এনজিওর নতুন আইনের খসড়া-সরকারি অনুমতি ছাড়া বিদেশি অনুদান বা চাঁদা নেওয়া যাবে না byশরিফুল হাসান
সরকারের অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা সংস্থা কোনো বিদেশি সরকার, সংস্থা কিংবা নাগরিকের কাছ থেকে অনুদান, মঞ্জুরি, নগদ অর্থ কিংবা অন্য কোনো ধরনের সাহায্য নিতে পারবেন না। আর অনুমতি ছাড়া কোনো নাগরিক বা সংস্থা বৈদেশিক কোনো চাঁদাও নিতে পারবেন না।
‘বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন-২০১১’-এর প্রাথমিক খসড়ায় এই বিধান রাখা হয়েছে। খসড়া এই আইনে ৩১টি ধারা রয়েছে। এতে এনজিওগুলোর নিবন্ধন ও নবায়ন, প্রকল্প অনুমোদন, অর্থছাড়করণ ও ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আইনটির মাধ্যমে এনজিও খাত আরও গতিশীল হবে বলে মনে করছে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো।
তবে এনজিও খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই আইনের কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে ধারা ৭-এর ১ অনুযায়ী, অনুদান নেওয়ার জন্য সরকারের অনুমতির বিষয় নিয়ে তাঁদের আপত্তি রয়েছে। তাঁরা বলেছেন, এই বিধি কার্যকর হলে সমাজসেবার মতো ভালো কোনো উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ, এর ফলে যে কোনো বাংলাদেশিকে বিদেশ থেকে অনুদান নিতে গিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়তে হবে।
এনজিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ১৯৮২ সালে এরশাদ সরকারের আমলে একটি ‘কালাকানুন’ হিসেবে এই বিধান তৈরি করা হলেও এর প্রয়োগ ছিল না। তাঁদের মতে, ৩০ বছর পর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ওই আইন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা বিস্ময়কর।
বেসরকারি সংস্থা বেলার প্রধান নির্বাহী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি একটি কালাকানুন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই আইন হলে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বিদেশে অবস্থানরত তাঁর স্বজনদের কাছ থেকেও অনুদান নিতে পারবেন না। এ ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে রেমিট্যান্স-প্রবাহ, ব্যবসায়িক উদ্যোগ, বৃত্তি, বিদেশ ভ্রমণ—এসব নিয়েও সমস্যা হবে। এটি আমাদের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকারের প্রতি চরম বাধা। কাজেই ধারাটি পরিবর্তন করা জরুরি।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক-উল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই আইন কেবল এনজিওর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হওয়া উচিত। সাধারণ কোনো মানুষ যেন এই আইনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ রফিক-উল হকের প্রত্যাশা, আইনটি সম্পর্কে এনজিওর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মতামত দেবেন এবং ‘বিস্তর আলোচনার’ পর শেষ পর্যন্ত আপত্তিকর কোনো ধারা থাকবে না।
এনজিওগুলোর প্রতিনিধিত্বকারীরা আরও বলছেন, খসড়া আইনে ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হয়েছে। এনজিওর পরিচালনা কাঠামোর গঠন নিয়ে এই আইনে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতেও আপত্তি জানিয়েছেন তাঁরা।
খসড়া আইনে মতামত দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের এনজিওগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশের (অ্যাডাব) গঠিত কমিটির প্রধান আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই আইনে ব্যক্তির স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। খসড়া আইনে বারবার ব্যক্তি আনা হয়েছে। এখানে সংস্থা বললে ঠিক হবে।’
ফেডারেশন অব এনজিওস ইন বাংলাদেশের (এফএনবি) পরিচালক তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশ থেকে অনুদান আনার বিষয় কেবল এনজিও-সম্পর্কিত ব্যক্তি নাকি সবার জন্য প্রযোজ্য হবে, তা আইনে পরিষ্কার করা দরকার ছিল।’
খসড়া আইনের আরেকটি (৫-এর ১) ধারায় বলা আছে, অন্য আইনে যা কিছুই থাক না কেন, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো স্বেচ্ছা কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে বৈদেশিক অনুদান বা চাঁদা নেওয়া যাবে না। ৫-এর (২) ধারায় বলা হয়েছে, ব্যুরোর নিবন্ধন ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বৈদেশিক অনুদান বা চাঁদা নিয়ে কোনো স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম গ্রহণ বা পরিচালনা করতে পারবে না।
১৬ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যুরোতে নিবন্ধিত প্রতিটি এনজিওর একটি পরিচালনা পর্ষদ ও একটি সাধারণ পর্ষদ থাকবে। সাধারণ পর্ষদের সদস্যসংখ্যা ন্যূনতম ২১ জন এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসংখ্যা ন্যূনতম সাতজন হবে। আইনের এই ধারাটিও নিয়েও আপত্তি উঠেছে।
তবে প্রস্তাবিত আইনকে কোনো সমস্যা মনে করছে না সরকার। বরং সরকার মনে করে, নতুন এই আইন এনজিওগুলোর কার্যক্রমে সহায়ক হবে। এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক নূরুন নবী তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার এনজিওগুলোকে উন্নয়নের অংশীদার মনে করে। আমরা মনে করি, নতুন এই আইন হলে এনজিওগুলোর কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।’
