ধর্ম-শিষ্টাচার মানবতার অবিচ্ছেদ্য অংশ by মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান
মানবজীবনের একটি বড় গুণ হচ্ছে শিষ্টাচার। এর অভিধানগত অর্থ ভদ্রতাসূচক আচরণ। দেহের শোভা আবরণ, আর আত্মার শোভা শিষ্টাচার। এই শিষ্টাচার অনুশীলন হচ্ছে বাক্যালাপে রূঢ়তা বর্জন করে যে যত বেশি অমায়িক, ভদ্র ও পরোপকারী; সে তত বেশি জনপ্রিয়।
কথায় বলে, ভদ্র ও সৎ হতে যখন অর্থ ব্যয়ের দরকার হয় না, অথচ এমন আচরণ মানুষকে ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে শ্রেষ্ঠতর গুণসম্পন্ন বলে প্রতিপন্ন করতে পারে, তখন ভদ্র ও সৎ না হওয়ার অন্তরালে কোনো যুক্তি নেই। অবশ্য এ কথা সত্য, মানুষ ইচ্ছা করলেই সৎ হতে পারে না। এর জন্য চাই উপযুক্ত ধর্মীয় শিক্ষা ও নৈতিকতার অনুশীলন। শিষ্টাচারী কাউকে তিরস্কার, ব্যঙ্গোক্তি, অবজ্ঞা, দাম্ভিকতা, গর্ব-অহংকার, কটূক্তি, দম্ভোক্তি, কুৎসা রটনা, হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা, তুচ্ছজ্ঞান করতে পারে না। অশিক্ষিত বা নিরক্ষর মানুষের কাছে প্রকৃত ভদ্রতা আশা করা যায় না। কারণ, অজ্ঞানতার অর্থই অমার্জিত রুচির প্রয়োগ। তাই মানবসমাজকে সুন্দর করতে দরকার শিষ্টাচার। ইসলামে সুন্দর ব্যবহারকে ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘মানবতাবোধের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ শিষ্টাচার।’
ইসলামে শিষ্টাচার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ সাধনে বিবেচিত। মুসলমানদের ইসলামি জীবনাচার, আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার নিজের জীবনে পরিপালন করতে হবে। শিষ্টাচার বা আদবকে ঈমানের অংশ বলা হয়েছে। ইসলাম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং জীবনযাপনের বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বজনীন শিষ্টাচার বা আদব-কায়দার সাধারণ মূলনীতির দিকনির্দেশনা দিয়েছে। এর পরও যদি কেউ অন্যায় ও অসৎ পথে অগ্রসর হয়, নিজের চারিত্রিক দোষ-ত্রুটি সংশোধন করে কলুষমুক্ত জীবনযাপন না করে পাপ কাজে অগ্রসর হয়ে মানবসমাজের ক্ষতিসাধন করতে থাকে, তবে তার পার্থিব ও পারলৌকিক উভয় শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেন তা দেখে অন্যরা সাবধান হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘এ কোরআন সর্বশ্রেষ্ঠ, হিদায়েত করে এবং সৎকর্মপরায়ণ মুমিনদের সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তাদের জন্য আমি অত্যন্ত পীড়াদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।’ (সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ৯-১০)
মানবজীবনে শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধের প্রয়োজন কতটুকু, তা বলে শেষ করা যাবে না। সমাজে শিষ্টাচার ও সদাচারের মূল্য চিন্তাশীল ব্যক্তি মাত্রই অজানা নয়। পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য মানবিক গুণাবলির সক্রিয়তা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। মানুষের মহৎ গুণের কথাই মানুষ চিরকাল স্মরণ রাখে। মানবতার রূপ-গুণের বহিঃপ্রকাশের বলে যেকোনো জাতির সুনামের বাসনা চরিতার্থ হয়। শিষ্টাচারী সাধারণত উন্নত স্বভাব, মহানুভবতা, সহনশীলতা, পরশ্রীমুখর, স্বার্থহীনতা বা আত্মত্যাগের মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি হয়ে থাকে। ফলে তার চিন্তাধারায় পরিচ্ছন্নতা, স্বভাবে প্রশান্তি, মেজাজে ভারসাম্য, চরিত্রে পবিত্রতা, আচরণে