদ। এতে জেলার পাঁচ উপজেলার প্রায় তিন শ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদিন কৃতীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যে কলেজেই ভর্তি হও না কেন নিয়মিত ক্লাস করতে হবে। নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সব সময় যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করতে হবে। দেখবে তুমি একা নও তোমার সঙ্গে দেশও এগিয়ে যাবে।’
ইতিবাচক লক্ষ্য অর্জনে নিজেকে বদলে ফেলার পরামর্শ দেনপ্রথম আলোর বদলে যাও বদলে দাও মিছিল কর্মসূচির সমন্বয়ক শওকত আলী।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা দুই হাত উঁচিয়ে মাদক, ইভ টিজিং ও মুখস্থকে ‘না’ বলার শপথ নেয়। তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করান রাজবাড়ী সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. নুরুজ্জামান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইউসিবির রাজবাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম, বন্ধুসভার সভাপতি মো. আজমল হোসেন।
কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেদের অনুভূতির কথা জানান মো. সাগর আহমেদ, নুসরাত জাহান, রুবাইয়া বিশ্বাসসহ অনেকে। সাগর তার অনুভূতির কথা প্রকাশ করতে গিয়ে বলে ‘বন্ধুরা, স্বপ্ন দেখতে হবে আকাশের মতো, নইলে আকাশছোঁয়ার স্পর্ধা কোথায় পাব।’
অনুষ্ঠানে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা দেওয়া হয় রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়কে।
আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে ছিল গান, কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য। এতে ‘শাড়ি’ কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধুসভার সহসভাপতি শিমূল কুমার দাশ। কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংগীত পরিবেশন করে নুসরাত জাহান, রিয়াশাত আকতার, ফারজানা ইসলাম, আমেনা আক্তার। এ ছাড়া বন্ধুসভার সদস্য মৃত্যুঞ্জয় হালদার, সুমী দাশ ও সাথী সরকার সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেন।
বান্দরবান: টানা কয়েক দিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দমাতে পারেনি কৃতী শিক্ষার্থীদের। গতকাল সকালে নির্ধারিত সময়ের আগেই জেলার দুর্গম বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজির হয় শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১১টায় বান্দরবান সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মিলনায়তনে বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর বান্দরবান প্রতিনিধি বুদ্ধজ্যোতি চাকমা। অনুষ্ঠানে জেলার ৩২ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আলোচনা পর্বে বান্দরবান সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জ্ঞানরঞ্জন চাকমা বলেন, পরীক্ষায় সাফল্য পেতে হলে নিয়মিত অধ্যয়নের বিকল্প নেই।
দেশ ও সমাজকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ইয়াকুব আলী।
বান্দরবান ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বদরুল হক বলেন, শুধু স্কুলের ওপর নির্ভর না করে বাড়িতেও পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
কৃতীদের মধ্যে বক্তব্য দেন নানওয়াই ম্রো, জান্নাতুল ফেরদৌসি।
অনুষ্ঠানে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজকে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা দেওয়া হয়।
খাগড়াছড়ি: জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বেলা ১১টায় বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি সৈকত দেওয়ান। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৩৩ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুসভার সদস্যরা আদিবাসী নৃত্য, দলীয় নৃত্য ও গান গেয়ে শোনান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শ্রীলা তালুকদার বলেন, নিয়মিত পড়াশোনার মাধ্যমে এই সাফল্য ধরে রাখতে হবে।
নিজের ভেতরে বড় হওয়ার স্বপ্ন লালন করার পরামর্শ দেন খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মেজর নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিবেক জাগ্রত রাখা গেলে মন্দ থেকে দূরে থাকা যাবে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের প্রভাষক আনোয়ার হোসেন, নতুন কুঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষকা রুশদীনা আখতার।
অনুষ্ঠানে জেলার সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মাননা দেওয়া হয় খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজকে।
No comments