নূরুন নবী তালুকদার আরও বলেন, ‘এই আইন কেবল এনজিওর জন্যই প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে সাধারণ কারও কোনো সমস্যা হবে না। তার পরও আইনে কোনো অস্পষ্টতা থাকলে সবার সঙ্গে কথা বলেই তা দূর করা হবে।’
তবে এনজিও খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই আইনের কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে ধারা ৭-এর ১ অনুযায়ী, অনুদান নেওয়ার জন্য সরকারের অনুমতির বিষয় নিয়ে তাঁদের আপত্তি রয়েছে। তাঁরা বলেছেন, এই বিধি কার্যকর হলে সমাজসেবার মতো ভালো কোনো উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ, এর ফলে যে কোনো বাংলাদেশিকে বিদেশ থেকে অনুদান নিতে গিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়তে হবে।
এনজিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ১৯৮২ সালে এরশাদ সরকারের আমলে একটি ‘কালাকানুন’ হিসেবে এই বিধান তৈরি করা হলেও এর প্রয়োগ ছিল না। তাঁদের মতে, ৩০ বছর পর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ওই আইন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা বিস্ময়কর।
বেসরকারি সংস্থা বেলার প্রধান নির্বাহী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি একটি কালাকানুন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই আইন হলে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বিদেশে অবস্থানরত তাঁর স্বজনদের কাছ থেকেও অনুদান নিতে পারবেন না। এ ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে রেমিট্যান্স-প্রবাহ, ব্যবসায়িক উদ্যোগ, বৃত্তি, বিদেশ ভ্রমণ—এসব নিয়েও সমস্যা হবে। এটি আমাদের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকারের প্রতি চরম বাধা। কাজেই ধারাটি পরিবর্তন করা জরুরি।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক-উল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই আইন কেবল এনজিওর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হওয়া উচিত। সাধারণ কোনো মানুষ যেন এই আইনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ রফিক-উল হকের প্রত্যাশা, আইনটি সম্পর্কে এনজিওর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মতামত দেবেন এবং ‘বিস্তর আলোচনার’ পর শেষ পর্যন্ত আপত্তিকর কোনো ধারা থাকবে না।
এনজিওগুলোর প্রতিনিধিত্বকারীরা আরও বলছেন, খসড়া আইনে ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হয়েছে। এনজিওর পরিচালনা কাঠামোর গঠন নিয়ে এই আইনে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতেও আপত্তি জানিয়েছেন তাঁরা।
খসড়া আইনে মতামত দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের এনজিওগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশের (অ্যাডাব) গঠিত কমিটির প্রধান আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই আইনে ব্যক্তির স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। খসড়া আইনে বারবার ব্যক্তি আনা হয়েছে। এখানে সংস্থা বললে ঠিক হবে।’
ফেডারেশন অব এনজিওস ইন বাংলাদেশের (এফএনবি) পরিচালক তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশ থেকে অনুদান আনার বিষয় কেবল এনজিও-সম্পর্কিত ব্যক্তি নাকি সবার জন্য প্রযোজ্য হবে, তা আইনে পরিষ্কার করা দরকার ছিল।’
খসড়া আইনের আরেকটি (৫-এর ১) ধারায় বলা আছে, অন্য আইনে যা কিছুই থাক না কেন, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো স্বেচ্ছা কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে বৈদেশিক অনুদান বা চাঁদা নেওয়া যাবে না। ৫-এর (২) ধারায় বলা হয়েছে, ব্যুরোর নিবন্ধন ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বৈদেশিক অনুদান বা চাঁদা নিয়ে কোনো স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম গ্রহণ বা পরিচালনা করতে পারবে না।
১৬ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যুরোতে নিবন্ধিত প্রতিটি এনজিওর একটি পরিচালনা পর্ষদ ও একটি সাধারণ পর্ষদ থাকবে। সাধারণ পর্ষদের সদস্যসংখ্যা ন্যূনতম ২১ জন এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসংখ্যা ন্যূনতম সাতজন হবে। আইনের এই ধারাটিও নিয়েও আপত্তি উঠেছে।
তবে প্রস্তাবিত আইনকে কোনো সমস্যা মনে করছে না সরকার। বরং সরকার মনে করে, নতুন এই আইন এনজিওগুলোর কার্যক্রমে সহায়ক হবে। এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক নূরুন নবী তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার এনজিওগুলোকে উন্নয়নের অংশীদার মনে করে। আমরা মনে করি, নতুন এই আইন হলে এনজিওগুলোর কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।’
নূরুন নবী তালুকদার আরও বলেন, ‘এই আইন কেবল এনজিওর জন্যই প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে সাধারণ কারও কোনো সমস্যা হবে না। তার পরও আইনে কোনো অস্পষ্টতা থাকলে সবার সঙ্গে কথা বলেই তা দূর করা হবে।’
No comments