মাধুর্য, ব্যবহারে নম্রতা, লেনদেনে সততা, বাক্যালাপে সত্যবাদিতা, ওয়াদা ও অঙ্গীকারে দৃঢ়তা, সামাজিক জীবনযাপনে সদাচরণ, কথাবার্তায় চিন্তার ছাপ, চেহারায় পবিত্রতার ভাব ফুটে ওঠে। মোট কথা, তার সামগ্রিক জীবনব্যবস্থায় বৈপ্লবিক একটা পরিবর্তন সূচিত হয়, যে জীবনধারার কোথাও কোনো অন্ধকার ও অসংগতি পরিলক্ষিত হয় না। এরা কখনো আত্মপূজারি, স্বার্থবাদী, স্বার্থান্ধ ও পরশ্রীকাতরতা প্রশ্রয় দেয় না। এদের সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘সেই লোকদের ছাড়া যারা ঈমান এনেছে ও শিষ্টাচারের মাধ্যমে জীবন পরিচালনা করে, তাদের জন্য অশেষ প্রতিফল রয়েছে।’ (সূরা আত-ত্বীন, আয়াত: ৬)
আল-কোরআনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী শিষ্টাচার মানুষের পরম সম্পদ। সুতরাং ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে এর গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যবহার মানবজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য উপাদান। মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার ও ইসলামের রীতিনীতি পরিপালন পরস্পর সহধর্মী। একটি ছাড়া অন্যটির কথা চিন্তাও করা যায় না। তাই সবাইকে অবশ্যই ইসলামি শরিয়তের আলোকে মানবিক চরিত্র গঠন করতে হবে। প্রতিটি মানুষের শিষ্টাচারী হওয়া অবশ্যকর্তব্য।
সে-ই সবচেয়ে শিষ্টাচারী মুসলমান, যার আচরণ সর্বোত্তম; যার স্বভাব আপন পরিবারের কাছে সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচিত। যে শিষ্টাচারী ব্যক্তি নিজের লেনদেন ও কাজ-কারবারে সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত, ওয়াদা পালন করে, দায়িত্ব পালন করে, মানুষকে ধোঁকা দেয় না, আমানতের খেয়ানত করে না, মানুষের হক নষ্ট করে না, ওজনে কম দেয় না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং সুদ-ঘুষ, দুর্নীতিসহ যাবতীয় অবৈধ রোজগার থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলে, সে-ই হলো প্রকৃত মুসলমান। খাঁটি মুসলিম সে-ই, যার রসনা ও হাত থেকে মানবজাতি নিরাপদ। কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা চাইবে তা অন্য ভাইয়ের জন্যও চাইবে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘প্রতিটি সৎকাজই সাদ্কা। ভালো কথা ও সাদ্কা করা উত্তম কাজ।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানেরই সাদ্কা করা অবশ্যকর্তব্য।’ উপস্থিত লোকজন বলল, যদি সে সাদ্কা করার মতো কিছু না পায়? তিনি বললেন, ‘সে যেন কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে।’ নবী করিম (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা দোজখের আগুন থেকে বেঁচে থাকো, একটি খেজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পাও, তাহলে মধুর ভাষার বিনিময়ে। মানুষের মধ্যে সে-ই সর্বোত্তম, যার দ্বারা মানবকল্যাণ সাধিত হয়।’
ছোট কাজে বদান্যের বহিঃপ্রকাশ শিষ্টাচার বা ভদ্রতার নামান্তর। এই শিষ্টাচার মানুষের মনে চরম পরিতৃপ্তি দিতে পারে। নিজে যেভাবে অপরের ভালোবাসার প্রত্যাশী, সেভাবে অপরকে ভালোবাসাই শিষ্টাচার। সৌজন্যবোধ ও শিষ্টাচার মানুষের মন থেকে পক্ষপাতিত্ব এবং স্বার্থপরতার বিলোপ সাধন করে। সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন করে পার্থিব জীবনকে সুখী, সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ করার পাশাপাশি চিরন্তন জীবনের মহাশান্তি লাভের পথ সুগম করা সম্ভব। এ জন্য সবার প্রতি ভালো