বড় ঝুঁকি নিয়ে ভারসাম্য রক্ষার প্রয়াস-নানা চাপে বিশাল বাজেট
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার এখন শাসনক্ষমতার মাঝামাঝি সময়ে। দেশের ভেতর রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে শুরু করেছে। সুশাসনের অভাব প্রকট হচ্ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি জনজীবনকে কঠিন করে তুলেছে। এ রকম একটি বাস্তবতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে যখন ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে হয়েছে, তখন নানামুখী
স্বার্থের চাপে তাঁকে থাকতে হয়েছে। বড় আকারের, এক লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। সংগত কারণেই বড় বাজেট বাস্তবায়নের চিন্তাও তাঁকে মাথায় নিতে হয়েছে। সে জন্য বড় কিছু ঝুঁকি নিয়ে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা লক্ষ করা গেছে। কাজটি নিঃসন্দেহে খুব কঠিন। বিশেষত বাজেট এক বছরের জন্য হলেও এর প্রভাব মধ্য মেয়াদ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
অর্থমন্ত্রী বাজেটে এবার স্থানীয় শিল্পকে খানিকটা সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকেও (এসএমই) কিছু কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। কর অবকাশের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে এবং এই সুবিধার আওতায় নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; যদিও শিল্পনীতির সঙ্গে সাযুজ্যের অভাব পরিলক্ষিত হয়। তার পরও দীর্ঘমেয়াদি শিল্পায়নের স্বার্থে এগুলো ইতিবাচক। কিন্তু রপ্তানি মূল্যের ওপর উৎসে আয়কর তিন গুণ বাড়ানোকে সমর্থন করা যায় না। চলতি অর্থবছরে রপ্তানির উচ্চহারের প্রবৃদ্ধি কি এখান থেকে রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য সরকারকে উদ্বুদ্ধ করেছে? একইভাবে কৃষি খাতের বরাদ্দ ও ভর্তুকি কোন যুক্তিতে কমানো হলো, তা বোধগম্য নয়। এটি কি কৃষির বাজারভিত্তিক বাণিজ্যিকীকরণকে উৎসাহিত করার জন্য? সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর জন্য প্রকৃত বরাদ্দও কমানো হয়েছে। উচ্চহারে মূল্যস্ফীতি ও পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাব যখন চলছে, তখন এটা সমীচীন হবে না।
গতবার শেয়ারবাজারের ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর মুনাফা পুরোপুরি করমুক্ত রাখা এবং বিও হিসাবধারীর জন্য কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক না করে যে বিরাট ভুলটি করা হয়েছিল, পরিস্থিতির পাকে এবারও তা থেকে বের হওয়া সম্ভব হলো না। কিন্তু এ ধরনের ছাড় পরিণত পুিঁজবাজার গঠনে সহায়ক হবে না। একইভাবে ট্রেজারি বন্ডে ও অবকাঠামোয় বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। বিপরীতে সঞ্চয়পত্রের উৎসে করহার অর্ধেক করা হলেও এখন তা সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের ওপর প্রযোজ্য হবে। ফলে সাধারণ মানুষ ও গৃহিণীরা পর্যন্ত করের আওতায় চলে আসবেন।
উন্নয়ন-ব্যয় বরাদ্দের প্রায় পুরোটাই ঘাটতি বাজেটের সমান। অর্থাৎ ঘাটতি অর্থায়ন না হলে উন্নয়ন-ব্যয় অনেকটাই থমকে যাবে। আর ঘাটতি অর্থায়নের জন্য যেভাবে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে, তা একদিকে মূল্যস্ফীতিকে বাড়াতে পারে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। অথচ আমাদের অর্থনীতির গতিময়তা বহুলাংশে বেসরকারি খাতনির্ভর। বিষয়টি নিয়ে চিন্তার প্রয়োজন আছে।
সবকিছুর ওপর বাজেট বাস্তবায়নের বিষয়টি চলে আসে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও দৃঢ়তা ছাড়া বাস্তবায়নে যে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয় না, তা তো সর্বজনবিদিত। অর্থমন্ত্রী তথা সরকার এই সদিচ্ছা ও দৃঢ়তা কতখানি দেখাবেন বা দেখাতে পারবেন, তা দেখার জন্য আপাতত কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বাজেটে এবার স্থানীয় শিল্পকে খানিকটা সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকেও (এসএমই) কিছু কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। কর অবকাশের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে এবং এই সুবিধার আওতায় নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; যদিও শিল্পনীতির সঙ্গে সাযুজ্যের অভাব পরিলক্ষিত হয়। তার পরও দীর্ঘমেয়াদি শিল্পায়নের স্বার্থে এগুলো ইতিবাচক। কিন্তু রপ্তানি মূল্যের ওপর উৎসে আয়কর তিন গুণ বাড়ানোকে সমর্থন করা যায় না। চলতি অর্থবছরে রপ্তানির উচ্চহারের প্রবৃদ্ধি কি এখান থেকে রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য সরকারকে উদ্বুদ্ধ করেছে? একইভাবে কৃষি খাতের বরাদ্দ ও ভর্তুকি কোন যুক্তিতে কমানো হলো, তা বোধগম্য নয়। এটি কি কৃষির বাজারভিত্তিক বাণিজ্যিকীকরণকে উৎসাহিত করার জন্য? সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর জন্য প্রকৃত বরাদ্দও কমানো হয়েছে। উচ্চহারে মূল্যস্ফীতি ও পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাব যখন চলছে, তখন এটা সমীচীন হবে না।
গতবার শেয়ারবাজারের ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর মুনাফা পুরোপুরি করমুক্ত রাখা এবং বিও হিসাবধারীর জন্য কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক না করে যে বিরাট ভুলটি করা হয়েছিল, পরিস্থিতির পাকে এবারও তা থেকে বের হওয়া সম্ভব হলো না। কিন্তু এ ধরনের ছাড় পরিণত পুিঁজবাজার গঠনে সহায়ক হবে না। একইভাবে ট্রেজারি বন্ডে ও অবকাঠামোয় বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। বিপরীতে সঞ্চয়পত্রের উৎসে করহার অর্ধেক করা হলেও এখন তা সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের ওপর প্রযোজ্য হবে। ফলে সাধারণ মানুষ ও গৃহিণীরা পর্যন্ত করের আওতায় চলে আসবেন।
উন্নয়ন-ব্যয় বরাদ্দের প্রায় পুরোটাই ঘাটতি বাজেটের সমান। অর্থাৎ ঘাটতি অর্থায়ন না হলে উন্নয়ন-ব্যয় অনেকটাই থমকে যাবে। আর ঘাটতি অর্থায়নের জন্য যেভাবে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে, তা একদিকে মূল্যস্ফীতিকে বাড়াতে পারে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। অথচ আমাদের অর্থনীতির গতিময়তা বহুলাংশে বেসরকারি খাতনির্ভর। বিষয়টি নিয়ে চিন্তার প্রয়োজন আছে।
সবকিছুর ওপর বাজেট বাস্তবায়নের বিষয়টি চলে আসে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও দৃঢ়তা ছাড়া বাস্তবায়নে যে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয় না, তা তো সর্বজনবিদিত। অর্থমন্ত্রী তথা সরকার এই সদিচ্ছা ও দৃঢ়তা কতখানি দেখাবেন বা দেখাতে পারবেন, তা দেখার জন্য আপাতত কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
No comments