চারদিক-বাবুইয়ের বাসার খোঁজে by ফারুখ আহমেদ
মানুষের নিজের ঘর আছে। মানুষ ছাড়া ঘর বানায় পাখিরা। পাখির সে ঘরকে বলা হয় পাখির বাসা। তবে বেশির ভাগ পাখি বাসা বানালেও বাসা বানানোর কারিগর বলা হয় বাবুইকে। অন্যভাবে বললে, বাবুই হলো বাসা বানানোর সুনিপুণ শিল্পী। বাবুই পাখির বাসা প্রকৃতির অপার বিস্ময়।
উল্টানো কলসির মতো দেখতে এই বাসা অনন্য শিল্পকর্মের নিদর্শন। এখানে রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী কবিতাটির কথা উল্লেখ না করে পারছি না।
‘বাবুই পাখিরে ডাকি কহিছে চড়াই
কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই’
তালগাছে বাবুই পাখি খড়কুটো দিয়ে বাসা তৈরি করে থাকে। সে বাসা যেমন সুন্দর, তেমনি মজবুত। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতেও টিকে থাকে। বাবুই মানুষের কাছাকাছি থাকতে খুব পছন্দ করে। সে জন্য বাসা বানায় লোকালয়ের কাছে। কিন্তু আমরা মানুষ সে বাসা সচেতন বা অসচেতন, যেভাবেই বলি না কেন, ভেঙে ফেলি। তা ছাড়া অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে দিনে দিনে আমরা বৃক্ষ নিধন করে সাহায্য করে চলেছি বাবুইসহ সব ধরনের পাখির বিলুপ্তিতে। দিনে দিনে বাবুই পাখি গ্রাম, গঞ্জ, শহর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এমন যখন অবস্থা, তেমন একদিন শিল্পী-পাখি বাবুই আর তার শিল্পিত বাসার খোঁজে বের হলাম।
শহর থেকে দূরে সিরাজদিখান বা শ্রীনগরের পথে পথে ঘুরে বাসা বা পাখি কোনোটারই দেখা পেলাম না। চলে গেলাম বান্দুরার কাছের গ্রাম তুইতাল আর টঙ্গীর কাছের কালীগঞ্জ। তারপর গেলাম মিরপুরের কাছে চটবাড়ির বটতলা। সেখানে তালগাছ পেলাম, কিন্তু বাবুইয়ের বাসার দেখা পেলাম না। শেষে একদিন ঢাকার আমিনবাজার হয়ে ভাকুর্তার পথে পথে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ চোখে পড়ল একটি তালগাছ। সেখানে অনেক বাবুইয়ের বাসা, থমকে দাঁড়ালাম। ছবি তুললাম ফটাফট। ভিড় জমে গেল শিশু-কিশোর থেকে বয়স্কজনের। তাদেরই একজন মিন্টু। বলল, ‘লন আমাগো বাইতে। দুইটা তালগাছে অনেক বাবুইর বাসা আর পাখি।’ আমন্ত্রণ পেয়ে দেরি করলাম না। ছুট লাগালাম তার পেছন পেছন।
আমি এখন আজীবর ব্যাপারির বাড়িতে। বাড়ির উঠানে দুটো তালগাছ। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার নয়; দুটো তালগাছ ঝেঁকে বাবুই পাখির বাসা। চোখ ধাঁধা খাওয়ার জোগাড়। আমি তালগাছের তলায় গিয়ে ছবি তুলছিলাম। বড়ির মালিক এসে বললেন, ‘সইরা ছবি তুলেন, মাথায় না আবার তাল পড়ে।’ বলতে দেরি নাই, ধপাস করে একটি তাল আমার পাশেই পড়ল!
ফারুখ আহমেদ
emon_kollyan@yahoo.com
‘বাবুই পাখিরে ডাকি কহিছে চড়াই
কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই’
তালগাছে বাবুই পাখি খড়কুটো দিয়ে বাসা তৈরি করে থাকে। সে বাসা যেমন সুন্দর, তেমনি মজবুত। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতেও টিকে থাকে। বাবুই মানুষের কাছাকাছি থাকতে খুব পছন্দ করে। সে জন্য বাসা বানায় লোকালয়ের কাছে। কিন্তু আমরা মানুষ সে বাসা সচেতন বা অসচেতন, যেভাবেই বলি না কেন, ভেঙে ফেলি। তা ছাড়া অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে দিনে দিনে আমরা বৃক্ষ নিধন করে সাহায্য করে চলেছি বাবুইসহ সব ধরনের পাখির বিলুপ্তিতে। দিনে দিনে বাবুই পাখি গ্রাম, গঞ্জ, শহর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এমন যখন অবস্থা, তেমন একদিন শিল্পী-পাখি বাবুই আর তার শিল্পিত বাসার খোঁজে বের হলাম।
শহর থেকে দূরে সিরাজদিখান বা শ্রীনগরের পথে পথে ঘুরে বাসা বা পাখি কোনোটারই দেখা পেলাম না। চলে গেলাম বান্দুরার কাছের গ্রাম তুইতাল আর টঙ্গীর কাছের কালীগঞ্জ। তারপর গেলাম মিরপুরের কাছে চটবাড়ির বটতলা। সেখানে তালগাছ পেলাম, কিন্তু বাবুইয়ের বাসার দেখা পেলাম না। শেষে একদিন ঢাকার আমিনবাজার হয়ে ভাকুর্তার পথে পথে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ চোখে পড়ল একটি তালগাছ। সেখানে অনেক বাবুইয়ের বাসা, থমকে দাঁড়ালাম। ছবি তুললাম ফটাফট। ভিড় জমে গেল শিশু-কিশোর থেকে বয়স্কজনের। তাদেরই একজন মিন্টু। বলল, ‘লন আমাগো বাইতে। দুইটা তালগাছে অনেক বাবুইর বাসা আর পাখি।’ আমন্ত্রণ পেয়ে দেরি করলাম না। ছুট লাগালাম তার পেছন পেছন।
আমি এখন আজীবর ব্যাপারির বাড়িতে। বাড়ির উঠানে দুটো তালগাছ। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার নয়; দুটো তালগাছ ঝেঁকে বাবুই পাখির বাসা। চোখ ধাঁধা খাওয়ার জোগাড়। আমি তালগাছের তলায় গিয়ে ছবি তুলছিলাম। বড়ির মালিক এসে বললেন, ‘সইরা ছবি তুলেন, মাথায় না আবার তাল পড়ে।’ বলতে দেরি নাই, ধপাস করে একটি তাল আমার পাশেই পড়ল!
ফারুখ আহমেদ
emon_kollyan@yahoo.com
No comments