ব্যবহার মানুষের জীবনের অন্যতম ব্রত হওয়া উচিত। হাসিমুখে ও আন্তরিকতার সঙ্গে সবাইকে গ্রহণ করা দরকার। সর্বোত্তম ব্যবহার, বিনয়ী চরিত্র, ব্যক্তিত্ব, আনুগত্যতা, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে মানুষের সেবাদান নিশ্চিত করতে হবে। নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে সদা সচেতন থাকা দরকার। তাই যেকোনো জাতির জীবনকে আদর্শ করে তুলতে হলে শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধের ব্যাখ্যা হূদয়ঙ্গম করে দৈনন্দিন জীবনে এর বাস্তব প্রয়োগে সক্রিয় হওয়া উচিত।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
dr.munimkhan@yahoo.com
ইসলামে শিষ্টাচার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ সাধনে বিবেচিত। মুসলমানদের ইসলামি জীবনাচার, আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার নিজের জীবনে পরিপালন করতে হবে। শিষ্টাচার বা আদবকে ঈমানের অংশ বলা হয়েছে। ইসলাম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং জীবনযাপনের বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বজনীন শিষ্টাচার বা আদব-কায়দার সাধারণ মূলনীতির দিকনির্দেশনা দিয়েছে। এর পরও যদি কেউ অন্যায় ও অসৎ পথে অগ্রসর হয়, নিজের চারিত্রিক দোষ-ত্রুটি সংশোধন করে কলুষমুক্ত জীবনযাপন না করে পাপ কাজে অগ্রসর হয়ে মানবসমাজের ক্ষতিসাধন করতে থাকে, তবে তার পার্থিব ও পারলৌকিক উভয় শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেন তা দেখে অন্যরা সাবধান হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘এ কোরআন সর্বশ্রেষ্ঠ, হিদায়েত করে এবং সৎকর্মপরায়ণ মুমিনদের সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তাদের জন্য আমি অত্যন্ত পীড়াদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।’ (সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ৯-১০)
মানবজীবনে শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধের প্রয়োজন কতটুকু, তা বলে শেষ করা যাবে না। সমাজে শিষ্টাচার ও সদাচারের মূল্য চিন্তাশীল ব্যক্তি মাত্রই অজানা নয়। পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য মানবিক গুণাবলির সক্রিয়তা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। মানুষের মহৎ গুণের কথাই মানুষ চিরকাল স্মরণ রাখে। মানবতার রূপ-গুণের বহিঃপ্রকাশের বলে যেকোনো জাতির সুনামের বাসনা চরিতার্থ হয়। শিষ্টাচারী সাধারণত উন্নত স্বভাব, মহানুভবতা, সহনশীলতা, পরশ্রীমুখর, স্বার্থহীনতা বা আত্মত্যাগের মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি হয়ে থাকে। ফলে তার চিন্তাধারায় পরিচ্ছন্নতা, স্বভাবে প্রশান্তি, মেজাজে ভারসাম্য, চরিত্রে পবিত্রতা, আচরণে মাধুর্য, ব্যবহারে নম্রতা, লেনদেনে সততা, বাক্যালাপে সত্যবাদিতা, ওয়াদা ও অঙ্গীকারে দৃঢ়তা, সামাজিক জীবনযাপনে সদাচরণ, কথাবার্তায় চিন্তার ছাপ, চেহারায় পবিত্রতার ভাব ফুটে ওঠে। মোট কথা, তার সামগ্রিক জীবনব্যবস্থায় বৈপ্লবিক একটা পরিবর্তন সূচিত হয়, যে জীবনধারার কোথাও কোনো অন্ধকার ও অসংগতি পরিলক্ষিত হয় না। এরা কখনো আত্মপূজারি, স্বার্থবাদী, স্বার্থান্ধ ও পরশ্রীকাতরতা প্রশ্রয় দেয় না। এদের সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘সেই লোকদের ছাড়া যারা ঈমান এনেছে ও শিষ্টাচারের মাধ্যমে জীবন পরিচালনা করে, তাদের জন্য অশেষ প্রতিফল রয়েছে।’ (সূরা আত-ত্বীন, আয়াত: ৬)
