উপকূল বেষ্টনী ধ্বংস-দুর্বৃত্তদের কঠোর শাস্তি হোক
সমুদ্র উপকূলের সবুজ বেষ্টনী ধ্বংস করা ও বেড়িবাঁধ কাটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। কারণ এর পরিণতিতে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে উপকূলে বসবাসকারী মানুষ, অপরাপর প্রাণী ও উদ্ভিদের ব্যাপক ক্ষতির সমূহ আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এ সত্ত্বেও সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর সমুদ্র উপকূলের হাজার হাজার ঝাউগাছের সবুজ বেষ্টনী উজাড় করতে দুর্বৃত্তদের অন্তরাত্মা
একটুও কাঁপেনি। চিংড়ি ঘের করার জন্য দুর্যোগ মোকাবেলার উদ্দেশ্যে নির্মিত বেড়িবাঁধ কেটে ফেলতেও এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা বোধ জাগেনি। সমকালে 'শুধু ঝাউগাছ নয়, বেড়িবাঁধও কাটছে দুর্বৃত্তরা' শিরোনামে রোববার প্রকাশিত রিপোর্টে গাছ ও বাঁধ কাটার সঙ্গে যুক্ত অপরাধীরা এখনও ধরা না পড়ায় বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। যদি এমন হতো যে, কারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের মোটেই চিহ্নিত করতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন, তাহলে নেতিবাচক উত্তরটি মেনে নেওয়া যেত। বাস্তব কিন্তু তা নয়। প্রশাসন ইচ্ছা করলে অপরাধীদের আটক করা মোটেই অসাধ্য নয়। কিন্তু তারা তা করছে না। শুধু তাই নয়, গাছ ও বাঁধ কাটা প্রতিরোধ করতেও তারা চেষ্টা করেনি। নিশ্চয়ই এর সঙ্গে স্থানীয় ক্ষমতাশালীদের সম্পৃক্ত থাকা অসম্ভব নয়। এ কারণেই হয়তো প্রশাসন জনস্বার্থ রক্ষায় এতটা উদাসীন থাকছে। প্রকাশিত রিপোর্টেই দেখা যায়, প্রথমে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ঢেলে গাছগুলোকে আস্তে আস্তে মেরে ফেলার দুষ্ট কৌশলটি প্রয়োগ করা হয়েছে। পরে সেসব গাছ নির্বিবাদে কেটে নেওয়া হয়েছে। অথচ এসব গাছ উপকূলের ভাঙন ও বাতাসের তীব্রতাকে প্রতিরোধ করত। অন্যদিকে সমুদ্র উপকূলের বাঁধ সেখানে বসবাসকারী মানুষসহ সব প্রাণী ও উদ্ভিদকে প্লাবনসহ সামুদ্রিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু চিংড়ি ঘেরের জন্য ওই বাঁধ কেটে ফেলা হয়। যারা সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর সমুদ্র উপকূলে ঝাউগাছ ও বেড়িবাঁধ কেটে নিয়েছে এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ ধরনের অপরাধ কোনোক্রমেই প্রশ্রয় পেতে পারে না।
No comments