আল-কোরআনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী শিষ্টাচার মানুষের পরম সম্পদ। সুতরাং ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে এর গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যবহার মানবজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য উপাদান। মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার ও ইসলামের রীতিনীতি পরিপালন পরস্পর সহধর্মী। একটি ছাড়া অন্যটির কথা চিন্তাও করা যায় না। তাই সবাইকে অবশ্যই ইসলামি শরিয়তের আলোকে মানবিক চরিত্র গঠন করতে হবে। প্রতিটি মানুষের শিষ্টাচারী হওয়া অবশ্যকর্তব্য।
সে-ই সবচেয়ে শিষ্টাচারী মুসলমান, যার আচরণ সর্বোত্তম; যার স্বভাব আপন পরিবারের কাছে সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচিত। যে শিষ্টাচারী ব্যক্তি নিজের লেনদেন ও কাজ-কারবারে সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত, ওয়াদা পালন করে, দায়িত্ব পালন করে, মানুষকে ধোঁকা দেয় না, আমানতের খেয়ানত করে না, মানুষের হক নষ্ট করে না, ওজনে কম দেয় না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং সুদ-ঘুষ, দুর্নীতিসহ যাবতীয় অবৈধ রোজগার থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলে, সে-ই হলো প্রকৃত মুসলমান। খাঁটি মুসলিম সে-ই, যার রসনা ও হাত থেকে মানবজাতি নিরাপদ। কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা চাইবে তা অন্য ভাইয়ের জন্যও চাইবে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘প্রতিটি সৎকাজই সাদ্কা। ভালো কথা ও সাদ্কা করা উত্তম কাজ।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানেরই সাদ্কা করা অবশ্যকর্তব্য।’ উপস্থিত লোকজন বলল, যদি সে সাদ্কা করার মতো কিছু না পায়? তিনি বললেন, ‘সে যেন কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে।’ নবী করিম (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা দোজখের আগুন থেকে বেঁচে থাকো, একটি খেজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পাও, তাহলে মধুর ভাষার বিনিময়ে। মানুষের মধ্যে সে-ই সর্বোত্তম, যার দ্বারা মানবকল্যাণ সাধিত হয়।’
ছোট কাজে বদান্যের বহিঃপ্রকাশ শিষ্টাচার বা ভদ্রতার নামান্তর। এই শিষ্টাচার মানুষের মনে চরম পরিতৃপ্তি দিতে পারে। নিজে যেভাবে অপরের ভালোবাসার প্রত্যাশী, সেভাবে অপরকে ভালোবাসাই শিষ্টাচার। সৌজন্যবোধ ও শিষ্টাচার মানুষের মন থেকে পক্ষপাতিত্ব এবং স্বার্থপরতার বিলোপ সাধন করে। সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন করে পার্থিব জীবনকে সুখী, সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ করার পাশাপাশি চিরন্তন জীবনের মহাশান্তি লাভের পথ সুগম করা সম্ভব। এ জন্য সবার প্রতি ভালো ব্যবহার মানুষের জীবনের অন্যতম ব্রত হওয়া উচিত। হাসিমুখে ও আন্তরিকতার সঙ্গে সবাইকে গ্রহণ করা দরকার। সর্বোত্তম ব্যবহার, বিনয়ী চরিত্র, ব্যক্তিত্ব, আনুগত্যতা, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে মানুষের সেবাদান নিশ্চিত করতে হবে। নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে সদা সচেতন থাকা দরকার। তাই যেকোনো জাতির জীবনকে আদর্শ করে তুলতে হলে শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধের ব্যাখ্যা হূদয়ঙ্গম করে দৈনন্দিন জীবনে এর বাস্তব প্রয়োগে সক্রিয় হওয়া উচিত।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
dr.munimkhan@yahoo.com
No comments